যারা জিহাদে অংশগ্রহন করে না তাদের শাস্তি
আল্লাহ তায়ালা বলেন
قُلْ إِن كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُم مِّنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ [٩:٢٤]
বল, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান-যাকে তোমরা পছন্দ কর-আল্লাহ, তাঁর রসূল ও তাঁর রাহে জেহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত, আর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। (সূরা আত তাওবাহ ৯:২৪)
এই আয়াতে তাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্কবানী রয়েছে যারা তাদের নিজেদের কারণে এবং তাদের সম্পদের কারণে জিহাদ পরিত্যাগ করে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ ۚ أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ * إِلَّا تَنفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কী হল, যখন আল্লাহ তায়ালার পথে বের হওয়ার জন্য তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখিরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরন অতি অল্প। যদি বের না হও তবে আল্লাহ তায়ালার তোমাদের মর্মন্তদ আযাব দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন। তোমরা তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা, আর আল্লাহ তায়ালা সর্ববিষয়ে শক্তিমান। (সূরা আত তাওবাহ ৯:৩৮-৩৯)
فَرِحَ الْمُخَلَّفُونَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلَافَ رَسُولِ اللَّهِ وَكَرِهُوا أَن يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَقَالُوا لَا تَنفِرُوا فِي الْحَرِّ ۗ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا ۚ لَّوْ كَانُوا يَفْقَهُونَ * فَلْيَضْحَكُوا قَلِيلًا وَلْيَبْكُوا كَثِيرًا جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
“পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে আনন্দ লাভ করেছে; আর জান ও মালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করতে অপছন্দ করেছে এবং বলেছে, এই গরমের মধ্যে অভিযানে বের হয়ো না। বলে দাও, উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম। যদি তাদের বিবেচনা শক্তি থাকত। অতএব, তারা সামান্য হেসে নিক এবং তারা তাদের কৃতকর্মের বদলাতে অনেক বেশী কাঁদবে” (তাওবাহ্ ৮১-৮২)
- ইবনে উমার কর্তৃক বর্ণিত আমি রাসূলুলাহ্ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, “যদি তোমরা ইনাহ্ (এক ধরণের সুদ) করার এবং গরুর লেজ অনুসরন কর এবং কুষক হয়ে পরিতৃপ্ত— হয়ে যাও এবং জিহাদ প্রত্যাখ্যান কর আল্লাহ তায়ালা − তোমাদের উপর লাঞ্চনা অবতরন করবেন যা ততক্ষণ পর্যন্ত উঠিয়ে নেওয়া হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের ধর্মের দিকে প্রত্যাবর্তন কর।” (আবু দাউদ-সহীহ)
