Download Links
https://archive.org/details/ke-pabe-...hajjo_20200722
https://www.mediafire.com/file/gc86f...hajjo.pdf/file
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য যিনি মানব জাতির জন্য পথ নির্দেশিকার ব্যবস্থা করেছেন। সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক এই উম্মতের শিক্ষক, আল্লাহর বান্দা ও তার রসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। ইসলামের প্রথম *যুগ থেকে এখন পর্যন্ত যত ঈমানদার ভাই ও বোন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার রাস্তায় জিহাদ করেছেন, যারা এক আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে রেখেছেন, যারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সবকিছু ব্যয় করতে রাজি এমন কি নিজের জীবন দিতেও দ্বিধা করেনা, যারা আল কুরআন ও সহীহ সুন্নার হিদায়াতকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন ও আছেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদেরকে ক্ষমা করে তদের মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দিন, আর আমাদেরকেও তার সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করুন; আমীন।কে পাবে আল্লাহর সাহায্য
আল্লাহ যাকে সাহায্য করবেন কেউ তাকে পরাজিত করতে পারবেনা, ঐ ব্যক্তির কোন অপমান নেই যাকে আল্লাহ সাহায্য করবেন। আর আল্লাহ যার বিরুদ্ধে তার কোন সম্মান নেই, সে পরাজিত হবেই। সম্মান আল্লাহর জন্য আল্লাহর রসূলের (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্য এবং ঈমানদারদের জন্য। কাফির, মুশরিকদের কোন সম্মান নেই তাদের জন্য আছে অপমান আর লাঞ্চনা। মুত্তাকীদের শেষ পরিনতি ভালো হবে।
যে কাজ করলে আল্লাহর সাহায্যকারী হওয়া যায়, যে কাজে আল্লাহর সাহায্যের নিশ্চয়তা রয়েছে এমন কাজে সফলতা সুনিশ্চিত। ঈমানদারদের মাঝে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার বিষয়টি প্রবলভাবে ক্রিয়াশীল থাকে ।
আসুন জেনে নেই...
আল্লাহ কাকে সাহায্য করবেন? বা কে পাবে আল্লাহর সাহায্য?
অতীতে কারা আল্লাহর সাহায্য পেয়েছেন?
আল্লাহ কাকে তার সাহায্যকারী বলে ঘোষণা করেছেন?
কি সেই কাজ যার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের অঙ্গীকার রয়েছে?
আল্লাহ কাকে সাহায্য করবেন? বা কে পাবে আল্লাহর সাহায্য?
আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ تَنْصُرُوا اللَّهَ يَنْصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ [٤٧:٧]
অর্থ: ওহে যারা ঈমান এনেছ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন, আর তিনি তোমাদের পদক্ষেপ সুদৃঢ় করবেন।(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৭)
আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও বলেন,
الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ إِلَّا أَنْ يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ*ۗ وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا*ۗ وَلَيَنْصُرَنَّ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ*ۗ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ [٢٢:٤٠]
অর্থ: যাদের বহিস্কার করা হয়েছে তাদের বাড়িঘর থেকে ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়াই, শুধু এইজন্য যে তারা বলে -- ''আমাদের প্রভু আল্লাহ্*’’। আর যদি মানবজাতিকে তাদের এক দলের দ্বারা অন্য দলকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা আল্লাহ্*র না থাকতো তা হলে নিশ্চয়ই বিধ্বস্ত হয়ে যেত খ্রিস্টান-সংসার বিরাগীদের উপাসনা স্থান, গীর্জা, ইয়াহূদীদের উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ যেখানে আল্লাহ্*র নাম অধিক স্মরণ করা হয়! আর নিশ্চয়ই যে আল্লাহকে সাহায্য করে আল্লাহ তাঁকে সাহায্য করেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শক্তিমান, পরাক্রমশালী। (সূরা হাজ্জ ২২:৪০)
উপরের আয়াতগুলো থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে আল্লাহর সাহায্য তারাই পাবে যারা আল্লাহকে সাহায্য করবে।
আপনি কি আল্লাহর সাহায্য পেতে চান? যদি এর উত্তর হয় হাঁ, তাহলে আল্লাহকে সাহায্য করুন!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে আল্লাহকে সাহায্য করা যায়? বা কি সেই কাজ যা করার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যাবে? যে আল্লাহর সাহায্য পেতে চায় তার কাছে এ প্রশ্নের উত্তর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশ্নের সমাধান আল্লাহর কথা থেকে দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ..
অতীতে কারা আল্লাহর সাহায্য পেয়েছেন?
