প্রিয় ভাই! বর্তমানে আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। যে সময়টাতে এখন আমরা আছি, হাদিসে বর্ণিত আলামত ও নিদর্শনের আলোকে এটাকে কেয়ামতের খুব কাছের সময়ই বলা যায়। এ সময়ে উম্মাহ যে বিভিন্ন ফেতনায় নিপতিত হবে, অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, মতভেদ বেশি হবে এবং দ্বীনের ওপর চলা কঠিন হবে, এবিষয়গুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বিভিন্ন হাদীসে বলে গেছেন। একই সঙ্গে সঠিক দ্বীনের ওপর থাকার উপায়ও তিনি নির্দেশ করে গেছেন। এক হাদিসে এসেছে, ইরবায ইবনে সারিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
صلى بنا رسول الله-صلى الله عليه وسلم – ذات يوم، ثم أقبل علينا، فوعظنا موعظة بليغة ذرفت منها العيون ووجلت منها القلوب، فقال قائل: يا رسول الله! كان هذه موعظة مودع، فماذا تعهد إلينا؟ قال: “أوصيكم بتقوى الله والسمع والطاعة وإن عبدا حبشيا، فإنه من يعش منكم بعدي فسيرى اختلافا كثيرا، فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء، المهديين الراشدين، تمسكوا بها وعضوا عليها بالنواجذ، وإياكم ومحدثات الأمور، فإن كل محدثة بدعة، وكل بدعة ضلالة”. –سنن أي داود 4607. قال المحقق شعيب الأرنؤوط: حديث صحيح
“একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে নামায আদায় করলেন। তারপর আমাদের অভিমুখী হয়ে এমন সারগর্ভ বক্তৃতা করলেন, যার কারণে আমাদের চক্ষু অশ্রুসজল ও অন্তর বিগলিত হয়ে গেল। একজন সাহাবী বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই উপদেশ তো বিদায়ী ব্যক্তির উপদেশ মনে হচ্ছে। আমাদের প্রতি আপনার বিশেষ কি নির্দেশনা আছে বলুন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করার এবং আমীরদের অনুসরণের অসিয়ত করছি, যদিও আমীর হাবশী গোলাম হয়। কারণ, আমার অবর্তমানে তোমাদের যারা বেঁচে থাকবে, অচিরেই তারা প্রচুর মতভিন্নতা দেখতে পাবে। তখন তোমাদের দায়িত্ব হবে, আমার সুন্নাহ ও হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফায়ে রাশেদগণের সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা। তোমরা তা মজবুত ও দৃঢ়ভাবে মাড়ির দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরবে। আর নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকবে। কারণ, প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআহ। আর প্রত্যেক বিদআতই পথভ্রষ্টতা।” -সুনানে আবু দাউদ : ৪৬০৭
হাদিসে বলা হচ্ছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর লোকেরা প্রচুর মতভিন্নতা দেখতে পাবে। হাদিসটিতে ভবিষ্যতে ইখতিলাফ হবে এটা যেমন বলা হয়েছে, তেমনি ইখতিলাফের সময় সঠিক পথে থাকার জন্য করণীয় কী, তাও বলে দেয়া হয়েছে। তা হল, সুন্নাহর অনুসরণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ ও তাঁর পরবর্তী হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাদের সুন্নাহ।
পথভ্রষ্টতা থেকে বেঁচে থাকার উপায় বর্ণনা করে অপর একটি হাদীসে এসেছে-
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: تركت فيكم أمرين، لن تضلوا ما تمسكتم بهما: كتاب الله وسنة نبيه. أخرجه الموطأ. (قال المحقق عبد القادر الأرنؤوط في القدر رقم 3 باب النهي عن القول بالقدر بلاغا، لكن يشهد له حديث ابن عباس عند الحاكم 1/93 بسند حسن فيتقوى به.