হাদীছটির অর্থ হল যদি মানুষ কষিকাজ এবং এর অনুরূপ কোন কাজে নিজেদের জড়িয়ে ফেলার কারনে জিহাদ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা − তাদের উপর তাদের শত্রদেরকে ছেড়ে দেবেন; তাদের উপর লাঞ্চনা বয়ে আনবেন এবং তা ততক্ষন পর্যন্ত দূর করা সম্ভব না যতক্ষন পর্যন্ত না তারা তাদের দায়িত্বের দিকে প্রত্যাবর্তন করে এবং তা শুরু করে এবং সেটি হল অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা; তাদের ব্যাপারে কঠোর ও নিষ্ঠুর হওয়া; দ্বীন প্রতিষ্টিত করা; ইসলাম ও তার অনুসারীদের বিজয় দেয়া এবং আল্লাহ তায়ালার− প্রতিশ্রতি উর্ধ্বে উন্নিত করা এবং কুফর ও তার অনুসারীদের আবমাননা করা। এই হাদীছটি এটা তুলে ধরে যে, জিহাদ ছেড়ে দেওয়া হল ইসলাম ছেড়ে দেওয়া কারন রাসূলুলাহ্− (সাঃ) বলেছেনঃ “যতক্ষন পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের ধর্মের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে”।
- আবু বকর (রা.) বলেন যে, যদি কোন ব্যক্তি জিহাদ বন্ধ করে দেয় তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাদের সবার উপর শান্তি আরোপ করবেন/তাদেরকে শান্তি দ্বারা আবৃত করবেন। আল তাবরানী (বিশ্বস্ত হাদীছ সুত্রে)
- আসাকির বর্ণনা করেন যে, যখন আবু বকর (রা.) খলীফা হলেন, তখন তিনি পুলপিটে দাঁড়ান এবং যা বলেন তা হল, “যদি মানুষ যুদ্ধ না করে তবে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে দারিদ্র্য দ্বারা শাস্তি দিবেন।” কিছু মানুষ হয়ত বলবে যে, এমন কিছু মানুষ আমি দেখি যারা জিহাদ করেনা কিন্তু সম্পদশালী এর উত্তর হল সম্পত্তি মানে অর্থের পরিমান না, কিন্তু সম্পত্তি হল পরিতৃপ্তি এবং সন্তোষ যা হৃদয়ের মাঝে বিদ্যমান থাকে। যখন মানুষ যুদ্ধ বন্ধ করে তখন সে যুদ্ধ জয়ের পুরস্কার হারায়। যখন তারা তা করে উপরন্তু নানাবিধ পথে অর্থ উপার্জনের চেষ্টায় লিপ্ত হয়; এমনকি তারা অন্যায় পথে অর্ উপার্জনের দিকেও পা বাড়ায়। এমন অবস্থায় তুমি তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যকই পাবে যাদের সম্পদ/উপার্জন হালাল। তারা তখন পার্থিব কিঞ্চিৎ সম্পদের জন্য আকাংক্ষা করতে থাকে। এটা তাদেরকে লাঞ্চনাগ্রস্ত করে দেয় এবং তারা অর্থের কাছে দাস হয়ে পড়ে। কিন্তু মুজাহিদরা লোভ হতে মুক্ত এবং তারা তাদের অর্জিত সম্পদের (পরলোকের জন্য সঞ্চিত সম্পদ) জন্য আল্লাহ তায়ালার উপর নির্ভর করে। আল্লাহ তায়ালা তাকে বিজয়-পুরস্কার দ্বারা সহায়তা করেন। সে তা জয় করে তার তলোয়ার দ্বারা এবং এটি সম্পর্ন হালাল।
- আবু হুরাইরাহ (রা.) বর্ননা করেন যে রাসূলুলাহ্ (সাঃ) বলেন “যে ব্যক্তি যুদ্ধ করেনি অথবা যুদ্ধের জন্য নিয়্যতের করেনি এমন ব্যক্তি মৃত্যু বরন করলে সে মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (মুসলিম)
- আবু উমামাহ্ কর্ণনা করেন রাসূলুলাহ্ (সাঃ) বলেন “যে ব্যাক্ত যুদ্ধ করেনি বা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করেনি অথবা তার যে কার অনুপস্থিতিতে রাখেনি আল্লাহ তায়ালা তাকে এক দুর্দশা দ্বারা আঘাত করবেন।” আবু দাউদ (সম্মতি পূর্ণ সহীহ)
যারা পিছন পড়ে থাকে তাদের জন্য একটি উপদেশ
তোমরা যারা জিহাদকে অবহেলা করেছ এবং সফলতার পথ হতে দূরে সরে থেকেছঃ তোমরা নিজেদেরকে আল্লাহ তায়ালার করুণা রহমত হতে বঞ্চিত হবার অবস্থানে নিয়ে এসেছ এবং নিজেদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার হতে বঞ্চিত করেছ।
কিসে তোমাদের পেছনে ফেলে রাখল? কেন তোমরা মুজাহিদীনদের সারিতে যোগদান করনি? কেন তোমরা তোমাদের জীবন/আযথা ও সম্পদ বিসর্জনে ইতস্তত করেছ?
