Announcement

Collapse
No announcement yet.

বাংলাদেশ অঞ্চলে দ্বীনকায়েমের সমস্যা সম্ভাবনা:শেষ পর্ব

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বাংলাদেশ অঞ্চলে দ্বীনকায়েমের সমস্যা সম্ভাবনা:শেষ পর্ব

    বাংলাদেশ অঞ্চলে দ্বীনকায়েমের সমস্যা সম্ভাবনা: শেষ পর্ব

    ইসলামের নামে রাজনৈতিক দল : বর্তমানে বাংলাদেশ অঞ্চলে (পুরো উপমহাদেশের ক্ষেত্রেই ইহা প্রযোজ্য) দ্বীন কায়েমের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে ফিতনা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হল ইকামতে দ্বীনের দোহাই দিয়ে কাফেরদের ল্যাবে আবিস্কৃত মুসলিম উম্মাহর ঐক্য বিনষ্টকারী রাজনৈতিক দল নামক ভাইরাসের মাধ্যমে কুফরী গণতান্ত্রিক পন্থায় দ্বীন কায়েমের নামে দলের/গোষ্ঠীর ক্ষমতা/স্বার্থের ব্যবসা । তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম এই হারাম পন্থায় দ্বীন কায়েম করে এই পন্থা বাদ দিয়ে দিবেন। এক্ষেত্রে আমার ১ম প্রশ্ন হল গণতান্ত্রিক পন্থায় পৃথিবীর কোথাও কি আজ পর্যন্ত দ্বীন কায়েম হয়েছে ? নির্বাচনের মাধ্যমে কি দ্বীন কায়েমের কর্মসূচী ঘোষণা করে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব ? যদি সম্ভব হয় তাহলে আপনি আমি পৃথিবীর যে সকল ইসলামী রাজনৈতিক দল লেবেলধারীদেরকে দ্বীন কায়েমের ঠিকাদারী দিয়ে রেখেছি তারা ক্ষমতায় গিয়ে কি দ্বীন কায়েম করেছে ? মিসরে ডঃ মুরসির নেতৃত্বে ইখওয়ান ক্ষমতায় গিয়ে কি দ্বীন কায়েম করেছেন ? না কি মানব রচিত সংবিধান দিয়ে রাস্ট্র পরিচালনা করেছেন ? আমাদের আর এক সুলতান (!) রজব তাইয়্যেব এরদোগান বিগত দুই যুগ যাবত ক্ষমতায় থেকে কি দ্বীন কায়েম করেছেন ? বা হারানো খিলাফাহ পুনরুদ্ধার করেছেন ? না কি মানব রচিত সংবিধান দিয়ে তুরস্ক পরিচালনা করছেন ? যারা মনে করে ব্যালট বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী এরা হল বিশ্ব আহাম্মক ! যদি তাই হবে তাহলে আলজেরিয়ায় ইসলামিক সালভেশন ফ্রন্ট ক্ষমতায় যেতে পারল না কেন ? ব্যালট যদি বুলেটের চেয়ে শক্তিশালীই হবে তাহলে মুরসি ক্ষমতায় থাকতে পারল না কেন ? গ্রামাঞ্চলে একটা প্রবাদ আছে – ‘‘ শ কাউয়্যা এক বারুক ’’। অর্থাৎ কাউয়্যা যদি ১০০ ও জমা হয় তবু এদেরকে তাড়াতে গৃহস্থের একটা লাঠির বারিই যথেষ্ট। তাও আবার কাকের শরীরে দেয়ার দরকার নেই । মাটিতে লাঠি দিয়ে একটু জোড়ে আঘাত করলে যে আওয়াজ হবে তাই যথেষ্ঠ। আবার যদি তর্কের খাতিরে এও ধরে নেই যে, নির্বাচনের মাধ্যমে কোন ইসলামী (!) রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাবে এবং ক্ষমতায় গিয়ে দ্বীনও কায়েম করবে তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে হয়ত নির্বাচনে জিতলেন ! কিন্তু যেসকল দেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় যেমন- ভারত, চীন, আমেরিকা, রাশিয়া বা ইউরোপ বা অন্যান্য অমুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে কী করবেন ? না কি সেসব দেশে দ্বীন কায়েমের হুকুম রহিত হয়ে গেছে ? মূলত পশ্চিমা গণতান্ত্রিক পন্থায় দ্বীন কায়েমের ভ্রান্ত যে পথ আমরা আবিস্কার করেছি তা হচ্ছে আমাদের মধ্যে জেঁকে বসা ভোগবাদী দর্শনের মারাত্নক কুফল। আসলে আমরা আমাদের স্বাধীন চিন্তার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের গৌরবময় ইতিহাস ভুলে গেছি। ভুলে গেছি সুলতান সালাউদ্দিন আইয়্যুবী, শাহ জালাল ইয়ামেনী, মাহমুদ গজনবী, মুহাম্মদ ঘুরী, বখতিয়ার আর অসংখ্য বীরদের বীরত্ব গাঁথা। এখনও সময় আছে আসুন বিজয়ী বীরদের থেকে সবক নিই অন্য কারো কাছ থেকে নয়।
    ইসলাম এবং মুসলমানদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর শরীয়তের বিধি-বিধান সম্পর্কে চরম অজ্ঞতা :
