Announcement

Collapse
No announcement yet.

সম্পদ দ্বারা জিহাদ – শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম (রহঃ)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সম্পদ দ্বারা জিহাদ – শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম (রহঃ)

    এতে কোন সন্দেহ নেই যে কারো জান দিয়ে জিহাদ তার মাল দিয়ে জিহাদের চেয়ে শ্রেষ্টতর। আর তাই রাসুল সাঃ এর যুগে ধনীরা তাদের জান দিয়ে জিহাদ থেকে অব্যাহতি পাননি। যেমন উসমান রাঃ, আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাঃ। এর কারণ হল, যুদ্ধের মধ্যে দিয়েই আত্মশুদ্ধি ঘটে ও আত্মিক উৎকর্ষ সাধিত হয়। আর তাই রাসুল সাঃ এক সাহাবীকে উপদেশ দিয়ে এই কথাটি বলেছিলেনঃ “……জিহাদকে আঁকড়ে ধর, কারণ এটাই ইসলামের সন্যাসবাদ”। [১]

    সেজন্যই যখন রাসুল সাঃ কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলঃ “শহীদকে কি কবরের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়”? রাসুল সাঃ উত্তরে বলেনঃ “শহীদের মাথার উপর তরবারির ঝলকানিই তার জন্য পরীক্ষা হিসেবে যথেষ্ট”। [২]

    এছাড়া রাসুল জিহাদ ছেড়ে দুনিয়া নিয়ে মেতে থাকার প্রতি সতর্ক করেছেন। একবার তিনি একটি লাঙ্গলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেনঃ “ এটা কোন মানুষের বাড়িতে এমনভাবে প্রবেশ করেনা যে, আল্লাহ তা’আলা এর সাথে লাঞ্ছনা রাখেননি”। [৩]

    একটি সহীহ হাদিসে এসেছেঃ “তুমি যদি তাবাইয়্যা আল আইনিয়া (অর্থাৎ কারও কাছে নির্দিষ্ট মূল্যে কোন পণ্য বিক্রি করা ও পরে অনেক কম মূল্যে সেটা পুনরায় কেনা) চর্চা কর, গরুর লেজের অনুসরণ কর, কৃষিকাজ নিয়ে সন্তুষ্ট থাক আর জিহাদ ত্যাগ কর, তবে আল্লাহ তোমার উপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দিবেন এবং তিনি তা অপসারণ করবেন না যতক্ষণ না তুমি দ্বীনে ফিরে আস”। [৪]

    একইভাবে, এক সহীহ হাদিসে এসেছেঃ “দায়াহ [৫] গ্রহণ করোনা, কেননা তা তোমাকে দুনিয়ার জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট বানিয়ে ফেলবে” (৬)। আল্লাহর রাসুল সাঃ দুনিয়ার চিত্তবিক্ষেপকারী জিনিসসমূহ ও দুনিয়ায় ব্যস্ততা তৈরিকারী বিষয়সমূহের উল্লেখ করেছেন। যেমনঃ কৃষিকাজ, সুদী ব্যবসা আল-আইনিয়া, গবাদি পশুপালন, শিল্প-কারখানা এবং ভূমি ও দালান। যুদ্ধের ময়দানে যখন ইসলাম মুখোমুখি হয়, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায় তখন এগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকা শরিয়াহ অনুসারে হারাম ও মারাত্মক গোনাহ।

