Announcement

Collapse
No announcement yet.

যারা মুখস্ত করতে চাচ্ছেন, তাঁদের জন্য (আত-ত্ব-ইফাতুল মানসূরাহ ওয়াল গুরাবা)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • যারা মুখস্ত করতে চাচ্ছেন, তাঁদের জন্য (আত-ত্ব-ইফাতুল মানসূরাহ ওয়াল গুরাবা)

    আত-ত্বয়িফাতুল মানসুরতু ওয়াল-গুরাবা

    نحمده ونصلى على رسوله الكريم اما بعد- فاعوذ بالله من الشيطان الرجيم، بسم الله الرحمن الرجيم-یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَنۡ یَّرۡتَدَّ مِنۡکُمۡ عَنۡ دِیۡنِهٖ فَسَوۡفَ یَاۡتِی اللّٰهُ بِقَوۡمٍ یُّحِبُّهُمۡ وَ یُحِبُّوۡنَهٗۤ ۙ اَذِلَّۃٍ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَعِزَّۃٍ عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ ۫ یُجَاهِدُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ لَا یَخَافُوۡنَ لَوۡمَۃَ لَآئِمٍ ؕ ذٰلِکَ فَضۡلُ اللّٰهِ یُؤۡتِیۡهِ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ

    ★ত্বয়েফায়ে মানসুরার পরিচয়★

    এর আভিধানিক অর্থ হলো- সাহায্যপ্রাপ্ত দল বা জামা'আ। আর শরয়ী পরিভাষায় ত্বয়েফায়ে মানসুরা বলতে এমন দলকে বুঝায়, যে দল আল্লাহর দেয়া বিশেষ হুকুম পালন করার কারণে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে বিশেষভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়। উদাহরণ স্বরুপ তালেবান ও আল-কায়েদার মুজাহিদীদের জামা'আর কথা উল্লেখ করা যায়, যারা আল্লাহ তা'আলার মহান হুকুম জিহাদের ফরযিয়্যাত আদায় করার কারণে আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছেন। যার ফলে চলমান সুপার পাওয়ার এমেরিকা নাস্তানাবুদ হয়েছে। অপমানিত ও অপদস্ত হয়ে পরাজয়ের শেকল গলায় ঝুলিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এবং আল্লাহর যমিনের সে অংশটুকুতে শরিয়া কায়েম হয়েছে। তো এই সবকিছু সংঘটিত হওয়ার পেছনে আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর বিশেষ সাহায্যই সবব বা মৌলিক উপকরণ। আর সেই মৌলিক উপকরণ তথা আল্লাহর বিশেষ সাহায্য অর্জন হয়েছে, আল্লাহর দেয়া বিশেষ হুকুম জিহাদের আমল করার কারণে।

    ★আল-কোর'আনে ত্বয়েফায়ে মানসুরাহ★

    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা পবিত্র কোর'আনে বিভিন্ন আয়াতে একটি বিশেষ কাজের পর বিশেষভাবে সাহায্যের কথা বহুবার উল্লেখ করেছেন। আমরা প্রথমে সেই আয়াতে কারিমাগুলো দেখো আসবো ইনশাআল্লাহ।

    ★প্রথম আয়াত★
    اِذۡ تَقُوۡلُ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَلَنۡ یَّکۡفِیَکُمۡ اَنۡ یُّمِدَّکُمۡ رَبُّکُمۡ بِثَلٰثَۃِ اٰلٰفٍ مِّنَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ مُنۡزَلِیۡنَ, لٰۤی ۙ اِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَ تَتَّقُوۡا وَ یَاۡتُوۡکُمۡ مِّنۡ فَوۡرِهِمۡ هٰذَا یُمۡدِدۡکُمۡ رَبُّکُمۡ بِخَمۡسَۃِ اٰلٰفٍ مِّنَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ مُسَوِّمِیۡنَ
    স্মরণ করুন, যখন আপনি মুমিনগণকে বলছিলেন, এটা কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তিন হাজার ফিরিশতা নাযিল করে তোমাদেরকে সহযোগিতা করবেন? হ্যাঁ, নিশ্চয়, যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তাকওয়া অবলম্বন কর এবং তারা দ্রুত গতিতে তোমাদের উপর আক্রমণ করে, তবে আল্লাহ্‌ পাঁচ হাজার চিহ্নিত ফিরিশতা দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন। (আলে-ইমারান:১২৪-১২৫)

