গত ২২শে অক্টোবর, ইসরায়েল ফিলিস্তিনের ছয়টি রাজনৈতিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করে একটি সামরিক আদেশ জারি করে। প্রতিষ্ঠান ছয়টি হলোঃ আদামির, আল-হক, ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল-প্যালেস্টাইন, ইউনিয়ন অফ এগ্রিকালচার ওয়ার্ক কমিটি, বিসান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ফিলিস্তিনি ইউনিয়ন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মন্তব্য হচ্ছে বলেছে যে, "(উল্লেখিত)এই ছয়টি প্রতিষ্ঠান ও পপুলার ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি) - একটি মানবাধিকার ও রাজনৈতিক দল হলেও এরা ইসরায়েল বিরোধী উগ্র আন্দোলনে সক্রিয়। পাশাপাশি দলগুলো সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করছে; যারা ইসরায়েলের যেকোন ধরণের ক্ষতি করতে পিছপা হবে না।"
ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের এই দাবীকে পরিপূর্ণভাবে অস্বীকার করছেন না। প্রকৃতপক্ষে, অনেক ফিলিস্তিনি কর্মী, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং শিল্পী সশস্ত্র প্রতিরোধের ব্যাপারে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। অনেকেই এই বিষয়ে নিশ্চিত যে, সশস্ত্র প্রতিরোধই ফিলিস্তিন থেকে আগ্রাসী শক্তিকে উৎখাতের একমাত্র কার্যকরী উপায়।
তারপরও, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধের দিকে তাকালে আমরা এমন কিছু তরুণকে দেখতে পাবো; যারা পাথর বা গুলতি হাতে ইসরায়েলী হায়েনাদের প্রতিরোধ করছেন। যারা প্রায় খালি হাতে ইসরায়েলী মরণাস্ত্রের সামনে ঝাপিয়ে পড়ছেন৷ প্রশ্ন হলো, 'এইটুকু প্রতিরোধ করা অধিকারও কি ফিলিস্তিনের মুসলমানদের নেই?'
উত্তর - না, নেই। কেননা, ইসরায়েল এবং তার ইউরো-আমেরিকান মিত্ররা ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মাত্রা পর্যন্ত ঠিক করে দিয়েছে। তাদের আদেশ যে, "ফিলিস্তিনিরা কোন ইসরায়েলী নাগরিক বা সৈন্য বা নীতির বিরোধিতা করে একটি মোমবাতিও ধরে রাখতে পারবে না (অর্থাৎ, প্রতিবাদের জন্য মোমবাতি পর্যন্ত প্রজ্জ্বলিত করতে পারবে না)।"
যে জাতি জবরদখল করা জমিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে; যে রাষ্ট্র "জাতিগত নির্মূল' এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং লক্ষ লক্ষ বেসামরিক নাগরিককে বোমা মেরে হত্যা করেছে; এমন জাতি ও রাষ্ট্রগুলো কীভাবে তাদের বিরুদ্ধে উপনিবেশ এবং নিপীড়িতদের প্রতিরোধকে "সন্ত্রাস" হিসাবে চিহ্নিত করার নৈতিক কর্তৃত্ব দাবি করে?
কেন ইসরায়েলী, আমেরিকান বা ইউরোপীয় সহিংসতাকে "সন্ত্রাস" হিসাবে বিবেচনা করা হয় না; তবে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকে চরমমাত্রার সহিংসতা বলে আখ্যায়িত করা হয়?
চোখের পলকে পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় এমন ড্রোন হামলা কি সন্ত্রাস নয়? ফিলিস্তিনের উপর ইসরায়েলের সামরিক হামলা, যা হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর কারণ হয়েছে, যার মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে, তা কি সন্ত্রাস নয়? গাজার নৃশংস অবরোধ, দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনকে উন্মুক্ত কারাগারে বন্দী করে রাখা, তা কি নির্লজ্জ সন্ত্রাস নয়? জাতিগত নির্মূল, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, বেআইনি উচ্ছেদ কি মানুষকে আতঙ্কগ্রস্থ করে না?