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি বিষয় রেখে গেলাম, যতদিন বিষয় দু’টি ধরে রাখবে, ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। সে দু’টি বিষয় হল, আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাহ। -মুয়াত্তা মালেক, তাক্বদীর অধ্যায়, হাদীস নং ৩
এই হাদিসে বলা হচ্ছে, আমরা যদি আল্লাহ তায়ালার কিতাব কুরআন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ আঁকড়ে ধরি, তাহলে আমরা পথভ্রষ্ট হব না, সঠিক পথে থাকতে পারব। উপরোক্ত দু’টি হাদিসের বক্তব্যমতে কুরআন-সুন্নাহর (খুলাফায়ে রাশেদার সুন্নাহসহ) অনুসরণ করলেই কেবল একজন মুসলিম সঠিক পথে থাকতে পারবে এবং পথভ্রষ্টতা থেকে বেঁচে থাকবে।
তো প্রিয় ভাই! আপনি আপনার প্রতিটি কাজ ও আকিদা-বিশ্বাস উপরোক্ত মাপকাঠিতে যাচাই করুন। যে সকল কাজ ও আকিদা কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক হচ্ছে সেক্ষেত্রে তো আলহামদুলিল্লাহ সঠিক পথে আছেন। আর যেসকল কাজ উল্লিখিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হচ্ছে না সেগুলো এখনই পরিহার করুন। এভাবে ইনশাআল্লাহ আপনি সঠিক পথ এবং সঠিক আকিদা অনুযায়ী চলতে পারবেন।
বলা বাহুল্য, সাধারণ মানুষ যেহেতু কুরআন-সু্ন্নাহর ইলম সরাসরি ইলমের নির্ভরযোগ্য উৎসগ্রন্থ থেকে অর্জন করার সক্ষমতা রাখে না, স্বভাবতই তাদেরকে এবিষয়ে এমন হক্কানি রাব্বানি যোগ্য আলেমের শরণাপন্ন হতে হবে, যারা একই সঙ্গে শরীয়াহ সম্পর্কে বিজ্ঞ এবং ন্যূনতম এতটুকু তাকওয়ার অধিকারী যে, দুনিয়ার ভয় কিংবা লোভে তিনি কোনো মুসলিমকে বাতিল পথ দেখাবেন না এবং সত্য গোপন করবেন না। এমন আলেমদের শরণাপন্ন হয়ে নিজের প্রয়োজনীয় ইলম শিখে নিতে হবে এবং শিখতে থাকতে হবে।
অবশ্য যাদের সুযোগ ও হিম্মত আছে, তাদের উচিত ধীরে ধীরে আরবী ভাষা থেকে শুরু করে, কুরআন-সুন্নাহর ইলম সরাসরি উৎসগ্রন্থ থেকে অর্জনের যোগ্য করে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন।
صلى بنا رسول الله-صلى الله عليه وسلم – ذات يوم، ثم أقبل علينا، فوعظنا موعظة بليغة ذرفت منها العيون ووجلت منها القلوب، فقال قائل: يا رسول الله! كان هذه موعظة مودع، فماذا تعهد إلينا؟ قال: “أوصيكم بتقوى الله والسمع والطاعة وإن عبدا حبشيا، فإنه من يعش منكم بعدي فسيرى اختلافا كثيرا، فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء، المهديين الراشدين، تمسكوا بها وعضوا عليها بالنواجذ، وإياكم ومحدثات الأمور، فإن كل محدثة بدعة، وكل بدعة ضلالة”. –سنن أي داود 4607. قال المحقق شعيب الأرنؤوط: حديث صحيح
“একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে নামায আদায় করলেন। তারপর আমাদের অভিমুখী হয়ে এমন সারগর্ভ বক্তৃতা করলেন, যার কারণে আমাদের চক্ষু অশ্রুসজল ও অন্তর বিগলিত হয়ে গেল। একজন সাহাবী বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই উপদেশ তো বিদায়ী ব্যক্তির উপদেশ মনে হচ্ছে। আমাদের প্রতি আপনার বিশেষ কি নির্দেশনা আছে বলুন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করার এবং আমীরদের অনুসরণের অসিয়ত করছি, যদিও আমীর হাবশী গোলাম হয়। কারণ, আমার অবর্তমানে তোমাদের যারা বেঁচে থাকবে, অচিরেই তারা প্রচুর মতভিন্নতা দেখতে পাবে। তখন তোমাদের দায়িত্ব হবে, আমার সুন্নাহ ও হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফায়ে রাশেদগণের সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা। তোমরা তা মজবুত ও দৃঢ়ভাবে মাড়ির দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরবে। আর নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকবে। কারণ, প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআহ। আর প্রত্যেক বিদআতই পথভ্রষ্টতা।” -সুনানে আবু দাউদ : ৪৬০৭