    দাওয়াতে তাবলীগে একটা কথা খুব মশহুর । আর তা হচ্ছে মুসলমানের সব কাজই ইবাদত যদি তা আল্লাহর হুকুম আর নবী (সাঃ) এর তরিকা মত হয় । আসলে বাস্তবতাও তাই । মুসলমান তার যত করণীয় এবং বর্জনীয় আছে তা যদি আল্লাহর হুকুম আর নবী (সাঃ) এর পন্থায় করে তাহলে তার সবই ইবাদত হিসাবে গণ্য হবে। তাহলে ইসলাম ও মুসলমানদের জান, মাল হেফাজত বা প্রতিরক্ষা বা ইমারাতে ইসলামীয়ার সীমান্ত প্রহরা বা প্রতিরক্ষার যে মহান ইবাদত তার নাম কী ? আবার হুজুর আকরাম (সাঃ) যে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করে রেখে গেছেন এবং সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) যে খিলাফাহকে এশিয়া, ইউরোপ আর অফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত করে গেছেন তার বর্তমান অবস্থা কী ? আমরা কি হুজুর আকরাম (সাঃ) ও সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) এর রেখে যাওয়া সেই আমানতের হেফাজত করতে পেরেছি ? যদি না পেরে থাকি তাহলে সেই হারানো খিলাফাহ পূনরুদ্ধারের শরীয়ত নির্দেশিত পন্থা কী ? এ ব্যাপারে কি আমাদের মাঝে কোন আলোচনা বা গবেষণা আছে ? উত্তর হচ্ছে এক কথায় না। কারণ আমরা এক ভোগবাদী দর্শনের খপ্পরে পড়ে এখন দিগ্ববিদিগ্ব জ্ঞানশূণ্য। এই মুহুর্তে আমাদের করণীয় কি খিলাফাহ কায়েম করা না কি অন্যকিছু তাও আমরা জানিনা। মূলত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সঙ্গ দেয়ার পর সাহাবায়ে কেরাম নিম্নোক্ত আমলগুলো করেছেন। অর্থাৎ-
    ১। খেলাফাহ রক্ষা করেছেন।
    ২। কোথাও হারিয়ে গেলে তা পুনরুদ্ধার করেছেন
    ৩। খেলাফাহ এর এলাকা বৃদ্ধি করেছেন।
    আমরা কোনটি করছি ? উত্তর হচ্ছে কোনটিই না ।
    মূলত আমরা যে খেলাফাহ রাস্ট্রটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের মাধ্যমে উপহার পেয়েছি সেটি
    ১। রক্ষা করতে পারিনি,
    ২। পুনরুদ্ধারও করতে পারিনি।
    ৩। বৃদ্ধির তো প্রশ্নই আসছে না।
    তাহলে এখন আমাদের উপর কোনটি ফরজ ?
    প্রথমে - পুনরুদ্ধার করা,
    তারপর - সেটি রক্ষা করা ,
    অতঃপর - বৃদ্ধি ঘটানো ?
    না ভিন্ন কিছু ?
    সম্ভাবনা :
    মানুষ এখন দিশেহারা : এ অঞ্চলের মানুষ এখন দিশেহারা, তাই কাজের এটাই প্রকৃত সময়। মানুষ দেখছে সারা বিশ্বে তাদের ভাই বোনরা কীভাবে প্রতিদিন পশু পাখীর মত নিহত হচ্ছে। কিভাবে তাদের মা, বোন ও কন্যারা কী দিনে দুপুরে, কী গভীর রাতে কাফের মুশরেকদের হিংস্র লালসার শিকার হচ্ছে। আমাদের এ অঞ্চলে তথা আরাকান, কাশ্মীর, জিনজিয়াং, আফগানিস্তান ত আছেই, পাশাপাশি চেচনিয়া, ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিনসহ পৃথিবীর যেদিকেই চোখ যাবে শুধু মুসলমানের লাশই চোখে পড়বে। মুসলমান আজ চর্তুদিকে গণহত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ আর অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েও জঙ্গী অপবাদগ্রস্ত (যদিও জঙ্গী কোন অপবাদ নয়। পশ্চিমারা এই ভাল শব্দটাকে গালি হিসাবে প্রচলনের অপচেষ্টা করছে।) মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সারা বিশ্বের মুসলমান দেখেছে তন্ত্র, মন্ত্র, পীরালী, তাবলীগ, ইসলামী আন্দোলনের নামে তথাকথিত রাজনীতিসহ কোন কিছুই তাকে রক্ষা করতে পারছে না বা তাকে নূন্যতম নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তাছাড়া এ অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোতে যে জালিম সরকারগুলো রয়েছে এদের অত্যাচার নির্যাতনেও একজন সাধারণ মুসলমান পর্যন্ত চরমভাবে অতিষ্ঠ। তাই আমরা যদি শুধু এ অঞ্চলেই নয় বরং সারা বিশ্বের মুসলমানদের নিকট দ্বীন কায়েমের ফায়দা এবং শরীয়াহ সম্মত পদ্ধতি তুলে ধরতে পারি তাহলে অদূর ভবিষ্যতে হুজুর আকরাম (সাঃ) ও সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) এর রেখে যাওয়া আমানত, হারানো সেই খিলাফাহ পুনরুদ্ধার ও সারা পৃথিবীতে দ্বীন কায়েম করা কোন কঠিন বিষয় হবে না।

    আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এর অনুসৃত পথ ধরে এ অঞ্চলসহ সারা পৃথিবীতে দ্বীন কায়েমের তাওফীক দান করুন । আমিন।

    বাংলাদেশ অঞ্চলে দ্বীনকায়েমের সমস্যা সম্ভাবনা:৩য় পর্ব

    এসো জিহাদ শিখি

  • #2
    মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর আলোচনা।
    আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দিন, আমীন


    হয় শরীয়াহ, নয় শাহাদাহ

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ।
      অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।
      আল্লাহ আপনার কাজে বারাকাহ দান করুন,আমিন।

      Comment

      Working...
      X