০৪ অভিযান প্রস্তুতির জন্য জনসাধারণের উপর চাঁদা ধার্য করার হুকুম
ব্যাখ্যা
الجُعل: জিহাদি অভিযানে মুজাহিদ বাহিনি পাঠানোর জন্য বাহিনির প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র, রসদপত্র ও অন্যান্য খরচাদির ভার মুসলিম জনসাধারণের উপর চাপানো। প্রত্যেকের উপর সামর্থ্যানুযায়ী অর্থের একটা অংক কিংবা কোনো বস্তু-দ্রব্য ধার্য করা।
ফাই: কাফেরদের থেকে যুদ্ধ ব্যতীত লব্ধ সম্পদ। যেমন: যিম্মিদের থেকে আহরিত মাথাপিছু জিযিয়া ও যমিনের খারাজ, দারুল হারবের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে লব্ধ অর্থ ইত্যাদি।
আর কাফেরদের থেকে যুদ্ধের মাধ্যমে যে সম্পদ হাসিল হয়, তাকে বলে গনিমত। গনিমতের খুমুস তথা এক পঞ্চমাংশ বাইতুল মালে জমা হবে। এটি গরীবদের হক। আর বাকি চারভাগ মুজাহিদরা পাবে, যারা যুদ্ধ করে এ গনিমত লাভ করেছে।
বাইতুল মালের ফাই মুসলিম জনসাধারণের হক। তাদের কল্যাণে এ সম্পদ ব্যয় হবে। জিহাদও যেহেতু মুসলিমদের কল্যাণে, তাই এর সার্বিক ব্যবস্থাপনা বাইতুল মালের ফাইয়ের খাত থেকে করা হবে। যতক্ষণ ফাইয়ের খাতে সম্পদ থাকবে, মুসলিমদের ব্যক্তিগত সম্পদে কোনো দখল দেয়া যাবে না। চাঁদা ধার্য করা যাবে না।
উল্লেখ্য, মুসান্নিফ রহ. এর বক্তব্য থেকে বুঝা যাচ্ছে: ফাইয়ের খাতে সম্পদ না থাকলে তখন জিহাদের প্রয়োজনীয় খরচাদি ও ব্যয়ভার জনগণের উপর ধার্য করা যাবে। তবে বাহর ও শামিতে বলা হয়েছে: বাইতুল মালের অন্যান্য খাত; যেমন যাকাত-উশর, গনিমতের খুমুস, খনিজ সম্পদ, পতিত ও লা-ওয়ারিশ সম্পদ: ইত্যাদি খাতে সম্পদ থাকলে, আপাতত সেখান থেকে কর্জ নিয়ে জিহাদের ব্যবস্থাপনা করা হবে। পরবর্তীতে ফাইয়ের খাতে সম্পদ জমা হলে অন্য খাত থেকে গৃহীত ঋণ পরিশোধ করে দেয়া হবে। এভাবে যদি জিহাদের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলেও জনসাধারণের উপর কোনো চাঁদা আরোপ করা যাবে না।
হাঁ, যদি বাইতুল মালে জিহাদের ব্যবস্থাপনা করা যায় মতো কোনো সম্পদ না থাকে, তখন জনসাধারণের উপর প্রয়োজন পরিমাণ চাঁদা ধরা যাবে। তবে ধনী-গরীব সবার উপর সমান ধরা হবে না, সামর্থ্যানুযায়ী কম-বেশ করে ধরতে হবে। এ পরিমাণ ধরা যাবে, যাতে তা আদায় করতে তেমন কোনো বেগ পেতে না হয়।
যেহেতু জান-মাল উভয়টি দিয়েই জিহাদ করা মুসলিমদের উপর ফরয, তাই প্রয়োজনের সময় আর্থিক যোগান তাদেরকেই দিতে হবে।
বি.দ্র. ০১ উপরোক্ত আলোচনা সরকারীভাবে চাঁদা ধরার ব্যাপারে। স্বেচ্ছায় যদি কেউ মুজাহিদদের বা তাদের ফান্ডে কিছু দিতে চায়, যাতে তার এ সম্পদটুকু আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় হয়, তাহলে তা মহাপূণ্যের কাজ।
বি.দ্র. ০২ সবচেয়ে ভাল: প্রত্যেক মুজাহিদ তার নিজের খরচ নিজেই বহন করবে। কারও যদি সামর্থ্য না থাকে, তাহলে বাইতুল মাল থেকে বা অন্য মুসলিম ভাই থেকে সহায়তা নিতে পারে। (বাহর)
বি.দ্র. ০৩ বর্তমানে যেহেতু মুসলিমদের রাষ্ট্র নেই এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগার তথা বাইতুল মালও নেই, তাই বর্তমানে জিহাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা মুসলিমরা নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে করতে হবে। এক্ষেত্রে যার সামর্থ্য যত বেশি তার দায়িত্বও তত বেশি।
***
وكره الجعل إن وجد فيءٌ وإلّا لا “(বাইতুল মালে) ফাই বিদ্যমান থাকলে (অভিযান প্রস্তুতির জন্য) জনসাধারণের উপর চাঁদা ধার্য করা মাকরুহ। অন্যথায় (অর্থাৎ ফাই বিদ্যমান না থাকলে) মাকরুহ নয়।” |
ব্যাখ্যা
الجُعل: জিহাদি অভিযানে মুজাহিদ বাহিনি পাঠানোর জন্য বাহিনির প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র, রসদপত্র ও অন্যান্য খরচাদির ভার মুসলিম জনসাধারণের উপর চাপানো। প্রত্যেকের উপর সামর্থ্যানুযায়ী অর্থের একটা অংক কিংবা কোনো বস্তু-দ্রব্য ধার্য করা।
