ট্রেনিং এর ২য় দিন - ১ম অংশ
চোখে ঘুম নিয়েই উঠে পড়লাম। ওস্তাদ সবাইকে বললেন অজু করে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য প্রস্তুত হতে। আমরা অজু করে সবাই নামাজ আদায় করে নিলাম।
কিছুক্ষণ পরে সবাই ফজরের নামাজ আদায় করে নিলাম।
নামাজ আদায় করার পর ওস্তাদ সবাইকে বললেন আমরা যেন সকালের দোয়া গুলো পড়ে নেই। এরপর সকলে কোরআন তিলাওয়াত করে নিলাম। সবাই সকালের কসরত করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম।
সামনে ২ জন, পিছনে ৩ জন তারপরে আরও ৩ জন ফাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। ওস্তাদ সামনে দাঁড়িয়ে আমাদেরকে সালাম দিয়ে তার বক্তব্য পেশ করলেন। ওস্তাদের বক্তব্য শুনে আমার কাছে মনে হল- আমরা যুদ্ধের ময়দানে অবস্থান করছি, কিছুক্ষণ পরই সকলে শত্রুদের উপরে আক্রমণ করবো। ওস্তাদ তার বক্তব্য শেষ করে আমাদেরকে প্রায় ২০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করালেন। এত পরিমাণে ক্ষুধা লেগেছে কিছু বলতে ও পারছি না।
ওস্তাদ আমাদের চেহারা দেখে বুঝতে পারলেন যে আমাদের খুব ক্ষুধা পেয়েছে । ওস্তাদ ব্যায়াম করার পরে আবার বক্তব্য রাখলেন, শেষে একটি আয়াত তিলাওয়াত করলেন - তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল। (সূরা আল ইমরান:১৪২)
ওস্তাদ সবাইকে ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নিতে বললেন । বিশ্রাম তো নিবো ভালো কথা, ক্ষুধা যে লেগেছে। ভাবতে ভাবতে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম, সেই মুহূর্তে ওস্তাদ বললেন নাস্তা খেতে চলে আসুন।
খুব খুশি হয়ে গেলাম, কিন্তু ওস্তাদ সবাইকে বলে দিলেন ২ টি করে রুটি খেতে। সেই মুহূর্তের অবস্থা আপনাদেরকে আর বলতে পারবো না। আমাদের সাথে এক ভাই একটু স্বাস্থ্যবান ছিলো, হঠাৎ দেখলাম ওস্তাদ তাঁর নিজের ২ টা রুটি থেকে সেই ভাইকে অর্ধেক রুটি দিয়ে দিলেন। তা দেখে মনের অজান্তেই আমাদের চোখে পানি চলে আসে আর ক্ষুধার কথা তো ভুলেই গিয়েছিলাম। খাওয়া শেষে ওস্তাদ সবাইকে দোয়া পড়তে বললেন। আমার দোয়া মুখস্ত ছিল না, ওস্তাদ দোয়ার বই দিয়ে বললেন, দুপুরের খাবারের আগেই যেন দোয়া মুখস্ত করে নেই।
খাওয়া শেষে ওস্তাদ আমাদেরকে দৈনিক রুটিন দিয়ে দিলেন। ২ জন করে ৪ টি গ্রুপ করে দিলেন। এক গ্রুপ ঘর পরিস্কার করা, রান্নার জিনিস প্রস্তুত করা, রান্না করা, সাথে আরও কিছু।
সকাল ১০ টায় আমাদের আকিদা বিষয়ক ক্লাস নিতে নতুন ওস্তাদ আসবেন।
ক্লাস শেষে আমাদেরকে পড়া দিলেন বললেন, এবং এর উপর পরীক্ষা নেয়া হবে।
আমাদের সাথে এক ভাই ছিলো, আলিফ ভাই (ছদ্মনাম) । আলিফ ভাই আমাদের প্রিয় শায়েখ জসিম উদ্দিন রাহমানি (হাফিঃ) এর মত করে কি প্রায় হুবুহু ওয়াজ করতে পারেন। আমাদেরকে শায়েখ এর ওয়াজ এর আংশিক বয়ান শোনালেন । মনে হচ্ছিল মারকাজে বসে শায়েখ এর ওয়াজ শুনছি, শুনে মনটা ভরে গেলো।
উল্লেখ্য: সকালের সমস্ত নাস্তা ওস্তাদ নিজেই প্রস্তুত করেছেন।
[ আগামী পর্বে ট্রেনিং এর ২য় দিনের ২য় অংশ এই থ্রেডে আলোচনা করা হবে, একটি পর্বের একাধিক অংশ হলে একই থ্রেডে পোস্ট করব আর একটি পর্ব হলে আলাদা থ্রেডে পোস্ট করব, ইনশা-আল্লাহ। এভাবে পোস্ট করলে ভালো হবে কিনা ভাইয়েরা জানাবেন,
ইনশা-আল্লাহ। ]
Comment