    {আমার ভাই! উল্লেখিত আয়াত দুটিতে সেই বিশেষ কাজটি কী? যার কারণে আল্লাহ প্রথমে তিন হাজার ও পরে পাঁচ হাজার বিশেষ ফেরেশতার মাধ্যমে বিশেষ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন? লক্ষ্য করুন নিঃসন্দেহে সে কাজটি হলো কিতাল।}

    ★দ্বিতীয় আয়াত★
    یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ حَرِّضِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ عَلَی الۡقِتَالِ ؕ اِنۡ یَّکُنۡ مِّنۡکُمۡ عِشۡرُوۡنَ صٰبِرُوۡنَ یَغۡلِبُوۡا مِائَتَیۡنِ ۚ وَ اِنۡ یَّکُنۡ مِّنۡکُمۡ مِّائَۃٌ یَّغۡلِبُوۡۤا اَلۡفًا مِّنَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاَنَّهُمۡ قَوۡمٌ لَّا یَفۡقَهُوۡنَ
    হে নবী! আপনি মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন; তোমাদের মধ্যে বিশজন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দু’শ জনের উপর বিজয়ী হবে এবং তোমাদের মধ্যে এক’শ জন থাকলে এক হাজার কাফিরের উপর বিজয়ী হবে। কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যাদের বোধশক্তি নেই। (আনফাল:৬৫)

    {আমার ভাই! এখানেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা মাত্র বিশজনকে দুশজনের উপর এবং মাত্র একশজনকে একহাজারের উপর বিজয়ী করার সুসংবাদ প্রদান করেছেন। তাহলে কী সেই কাজ? যার কারণে এমন সাহায্যের ওয়াদা? লক্ষ্য করুন, নিঃসন্দেহে সে কাজটি হলো কিতাল!}

    ★তৃতীয় আয়াত★
    اُذِنَ لِلَّذِیۡنَ یُقٰتَلُوۡنَ بِاَنَّهُمۡ ظُلِمُوۡا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰی نَصۡرِهِمۡ لَقَدِیۡرُۨ, الَّذِیۡنَ اُخۡرِجُوۡا مِنۡ دِیَارِهِمۡ بِغَیۡرِ حَقٍّ اِلَّاۤ اَنۡ یَّقُوۡلُوۡا رَبُّنَا اللّٰهُ ؕ وَ لَوۡ لَا دَفۡعُ اللّٰهِ النَّاسَ بَعۡضَهُمۡ بِبَعۡضٍ لَّهُدِّمَتۡ صَوَامِعُ وَ بِیَعٌ وَّ صَلَوٰتٌ وَّ مَسٰجِدُ یُذۡکَرُ فِیۡهَا اسۡمُ اللّٰهِ کَثِیۡرًا ؕ وَ لَیَنۡصُرَنَّ اللّٰهُ مَنۡ یَّنۡصُرُهٗ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَقَوِیٌّ عَزِیۡ
    যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ তাদের প্ৰতি অত্যাচার করা হয়েছে। আর নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাদেরকে সাহায্য করতে সক্ষম। তাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধু এ কারণে যে, তারা বলে, আমাদের রব। আল্লাহ। আল্লাহ যদি মানুষদের এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন; তাহলে বিধ্বস্ত হয়ে যেত নাসারা সংসারবিরাগীদের উপাসনাস্থান, গির্জা, ইয়াহূদীদের উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ—যাতে খুব বেশী স্মরণ করা হয় আল্লাহ্‌র নাম। আর নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাকে সাহায্য করেন যে আল্লাহ্‌কে সাহায্য করে। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।
    {মুহতারাম আখি! এখানেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেন কাদেরকে? মুক্বতিলিনদের জামা'আকে!}