নিম্নলিখিত কারণগুলোর একটি নিশ্চয় হবেঃ দীর্ঘ জীবণ কামনা; পরিবার, সম্পত্তি, বন্ধুবান্ধবের (সাথে সম্বন্ধ) আসক্তি; জিহাদের আগে আরও কিছু সৎকর্ম করবার বাসনা; সুন্দরী স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা; ক্ষমতা/পদমর্যাদা; অথবা আরামদায়ক জীবনোপকরণের প্রতি আসক্তি। এছাড়া আর কছুই তোমাদের ধরে রাখতে পারেনা; উপরে বর্ণিত কারনগুলোর কোন একটিই তোমাদেরকে আল্লাহ তায়ালা র থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। তোমরা কি শুনতে পাওনা তোমাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা র ডাক, “হে মুমিনগন! তোমাদের কি হল যে, যখন তোমাদেরকে বলা হয় -বের হও আল্লাহ তায়ালার− পথে, তখন তোমরা মাটিতে লেগে থাক (অলস ভাবে বসে থাক) তাহলে কি তোমরা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবনের উপর পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? বস্তুতঃ পার্থিব জীবনের ভোগ বিলাস তো আখিরাতের তুলনায় কিছুই নয় অতি সামান্য।” (সূরা আত তাওবাহ ৯;৩৮)
মনেযোগ দিয়ে শোন, যা কিছু তোমাদের জিহাদে যাওয়া হতে বিরত রাখছে তার প্রতি কি জবাব আমি দিই। তাহলে তোমরা উপলব্ধি করতে পারবে যে তোমরা (ভাল থেকে) বঞ্চিত এবং মনে রাখতে পারবে যে তোমরা নিজেরা আর শয়তান তোমাদের জিহাদে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছে।
১. দীর্ঘ জীবন কামনা
আলহর নামে বলছি, নিভীকতা আয়ু কমিয়ে দেয় না; আর কাপুরুষতা একে বৃদ্ধি করনা। আল্লাহ তায়ালা − বলেন, “প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় আছে, সুতরাং যখন সেই নির্দিষ্ট সময় উপস্থিত হবে, আল্লাহ তায়ালা − তখন কাউকেই অবকাশ দিবেন না তোমরা যা কর আল্লাহ তায়ালা − তা সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত” (সূরা মুনাফিকুন ৬৩;১১)
এবং তিনি আরও বলেন, “জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।” (সূরা আনকাবুত ২৯;৫৭)
তোমরা যারা নিজেদের সাথে প্রতারনা করেছ, মনে রেখ মৃত্যুকালে তীব্র বেদনা ও যন্ত্রনা রয়েছে আর কিয়ামতের পর বিচার দিবসে রয়েছে প্রচন্ত ভয়। তোমাদের মনে পড়ে কি, যে শহীদ এই সমস্ত কিছু থেকে মুক্তি প্রাপ্ত হয়?
সে মুত্যু যত্রনার কিছুই অনুভব করে না- সামান্য কাঁটা ফোটার মত ব্যাথা ছাড়া। প্রিয় ভাই আমার, তবে কেন এমন সুযোগ হেলায় হারানো? আর মুত্যুর পর কবরের অযাব থেকে তুমি মুক্তিলাভ করবে, কবরে ফিরেশতাদের কোন প্রশ্ন উত্তরের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে না, এবং বিচার দিবসে যখন সবাই থাকবে ভীত সন্ত্রস্থ তখন তুমি থাকবে শাস্ত স্থির। মৃত্যুর পর তোমার আত্মা একটি পাখির দেহে ঢুকিয়ে দেয়া হবে যা জান্নাতে উড়ে বেড়াবে। সাধারন মৃত্যু এবং শাহীদ হবর মধ্যকার পার্থকটা বুযতে পারছ তো?