    যদি মুজাহিদদের সম্পদের প্রয়োজন পড়ে তবে কারও সম্পদ নিয়ে জিহাদ ফরয হয়ে যায়। ইবনে তাইমিয়ার মতে, জিহাদ যদি ফরযে কিফায়াও হয় তখনও মহিলা ও শিশুদের সম্পদের উপরও তা ফরয। আর তাই অভাবের সময় সম্পদ জমিয়ে রাখা নিষিদ্ধ। ইবনে তাইমিয়াকে (৭) প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ “ আমাদের নিকট এমন সম্পদ আছে যে, তা দিয়ে হয় আমরা অভুক্তদের আহারের ব্যবস্থা করতে পারবো বা জিহাদের ব্যয়ভার বহন করতে পারবো। এমতাবস্থায় কোনটা প্রাধান্য পাবে? তিনি উত্তরে বলেনঃ “আমরা জিহাদকে প্রাধান্য দেই, যদিও বা অভুক্তরা অনাহারে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। যেমনভাবে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হলে তারা আমাদের হাতে অসাবধানতাবশত মারা যায়, এখানে তারা মারা যায় আল্লাহর ইচ্ছায়”। (৮)

    ইমাম কুরতুবি(৯) বলেনঃ “আলেমরা ঐক্যমত যে, যাকাত পরিশোধ করার পরও যদি মুসলিমরা কোন ধরনের অভাবে পড়ে, তবে সেই প্রয়োজন পূরণের জন্য তাদেরকে তাদের নিজেদের সম্পদ থেকে খরচ করতে হবে”। ইমাম মালিক (১০) বলেনঃ “মুসলিমদের কাউকে যদি জিম্মি করা হয় তবে তার মুক্তিপণ আদায় করা তাদের জন্য ফরয, যদিওবা এতে তাদের সম্পদ ফুরিয়ে যায়। এ ব্যাপারেও ইজমা আছে”।

    দ্বীনের নিরাপত্তা ব্যক্তি নিরাপত্তার উর্ধে আর ব্যক্তি নিরাপত্তা সম্পদের নিরাপত্তার উর্ধে। আর তাই মুজাহিদদের রক্তের চেয়ে ধনীদের সম্পদ অধিক মূল্যবান নয়।

    সুতরাং বিত্তশালীদের তাদের সম্পদের ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত ও আল্লাহর আইনের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত যখন জিহাদের জন্য সেই সম্পদের প্রয়োজন আর যখন মুসলিম উম্মাহ ও তাদের ভূমিসমূহ বিলুপ্তির সম্মুখীন। সম্পদশালীরা তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ডুবে আছে। তারা যদি মাত্র একদিনের জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ থেকে নিবৃত হত, সামান্য তুচ্ছ কাজে অর্থ ব্যয় থেকে নিজেদের বিরত রাখত আর এর পরিবর্তে তারা আফগানিস্থানের মুজাহিদদেরকে তা প্রদান করত, বরফে যাদের পা গুলিতে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে আর যারা ঠান্ডায় মারা যাচ্ছে। তারা ঠিকমত না পায় খাবার আর তাদেরকে প্রতিরোধ করার জন্য না পায় কোন গোলাবারুদ।

    আমি বলি, বিত্তশালীরা একদিনে যা অপচয় করে সেই অর্থ যদি আফগানিস্থানের মুজাহিদদের দেয়া হত, তবে আল্লাহর ইচ্ছায় তা বিজয়ের পথে অনেক দূর সামনে নিয়ে যেত। অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম, তাদের মধ্যে প্রধানত হচ্ছেন, শায়েখ আব্দুল আজিজ বিন বায এর ফতোয়া হচ্ছেঃ মুজাহিদদেরকে যাকাত প্রদান করা অন্যতম উৎকৃষ্ট আমল ও সর্বোত্তম দান।

    সারসংক্ষেপঃ

    একঃ নিজের জান দিয়ে জিহাদ পৃথিবীর প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরযে আইন।

    দুইঃ জিহাদের জন্য অন্যের নিকট অনুমতি নেয়ার কারও প্রয়োজন নেই এবং সন্তানের জন্য পিতা-মাতার অনুমতিরও প্রয়োজন নেই।

    তিনঃ জিহাদের জন্য যখন মুসলিমদের সম্পদের প্রয়োজন পড়ে তখন সম্পদ নিয়ে জিহাদ করা ফরযে আইন আর তা জমিয়ে রাখা হারাম।