    ★চতুর্থ আয়াত★
    لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا رُسُلَنَا بِالۡبَیِّنٰتِ وَ اَنۡزَلۡنَا مَعَهُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡمِیۡزَانَ لِیَقُوۡمَ النَّاسُ بِالۡقِسۡطِ ۚ وَ اَنۡزَلۡنَا الۡحَدِیۡدَ فِیۡهِ بَاۡسٌ شَدِیۡدٌ وَّ مَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَ لِیَعۡلَمَ اللّٰهُ مَنۡ یَّنۡصُرُهٗ وَ رُسُلَهٗ بِالۡغَیۡبِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ قَوِیٌّ عَزِیۡزٌ
    অবশ্যই আমি আমার রাসূলগনকে পাঠিয়েছি স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও ন্যায়ের পাল্লা, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি আরও নাযিলকরেছি লোহা যাতে রয়েছে প্রচণ্ড (যুদ্ধ) শক্তি এবং রয়েছে মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ। এটা এ জন্যে যে, আল্লাহ প্রকাশ করে দেন কে গায়েব অবস্থায়ও আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণকে (লোহার মাধ্যমে) সাহায্য করে। নিশ্চয় আল্লাহ মহা শক্তিমান, পরাক্রমশালী।
    {নিঃসন্দেহে এই দীন কায়েম হবে পথপ্রদর্শনকারী কিতাব ও তরবারির মাধ্যমে। তাই আল্লাহ পার্থক্য করে দেন কে কিতাব পাওয়ার পর লোহা তথা তরবারির ব্যবহারের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে সাহায্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে তথা দীনকে সাহায্য করবে আল্লাহ তা'আলা তাকেও সাহায্য করার ওয়াদা করেছেন।}
    আল্লাহ তা'আলা বলেন-
    یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَنۡصُرُوا اللّٰهَ یَنۡصُرۡکُمۡ وَ یُثَبِّتۡ اَقۡدَامَکُمۡ
    হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, তবে তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা'সমূহ (জিহাদের ময়দানে) সুদৃঢ় করবেন। (মুহাম্মাদ:৭)

    ★পঞ্চম আয়াত★
    এখন আমরা এমন একটি আয়াতে কারিমা পেশ করবো, যে আয়াতে সর্বাধিক ফেৎনার মাঝেও হকের উপর টিকে থাকা বিশেষ ও হক জামা'আর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবং তাঁদের বিশে ৬ টি গুণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আর এটিই সে দল বা জামা'আ, যা আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন-
    یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَنۡ یَّرۡتَدَّ مِنۡکُمۡ عَنۡ دِیۡنِهٖ فَسَوۡفَ یَاۡتِی اللّٰهُ بِقَوۡمٍ یُّحِبُّهُمۡ وَ یُحِبُّوۡنَهٗۤ ۙ اَذِلَّۃٍ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَعِزَّۃٍ عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ ۫ یُجَاهِدُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ لَا یَخَافُوۡنَ لَوۡمَۃَ لَآئِمٍ ؕ ذٰلِکَ فَضۡلُ اللّٰهِ یُؤۡتِیۡهِ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ

    হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ দ্বীন থেকে ফিরে গেলে, নিশ্চয়ই! আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনবেন (১) যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন (২) এবং যারা তাকে ভালবাসবে; (৩) তারা মুমিনদের প্রতি কোমল (৪) ও কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে; (৫) তারা আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করবে (৬)এবং {আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে} কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবে না। এটা আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছে তাকে তিনি তা দান করেন এবং আল্লাহ্‌ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (মায়েদা:৫৪)

    {উল্লেখিত আয়াতে বর্ণিত ছয় গুণের প্রথম ৪ টিতে পরোক্ষভাবে এবং শেষের ২ টিতে প্রত্যক্ষভাবে মুজাহিদীনদের জামা'আর প্রতি ইংগিত করা হয়েছে।}

    ★হাদিস শরীফে ত্বয়েফায়ে মানসুরাহ★
    ★প্রথম হাদিস★
    حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي مَنْصُورِينَ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ
    কুররাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের একটি দল অব্যাহতভাবে ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) পর্যন্ত সাহায্যপ্রাপ্ত হতে থাকবে এবং যারা তাদের অপদস্থ করতে চায় তারা তাদের কোন ক্ষতি করতে সক্ষম হবে না। (ইবনে মাজাহ:৬)
    (তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: তিরমিযী ২১৯২, আহমাদ ১৫১৬৯, ১৯৮৫৪। তাহক্বীক্ব আলবানীঃ সহীহ। তাখরীজ আলবানীঃ সহীহা ১/৩/১৩৫)

