بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
“আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ”
“আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ”
আমার প্রিয় দ্বীনি ভাইয়েরা আজকে আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
প্রথমে আমরা জেনে নেই জিহাদ কাকে বলে?
"জিহাদ” আরবী শব্দ। এর অর্থ হলো কঠোর পরিশ্রম করা, চেষ্টা করা, সাধনা করা, সংগ্রাম করা। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর দ্বীনকে (ইসলামকে) বিজয়ী করার লক্ষে এবং একমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য কুফরী তথা ইসলাম বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে মুমিনের সকল প্রচেষ্টা (দৈহিক, মানসিক, আর্থিক, জ্ঞানবুদ্ধি) নিয়োজিত করাকে “জিহাদ” বলে। অন্য অর্থে স্বীয় নফসের বিরুদ্ধে, শয়তানের বিরুদ্ধে, ফাসেকদের বিরুদ্ধে এবং মুশরিক-মুনাফীক-কাফেরদের বিরুদ্ধে জান-মাল ও জবান দিয়ে লড়াই করাকে “জিহাদ” বলা হয়।
তবে জিহাদ ফরজ হওয়ার নির্দিষ্ট শর্ত ও উদ্দেশ্য রয়েছে। আমাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে জিহাদের নামে কোন অপকর্ম ইসলাম কখনই সমর্থন করে না। জিহাদ ফরজ হওয়ার উদ্দেশ্য হলো পৃথিবীতে তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা এবং কুফর ও শির্কের অবসান ঘটানো।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা প্রাথমিক ধারনা পেয়ে গেছি।
এখন চলুন দেখি মহান আল্লাহতালা কাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে বলেছেন।
১. যদি ভঙ্গ করে তারা তাদের শপথ প্রতিশ্রুতির পর এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে কুফর প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর। কারণ, এদের কেন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে। (সূরা আত তাওবাহ:12)
২. তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে। (সূরা আত তাওবাহ:29)
৩. নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন। (সূরা আত তাওবাহ:36)
৪. হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন। (সূরা আত তাওবাহ:123)
৫. হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান। (সূরা আত-তাহরীম:9)
৬. যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন। (সূরা আল হুজরাত:9)
৭. গৃহে অবস্থানকারী মরুবাসীদেরকে বলে দিনঃ আগামীতে তোমরা এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে আহুত হবে। তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা মুসলমান হয়ে যায়। তখন যদি তোমরা নির্দেশ পালন কর, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দিবেন। আর যদি পৃষ্ঠপ্রদর্শন কর যেমন ইতিপূর্বে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছ, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দিবেন। (সূরা আল ফাতহ:16)
৮. যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল। (সূরা আন নিসা:76)
এ আয়াতগুলোতে মহান আল্লাহ বলে দিয়েছেন কাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে হবে।
পরিশেষে পরম দয়াময় আল্লাহর কাছে এই দুআ করি যেন সকল মুজাহিদ ভাইদেরকে কবুল করেন এবং শহীদের মর্যাদা দান করেন আমিন।
Comment