জিহাদের ব্যাপারে – ইবনুল কায়্যিম (রহ) এর ঈমানী তেজ মূলক লেখা !
রসূল সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালামের গাযওয়া যুদ্ধসমূহের বিবরণ শুরু করার পূর্বে রীতিমাফিক জিহাদের হাকীকত ও তাৎপর্য এবং এর স্তর ও পর্যায় সম্পর্কে তথ্য ও তত্ত্বপূর্ণ বক্তব্যের অবতারণা করেছেন ।১ জিহাদ ফরয হওয়ার হিকমত ও তাৎপর্য বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামতের তুলনায় মানুষের জান ও মাল যে কত তুচ্ছ ও নগণ্য- তাও তুলে ধরেছেন বেশ ঈমান উদ্দীপক ভাষায় । এখানে এসে তাঁর ঈমানী তেজ ও লেখনী শক্তি উভয়ের সার্থক সমন্বয় ঘটেছে বলে মনে হয় ।
তিনি লিখেছেন :
“মানুষ তার জান-মালকে জানমালের মালিকের রাস্তায় ব্যয় করবে, এটাই হলো প্রেম ও মুহব্বত এবং জান্নাত ও তার অফুরন্ত নিয়ামতের দাবী । কেননা মু’মিনের জান-মাল তিনি খরিদ করে নিয়েছেন । কোন ভীরু অপদার্থের ও শূণ্যহস্ত ফকীরের সাধ্য কি এমন পণ্যের দাম হাঁকে । আল্লাহর কসম ! এ কোন অচল পণ্য নয় যে, ভীরু, দুর্বল ও ফকীর-মিসকিন এর দরাদরি করতে পারে এবং এ পণ্যের বাজার এত মন্দা নয় যে, অভাবী নাখাস্তা লোকও তা কর্যরূপে চাওয়ার সাহস করতে পারে । এ পণ্য তো জহুরী ও সমঝদারদের বাজারে বিক্রির জন্য ছাড়া হয়েছে । জান্নাতের মালিক তো জানের চেয়ে কম মূল্যে তার পণ্য বেচতে রাযী নন । ভীরু অপদার্থের দল তো মূল্য শুনেই পিছিয়ে এসেছে । আর প্রেমিক মজনূর দল হুরোহুরি করে এগিয়ে গেছে জানের বাজি লাগাতে যে, মালিক দয়া করে তার জানটা যদি জান্নাতের মূল্যরূপে কবূল করেন । শেষ পর্যন্ত এ মহাপণ্য সেই পূণ্যাত্নাদের হাতে চলে গেল যারা মু’মিন ভাইদের প্রতি ছিলেন সদয় ও বিনম্র, কিন্তু কাফিরদের বেলায় ছিলেন বজ্র কঠোর ।
‘ইশক ও প্রেমের দাবীদারদের সংখ্যা যখন বেড়ে গেল তখন তাদের কাছে দাবীর সত্যতার প্রমাণ তলব করা হলো । কেননা বিনা প্রমাণে সবার দাবী স্বীকার করে নিলে আশিক মজনূ আর ভণ্ড মজনূর মাঝে পার্থক্য করার কোন উপায় থাকবে না । দাবীদাররা হর কিসিমের প্রমাণ পেশ করল কিন্তু তাদের বলা হলো বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া তোমাদের দাবী গৃহীত হবে না ।
“আপনি বলে দিন, আল্লাহকে সত্যই যদি তোমরা ভালবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর । আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন ।” আল-কুরআন ।
এ কঠিন পরীক্ষার কথা শুনে সবাই পিছিয়ে গেল । কাজে-কর্মে, আচরণে, অভ্যাসে ও চরিত্রে তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে যারা রসূল (সা)-এর সত্যিকার অনুসারী ছিলেন তারাই শুধু নিজেদের দাবীতে অটল থাকলেন । অত:পর চূড়ান্ত পরীক্ষার মানদণ্ড ঘোষণা করে ইরশাদ হলো :