    {আর এই সাহায্যপ্রাপ্ত দলটিই মুক্বাতিলিনদের জামা'আ তা অন্যন্য হাদিসে সুস্পষ্টই বলে দেয়া হয়েছে।}

    ★দ্বিতীয় হাদিস★
    নবিজী সাঃ বলেন-
    حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ عَلَى مَنْ نَاوَأَهُمْ، حَتَّى يُقَاتِلَ آخِرُهُمُ الْمَسِيحَ الدَّجَّالَ
    ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের একটি দল সর্বদা সত্যের পক্ষে জিহাদ করতে থাকবে এবং তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হবে। অবশেষে তাদের সর্বশেষ দলটি ঈসা (আঃ)-এর নেতৃত্বে দাজ্জালের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে। (আবু দাউদ:২৪৮৪, সহিহ)

    ★তৃতীয় হাদিস★
    حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ شُجَاعٍ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَحَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، قَالُوا حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، - وَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدٍ - عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ - قَالَ - فَيَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ أَمِيرُهُمْ تَعَالَ صَلِّ لَنَا ‏.‏ فَيَقُولُ لاَ ‏.‏ إِنَّ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ أُمَرَاءُ ‏.‏ تَكْرِمَةَ اللَّهِ هَذِهِ الأُمَّةَ ‏

    ওয়ালীদ ইবনু শুজা', হারূন ইবনু আবদুল্লাহ ও হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) ..... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, কিয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মতের একদল সত্য দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকবে এবং অবশেষে ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন। মুসলিমদের আমীর বলবেন, আসুন সালাতে আমাদের ইমামাতি করুন! তিনি বলবেন না, আপনাদেরই একজন অন্যদের জন্য ইমাম নিযুক্ত হবেন। এ হলো আল্লাহ তা'আলা প্রদত্ত এ উম্মতের সম্মান। (মুসলিম:২৮৬) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯২ ইসলামিক সেন্টারঃ ৩০৩)

    ★চতুর্থ হাদিস★
    حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ أَبِي مُزَاحِمٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، بْنِ جَابِرٍ أَنَّ عُمَيْرَ بْنَ هَانِئٍ، حَدَّثَهُ قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ، عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي قَائِمَةً بِأَمْرِ اللَّهِ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ أَوْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ ظَاهِرُونَ عَلَى النَّاسِ

    মানসূর ইবনু আবু মুযাহিম (রহঃ) ..... 'উমায়র ইবনু হানী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মু'আবিয়াহ (রাযিঃ) কে মিম্বারের উপর আসীন অবস্থায় বলতে শুনেছি "আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাতের একটি জামা’আত আল্লাহর আদেশের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যারা তাদের সঙ্গ ত্যাগ করবে বা বিরোধিতা করবে, তারা তাদের কোনই ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। এভাবে আল্লাহর আদেশ তথা কিয়ামত এসে পড়বে আর তারা তখনও লোকের উপর বিজয়ী থাকবে।( মুসলিম:৪৮৪৯) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৮০২, ইসলামীক সেন্টার ৪৮০৩)
    (উল্লেখিত সকল হাদিসের আলোকে আমরা একথাই জানতে পারলাম যে, ত্বয়েফাতুল মুক্বাতিলিনই হলো ত্বয়েফাতুল মানসুরাহ)