যেকোন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষনের জন্য, এটা পরিষ্কার হওয়া উচিত যে 'ইসরায়েলী রাষ্ট্রীয় সহিংসতার পরিধি ও ব্যাপকতা ফিলিস্তিনি যেকোনো প্রতিরোধের চেয়ে আরো
অনেক বেশি "ধ্বংসাত্মক" এবং আরো অনেক অনেক "ভয়ঙ্কর"।
ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে সে বিষয়ে বিশ্বের ক্ষমতাসীন শক্তিগুলো খুবই হাস্যকর একটি বাক্য বারবার ব্যবহার করছে এবং তা হল “ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার অধিকার আছে …” এর মানে দাঁড়ায়, ইসরায়েল "নিজেকে রক্ষার" জন্য ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং অন্যান্য সমর্থকদের বারবার পুনরাবৃত্তি করা এই বিবৃতিটি এত নিচু মানের এবং এতো নির্লজ্জ বক্তব্য, যা সুস্থ কোন মানুষের পক্ষে পুনরাবৃত্তি করা তো দূরের কথা, কোনও পাগলও হয়তো উচ্চারণ করবে না। বিশেষ করে ইসরাইলের এই বর্বর হামলার নমুনা দেখার পর।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সীমাহীন সমর্থনে হয়তো সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল এখন বিজয় দেখছে। সাম্রাজ্যবাদীদের নির্লজ্জ সাপোর্টের কারণেই জায়নবাদিরা আজ কোনও নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে হত্যা করছে শিশু, নারী এবং বয়স্কদেরকে। মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ এই সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রটি করছে, তার ভাগীদার হচ্ছে মানবতার পক্ষে সাফাই গাওয়া সব পশ্চিমা কুলাঙ্গাররাও; যারা এখনও চোখ বন্ধ করে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের এই বর্বরতাকে।
এইভাবে বিশ্বের ক্ষমতাসীন শক্তিগুলো মানবতা ও মানবাধিকারকে আরও একবার পদদলিত করলো। যখনই ইসরাইলের কথা আসে তখনই তারা হয়ে যায় বসন্তের কোকিল। সব আন্তর্জাতিক আইন, আদালত, মানবাধিকার, ধর্মীয় অধিকার, সংখ্যালঘু অধিকার, বাঁচার অধিকার, সব কিছুই তখন নিমিষে উধাও হয়ে যায়। তখন শুধু একটি বাক্যই থাকে তাদের মুখে, আর তা হচ্ছে "ইসরাইলকে রক্ষা করা।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যরা সবাই একটি বাক্যই মুখস্ত করেছে এবং তোতাপাখির মতো সে বাক্যটিই সবাই বলে বেড়াচ্ছে, আর তা হল ‘ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার অধিকার আছে …’
ইসরায়েলের এমন বেপরোয়া ও বর্বর আগ্রাসন সারা বিশ্বের কাছে এতো স্পষ্ট ও এতো নগ্নভাবে উপস্থাপিত হওয়ার পরেও ইসরাইলের এই বর্বর হামলাকে ‘আত্মরক্ষা’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা অনৈতিকতা ব্যতীত আর কী হতে পারে? অন্ততপক্ষে আমি জানি না এটাকে আর কী দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে!
তবে সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের স্বার্থের জন্য দুনিয়ার কোথাও কখনও এই অনৈতিকতা প্রদর্শন করতে দ্বিধা করেনি, করছে না এবং করবেও না। সুতরাং,তাদের এই বিব্রতকর বিবৃতিগুলোতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কিন্তু সামান্য পাথর আর গুলতির ভয়ে ইসরায়েল ও পশ্চিমা পরাশক্তিদের ভয়ের কি এমন আছে? কেন তারা হঠাৎ ঘাবড়ে গেছে?
কারণ, ফিলিস্তিনের আন্দোলন ধীরে ধীরে জাতীয়াবাদের খোলস থেকে বেড়িয়ে আসছে। ফিলিস্তিনের মুসলিমরা, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম বুঝতে আরম্ভ করেছে, ইহুদি এবং কাফেরদের সাথে তাদের যুদ্ধ 'পতাকা আর ভূমি'র না; বরং 'আকীদা ও জীবন ব্যবস্থার'। তারা প্রশস্থ অন্তরে গ্লোবাল জিহাদের গুরুত্বকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করছেন। সেই দিন দূরে নয় যেদিন ফিলিস্তিনের পতাকার পরিবর্তে কালেমা পতাকা নিয়ে ফিলিস্তিন জোয়ানরা জিহাদে ঝাপিয়ে পড়বে।
কিছু দিন আগে আমরা ১০ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি মেয়ের করুণ আর্তনাদ শুনেছি। যার পুরো ভিটে-মাটিসহ তার বাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। মেয়েটি সারা বিশ্বের কাছে প্রশ্ন তুলছে, তার কী দোষ? তার পরিবারের কী দোষ? শুধু মাত্র মুসলমান হওয়ার কারণেই কেন তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে? সে এখন কী করবে?
