Announcement

Collapse
No announcement yet.

দুটি লোমহর্ষক ঘটনা: আমিরুল মু'মিনীন মোল্লা ওমর(রহ.) এর কুটিরে অভিশপ্ত মার্কিন বাহিনীর হানা।🔥🔥

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দুটি লোমহর্ষক ঘটনা: আমিরুল মু'মিনীন মোল্লা ওমর(রহ.) এর কুটিরে অভিশপ্ত মার্কিন বাহিনীর হানা।🔥🔥

    ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের পতনের পর জীবনের বাকি অংশ আমিরুল মুমিনীন মোল্লা উমার(রহ) আফগানিস্তানের জাবুল প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন।


    মোল্লা আব্দুল জব্বার ওমারি, মোল্লা ওমর(রহ) থাকার ব্যবস্থা করেন তার দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ড্রাইভার, মোল্লা আব্দুস সামাদের বাড়িতে। মোল্লা আব্দুস সামাদ তখন কালাত এবং এর আশেপাশের এলাকায় নিয়মিত ট্যাক্সি চালাতেন। পরিবারসহ তিনি থাকতেন জাবুলের নবনিযুক্ত গভর্নর হামিদুল্লাহ খান তোখির বাড়ির কাছেই একটি মাটির তৈরি ঘরে।

    মোল্লা আব্দুস সামাদ বাড়িটি ছিল আর দশটি সাধারণ আফগান বাড়ির মতোই। মাটির দেয়ালের তৈরি সারি বাঁধা অনেকগুলো রুম, আর মাঝখানে বিশাল আঙিনা। একসারি রুমের এক কোণে ছিল ইংরেজি এল-আকৃতির একটি বড় রুম। রুমটিতে প্রবেশের জন্য দৃশ্যমান কোনো দরজা ছিল না। বরং কাবার্ডের আড়ালে লুকানো গোপন একটি দরজা দিয়ে সেই রুমে প্রবেশ করা যেত। এই গোপন রুমটিই হয়ে উঠে মোল্লা ওমর(রহ) এর বাসগৃহ।



    মোল্লা ওমর(রহ্) তার নতুন বাসস্থানে অভ্যস্ত হতে থাকেন। মোল্লা আব্দুস সামাদ তাকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থায় কোনো ত্রুটি রাখেননি। তিনি তার স্ত্রীকেও মোল্লা ওমরের প্রকৃত পরিচয় জানাননি। তার পরিবারের অন্য সদস্যরা অবশ্য জানত, কোনার এল-আকৃতির রুমটিতে গোপনে কেউ বসবাস করছেন। কিন্তু উস্তাদ তাদেরকে শুধু জানিয়েছিলেন লোকটি তালেবানের উচ্চপদস্থ এক নেতা, যার লুকিয়ে থাকার সংবাদ জানাজানি হলে সবাই বিপদে পড়তে পারে।



    মোল্লা আব্দুস সামাদের এই বাড়িটিতে মোল্লা ওমর দীর্ঘ চার বছর ছিলেন। মোল্লা আব্দুস সামাদ নিয়মিত ট্যাক্সি চালাতে চলে যেতেন, কিন্তু আব্দুল জব্বার থাকতেন মোল্লা ওমর(রহ) এর সাথেই। কারো চোখে পড়ে যাওয়া এড়াতে মোল্লা ওমর সাধারণত রুম থেকে বের হতেন না। কিন্তু তারপরেও সেই দিনগুলোতে তারা নিজেদেরকে মোটামুটি নিরাপদই মনে করতেন। সে সময় মার্কিন সেনারা মাঝে মাঝে কান্দাহার থেকে হেলিকপ্টারে করে কালাতে আসত। কিন্তু দুই-একদিন থেকেই আবার কান্দাহারে ফেরত যেত।



    ২০০৪ সালের দিকে তালেবানরা পুনরায় সংগঠিত হতে শুরু করে এবং আমেরিকানদের টহলও বাড়তে শুরু করে। এ সময় মার্কিন সেনারা দুইবার মোল্লা ওমর(রহ) এর খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল। নিচে দুটি ঘটনা উল্লেখ করা হলো।