“আল্লাহর পথে তারা জিহাদ করে এবং নিন্দুকের নিন্দা বা সমালোচনার মোটেই পরওয়া করে না ।”
এবার কিন্তু প্রেম ও মহব্বতের অধিকাংশ দাবীদার কেটে পড়ল । মুজাহিদরাই শুধু টিকে রইল । তখন তাদের লক্ষ্য করে বলা হলো, এখন আশিক ও প্রেমিকদের জান-মালে তাদের মালিকানা নেই । সুতরাং যে পণ্যের সওদা হয়ে গেছে তা প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দাও ।
“নি:সন্দেহে আল্লাহ, মু’মিনদের নিকট থেকে তাদের জান-মাল খরিদ করে নিয়েছেন এই শর্তে যে, তাদেরকে জান্নাত দেওয়া হবে ।” আল-কুরআন, ৯:১১১ ।
বিক্রয় চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর বিক্রেতা ও ক্রেতার কর্তব্য হলো পণ্য বুঝিয়ে দেওয়া এবং মূল্য পরিশোধ করা । ব্যবসায়ীরা যখন ক্রেতার মর্যাদা, দয়া, মহিমা, ক্ষমতার সর্বব্যাপকতা প্রত্যক্ষ করল এবং মূল্যরূপে প্রাপ্তব্য চিরস্থায়ী জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত সম্পর্কে অবগত হলো তখন তাদের বুঝতে বাকি রইল না যে, জানমালের এ সওদাবাজিতে তারা দারুণ জেতা জিতেছে । এখন ক্ষণস্থায়ী জীবনের মোহে পড়ে এ বিক্রয় চুক্তি প্রত্যাহার করা হবে সীমাহীন বোকামী ও নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক । তাই তারা খরিদদারের প্রতিনিধির হাতে সানন্দে ও স্বতস্ফূর্তভাবে নিজেদের সমস্ত ইচ্ছা ও এখতিয়ার বিলুপ্ত করে বায়আতে রিদওয়ানে শরীক হলো । নবীর হাতে হাত রেখে তারা শপথ করল- এ মূল্য কখনো্ আমরা ফেরত নেব না এবং বিক্রয় চুক্তি প্রত্যাহারেরও আবেদন জানাব না । মোটকথা, ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি পূর্ণাঙ্গ হয়ে গেছে এবং তাদের সব কিছু সোপার্দ করে দিয়েছে তখন তাদের বলা হল- তোমাদের জীবন ও সম্পদ এখন থেকে আমার হয়ে গেছে এবং এখন তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে আমি তোমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছি ।
“আল্লাহর রাস্তায় যারা নিহত হয়েছে তাদের মৃত মনে কর না । আপন প্রতিপালকের কাছে তারা জীবিত, তাদের রিযিক প্রদান করা হয় ।” আল-কুরআন ।
লাভের লোভে আমি তোমাদের জান-মাল দাবী করিনি । আমি শুধু আমার দান ও দয়ার প্রকাশ ঘটাতে চেয়েছি । দেখছ না, কেমন তুচ্ছ ও নগণ্য জিনিস নিয়ে কী বিরাট ও অফুরন্ত মূল্য তোমাদের হাতে তুলে দিলাম ! তদুপরি তোমাদের জান-মাল তোমাদের জন্যই আমি সঞ্চিত করে রেখেছি । এখানে হযরত জাবির (রা)-এর ঘটনা স্মরণ করুন । রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কাছ থেকে একটি উট খরিদ করলেন । তদুপরি বিক্রিত উট ফেরতও দিলেন । তাঁর পিতা ওহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলৈন । আল্লাহ সুব: তাঁর পিতার সাথেও অনুরূপ মু‘আমালা করলেন । আল্লাহ তাকে