২. পরিবারের সাথে সম্পৃক্ততা
যা আপনাকে জিহাদে যাওয়া থেকে বিরত রাখছে, তা যদি হয় পরিবার পরিজন, সহায় সম্পত্তি, বন্ধু বান্ধব, তবে দেখুন আল্লাহ তায়ালা − কী বলেন, “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে।” (সূরা সাবা, ৩৪ঃ৩৭)
আরও বলেন তোমরা জেনে রেখ যে, “তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ বৈ কিছু নয়।”
(সূরা হাদীদ ৫৭;২০)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন “জান্নাতে চাবুকের নিচে বা পায়ের নিচের জমিটুকুও এই পৃথিবী এবং এর ভেতর যা কিছু আছে তার সব থেকে উত্তম।” (বুখারী)
সুতরাং জান্নাতের বিশাল রাজ্য এই পার্থিব পরিবারের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে, যারা অচিরেই মৃতদের মাঝে শামিল হবে? হতে পারে এই পরিবারই আপনার প্রতি বিদ্বেষ, দূর্ব্যবহ্যর আর ঈর্ষা পোষন ,করে। যদি আপনার টাকা পায়সা থাকে তবে তারা আপনাকে ভালবাসে, আর যদি আপনি দেউলিয়া হন তবে তারা আপনাকে ত্যাগ করে। একদিন তারা আপনার সাথে, অন্যদিন আপনার বিরুদ্ধে। অবশেষে বিচার দিবসে, তারা আপনাকে আর ঘাটবে না এবং এক পয়সা পরিমান ছাড়ও তারা আপনাকে দেবে না/এমনকি পরস্পরের জন্যও তারা আপনাকেই দায়ী করবে। তারা প্রত্যেকেই সেদিন নিজেকে উদ্ধার করতে চাবে, এমনকি যদি এর বদলে আপনাকে জাহান্নামের আগুনে জলতে হয়।
৩. সম্পদের প্রতি ভালবাসা
যদি এটাই আপনাকে জিহাদ হতে বিমুক রেখে থাকে তাহলে বলতে হয়, এ কী করে সম্ভব যখন আপনি জানেন যে পরীকক্ষামূলক এই সম্পদ আপনাকে একসময় হারাতে হবে? এবং এই সম্পদের জন্যই বিচার দিবস আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে কীভাবে এই সম্পদ গড়ে তুলেছেন? আর কীভাবে তা খরচ করেছেন? এ ২টি প্রশ্ন আপনাকে এমন এক দিনে জিজ্ঞাসা করা হবে যেদিন একটি বাচ্চাও চুল পেঁকে বুড়ো হয়ে যাবে। বড়ই ভয়ংকার সে দিন।
আল্লাহ তায়ালা র রাসূল (সা) বলেছেন, “দরিদ্র মুসলিমরা ধনী মুসলিমদের অর্ধদিন পূবেই জান্নাতে প্রবেশ করবেঃ (যা হবে) ৫০০ বছর (এর সমান)!”
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমাদরে সম্পদ ও সন্তান সন্ততি তো তোমাদের জন্য পরীক্ষা; আল্লাহ তায়ালা রই− নিকটে রয়েছে মহা পুরষ্কার।” (সূরা তাগাবুন ৬৪;১৫)
এরপরও কীভাবে আপনার সম্পদ আপনাকে জিহাদ হতে বিরত রাখে?
৪. সন্তান সন্ততির প্রতি ভালবাসা এবং তাদের জন্য উদ্বিগ্র হওয়া
এর কারন কি এই যে আপনি তাদের জন্য উদ্বিগ্ন? কিন্তু আপনার চেয়ে আল্লাহ তায়ালাই− তাদের জন্য অনেক বেশী চিন্তাশীল। আল্লাহ তায়ালা − কি তাদের ব্যবস্থা করে দেননি যখন তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন মাতৃগর্ভে ছিল!
এমন এক সন্তান কি করে আপনাকে জিহাদ হতে বিরত রাখে যখন ছোটকালেও তাকে নিয়ে আপনি চিন্তিত ছিলেন আর বড় হবার পরও। তারা সুস্থ হোক বা অসুস্থ আপনি তাদের নিয়েই চিন্তা ভাবনা করেন্ আপনি তাদের অবজ্ঞা করলে তারা বিদ্রোহ ও বিরোধিতা করে। তাদেরকে উপদেশ দিলে তারা আপনাকে ঘৃনা করে। আপনার এত ভালবাসার পরও, যখন আপনি বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হন, তখন তারা আপনাকে পরিত্যাগ করে চলে যায়! এরপরও আপনি তাদের আশীর্বাদ হিসেবে দেখেন!