    চারঃ জিহাদে অবহেলা করা রোজা ও সালাত ত্যাগ করারই অনুরুপ। মূলত, বর্তমান সময়ে জিহাদে অবহেলা করা এর চেয়ে মারাত্মক। ইবনে রুশদ (১১) থেকে উদৃতিঃ “এতে ইজমা রয়েছে যে, জিহাদ যখন ফরযে আইন হয়ে যায়, তখন তা ফরয হজ্জের উপর প্রাধান্য পায়”।



    ১। আহমদ থেকে বর্ণিত। সহীহ। সহীহ আল যামি’ আস-সগীর-৪৩০৫

    ২। আন-নাসাই থেকে বর্ণিত। সহীহ। সহীহ আল যামি’ আস-সগীর-৪৩৫৯

    ৩। আল বুখারি থেকে বর্ণিত। সিলসিলা আল-হাদিস আস-সহীহ-১০

    ৪। আবু দাউদ থেকে বর্ণিত। সহীহ। সিলসিলা আল-হাদিস আস-সহীহ-১১

    ৫। দায়াহঃ ভূমি ব্যবসা

    ৬। আত-তিরমিযি থেকে বর্ণিত। সহীহ। সিলসিলা আল-হাদিস আস-সহীহ-১২

    ৭। আল-ফতওয়া আল-কুবরা ৪/৬০৮

    ৮। আল-ফতওয়া আল-কুবরা ৪/৬০৮

    ৯। আল কুরতুবি ২/২৪২

    ১০। আল কুরতুবি ২/২৪২

    ১১। ইবনে রুশদ, আবুল-ওয়ালিদ বিন আহমদ। দেখুনঃ পরিশিষ্ট খ, রেফারেন্স ৩১

  • #2
    জাযাকাল্লাহ ভাই,

    এই ধরনের পোস্ট আরো আসলে ভাল হত।

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ ভাই...........
      "নিশ্চয়ই আমার সৈন্যরাই বিজয়ই হবে" (সূরা আস-সাফফাত ৩৭:১৭৩)

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ ভাই...........
        উত্তম পোষ্ট

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহ খাইর

          Comment


          • #6
            জাযাকাল্লাহুল খইর

            Comment


            • #7
              সুতরাং বিত্তশালীদের তাদের সম্পদের ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত ও আল্লাহর আইনের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত যখন জিহাদের জন্য সেই সম্পদের প্রয়োজন আর যখন মুসলিম উম্মাহ ও তাদের ভূমিসমূহ বিলুপ্তির সম্মুখীন। সম্পদশালীরা তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ডুবে আছে। তারা যদি মাত্র একদিনের জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ থেকে নিবৃত হত, সামান্য তুচ্ছ কাজে অর্থ ব্যয় থেকে নিজেদের বিরত রাখত আর এর পরিবর্তে তারা আফগানিস্থানের মুজাহিদদেরকে তা প্রদান করত, বরফে যাদের পা গুলিতে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে আর যারা ঠান্ডায় মারা যাচ্ছে। তারা ঠিকমত না পায় খাবার আর তাদেরকে প্রতিরোধ করার জন্য না পায় কোন গোলাবারুদ।

              আমি বলি, বিত্তশালীরা একদিনে যা অপচয় করে সেই অর্থ যদি আফগানিস্থানের মুজাহিদদের দেয়া হত, তবে আল্লাহর ইচ্ছায় তা বিজয়ের পথে অনেক দূর সামনে নিয়ে যেত। অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম, তাদের মধ্যে প্রধানত হচ্ছেন, শায়েখ আব্দুল আজিজ বিন বায এর ফতোয়া হচ্ছেঃ মুজাহিদদেরকে যাকাত প্রদান করা অন্যতম উৎকৃষ্ট আমল ও সর্বোত্তম দান।
              আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সহীহ বুঝা দান করুন ও আমলের তাওফীক দান করুন।
              “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

              Comment


              • #8
                চমৎকার আলোচনা। জাযাকুমুল্লাহ ভাই

                Comment

                Working...
                X