জীবিত করে আবরণ সরিয়ে সরাসরি কালাম করলেন, হে আমার বান্দা ! কী চাওয়ার আছে তোমার, বলো । মানুষ তার ক্ষুদ্র অনুভূতি ও উপলব্ধি দ্বারা আল্লাহর দয়া ও করুণা এবং দান ও ইহসানের কতটুকুই বা অনুভব করতে পারে ? এ জান-মাল আল্লাহই তো দিয়েছেন । বিক্রয় চুক্তি সম্পাদনের তাওফীকও তিনিই দিয়েছেন । যাবতীয় দোষ ও খুঁত সত্ত্বেও দয়া করে সে মাল কবূল করেছেন এবং বান্দার হাতে কল্পনাতীত মূল্য তুলে দিয়েছেন । তদুপরি বান্দার তিনি প্রশংসা করেছেন, অথচ তাঁর দেয়া তাওফীক ছাড়া বান্দার পক্ষে এ বিরাট সওদা করা সম্ভব ছিল না । আল্লাহর পথে আহবানকারী রসূল (স) সাহসী ও আত্নসম্মানবোধসম্পন্নদের আল্লাহর ও জান্নাতের দিকে ডাকলেন । ঈমানের নকীব বিবেকসম্পন্নদের আহবান শোনালেন । ফলে জান্নাতের আশায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুসন্ধানকারী যাত্রী দলের মাঝে মহাযাত্রার এক অভূতপূর্ব কোলাহল জেগে উঠল এবং আশা-প্রত্যাশার স্বর্ণতোরণ পেরিয়ে মনযিলে মকসূদে পৌছার পূর্ব পর্যন্ত কারো মনেই যেন স্বস্তি নেই । আছে শুধু ব্যাকুল প্রতিক্ষার আনন্দ-বেদনা ।২
১.যাদু’ল-মা‘আদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯১-২৯৪ ।
২. যাদু’ল-মা‘আদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩১১-৩১২ ।
সংগৃহিত : সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৫২-৩৫৫ থেকে ।
রসূল সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালামের গাযওয়া যুদ্ধসমূহের বিবরণ শুরু করার পূর্বে রীতিমাফিক জিহাদের হাকীকত ও তাৎপর্য এবং এর স্তর ও পর্যায় সম্পর্কে তথ্য ও তত্ত্বপূর্ণ বক্তব্যের অবতারণা করেছেন ।১ জিহাদ ফরয হওয়ার হিকমত ও তাৎপর্য বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামতের তুলনায় মানুষের জান ও মাল যে কত তুচ্ছ ও নগণ্য- তাও তুলে ধরেছেন বেশ ঈমান উদ্দীপক ভাষায় । এখানে এসে তাঁর ঈমানী তেজ ও লেখনী শক্তি উভয়ের সার্থক সমন্বয় ঘটেছে বলে মনে হয় ।
তিনি লিখেছেন :
“মানুষ তার জান-মালকে জানমালের মালিকের রাস্তায় ব্যয় করবে, এটাই হলো প্রেম ও মুহব্বত এবং জান্নাত ও তার অফুরন্ত নিয়ামতের দাবী । কেননা মু’মিনের জান-মাল তিনি খরিদ করে নিয়েছেন । কোন ভীরু অপদার্থের ও শূণ্যহস্ত ফকীরের সাধ্য কি এমন পণ্যের দাম হাঁকে । আল্লাহর কসম ! এ কোন অচল পণ্য নয় যে, ভীরু, দুর্বল ও ফকীর-মিসকিন এর দরাদরি করতে পারে এবং এ পণ্যের বাজার এত মন্দা নয় যে, অভাবী নাখাস্তা লোকও তা কর্যরূপে চাওয়ার সাহস করতে পারে । এ পণ্য তো জহুরী ও সমঝদারদের বাজারে বিক্রির জন্য ছাড়া হয়েছে । জান্নাতের মালিক তো জানের চেয়ে কম মূল্যে তার পণ্য বেচতে রাযী নন । ভীরু অপদার্থের দল তো মূল্য শুনেই পিছিয়ে এসেছে । আর প্রেমিক মজনূর দল হুরোহুরি করে এগিয়ে গেছে জানের বাজি লাগাতে যে, মালিক দয়া করে তার জানটা যদি জান্নাতের মূল্যরূপে কবূল করেন । শেষ পর্যন্ত এ মহাপণ্য সেই পূণ্যাত্নাদের হাতে চলে গেল যারা মু’মিন ভাইদের প্রতি ছিলেন সদয় ও বিনম্র, কিন্তু কাফিরদের বেলায় ছিলেন বজ্র কঠোর ।