হাদিসে বলা হচ্ছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর লোকেরা প্রচুর মতভিন্নতা দেখতে পাবে। হাদিসটিতে ভবিষ্যতে ইখতিলাফ হবে এটা যেমন বলা হয়েছে, তেমনি ইখতিলাফের সময় সঠিক পথে থাকার জন্য করণীয় কী, তাও বলে দেয়া হয়েছে। তা হল, সুন্নাহর অনুসরণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ ও তাঁর পরবর্তী হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাদের সুন্নাহ।
পথভ্রষ্টতা থেকে বেঁচে থাকার উপায় বর্ণনা করে অপর একটি হাদীসে এসেছে-
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: تركت فيكم أمرين، لن تضلوا ما تمسكتم بهما: كتاب الله وسنة نبيه. أخرجه الموطأ. (قال المحقق عبد القادر الأرنؤوط في القدر رقم 3 باب النهي عن القول بالقدر بلاغا، لكن يشهد له حديث ابن عباس عند الحاكم 1/93 بسند حسن فيتقوى به.
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি বিষয় রেখে গেলাম, যতদিন বিষয় দু’টি ধরে রাখবে, ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। সে দু’টি বিষয় হল, আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাহ। -মুয়াত্তা মালেক, তাক্বদীর অধ্যায়, হাদীস নং ৩
এই হাদিসে বলা হচ্ছে, আমরা যদি আল্লাহ তায়ালার কিতাব কুরআন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ আঁকড়ে ধরি, তাহলে আমরা পথভ্রষ্ট হব না, সঠিক পথে থাকতে পারব। উপরোক্ত দু’টি হাদিসের বক্তব্যমতে কুরআন-সুন্নাহর (খুলাফায়ে রাশেদার সুন্নাহসহ) অনুসরণ করলেই কেবল একজন মুসলিম সঠিক পথে থাকতে পারবে এবং পথভ্রষ্টতা থেকে বেঁচে থাকবে।
তো প্রিয় ভাই! আপনি আপনার প্রতিটি কাজ ও আকিদা-বিশ্বাস উপরোক্ত মাপকাঠিতে যাচাই করুন। যে সকল কাজ ও আকিদা কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক হচ্ছে সেক্ষেত্রে তো আলহামদুলিল্লাহ সঠিক পথে আছেন। আর যেসকল কাজ উল্লিখিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হচ্ছে না সেগুলো এখনই পরিহার করুন। এভাবে ইনশাআল্লাহ আপনি সঠিক পথ এবং সঠিক আকিদা অনুযায়ী চলতে পারবেন।
বলা বাহুল্য, সাধারণ মানুষ যেহেতু কুরআন-সু্ন্নাহর ইলম সরাসরি ইলমের নির্ভরযোগ্য উৎসগ্রন্থ থেকে অর্জন করার সক্ষমতা রাখে না, স্বভাবতই তাদেরকে এবিষয়ে এমন হক্কানি রাব্বানি যোগ্য আলেমের শরণাপন্ন হতে হবে, যারা একই সঙ্গে শরীয়াহ সম্পর্কে বিজ্ঞ এবং ন্যূনতম এতটুকু তাকওয়ার অধিকারী যে, দুনিয়ার ভয় কিংবা লোভে তিনি কোনো মুসলিমকে বাতিল পথ দেখাবেন না এবং সত্য গোপন করবেন না। এমন আলেমদের শরণাপন্ন হয়ে নিজের প্রয়োজনীয় ইলম শিখে নিতে হবে এবং শিখতে থাকতে হবে।
অবশ্য যাদের সুযোগ ও হিম্মত আছে, তাদের উচিত ধীরে ধীরে আরবী ভাষা থেকে শুরু করে, কুরআন-সুন্নাহর ইলম সরাসরি উৎসগ্রন্থ থেকে অর্জনের যোগ্য করে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন।
Comment