আপনার মন থেকে তাদের বিতাড়িত করুন বের করে দিন! তাদের যিনি সৃষ্টিকর্তা তার হাতে সপে দিন ওদের। আর আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করুন তাদের সু-ব্যবস্থার জন্য যেমনটি নিজের জন্যও তাঁরই উপর ভরসা করেন। তাদের ব্যবস্থার ব্যাপারে যদি আপনি আল্লাহ তায়ালা র উপর ভরসা করতে না পারেন তবে এটা কী করে স্বীকার করেন যে আল্লাহ তায়ালাই− এই আসমান জমীনের সব কিছুর নিয়ন্ত্রক?
আল্লাহ তায়ালার নামে বলছি, ওদের বা আপনার উপর যে মঙ্গল বা অমঙ্গল আপতিত হয় তার উপর আপনার কোনই হাত নেই। তাদের বা আপনার নিজের জীবনের উপর আপনার কোনই নিয়ন্ত্রন নেই। আপনার আয়ুর সাথে ১টি দিন যোগ করার ক্ষমতাও আপনার নেই। একদিনের মধ্যেই আপনি মৃত্যুবরন করবেন এবং সন্তানদের ইয়াতীম হিসেবে রেখে যেতে হবে। তখন আপনি আফসোস করবেন হায় আমার এতিমরা; আমি যদি শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারতাম! জবাব দেয়া হবেঃ এখন অনেক দেরী হয়ে গেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন।
“হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর এবং ভয় কর সেই দিনকে যখন পিতা সন্তানের কোন উপকারে আসবে না এবং সন্তানও কোন উপকারে আসবে না তার পিতার! আল্লাহ তায়ালার− প্রতিশ্রতি সত্য সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সেই প্রবঞ্চক (শয়তান) যেন তোমাদেরকে কিছুতেই আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে।” (সূরা লুকমান ৩১;৩৩)
এখন, আপনার সন্তান যদি সফলকামদের (জান্নাতী) অন্তর্ভুক্ত হয় তবে আপনাদের জান্নাতে পুনর্মিলিত করা হবে। আর যদি সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয় তবে তার জন্য অপেক্ষা কেন? এখন থেকেই আলাদা হয়ে যান! যদি সত্যই আপনি আপনার সন্তানের জন্য উদ্বিগ্ন হন তবে শহীদ হন। আপনি পরিরারে ৭০টি সদস্যের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আর কীসের জন্য অপেক্ষা?
৫. আপনার বন্ধু বান্ধব
যদি আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব পরিচিতদের ফেলে যেতে অপারগ হন তবে বিচার দিনের কথা চিন্তা করুন। সে দিন বন্ধু শক্রতে পরিনত হবে কেবল সৎকর্মশীলগন ব্যাতীত । অতএব আপনার বন্ধুরা যদি সৎ কর্মশীল না হয় তবে তাদের সাথে আর থাকতে চেয়েন না কেননা কাল অবশ্যই তারা আপনার বিরুদ্ধে যাবে। তবে তারা যদি সৎকর্মশীল হযে থাকে তবে আল্লাহ তায়ালা − আপনাদের এর চেযে ভাল জায়গায় পুর্নমিলিত করবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
“তাদের অন্তরে যে ক্রোধ ছিল, আমি তা দূর করে দেব। তারা ভাই ভাইয়ের মত সামনা-সামনি আসনে বসবে। ” (সূরা হিজর ১৫;৪৭)
৬. ক্ষমতা ও মর্যাদা