‘ইশক ও প্রেমের দাবীদারদের সংখ্যা যখন বেড়ে গেল তখন তাদের কাছে দাবীর সত্যতার প্রমাণ তলব করা হলো । কেননা বিনা প্রমাণে সবার দাবী স্বীকার করে নিলে আশিক মজনূ আর ভণ্ড মজনূর মাঝে পার্থক্য করার কোন উপায় থাকবে না । দাবীদাররা হর কিসিমের প্রমাণ পেশ করল কিন্তু তাদের বলা হলো বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া তোমাদের দাবী গৃহীত হবে না ।
“আপনি বলে দিন, আল্লাহকে সত্যই যদি তোমরা ভালবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর । আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন ।” আল-কুরআন ।
এ কঠিন পরীক্ষার কথা শুনে সবাই পিছিয়ে গেল । কাজে-কর্মে, আচরণে, অভ্যাসে ও চরিত্রে তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে যারা রসূল (সা)-এর সত্যিকার অনুসারী ছিলেন তারাই শুধু নিজেদের দাবীতে অটল থাকলেন । অত:পর চূড়ান্ত পরীক্ষার মানদণ্ড ঘোষণা করে ইরশাদ হলো :
“আল্লাহর পথে তারা জিহাদ করে এবং নিন্দুকের নিন্দা বা সমালোচনার মোটেই পরওয়া করে না ।”
এবার কিন্তু প্রেম ও মহব্বতের অধিকাংশ দাবীদার কেটে পড়ল । মুজাহিদরাই শুধু টিকে রইল । তখন তাদের লক্ষ্য করে বলা হলো, এখন আশিক ও প্রেমিকদের জান-মালে তাদের মালিকানা নেই । সুতরাং যে পণ্যের সওদা হয়ে গেছে তা প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দাও ।
“নি:সন্দেহে আল্লাহ, মু’মিনদের নিকট থেকে তাদের জান-মাল খরিদ করে নিয়েছেন এই শর্তে যে, তাদেরকে জান্নাত দেওয়া হবে ।” আল-কুরআন, ৯:১১১ ।
বিক্রয় চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর বিক্রেতা ও ক্রেতার কর্তব্য হলো পণ্য বুঝিয়ে দেওয়া এবং মূল্য পরিশোধ করা । ব্যবসায়ীরা যখন ক্রেতার মর্যাদা, দয়া, মহিমা, ক্ষমতার সর্বব্যাপকতা প্রত্যক্ষ করল এবং মূল্যরূপে প্রাপ্তব্য চিরস্থায়ী জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত সম্পর্কে অবগত হলো তখন তাদের বুঝতে বাকি রইল না যে, জানমালের এ সওদাবাজিতে তারা দারুণ জেতা জিতেছে । এখন ক্ষণস্থায়ী জীবনের মোহে পড়ে এ বিক্রয় চুক্তি প্রত্যাহার করা হবে সীমাহীন বোকামী ও নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক । তাই তারা খরিদদারের প্রতিনিধির হাতে সানন্দে ও স্বতস্ফূর্তভাবে নিজেদের সমস্ত ইচ্ছা ও এখতিয়ার বিলুপ্ত করে বায়আতে রিদওয়ানে শরীক হলো । নবীর হাতে হাত