Announcement

Collapse
No announcement yet.

ডেমোক্রেট না রিপাবলিকান!!?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ডেমোক্রেট না রিপাবলিকান!!?

    ২০২০ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করার পর ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি জো বাইডেন ৪৬তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করে। ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন সদস্য বাইডেন এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪৭তম ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ১৯৭৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ডেলাওয়্যারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে।


    বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর যে শব্দগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে সেগুলো হলো, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, শান্তি, সাম্য ও মানবাধিকার। বাইডেনই সেই রাষ্ট্রপতি যিনি ২০ বছর যাবত চলমান আফগান আগ্রাসনে ইতি টেনেছে। ইরাক থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের প্রস্তুতিও শুরু করেছে। অতি শীঘ্রই মার্কিন বাহিনী ইরাক ত্যাগ করবে; পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যেও আগ্রাসী সৈন্য সংখ্যা কমানো হবে ঘোষণা করা হয়েছে।


    বাইডেনের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ দেখে অনেকে আশা বুক বাধতে পারেন যে, মুসলিম বিশ্বের আর ভয়ের কিছু নেয়। কারণ, খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তার প্রশাসন মুসলিম ভূমিগুলো থেকে প্রস্থানে প্রস্তুত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের উগ্র পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তে উদারতনীতি গ্রহণ করেছে।


    নিশ্চিত থাকুন যারা এমন আশা রাখেন বা পোষণ করেন তারা হয় কাল্পনিক জগতে বাস করছেন; না হয় ভার্চুয়াল ম্যাটা ভার্স জগতে।


    কেননা, যে বাইডেন গণতন্ত্রের কথা বলছে, সে বাইডেন ও তার প্রশাসন আফ্রিকার সামরিক শাসক ও আরবের রাজতন্ত্রের আমিরদের গণতন্ত্রের শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।


    মুক্ত বাজার ব্যবস্থার দাবিদার ও বিশ্বাসী বাইডেন প্রশাসন চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে রুক্ষতে যে কোন পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।


    শান্তির কথা বলা বাইডেন চলতি বছর সামরিক খাতে শুধু আমেরিকার ইতিহাস নয় বরং বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট পাশ করেছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মত প্রকাশ করেছেন, এই অর্থের বিশাল অংশই চীন-আমেরিকা 'স্নায়ু যুদ্ধ' এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের 'হাইব্রিড যুদ্ধ'র পিছনে ব্যয় করা হবে।


    তাহলে, এখন বলুন এই বিষয়গুলো কি ইঙ্গিত করে? এখন বাইডেনের গণতান্ত্রিক মতাদর্শ, উদার মানসিকতা ও শান্তির প্রচেষ্টাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?


    অনেকেই মনে করেছিলেন হয়ত বাইডেন ক্ষমতায় আসলে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কিছুটা হলেও পরিবর্তন হবে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, ততই মনে হচ্ছে 'যেই লাউ সেই কদু'। একই পররাষ্ট্র নীতি বহাল রেখেছেন জো বাইডেন।


    কেননা আমাদের মনে রাখতে হবে, 'প্রেসিডেন্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বগ্রাসী নীতির কোনো পরিবর্তন হয় না'। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে টিকে রয়েছে তাদের মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যকামী নীতিদ্বয়ের উপর নির্ভর করে।


    ট্রাম্প-বাইডেন বা ডেমোক্রেট-রিপাবলিকান এর পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তার প্রশাশন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী নীতি প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বাস্তবায়ন করতো; আর বাইডেন ও তার প্রশাসন একই নীতি বাস্তবায়ন করছেন ধূর্ত কৌশলের সাথে।


    অনেকেই যুক্তি দিতে পারেন যে, বর্তমান বিশ্বে যত আমেরিকান আগ্রাসন চলমান আছে তার প্রত্যেকটি সূচনা এবং বৈধতা প্রদান করেছে রিপাবলিকানরা? অন্যদিকে বর্তমানে ক্ষমতায় এসে ডেমোক্রেটরা সকল আগ্রাসী ভূমিকায় সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য কাজ করছে।