    ★গুরাবার পরিচয়★
    "গুরাবা" গরিবুন এর বহুবচন। এর অর্থ-অপরিচিত। শরয়ী পরিভাষায় গুরাবা তাঁদেরকে বলা হয়, {যারা দীন ও ঈমান হিফাজতের লক্ষ্যে ভিবিন্ন গোত্র থেকে একত্রিত হয়, ফিৎনা থেকে দূরে অবস্থান করে। এবং যারা সেই মুহুর্তে সংশোধন ও সংস্কারের কাজ করেন, যখন উম্মাতের অধিকাংশ মানুষ বিপর্যয় ও ফাসাদ সৃষ্টি করে।}
    [তাঁরা সংখ্যায় কম হন এবং তাঁদের বিরোধীদের সংখ্যা, তাঁদের অনুসারীদের চেয়ে বেশি হয়। কিন্তু তাঁদের বিরোধীরা তাঁদের কোনই ক্ষতি করতে পারেনা। তাঁরা এতোটাই অপরিচিত যে, সমাজে তাঁদের কোন পদ নেই, তাঁদের কোন আবদার-আবেদনও গ্রহণ করা হয়না এমনকি তাদের গোত্র ও সমাজ থেকে বহিস্কার করা হয়।]
    হাদিস শরিফে তাঁদের অনেক ফজিলত ও প্রশংসা বর্ণিত হয়েছে।

    ★আল-কোর'আনে গুরাবা★
    فَلَوۡ لَا کَانَ مِنَ الۡقُرُوۡنِ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ اُولُوۡا بَقِیَّۃٍ یَّنۡهَوۡنَ عَنِ الۡفَسَادِ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّنۡ اَنۡجَیۡنَا مِنۡهُمۡ ۚ وَ اتَّبَعَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مَاۤ اُتۡرِفُوۡا فِیۡهِ وَ کَانُوۡا مُجۡرِمِیۡنَ
    অতএব তোমাদের পূর্বের প্রজন্মসমূহের মধ্যে এমন প্রজ্ঞাবান কেন হয়নি, যারা যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি থেকে নিষেধ করত? অল্প সংখ্যক ছাড়া, যাদেরকে আমি তাদের মধ্য থেকে নাজাত দিয়েছিলাম। আর যারা যুলুম করেছে তারা বিলাসিতার পেছনে পড়ে ছিল, আর তারা ছিল অপরাধী (হুদ:১১৬)

    ★হাদিস শরিফে গুরাবা★
    ★প্রথম হাদিস★
    حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، جَمِيعًا عَنْ مَرْوَانَ الْفَزَارِيِّ، قَالَ ابْنُ عَبَّادٍ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، عَنْ يَزِيدَ، - يَعْنِي ابْنَ كَيْسَانَ - عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ بَدَأَ الإِسْلاَمُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ كَمَا بَدَأَ غَرِيبًا فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ
    মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ ও ইবনু আবূ উমর (রাঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ইসলাম শুরুতে অপরিচিত ছিল, অচিরেই তা আবার শুরুর মত অপরিচিত হয়ে যাবে। সূতরাং এরুপ অপরিচিত অবস্থায়ও যারা ইসলামের উপর কায়েম থাকবে, তাদের জন্য মুবারকবাদ। (মুসলিম:২৭০)

    ★দ্বিতীয় হাদিস★
    حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، حَدَّثَنِي كَثِيرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَوْفِ بْنِ زَيْدِ بْنِ مِلْحَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِنَّ الدِّينَ لَيَأْرِزُ إِلَى الْحِجَازِ كَمَا تَأْرِزُ الْحَيَّةُ إِلَى جُحْرِهَا وَلَيَعْقِلَنَّ الدِّينُ مِنَ الْحِجَازِ مَعْقِلَ الأُرْوِيَّةِ مِنْ رَأْسِ الْجَبَلِ إِنَّ الدِّينَ بَدَأَ غَرِيبًا وَيَرْجِعُ غَرِيبًا فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ الَّذِينَ يُصْلِحُونَ مَا أَفْسَدَ النَّاسُ مِنْ بَعْدِي مِنْ سُنَّتِي ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏
    কাসীর ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আওফ ইবনু যাইদ ইবনু মিলহা (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সাপ যেভাবে (সংকুচিত হয়ে) তার গর্তে ফিরে যায় তেমনি দীন ইসলামও এক সময় সংকুচিত হয়ে হিজাযে ফিরে আসবে। পাহাড়ী বকরী যেমন পাহাড় শৃংগে আশ্রয় নেয়, দীন ইসলামও তেমন হিজাযে আশ্রয় নিবে। দীন ইসলাম তো অপরিচিত অবস্থায় যাত্রা শুরু করছিল এবং অচিরেই অপরিচিত অবস্থায় ফিরে আসবে অর্থাৎ অপরিচিত হয়ে যাবে। সুতরাং অপরিচিতদের জন্য সংবাদ, যারা আমার সুন্নাত বিপর্যস্ত হয়ে যাবার পর তা পুনরুজ্জীবিত করে। (তিরমিযি:২৬৩০ হাসান সহিহ)