রেখে তারা শপথ করল- এ মূল্য কখনো্ আমরা ফেরত নেব না এবং বিক্রয় চুক্তি প্রত্যাহারেরও আবেদন জানাব না । মোটকথা, ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি পূর্ণাঙ্গ হয়ে গেছে এবং তাদের সব কিছু সোপার্দ করে দিয়েছে তখন তাদের বলা হল- তোমাদের জীবন ও সম্পদ এখন থেকে আমার হয়ে গেছে এবং এখন তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে আমি তোমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছি ।
“আল্লাহর রাস্তায় যারা নিহত হয়েছে তাদের মৃত মনে কর না । আপন প্রতিপালকের কাছে তারা জীবিত, তাদের রিযিক প্রদান করা হয় ।” আল-কুরআন ।
লাভের লোভে আমি তোমাদের জান-মাল দাবী করিনি । আমি শুধু আমার দান ও দয়ার প্রকাশ ঘটাতে চেয়েছি । দেখছ না, কেমন তুচ্ছ ও নগণ্য জিনিস নিয়ে কী বিরাট ও অফুরন্ত মূল্য তোমাদের হাতে তুলে দিলাম ! তদুপরি তোমাদের জান-মাল তোমাদের জন্যই আমি সঞ্চিত করে রেখেছি । এখানে হযরত জাবির (রা)-এর ঘটনা স্মরণ করুন । রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কাছ থেকে একটি উট খরিদ করলেন । তদুপরি বিক্রিত উট ফেরতও দিলেন । তাঁর পিতা ওহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলৈন । আল্লাহ সুব: তাঁর পিতার সাথেও অনুরূপ মু‘আমালা করলেন । আল্লাহ তাকে জীবিত করে আবরণ সরিয়ে সরাসরি কালাম করলেন, হে আমার বান্দা ! কী চাওয়ার আছে তোমার, বলো । মানুষ তার ক্ষুদ্র অনুভূতি ও উপলব্ধি দ্বারা আল্লাহর দয়া ও করুণা এবং দান ও ইহসানের কতটুকুই বা অনুভব করতে পারে ? এ জান-মাল আল্লাহই তো দিয়েছেন । বিক্রয় চুক্তি সম্পাদনের তাওফীকও তিনিই দিয়েছেন । যাবতীয় দোষ ও খুঁত সত্ত্বেও দয়া করে সে মাল কবূল করেছেন এবং বান্দার হাতে কল্পনাতীত মূল্য তুলে দিয়েছেন । তদুপরি বান্দার তিনি প্রশংসা করেছেন, অথচ তাঁর দেয়া তাওফীক ছাড়া বান্দার পক্ষে এ বিরাট সওদা করা সম্ভব ছিল না । আল্লাহর পথে আহবানকারী রসূল (স) সাহসী ও আত্নসম্মানবোধসম্পন্নদের আল্লাহর ও জান্নাতের দিকে ডাকলেন । ঈমানের নকীব বিবেকসম্পন্নদের আহবান শোনালেন । ফলে জান্নাতের আশায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুসন্ধানকারী যাত্রী দলের মাঝে মহাযাত্রার এক অভূতপূর্ব কোলাহল জেগে উঠল এবং আশা-প্রত্যাশার স্বর্ণতোরণ পেরিয়ে মনযিলে মকসূদে পৌছার পূর্ব পর্যন্ত কারো মনেই যেন স্বস্তি নেই । আছে শুধু ব্যাকুল প্রতিক্ষার আনন্দ-বেদনা ।২
১.যাদু’ল-মা‘আদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯১-২৯৪ ।
২. যাদু’ল-মা‘আদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩১১-৩১২ ।
সংগৃহিত : সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৫২-৩৫৫ থেকে ।
Comment