    তাহলে তাদের জানা দরকার, ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার হামলার মাত্র ৩ দিন পর বুশের নেতৃত্বে রিপাবলিকান দলের অধীনে সংসদ থেকে 'গ্লোবাল ওয়ার অন টেরেরিজম' নামক বিলটি পাস হয়। নিম্ন কক্ষে ৪৩৫ জন প্রতিনিধির মধ্যে ৪১০ জন এই বিলের পক্ষে ভোট প্রদান করে। যার মাঝে ৪০ শতাংশ ভোট ছিল ডেমোক্রেট প্রতিনিধিদের।


    এবং উচ্চকক্ষে ১০০ জন সিনেটের মাঝে ৯৮ জন এই বিলটির পক্ষে ভোট দেয়। যার মাঝে ৩৩ জন ডেমোক্রেট। আর আশ্চর্যজনক হলেও বাইডেন নিজেই হ্যাঁ ভোটের তালিকায় রয়েছে।


    শুধু কি এতটূকু? না, ফিরিস্তি অনেক লম্বা। যেমন,

    ২০০১ সালে ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষমতায় ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান জোরদারের পক্ষে সমর্থন দিয়েছিলেন বাইডেন।


    ২০০২ সালের অক্টোবরে সিনেটর বাইডেন ইরাক যুদ্ধে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। যার মাধ্যমে বুশ প্রশাসনকে ইরাকে সামরিক অভিযান চালানোর ক্ষমতা দেয়া হয়।


    বাইডেনের প্রচারণা শিবির দাবি করেছে, আইএস মোকাবিলাসহ নানা কারণে ওবামা-বাইডেন প্রশাসন সিরিয়ার বিরোধীদের সহায়তা করেছে।


    ১৯৯৯ যুগোস্লাভিয়ায় (সার্বিয়া এবং মন্টিনেগ্রো) বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে সমর্থন দেন বাইডেন।


    ওই বছরের মার্চে যুগোস্লাভিয়ায় বিমান হামলা চালায় ক্লিনটন প্রশাসন। কসোভো প্রদেশে আলবানিয়া জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশটির সরকারে চালানো নির্যাতনের অভিযোগে ওই হামলা চালানো হয়। ওই যুদ্ধ দেড় লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারায়।


    সম্প্রতি বাইডেনকে ‘ধারাবাহিক যুদ্ধ আহ্বানকারী’ আখ্যা দেন মার্কিন সিনেটর র‌্যান্ড পল। বাইডেন আরও যুদ্ধ বাধাবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। যার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে বর্তমানে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর এবং মিত্ররাষ্ট্র ভারতের আড়ালে এশিয়ার উপর প্রভাব তৈরির চেষ্টা।


    নির্বাচনী প্রচারণায় বাইডেন জানিয়েছে তিনি যুদ্ধমুক্ত একটি বিশ্ব চান। প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবকে দেয়া মার্কিন সহায়তা বন্ধ করবে সে।


    কিন্তু এই
    যুদ্ধ বিরতি কি লাখ লাখ নিরাপরাধ মুসলমানদের জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবে? পারবে কি কোটি কোটি লোকের বসত-ভিটা তৈরি করে দিতে? আফগানে ১ ট্রিলিয়ান ডলারের ক্ষতি করে ২৮ কোটি মার্কিন ডলারের অনুদান কি কোন সমাধান হতে পারে? - না, কখনোই না।

    পরিশেষে, একটি কথা স্মরণ করাতে চায়,
    ৯ ইঞ্চি চাকু ঢুকিয়ে ১ ইঞ্চি বের করে নেওয়াকে উদারতা বলা যায় না।

  • #2
    ২০২১ সালে ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষমতায় ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান জোরদারের পক্ষে সমর্থন দিয়েছিলেন বাইডেন।
    প্রিয় ভাই, এখানে মনে হয় ২০০১ সাল হবে।
    আপনার লেখাগুলো পড়ে ভাল লাগে ভাই, নিয়মিত পোস্ট দিবেন আশা করি।
    জাযাকাল্লাহু খাইরান।
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহু খাইর প্রিয় ভাই সংশোধনী দেওয়ার জন্য। আল্লাহর নিকট দোয়া করেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা লেখার জন্য আমার অন্তর, চিন্তা আর হাতকে শক্তিশালী করে দেন।

      Comment

      Working...
      X