যারা এখনো ঘরে বসে আছেন আর ভাবছেন ইমাম মাহদি আসলে বের হবেন তারা যেন নিজেদের পায়ে নিজেরাই শিকল বেধে রাখছেন।
একটি উদাহরণ দেই -
মনে করুন আপনার ১০ কাঠা জমি আছে। আপনি সেখানে একটা বাড়ি করবেন। আপনার সেই খালি জায়গায় কিছু গরু, ছাগল ইত্যাদি রয়েছে। গরু-ছাগল গুলো দেখল সেখানে বাড়ি বানানোর প্রস্তুতি চলছে কিন্তু গরু -ছাগল গুলো সেখান থেকে গেল না, সেখানেই অবস্থান করল। একটা সময় চারদিকের একদিক দেয়াল দেওয়া হল তখনও গরু ছাগল গুলো সেখান থেকে গেল না। একটা সময় চারদিকের তিনদিকে দেওয়াল দেওয়া হল, তখন বাইরে থেকে কেউ এসে তাদেরকে বলল এখান থেকে চলে যেতে তা নাহলে সেখানে আটকা পড়বে আর বাড়ির লোকেরা তখন তাদেরকে হত্যা করে ফেলবে বা বিক্রি করে দিবে। কিন্তু গরু-ছাগল গুলো কোন কথাই শুনল না আর বলতে লাগল এখনও অনেক সময় আছে, ঐ দেখ এখনো একদিক খোলা আছে আমরা সেখান দিয়ে যেতে পারব। বাইরে থেকে আবার কেউ এসে বলল ঠিক আছে তবে এভাবে বসে না থেকে প্রয়োজনীয় খাবার সংগ্রহ করে রাখ আর এমন কিছু সংগ্রহ করে রাখ যার সাহায্যে দেওয়াল দিয়ে দিলে ও তা ভেদ করে বের হয়ে যেতে পারো। আফসোস এবার ও তারা কথা শুনল না, বরং আরও অলস বসে রইল।
অবশেষে চারদিক দিয়ে দেওয়াল তুলে দেওয়া হল, আর তারা এবার বলতে লাগল মাঝে এখনো অনেক জায়গা আছে আমরা সেদিকে থাকব। একটা সময় দেখা গেল ৫ তলা বাড়ি হয়ে গেল আর মজার কথা হল গরু - ছাগল এখনো সেখানে অবস্থান করছেন। কিভাবে জানেন? গরু- ছাগল গুলো যখন আর বের হতে পারছে না তখন তাদেরকে বাড়ির লোকেরা খাবার দিল আর গরু - ছাগল গুলো সেখানে বাড়ির লোকদের প্রয়োজন পুরন করতে লাগলো। গরু গুলো দিয়ে খালি জায়গায় চাষাবাদ এর কাজ করানো হল, ছাগল গুলো থেকে দুগ্ধ আহরন করে বাজারে বিক্রি করে দিত। এখানের থেকে টাকা নিয়ে বাড়ি তৈরির কাজে লাগানো হল। এভাবেই তাদেরকে বাড়ি সম্পুর্ন হওয়া পর্যন্ত রেখে দেওয়া হল। এর মধ্যে গরু - ছাগল গুলোর সন্তান গুলোকে মাঝে মধ্যে বাইরে নিয়ে হাটে বিক্রি করে দিত আর তাদেরকে বলত সেই গুলো হারিয়ে গেছে, আমরা খুজতেছি।
যখন তাদের বাড়ি সম্পুর্ন হয়ে গেল তখন গরু - ছাগল গুলো বুঝতে পারল যে তাদের সন্তান গুলো হয়তো হত্যা করা হয়েছে না হয় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
আর তাদেরকে ও হত্যা করে ফেলবে কারন এখন আর চাষাবাদ করানো হবে না কারন বাড়ি কাজ শেষ।
বাড়ির গেট সহ চারিদিকে এখন পাহারাদার বসানো।
এবার আপনারাই বলুন সেই গরু- ছাগল গুলো কি এখন গেট দিয়ে বের হতে গেলে কি পাহারাদারের সম্মুখিন হবে না? অন্য দিক দিয়ে ও বের হতে পারবে না। তাদের কোন প্রস্তুতি নেই, নেই কোন প্রকার সরঞ্জাম যা দিয়ে তারা দেওয়াল ভেঙে বের হতে পারবে। আর বাড়ির লোকদের কে বললে তো আর যেতে পারবে না। এখন বেচেঁ থাকতে হলে হয় বাড়ির লোকদের কথা শুনতে হবে আর না হয় না খেয়ে মরে যেতে হবে।
ভাইয়েরা এবার একটু ভাবুন তো আমরা কি গরু- ছাগল গুলোর মত একই ভুল করছি কিনা? আমার অবস্থা আজ তাদের মতো হয়ে যাচ্ছে কিনা?
আমরা আজ যেখান অবস্থান করছি দাজ্জালের বন্ধুরা আমাদের চারিদিকে একটি একটি করে দেওয়াল তুলে দিচ্ছে আর আমাদের এখনো হুশ ই আসছে না। আমরা এখন চার দেওয়ালের মাঝে বন্দি আছি তারপর ও আমরা কোন প্রস্তুতি নিচ্ছি না। আপনি চাইলেই কিন্তু আফগানিস্তান, খোরাসান, সিরিয়া,ইয়ামেন এখান থেকে যেতে পারছেন না যা সেই চার দেওয়ালের উদাহরনের অন্তর্ভুক্ত।
আপনি আমি চাইলেও এখানে প্রকাশ্যে জিহাদি কায্যক্রম চালাতে পারছি না আর যখনি এমন কিছু কেউ করতে নেয় তখনি দাজ্জালের বন্ধুরা হয় তাদের বন্দি করছে আর না হত্যা করছে। আমি তা বলি আমরা এখন এমন অবস্থায় এসে উপনিত হয়েছে যে আমরা সেই ৫ তলা বাড়ির মধ্যে অবস্থান করছি যার চারিদিকে দাজ্জালের বাহিনী অবস্থান করছে। শুধু এতটুকু সময় বাকি যে দাজ্জাল প্রকাশ্যে এসে সেই বাড়ির ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে।
হে ভাই ও বোনেরা এখনো কি আমাদের জেগে উঠার সময় হয় নাই?
আমরা যদি এখনো জিহাদে বের না হই, এর জন্য প্রস্তুতি না নেই তাহলে আর কবে নিব?
আপনাদের কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনারা এই মুহুর্ত থেকেই প্রস্তুতি গ্রহন করুন। একবার ভেবে দেখেছেন কাল যদি ইমাম মাহদি চলে আসে তো আমাদের অবস্থা কি হবে? আমাদের কি অবস্থা হবে?
[ এ নিয়ে পরে আরো আলোচনা করব, ইনশা-আল্লাহ ]