আপনি হয়ত মুজাহিদীনদের সারিতে যোগ দেয়া হতে বিরত রয়েছেন কারন আপনি যে উচ্চপদ, ক্ষমতা ও মর্যাদা হাসিল করেছেন এই দুনিয়ার তা হারাতে চান না। আপনি এখন যে পদে অধিষ্ঠ হয়েছেন এর আগে আর কতজন এই পদে ছিল। এ পদ যদি তাদের ছেড়ে যেতে পারে তবে নিঃসন্দেহে একদিন আপনাকেও ছেড়ে যেতে হবে। আপনার ক্ষমতা সে তো অস্থায়ী আর আপনার প্রতিপত্তি মর্যাদা এসবও মানুষ শীঘ্রই ভুলে যাবে। আপনার পদমর্যদা, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি আপনাকে জান্নাতের পথ হতে দূরে রাখছে। জান্নাতের সর্বনিম্ন ব্যাক্তিও এই পৃথিবীর দশগুন এলাকা এবং এর অন্তর্ভূক্ত সবকিছুর অধিকারী হবে। এতো কেবল জান্নাতের সর্বনিম্ন ব্যক্তির মর্যদা ও ক্ষমতা যা এ পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতা বান রাজার চেয়েও বেশি।
এই পৃথিবীর কিছুই দূষণমুক্ত বা বিশুদ্ধ নয়। আপনি যে সামাজিক মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন, এটার বেশ বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে হতাশাব্যঞ্জক অনেক কিছু। ক্ষমতা ও পদমর্যদার জন্য অপনাকে অনেক লড়াই করতে হবে। এতে অনেক শত্রর জন্ম হবে আর হারাতে হবে বন্ধুদের। পথিমধ্যে অনেক বেদনা, অনেক ব্যর্থতা সহ্য করতে হবে। আর জান্নাত এ সমস্ত কিছু থেকে মুক্ত। আল্লাহ তায়ালা − বলেন, “স্থায়ী জান্নাত, তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের সৎকর্মশীল বাপ-দাদা, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানেরা। ফেরেশতারা তাদের কাছে আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে। বলবেঃ তোমাদের সবরের কারণে তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আর তোমাদের এ পরিণাম-গৃহ কতই না চমৎকার।” (সূরা রাদঃ ১৩;২৩-২৪)
৭. আরামদায়ক জীবনযাপনের প্রতি আসক্তি
হতে পারে আপনার বিশাল বাসভবনের শান্তি, বাগানের ছায়া, শয্যার আরাম, আপনার চতুর্দিকের সমস্ত আমোদ প্রমোদ, যা জীবনকে করেছে আরামদায়ক ও মনোরম। কিন্তু মনে রাখবেন, এগুলোর কোনটিই চিরস্থায়ী নয়। আপনার এই বিলাসবাহল বাড়ি ইট পাথর, ও চুনসুরকি দ্বারা তৈরী বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা যদি পরিস্কার করা না হয় তাহলে এটা নষ্ট হয়ে যাবে, আর যদি ঠিকমত রক্ষনাবেক্ষন না করা হয় তবে এটার পতন ঘটবে। ঘটনাক্রমে একদিন এটাই ধুলাবালিতে পরিণত হবে যা থেকে এটা তৈরী করা হযেছিল। আপনি কি এর চেয়ে সোনা ও রূপার ইটের তৈরী প্রাসাদে থাকতে বেশি পছন্দ করবেন না? এমন প্রাসাদ যা চিরস্থায়ী এবং যার কোন রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজন নেই। এর আসবাবপত্র পছন্দীয় এবং সুবিন্যস্ত করে সাজিয়েছে ফেরেশতারা। আর এতে আপনাকে সার্বোৎবৃষ্ট খাবার পরিবেশন করবে এমন দাস-দসীরা, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা − বলেন, “তাদেরকে পরিবেশন করবে কিশোরগন, তাদেরকে দেখে মনে হবে তারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা।”
জান্নাত সবকিছুই পরিছন্ন, সবকিছুই পবিত্র। সেখানে কোন প্রকৃতির ডাক বা ঘাম নেই। আমাদের দেহ ভিন্ন এক রূপ নিয়ে আসবে। জীবন সেখানে অসীম। সেখানে সময়ের কোন চাপ নেই। জান্নাতীরা যখন তখন যা ইচ্ছা যতক্ষন খুশি ততক্ষনই করতে পারবে। তারা সিংহাসনে হেলান দিয়ে ন্ত্রীর সাথে ৪০ বছর কথা বলতে পারবে। আপনার এবং এত আমোদ-প্রমোদের মাঝে শহীদ হওয়া ছাড়া আর কিছুই কোন বাধা নেই। এই জীবন-পদ্ধতির সাথে দুনিয়ার জীবন-পদ্ধতির তুলনা করে দেখুন।