ফাই: কাফেরদের থেকে যুদ্ধ ব্যতীত লব্ধ সম্পদ। যেমন: যিম্মিদের থেকে আহরিত মাথাপিছু জিযিয়া ও যমিনের খারাজ, দারুল হারবের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে লব্ধ অর্থ ইত্যাদি।
আর কাফেরদের থেকে যুদ্ধের মাধ্যমে যে সম্পদ হাসিল হয়, তাকে বলে গনিমত। গনিমতের খুমুস তথা এক পঞ্চমাংশ বাইতুল মালে জমা হবে। এটি গরীবদের হক। আর বাকি চারভাগ মুজাহিদরা পাবে, যারা যুদ্ধ করে এ গনিমত লাভ করেছে।
বাইতুল মালের ফাই মুসলিম জনসাধারণের হক। তাদের কল্যাণে এ সম্পদ ব্যয় হবে। জিহাদও যেহেতু মুসলিমদের কল্যাণে, তাই এর সার্বিক ব্যবস্থাপনা বাইতুল মালের ফাইয়ের খাত থেকে করা হবে। যতক্ষণ ফাইয়ের খাতে সম্পদ থাকবে, মুসলিমদের ব্যক্তিগত সম্পদে কোনো দখল দেয়া যাবে না। চাঁদা ধার্য করা যাবে না।
উল্লেখ্য, মুসান্নিফ রহ. এর বক্তব্য থেকে বুঝা যাচ্ছে: ফাইয়ের খাতে সম্পদ না থাকলে তখন জিহাদের প্রয়োজনীয় খরচাদি ও ব্যয়ভার জনগণের উপর ধার্য করা যাবে। তবে বাহর ও শামিতে বলা হয়েছে: বাইতুল মালের অন্যান্য খাত; যেমন যাকাত-উশর, গনিমতের খুমুস, খনিজ সম্পদ, পতিত ও লা-ওয়ারিশ সম্পদ: ইত্যাদি খাতে সম্পদ থাকলে, আপাতত সেখান থেকে কর্জ নিয়ে জিহাদের ব্যবস্থাপনা করা হবে। পরবর্তীতে ফাইয়ের খাতে সম্পদ জমা হলে অন্য খাত থেকে গৃহীত ঋণ পরিশোধ করে দেয়া হবে। এভাবে যদি জিহাদের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলেও জনসাধারণের উপর কোনো চাঁদা আরোপ করা যাবে না।
হাঁ, যদি বাইতুল মালে জিহাদের ব্যবস্থাপনা করা যায় মতো কোনো সম্পদ না থাকে, তখন জনসাধারণের উপর প্রয়োজন পরিমাণ চাঁদা ধরা যাবে। তবে ধনী-গরীব সবার উপর সমান ধরা হবে না, সামর্থ্যানুযায়ী কম-বেশ করে ধরতে হবে। এ পরিমাণ ধরা যাবে, যাতে তা আদায় করতে তেমন কোনো বেগ পেতে না হয়।
যেহেতু জান-মাল উভয়টি দিয়েই জিহাদ করা মুসলিমদের উপর ফরয, তাই প্রয়োজনের সময় আর্থিক যোগান তাদেরকেই দিতে হবে।
বি.দ্র. ০১ উপরোক্ত আলোচনা সরকারীভাবে চাঁদা ধরার ব্যাপারে। স্বেচ্ছায় যদি কেউ মুজাহিদদের বা তাদের ফান্ডে কিছু দিতে চায়, যাতে তার এ সম্পদটুকু আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় হয়, তাহলে তা মহাপূণ্যের কাজ।
বি.দ্র. ০২ সবচেয়ে ভাল: প্রত্যেক মুজাহিদ তার নিজের খরচ নিজেই বহন করবে। কারও যদি সামর্থ্য না থাকে, তাহলে বাইতুল মাল থেকে বা অন্য মুসলিম ভাই থেকে সহায়তা নিতে পারে। (বাহর)
বি.দ্র. ০৩ বর্তমানে যেহেতু মুসলিমদের রাষ্ট্র নেই এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগার তথা বাইতুল মালও নেই, তাই বর্তমানে জিহাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা মুসলিমরা নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে করতে হবে। এক্ষেত্রে যার সামর্থ্য যত বেশি তার দায়িত্বও তত বেশি।
***
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০১ ভূমিকা ও জিহাদের হুকুম
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A7%81%E0%A6%AE
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০২ যাদের উপর জিহাদ ফরয নয়
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%A8%E0%A7%9F
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০৩ মুসলিম ভূমিতে আগ্রাসন হলে জিহাদ ফরযে আইন
https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/আল-জিহাদ/182671
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A7%81%E0%A6%AE
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০২ যাদের উপর জিহাদ ফরয নয়
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%A8%E0%A7%9F
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০৩ মুসলিম ভূমিতে আগ্রাসন হলে জিহাদ ফরযে আইন
https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/আল-জিহাদ/182671