কিন্তু আর্তনাদ শেষে মেয়েটি দৃঢ় কণ্ঠের ঘোষণা করে, 'সে এই ভূমিতেই থাকবে। কেউ তাদেরকে হটিয়ে দিতে পারবে না।'
এই যে অবিচল প্রতিরোধ, এই যে দৃঢ়তা - এগুলো মুসলমানদের হারিয়ে যাওয়া সম্বল। এই দৃঢ়তাই সর্বদা অত্যাচারীদের ওপর মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয় এনে দিয়েছে; ভবিষ্যতেও দিবে। একথা সত্য যে, একটি বিজয়ের জন্য খুব উচ্চমূল্য দিতে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত, ফিলিস্তিনি মুসলমানরা বিজয়ী হবেই …
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মন্তব্য হচ্ছে বলেছে যে, "(উল্লেখিত)এই ছয়টি প্রতিষ্ঠান ও পপুলার ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি) - একটি মানবাধিকার ও রাজনৈতিক দল হলেও এরা ইসরায়েল বিরোধী উগ্র আন্দোলনে সক্রিয়। পাশাপাশি দলগুলো সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করছে; যারা ইসরায়েলের যেকোন ধরণের ক্ষতি করতে পিছপা হবে না।"
ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের এই দাবীকে পরিপূর্ণভাবে অস্বীকার করছেন না। প্রকৃতপক্ষে, অনেক ফিলিস্তিনি কর্মী, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং শিল্পী সশস্ত্র প্রতিরোধের ব্যাপারে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। অনেকেই এই বিষয়ে নিশ্চিত যে, সশস্ত্র প্রতিরোধই ফিলিস্তিন থেকে আগ্রাসী শক্তিকে উৎখাতের একমাত্র কার্যকরী উপায়।
তারপরও, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধের দিকে তাকালে আমরা এমন কিছু তরুণকে দেখতে পাবো; যারা পাথর বা গুলতি হাতে ইসরায়েলী হায়েনাদের প্রতিরোধ করছেন। যারা প্রায় খালি হাতে ইসরায়েলী মরণাস্ত্রের সামনে ঝাপিয়ে পড়ছেন৷ প্রশ্ন হলো, 'এইটুকু প্রতিরোধ করা অধিকারও কি ফিলিস্তিনের মুসলমানদের নেই?'
উত্তর - না, নেই। কেননা, ইসরায়েল এবং তার ইউরো-আমেরিকান মিত্ররা ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মাত্রা পর্যন্ত ঠিক করে দিয়েছে। তাদের আদেশ যে, "ফিলিস্তিনিরা কোন ইসরায়েলী নাগরিক বা সৈন্য বা নীতির বিরোধিতা করে একটি মোমবাতিও ধরে রাখতে পারবে না (অর্থাৎ, প্রতিবাদের জন্য মোমবাতি পর্যন্ত প্রজ্জ্বলিত করতে পারবে না)।"
যে জাতি জবরদখল করা জমিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে; যে রাষ্ট্র "জাতিগত নির্মূল' এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং লক্ষ লক্ষ বেসামরিক নাগরিককে বোমা মেরে হত্যা করেছে; এমন জাতি ও রাষ্ট্রগুলো কীভাবে তাদের বিরুদ্ধে উপনিবেশ এবং নিপীড়িতদের প্রতিরোধকে "সন্ত্রাস" হিসাবে চিহ্নিত করার নৈতিক কর্তৃত্ব দাবি করে?
কেন ইসরায়েলী, আমেরিকান বা ইউরোপীয় সহিংসতাকে "সন্ত্রাস" হিসাবে বিবেচনা করা হয় না; তবে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকে চরমমাত্রার সহিংসতা বলে আখ্যায়িত করা হয়?
চোখের পলকে পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় এমন ড্রোন হামলা কি সন্ত্রাস নয়? ফিলিস্তিনের উপর ইসরায়েলের সামরিক হামলা, যা হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর কারণ হয়েছে, যার মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে, তা কি সন্ত্রাস নয়? গাজার নৃশংস অবরোধ, দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনকে উন্মুক্ত কারাগারে বন্দী করে রাখা, তা কি নির্লজ্জ সন্ত্রাস নয়? জাতিগত নির্মূল, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, বেআইনি উচ্ছেদ কি মানুষকে আতঙ্কগ্রস্থ করে না?