    ১. প্রথমবার যখন টহল দিতে দিতে মার্কিনিরা বাড়িটির কাছাকাছি চলে আসে, তখন মোল্লা ওমর এবং আব্দুল জব্বার ছিলেন ঘরের বাইরে। সেনাদের অস্তিত্ব টের পেয়ে তারা একগাদা কাঠের স্তুপের আড়ালে সরে পড়েন। রহমানের শোকর, অভিশপ্ত মার্কিনিরা না থেমে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। তাদের নজরে পড়েননি।





    ২. দ্বিতীয়বার মার্কিন সেনারা খোদ বাড়িটিতে তল্লাশি চালানোর জন্য চলে আসে। তারা মোল্লা ওমর(রহ)এর উপস্থিতি জানত না, কিন্তু সম্ভবত কোনো তালেবান নেতা সেখানে লুকিয়ে থাকতে পারেন গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে সেখানে এসেছিল। আব্দুল জব্বার তখন সেখানে ছিলেন না, মোল্লা ওমর(রহ) একা তার রুমের ভেতর ছিলেন। সেনারা প্রতিটি রুম এক এক করে তল্লাশি করে।

    আল্লাহ পাক ক্রুসেডারদের অন্ধ করে দেন। কোনার রুমটি, যেখানে ওই মুহূর্তে আমিরুল মুমিনিন অবস্থান করছিলেন এর দরজা গোপন থাকায় তারা সেটি খুঁজে না পেয়েই ফিরে যায়।



    ********
    ********

    ২০০৪ সালে আমেরিকানরা আব্দুস সামাদ উস্তাদের বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বের একটি স্থানে 'ফরওয়ার্ড অপারেটিং বেজ ল্যাগম্যান' নির্মাণের কাজ শুরু করে। মোল্লা ওমর(রহ) সিদ্ধান্ত নেন, তার অবস্থান পরিবর্তন করার সময় এসেছে। উস্তাদ এবং আব্দুল জব্বারের সহায়তায় মোল্লা ওমর(রহ) এর স্থান হয় কালাত থেকে ২০ মাইল দূরে, সিউরে নামের একটি জেলায়। সেখানে নদীর পাড়ের একটি মাটির তৈরি বাড়িতে মোল্লা আব্দুস সামাদের বিশ্বস্ত একটি পরিবার বাস করত। সেই বাড়ির পেছনে ছোট একটি খুপরিতে স্থান হয় মোল্লা ওমর(রহ) এর।



    তিনি সিউরে পৌঁছার পরপরই আমেরিকানরা সেখানেও একটি ঘাঁটি নির্মাণ করতে শুরু করে। 'ফরোয়ার্ড অপারেটিং বেজ উলভেরিন' নামের ঐ ঘাঁটিটি ছিল মোল্লা ওমরের ঘর থেকে মাত্র ৩ মাইল দূরে। প্রায় ১,০০০ সৈন্যের সেই ঘাঁটিটি থেকে এলাকাটিতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হতো। মোল্লা ওমর(রহ) এবং মোল্লা আব্দুল জব্বার তাদের ঘরে বসে প্রায় সময়ই মার্কিন হেলিকপ্টার উড়ে যাওয়ার শব্দ, পাশের হাইওয়ে দিয়ে সৈন্যদের জীপ ছুটে যাওয়ার শব্দ শুনতে পেতেন।


    সে সময় আমেরিকানদের উপর তালেবানদের আক্রমণ নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তালেবানদের সন্ধানে মার্কিন বাহিনী নিয়মিত গ্রামের ভেতর অভিযান চালাত। গণতল্লাশি শুরু হলে হলে মোল্লা ওমর(রহ) এবং মোল্লা আব্দুল জব্বার তাদের ঘর ছেড়ে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সেচের জন্য খননকৃত টানেলের ভেতর অবস্থান করতেন। সে সময় মাঝে মাঝে পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে থাকা মার্কিন বাহিনীর সাথে তাদের দূরত্ব থাকত মাত্র কয়েক মিটার!



    [লেখাটি সাংবাদিক ব্যাটে ডেম এর লেখার ওপর ভিত্তি করে লিখিত একটি বাংলা লেখার পরিমার্জিত অংশ। সাংবাদিক ব্যাটে ডেম দাবি করেন তিনি এসব তথ্য সরাসরি তালিবান মুজাহিদদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন। তালিবান মুজাহিদদের সাথে কথা বলা অবস্থায় তোলা একাধিক ছবিও আছে।]

Working...
X