    ★তৃতীয় হাদিস★
    حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا بْنُ عَدِيٍّ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ عَنْ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي إِسْحَقَ عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الْإِسْلَامَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا أَظُنُّ حَفْصًا قَالَ فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ قِيلَ وَمَنْ الْغُرَبَاءُ قَالَ النُّزَّاعُ مِنْ الْقَبَائِلِ
    আব্দুল্লাহ ইবনু উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ “ইসলাম শুরুতে অপরিচিত ছিল, অচিরেই তা আবার শুরুর মত অপরিচিত হয়ে যাবে।” হাফসার ধারণা, তিনি এও বলেছেন: “সূতরাং এরূপ অপরিচিত অবস্হায়ও যারা ইসলামের উপর কায়েম থাকবে, তাদের জন্য মুবারকবাদ।” জিজ্ঞেস করা হলো, ‘গুরাবা’ কারা? তিনি বলেন: “বিভিন্ন গোত্র হতে বের করে দেওয়া লোকেরা।” (সুনানুদ দারেমী:২৭৯৩, সহিহ)

    ★চতুর্থ হাদিস★
    أحب شيء إلى الله تعالى الغرباء، قيل: ومن الغرباء؟ قال: الفرارون بدينهم، يبعهثم الله يوم القيامة مع عيسى ابن مريم عليهما السلام ضعيف - أخرجه أبو نعيم في " الحلية
    আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় বস্তু হচ্ছে গুরাবারা। জিজ্ঞেস করা হলো, গুরাবা কারা? তিনি বললেনঃ যারা তাদের দ্বীন নিয়ে পলায়ন করে তারা। তাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামতের দিন ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ)এর সাথে উঠাবেন (আলহিলইয়্যাহ" (১/২৫) যয়িফ, দাইলামী (১/১/৮৬)

    ★পঞ্চম হাদিস★
    طوبى للغرباء طوبى للغرباء فقيل ومن الغرباء يا رسول الله قال ناس صالحون قليل في ناس سوء كثير من يعصيهم اكثر ممن يطيعهم
    সুসংবাদ গুরাবাদের জন্য, সুসংবাদ গুরাবাদের জন্য! অত:পর, জিজ্ঞেস করা হলো গুরাবা কারা? হে আল্লাহর রাসূল সাঃ! তিনি সাঃ বললেন- অনেক মন্দ মানুষের মাঝে এমন অল্প কিছু সৎ লোক যাদের অনুসারীর চেয়ে বিরুদ্ধাচরণকারীর সংখ্যা বেশি। (মুসনাদে আব্দুল্লাহ ইবনুল মোবারক: ২৩)
    سبحان ربك رب العزة عما يصفون وسلام على المرسلين والحمد لله رب العلمين






  • #2
    আত্ব ত্বায়েফা আল মুনসরাহ সম্পর্কে গূরত্বপূর্ণ লেখা ইনশাআল্লাহ
    বন্দী ভাই ও তাদের পরিবারের জন্য আপনার সাহায্যের হাতকে প্রসারিত করুন

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহু খাইরান ফিদ্দুনয়া ওয়াল আখিরাহ।

        Comment


        • #5
          جزاكم الله احسن الجزاء

          Comment


          • #6
            যারা পূর্নাঙ্গ শরিয়ত মানবে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে যেই হেদায়েত নিয়ে এসেছে ঠিক সেই হেদায়েতের উপর পূর্নাঙ্গ ভাবে বহাল থাকবে তারাই হল আত্বায়েফা আল মনসূরা কারণ আমরা দেখতে পাই ওহুদ এবং হুনাইনের যুদ্ধে সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর আদেশের সামান্য ব্যতিক্রম করার ফলে আল্লাহ সাহায্য তাদের থেকে উঠে গিয়ে তাদের উপর বিপদ আপতিত হয়েছে।
            পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

            Comment

            Working...
            X