৮. অধিক সৎকর্ম করার জন্য দীর্ঘায়ু কামনা
আপনি হয়ত জিহাদে অংশগ্রহন করতে চাছেন না, কারন আপনি এর জন্য প্রস্তুত নন এবং আপনি আরও নেককাজ করতে চান। অর্থাৎ আপনি উত্তম নিয়্যতে জিহাদ থেকে দুরে আছেন। কিন্তু শুনুন, আপনি প্রতারিত বা বঞ্চিত হচ্ছেন। আল্লাহ তায়ালা − বলেন,
“হে মানুষ! আল্লাহ তায়ালার− প্রতিশ্রতি সত্য; সুতরাং পর্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সেই প্রবঞ্চনা যেন কিছুতেই আল্লাহ তায়ালা র সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে তোমাদেরকে। শয়তান তোমাদের শক্র; সুতরাং তাকে শক্র হিসেবে গ্রহন কর; সে তো তার দলবলকে আহবান করে শুধু এজন্য যে, তারা যেন জাহান্নামের সাথী হয়। ” (সূরা ফাতির ৫-৬)
এটা শয়তানের ফাঁদ ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা আল্লাহ তায়ালার− আউলিয়াদের (বন্ধু) পথ নয়। সাহাবা এবং তাবিঈনরা কি সৎকর্মের প্রতি আপনার চেয়ে বেশি উৎসাহী ছিলেন না। আপনি কি শুনেননা আল্লাহ তায়ালা আপনাকে বলছেন “বের হও হালকা আথবা ভারী (স্বল্প সরঞ্জামের সাথেই হোক, অথবা প্রচুর সরনঞ্জামের সাথেই হোক) এবং আল্লাহ তায়ালার− পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও প্রান দ্বারা যুদ্ধ কর এটাই তোমাদের জন্য অতি উৎম, যদি তোমরা জানতে।” (সূরা তওবা ৯;৪১)
আপনিকি দেখছেন না যে, নিজেকে শুধরানোর বা আরও ভাল করবার সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে জিহাদের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা − বলেন,
“গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে, আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন।” (সূরা আন-নিসাঃ৯৫)
প্রকৃত অর্থে জিহাদের সমতুল্য কিছুই নেই। রাসূল (সা) বলেছেন “যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদের সারিতে দাড়িয়ে থাকা, পরিবারের মধ্যে ৭০ বছর আল্লাহ তায়ালা র− ইবাদত করার চেয়ে উত্তম”। (তিরমীজি আল- বায়হাকী আল-হাকীম)
৯. স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা
যদি আপনি সুন্দরী স্ত্রীর কারনে জিহাদে যেতে অপারগ হন, আর আপনার তাকে যদি পৃথিবীর সর্বোৎবৃষ্ট নারী ও সবচেয়ে সুন্দরী বলে মনে হয় তবে শুনুন, সেও কি একসময় সামান্য একটা মাংস পিন্ড ছিল? এবং একসময় সেও কি পঁচে নিঃশেষ হয়ে যাবে না? মাসিকের কারনে আপনাকে তার থেকে দূরে থাকতে হয়েছে জীবনের অনেকটা সময়। সে বাধ্য হবার থেকে অবাধ্যই বেশি ছিল। সে যদি নিজেকে পরিস্কার না রাখত তবে তার থেকে দুর্গন্ধ আসত। যদি সে চুল না আচড়াত তবে তা অবিন্যস্ত বা এলেমেলো হয়ে থাকত। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে যে আরও কৃৎসিত হতে থাকে। তাকে খুশী করা সহজ নয়, তার ভালবাসা রক্ষার্থে আপনাকে অনেক খরচ করতে হয়। আপনি সবসময় তাকে খুশী করতে চান বা প্রভাবান্বিত করতে চান কিন্তু কিছুই যেন যথেষ্ট হয় না তার জন্য। সে আপনাকে শুধু তখনই ভালবাসে যখন সে যা চায় আপনি তাই দেন আর যদি না দেন তবে সে আপনাকে ছেড়ে অন্য কাউকে খুঁজে নিবে যেন, ‘যদি আমাকে চাও তবে খরচ কর আমার জন্য’! সাধারন ভাবে একসাথে অবিরাম/চিরস্থায়ী দুঃখ যন্ত্রনা ছাড়া তাকে উপভোগ করা সম্ভব নয়।
এটা খুবই আশ্চর্যজনক যে এই নারী আপনাকে জান্নাতের নারী থেকে দূরে রাখে। আল্লাহ তায়ালার নামে বলছি, শহীদের রক্ত জান্নাতে তার স্ত্রীর সাথে দেখা হবার আগে শুকায় না। সে হবে সুন্দর যার থাকবে বড় বড় দ্যুতিময় চোখ। একজন কুমারী যেন একটি পান্না। সে আর কাউকে ভালবাসেনি, বাসবেওনা কেবল আপনাকে ছাড়া । সে তৈরী হয়েছে কেবল আপনারই জন্য। তার একটি মাত্র আঙুলও চাঁদের ঔজ্জল্যকে হার মানবে। পৃথিবীতে যদি তার হাতের কব্জিটুকুও প্রকাশ পায় তার সমস্ত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। সে যদি আসমান ও যমীনের মধ্যে আবস্থান করে তবে মধ্যবর্তী সম্পৃর্ণ এলাকা তার সুগন্ধে মৌ মৌ করবে। আর যদি সে সমুদ্রের পানিতে থুথু ফেলে, তবে এর নোনা পানিও বিশুদ্ধ (খাবার) পনিতে পরিনত হবে।
তার দিকে যতই তাকাবেন, সে ততই সুন্দর হতে থাকবে। তার সাথে যত সময় অতিবাহিত করবেন আপনি ততই তাকে ভালবাসবেন। এরকম একজন নারী সম্পর্কে জেনে শুনেও তার সাথে মিলিত হবার চেষ্টা না করা কি বিবেক বুদ্ধির পরিচয় দেয়? আর যদি আপনি জানেন যে, আপনি ১ জন নয় বরং ৭০ টি হুরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন?
মনের মধ্যে রাখুন যে, স্ত্রীকে ছেড়ে যাওয়াটা আবশ্যম্ভাবী। আপনি মারা যাবেন এবং সে ও আপনাদের ইনশাআল্লাহ তায়ালা জান্নাতে পুনর্মিলিত হবে এবং দেখবেন যে সে, জান্নতের হুরদের চেয়ে বেশি সুন্দরী। আপনি তাকে পাবেন এ জীবনের সমস্ত আসন্তোষ মূলক জিনিস হতে মুক্ত।
অনেক বেশি দেরী হবার আগেই জেগে উঠুন। এই দুনিয়ার কারাগার হতে নিজেকে মুক্ত করুন এবং শহীদের মর্যাদা লাভের জন্য আল্লাহ তায়ালা র কাছে প্রার্থনা করুন এত অসাধারন পুরুস্কার আর আপনার মাঝে কোন কিছুকে বাঁধা হয়ে দাড়াতে দিবেন না।
১. আবু হুরায়েরা (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসূলুলাহ (সাঃ) বলেছেন, “শহীদের মৃত্যুযন্তনা কেবল একটি পোকার হুল বিদ্ধের ব্যাথার মত। ”(আত তিরমিযী আন-নাসাঙ্গী ইবন মাজাহ, আহমাতে আল-আলবানী হাসান)
২. রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহ তায়ালা র পথে দিনের প্রথম ভাগে বা শেষভাগে যাত্রা করা এই দুনিয়া ও এর মধ্যকার সবকিছু হতে উত্তম এবং যদি জান্নাতের কোন রমনী এই দুনিয়ার মানুষদের সামনে নিজেকে প্রকাশ করে, তবে এদের মধ্যকার এলাকা আলো আর সুগন্ধিতে ভরে যাবে আর তার মাথার রুমাল পর্যন্ত এই দুনিয়া ও এর মধ্যকার সবকিছু হতে উত্তম। ” (বুখারী)
মাশারিউল আশওয়াক ইলা মাশারিউল উশ্শাক
Comment