বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু আস সালাম আলা রাসুলিল্লাহ
আসমান এবং জমিনে এমন কেউ কি আছে একক কিংবা সম্মিলিত ভাবে যে/যারা আল্লাহর রাজত্বে কোন মালিকানা দাবী করতে পারে? প্রশংসা শুধুমাত্র সেই আল্লাহর! প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি মশা কিংবা এরচেয়েও তুচ্ছ যে কোন কিছু দিয়ে উদাহরণ দিতে লজ্জা পান না, সুবহানাহু ওতায়ালা! নিশ্চয়ই নমরুদ নাজেহাল হয়েছিলো সামান্য মশার সামনে, আর নিশ্চয়ই আজকের বিশ শতকের আধুনিক দাবীকৃত পারমানবিক শক্তিধর অজেয় শক্তিগুলো ধরাশায়ী হলো মশার চেয়েও তুচ্ছ এক কণিকা ভাইরাসের সামনে! আল্লাহই কি সবচেয়ে সত্যবাদী নন? আল্লাহ অপেক্ষা অধিক আর সত্যবাদী কে আছে? এভাবেই আল্লাহ খুলে খুলে তাঁর আয়াত পেশ করেন, তাঁর নিদর্শন গুলো তুলে ধরেন যেন তা থেকে কেউ শিক্ষা গ্রহন করতে পারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপরে বড়ই অনুগ্রহশীল।
কিছুদিন আগে, খুবসম্ভব সোশ্যাল মিডিয়ার কোথাও যেন দেখলাম, তাগুত বাহিনীর এক প্রজ্ঞাপন। নজরদারির বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি। আমরা সবকিছু নজরদারির আওতায় এনেছি, সব কিছু ২৪/৭ নজরদারি করা হচ্ছে, ইত্যাদি। বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন র*্যাবের ডিজি কাশ্মির ইস্যু, এনআরসি ইস্যু নিয়ে বলেছিলো "আলট্রা ইসলামিস্ট রা আমাদের ২৪/৭ নজরদারিতে আছে"
আমি মাঝে মাঝে একটা কথা ভেবে খুব হয়রান হয়ে যাই, এরা কি এসব বলে দ্বীনের মুজাহিদদের ভয় দেখাতে চায়? আমি সত্যিই বানিয়ে বলছিনা। তাদের আসল উদ্দেশ্যটা কি? কারণ তাদের মাথায় যদি খুব সামান্য পরিমান চিন্তা ভাবনা করার মত উপাদান থাকে তাহলে বুঝতে পারার কথা, মুজাহিদরা ভয় পান একমাত্র আল্লাহকে। যেই আল্লাহ তাদের ও উপরে সমস্ত সৃষ্টিজগতের উপরে নজরদারি করেই যাচ্ছেন, কোন কিছুই তাঁর নজরদারির বাইরে নেই। শুধু তাই নয় প্রত্যেকটি অনু কণার নড়াচড়া থেকে গ্রহ নক্ষত্রের পরিভ্রমন কোন কিছুই তাঁর অনুমতির বাইরে হয়না। এমন অবস্থায় মুজাহিদরা সেই আল্লাহর সৈন্য হয়ে কিভাবে তাদের মত মুরতাদদের ভয় পেতে পারেন!
এরও বাইরে কথা এই যে,
তারা তো একে অপরের চেয়ে বড় কাপুরুষ! তারা যুদ্ধের জানে টা কি? এক মুজাহিদ কমান্ডার বলছিলেন, যেদিন মুরতাদ সৈন্যরা আমাদের সাথে সরাসরি সম্মুখ সমরে লড়তে আসবে, সেদিন আমি তাদের সাথে তরবারি দিয়ে লড়বো। অর্থাৎ তারা নুন্যতম সাহসটুকু যুগিয়ে তাদের হেভি ক্যালিবার আর অটোক্যাটিক সব ফায়ার আর্মস নিয়ে যদি সামনে চলেই আসে তাদের জন্য আমার তরবারিই যথেষ্ট! তিনি বলছিলেন, আরে তোমরা যুদ্ধ কি করবে, তোমরা তো পারলে পুরা শরীরটাই বুলেট প্রুফ মেটালে ঢেকে ফেলতে!
মনে আছে হলি আর্টিজান এর কথা? সব বাহিনী যখন ব্যার্থ তখন আসলো কম্যান্ডো ইউনিট! কম্যান্ডো ইউনিট! নাম শুনলে মনে হয় - না জানি কি বীর বাহিনী রে বাবা! এই সেনাবাহিনীই একটা অপারেশন করতে গিয়েছিলো সিলেটে। দু একটি গুলির আওয়াজ আসতেই তাদের অফিসার, গাধার মত চিৎকার দিয়ে বলতে থাকে,
"রাব্বি, রাব্বি গেট ব্যাক, গেট ব্যাক" ... "এই দিক থেকে ফায়ার আসতেছে" ... আজও আমি রাব্বি নামের সেই "মহা বীরের" পড়িমরি করে পালিয়ে আসার দৃশ্য ভুলতে পারিনি!