যেকোন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষনের জন্য, এটা পরিষ্কার হওয়া উচিত যে 'ইসরায়েলী রাষ্ট্রীয় সহিংসতার পরিধি ও ব্যাপকতা ফিলিস্তিনি যেকোনো প্রতিরোধের চেয়ে আরো
অনেক বেশি "ধ্বংসাত্মক" এবং আরো অনেক অনেক "ভয়ঙ্কর"।
ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে সে বিষয়ে বিশ্বের ক্ষমতাসীন শক্তিগুলো খুবই হাস্যকর একটি বাক্য বারবার ব্যবহার করছে এবং তা হল “ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার অধিকার আছে …” এর মানে দাঁড়ায়, ইসরায়েল "নিজেকে রক্ষার" জন্য ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং অন্যান্য সমর্থকদের বারবার পুনরাবৃত্তি করা এই বিবৃতিটি এত নিচু মানের এবং এতো নির্লজ্জ বক্তব্য, যা সুস্থ কোন মানুষের পক্ষে পুনরাবৃত্তি করা তো দূরের কথা, কোনও পাগলও হয়তো উচ্চারণ করবে না। বিশেষ করে ইসরাইলের এই বর্বর হামলার নমুনা দেখার পর।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সীমাহীন সমর্থনে হয়তো সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল এখন বিজয় দেখছে। সাম্রাজ্যবাদীদের নির্লজ্জ সাপোর্টের কারণেই জায়নবাদিরা আজ কোনও নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে হত্যা করছে শিশু, নারী এবং বয়স্কদেরকে। মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ এই সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রটি করছে, তার ভাগীদার হচ্ছে মানবতার পক্ষে সাফাই গাওয়া সব পশ্চিমা কুলাঙ্গাররাও; যারা এখনও চোখ বন্ধ করে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের এই বর্বরতাকে।
এইভাবে বিশ্বের ক্ষমতাসীন শক্তিগুলো মানবতা ও মানবাধিকারকে আরও একবার পদদলিত করলো। যখনই ইসরাইলের কথা আসে তখনই তারা হয়ে যায় বসন্তের কোকিল। সব আন্তর্জাতিক আইন, আদালত, মানবাধিকার, ধর্মীয় অধিকার, সংখ্যালঘু অধিকার, বাঁচার অধিকার, সব কিছুই তখন নিমিষে উধাও হয়ে যায়। তখন শুধু একটি বাক্যই থাকে তাদের মুখে, আর তা হচ্ছে "ইসরাইলকে রক্ষা করা।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যরা সবাই একটি বাক্যই মুখস্ত করেছে এবং তোতাপাখির মতো সে বাক্যটিই সবাই বলে বেড়াচ্ছে, আর তা হল ‘ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার অধিকার আছে …’
ইসরায়েলের এমন বেপরোয়া ও বর্বর আগ্রাসন সারা বিশ্বের কাছে এতো স্পষ্ট ও এতো নগ্নভাবে উপস্থাপিত হওয়ার পরেও ইসরাইলের এই বর্বর হামলাকে ‘আত্মরক্ষা’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা অনৈতিকতা ব্যতীত আর কী হতে পারে? অন্ততপক্ষে আমি জানি না এটাকে আর কী দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে!
তবে সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের স্বার্থের জন্য দুনিয়ার কোথাও কখনও এই অনৈতিকতা প্রদর্শন করতে দ্বিধা করেনি, করছে না এবং করবেও না। সুতরাং,তাদের এই বিব্রতকর বিবৃতিগুলোতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কিন্তু সামান্য পাথর আর গুলতির ভয়ে ইসরায়েল ও পশ্চিমা পরাশক্তিদের ভয়ের কি এমন আছে? কেন তারা হঠাৎ ঘাবড়ে গেছে?
কারণ, ফিলিস্তিনের আন্দোলন ধীরে ধীরে জাতীয়াবাদের খোলস থেকে বেড়িয়ে আসছে। ফিলিস্তিনের মুসলিমরা, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম বুঝতে আরম্ভ করেছে, ইহুদি এবং কাফেরদের সাথে তাদের যুদ্ধ 'পতাকা আর ভূমি'র না; বরং 'আকীদা ও জীবন ব্যবস্থার'। তারা প্রশস্থ অন্তরে গ্লোবাল জিহাদের গুরুত্বকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করছেন। সেই দিন দূরে নয় যেদিন ফিলিস্তিনের পতাকার পরিবর্তে কালেমা পতাকা নিয়ে ফিলিস্তিন জোয়ানরা জিহাদে ঝাপিয়ে পড়বে।
কিছু দিন আগে আমরা ১০ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি মেয়ের করুণ আর্তনাদ শুনেছি। যার পুরো ভিটে-মাটিসহ তার বাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। মেয়েটি সারা বিশ্বের কাছে প্রশ্ন তুলছে, তার কী দোষ? তার পরিবারের কী দোষ? শুধু মাত্র মুসলমান হওয়ার কারণেই কেন তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে? সে এখন কী করবে?
কিন্তু আর্তনাদ শেষে মেয়েটি দৃঢ় কণ্ঠের ঘোষণা করে, 'সে এই ভূমিতেই থাকবে। কেউ তাদেরকে হটিয়ে দিতে পারবে না।'
এই যে অবিচল প্রতিরোধ, এই যে দৃঢ়তা - এগুলো মুসলমানদের হারিয়ে যাওয়া সম্বল। এই দৃঢ়তাই সর্বদা অত্যাচারীদের ওপর মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয় এনে দিয়েছে; ভবিষ্যতেও দিবে। একথা সত্য যে, একটি বিজয়ের জন্য খুব উচ্চমূল্য দিতে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত, ফিলিস্তিনি মুসলমানরা বিজয়ী হবেই …
Comment