তাহলে এরাই কি আমাদের হুমকি দেয়?
আসলে তারা নিজেদের কি মনে করে? তারা কি ধরে নিয়েছে যে দুনিয়া তাদের হয়ে গেছে। কিংবা কুফর বনাম ঈমানের এই লড়াইয়ে কেউ কি তাদের বিজয়ের সুসংবাদ শুনিয়ে মিস্টি খাওয়াচ্ছে! তারা কি এতটাই মাথামোটা যে তারা তাদের পরাজয়টাও চোখে দেখেনা? তারা কি দেখেনা, তাদের মনিবরা কিভাবে আজ ময়দান ছেড়ে পালাচ্ছে! তারা কি দেখেনা কিভাবে তাদের সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহন করা স্বত্বেও তাদের সামনে দিয়েই এদেশের যুবকরা তাদের ভাষায় র*্যাডিকালাইযড হয়ে যাচ্ছে!
তারা আমাদেরকে প্রতিপক্ষ ভাবে কিন্তু তারা জানেনা স্বয়ং আল্লাহ তাদের প্রতিপক্ষ। আল্লাহ বলেন,
مَن كَانَ عَدُوًّا لِّلّهِ وَمَلآئِكَتِهِ وَرُسُلِهِ وَجِبْرِيلَ وَمِيكَالَ فَإِنَّ اللّهَ عَدُوٌّ لِّلْكَافِرِينَ
কেউ যদি আল্লাহর শত্রু হয়, তাঁর ফেরেশতাদের এবং তাঁর রাসুলদের, বিশেষ করে জিবরাইলের এবং মিকাইলের; তাহলে জেনে রাখো: নিঃসন্দেহে এই ধরনের অস্বীকারকারীদের শত্রু হবেন স্বয়ং আল্লাহ। [আল-বাক্বারাহ ৯৮]
আজ আল্লাহর বিধানকে যারা চ্যালেঞ্জ করে, জিব্রিল আঃ, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যে দ্বীন নিয়ে এসেছিলেন, সেই দ্বীনকে অস্বীকার করে, নিঃসন্দেহে স্বয়ং আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে শত্রু!
ওহে আল্লাহর দুশমনেরা, তোমরা কখনই সফল হতে পারবেনা এ সত্য কি এখনো তোমাদের বুঝে আসলো না? না ফিরাউন পেরেছিলো, না নমরুদ পেরেছিলো, না আবরাহা পেরেছিলো, না মক্কার কাফেররা পেরেছিলো, না পেরেছিলো পারস্য কিংবা রোম সম্রাজ্য। না পেরেছিলো শক্তিধর রাশিয়া, না পারলো [দাবীকৃত] মহা শক্তিশালী অ্যামেরিকা!
তাহলে কি এখনো তোমাদের সেই দুরাশা জিইয়ে রাখলো যে, আল্লাহর মুকাবেলায় তোমরা জয়ী হয়েই যাবে? ভালো করে লক্ষ্য করে দেখো, তোমাদের মিশিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহর আলাদা কোন কম্যান্ডো ইউনিট দরকার হয়না, সামান্য ভাইরাসই তোমাদের জন্য যথেষ্ট!
আল্লাহর দুশমনেরা, সাময়িক সুবিধাকে কি তোমরা চূড়ান্ত বিজয় ধরে নিয়েছো? তোমাদের জন্য বিজয় কিভাবে অর্জন করা সম্ভব যেখানে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন মুমিনদের বিরুদ্ধে তোমাদের কোন পরিকল্পনা সফল হতে দেবেন না।
وَلَن يَجْعَلَ اللّهُ لِلْكَافِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلاً
“...এবং কিছুতেই আল্লাহ কাফেরদেরকে মুসলমানদের উপর বিজয় দান করবেন না।” [নিসা ১৪১]
আর আখিরাতে জাহান্নামই হচ্ছে তোমাদের আবাস। আর আবাস হিসেবে তা কতই না নিকৃষ্ট!
আল্লাহর দুশমনেরা, তোমাদের আর আমাদের মধ্যে পার্থক্যের ধরণটি কেমন তা আল্লাহর পবিত্র কালামের মাধ্যমে জেনে নাও -
قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلاَّ إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَن يُصِيبَكُمُ اللّهُ بِعَذَابٍ مِّنْ عِندِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا فَتَرَبَّصُواْ إِنَّا مَعَكُم مُّتَرَبِّصُونَ
আপনি বলুন, তোমরা তো আমাদের জন্যে (বিজয় কিংবা শাহাদত) দুটি কল্যাণের একটি প্রত্যাশা কর; আর আমরা তোমাদের জন্য এই প্রত্যাশায় আছি যে, আল্লাহ তোমাদের আযাব দান করবেন নিজের পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাত দিয়ে। সুতরাং তোমরা অপেক্ষা কর, আমরাও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি। [ সুরা তাওবা ৯:৫২ ]
এরপরেও কি তোমরা আমাদের হুমকি দাও! নিশ্চয়ই এরচেয়ে বড় হুমকি তোমাদের প্রতি, আর তা আল্লাহর পক্ষ থেকে!
Comment