দাউদ ও জালুতের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
وَلَمَّا بَرَزُوا لِجَالُوتَ وَجُنُودِهِ قَالُوا رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ [٢:٢٥٠]
অর্থ: আর যখন তারা জালুতের ও তার সৈন্যদলের মুখোমুখি হলো, তারা বলল -- হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে পূর্ণ ধৈর্য দান করুন , আর আমাদের পদক্ষেপ অটল রাখুন, এবং কাফির জাতির বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।(সূরা বাকারাহ ২:২৫০)
فَهَزَمُوهُمْ بِإِذْنِ اللَّهِ وَقَتَلَ دَاوُودُ جَالُوتَ وَآتَاهُ اللَّهُ الْمُلْكَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَهُ مِمَّا يَشَاءُ*
অর্থ: অতএব আল্লাহ্*র হুকুমে তারা তাদের পরাজিত করল, আর দাউদ হত্যা করলেন জালুতকে, আর আল্লাহ্ তাঁকে রাজত্ব ও জ্ঞান দিলেন, আর তাঁকে শেখালেন যা তিনি ইচ্ছা করলেন। (সূরা বাকারাহ ২:২৫১)
বদরের যুদ্ধের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
قَدْ كَانَ لَكُمْ آيَةٌ فِي فِئَتَيْنِ الْتَقَتَا*ۖ فِئَةٌ تُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَأُخْرَىٰ كَافِرَةٌ يَرَوْنَهُمْ مِثْلَيْهِمْ رَأْيَ الْعَيْنِ*ۚ وَاللَّهُ يُؤَيِّدُ بِنَصْرِهِ مَنْ يَشَاءُ*ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَعِبْرَةً لِأُولِي الْأَبْصَارِ [٣:١٣]
অর্থ: নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য দু’টি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে (বদরের যুদ্ধে) নিদর্শন রয়েছে-- একদল যুদ্ধ করছিল আল্লাহ্*র পথে, আর অন্য দল অবিশ্বাসী, এরা চোখের দেখায় তাদের দেখেছিল নিজেদের দ্বিগুণ। আর আল্লাহ্ তাঁর সাহায্য দিয়ে মদদ করেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন। নিশ্চয়ই এতে শিক্ষণীয় বিষয় আছে দৃষ্টিবানদের জন্য।(সূরা আলে ইমরান ৩:১৩)
আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও বলেন,
وَلَقَدْ نَصَرَكُمُ اللَّهُ بِبَدْرٍ وَأَنْتُمْ أَذِلَّةٌ*ۖ فَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ [٣:١٢٣]
অর্থ: আর আল্লাহ্ ইতিপূর্বে তোমাদের সাহায্য করেছিলেন বদরে যখন তোমরা ছিলে দুর্দশাগ্রস্ত; অতএব তোমরা আল্লাহ্*কে ভয় কর যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও। (সূরা আলে ইমরান ৩:১২৩)
উপরের আয়াতগুলি থেকে দেখা যাচ্ছে আল্লাহ যদেরকে সাহায্য করেছেন তারাই বিজয় লাভ করেছেন। তারা সংখ্যায় অল্প হলেও বিজয় তাদের জন্যই। বদর প্রান্তরে ও মুসলিমরা সংখ্যায় কম হওয়া সত্ত্বেও তারা আল্লাহর সাহায্যে বিজয় লাভ করেছেন। আল্লাহ যাদেরকে সাহায্য করবেন কেউ তাদের উপর বিজয় লাভ করতে পারবেনা।
তইতো আল কুরআনে এসেছে-
কত ছোট ছোট দল বড় বড় দলের বিপরীতে বিজয় লাভ করেছে আল্লাহর অনুমতিক্রমে। (সূরা বাকারাহ ২:২৪৯)
মুসলিমরা তাদের সংখ্যার আধিক্য দিয়ে বিজয় লাভ করেন না মূলত তারা বিজয় লাভ করেন বিজয়দানকারী আল্লাহর সাহায্যে।
সেই অতীত থেকে উম্মতে মুহাম্মাদী (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত যুগে যুগে, কালে কালে যারা কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছেন তারাই আল্লাহর সাহায্য পেয়েছেন।
আল্লাহ কাকে তার সাহায্যকারী বলে ঘোষণা করেছেন?
মরিয়ম-পুত্র ঈসা (আঃ) ও তার শিষ্যদের ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُوا أَنْصَارَ اللَّهِ كَمَا قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّينَ مَنْ أَنْصَارِي إِلَى اللَّهِ*ۖ قَالَ الْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنْصَارُ اللَّهِ*ۖ فَآمَنَتْ طَائِفَةٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَكَفَرَتْ طَائِفَةٌ*ۖ فَأَيَّدْنَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَىٰ عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُوا ظَاهِرِينَ [٦١:١٤]
অর্থ: ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহ্*র সাহায্যকারী হও, যেমন মরিয়ম-পুত্র ঈসা তার শিষ্যদের বলেছিলেন -- ''আল্লাহ্*র পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে?’’ শিষ্যরা বলেছিল, ''আমরাই আল্লাহ্*র সাহায্যকারী।’’ অতঃপর বানী ইসরাঈলের একদল বিশ্বাস করেছিল এবং একদল অবিশ্বাস করেছিল। অতঃপর যারা ঈমান এনেছিল তাদের আমরা সাহায্য করেছিলাম তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে, ফলে তারা বিজয়ী হলো। (সূরা সাফ্ফ ৬১:১৪)
মুহাজির সাহাবীদের (রাঃ) কথাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
لِلْفُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا وَيَنْصُرُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ*ۚ أُولَٰئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ [٥٩:٨]
অর্থ: সেইসব দরিদ্র মুহাজিরদের জন্য যাদের বের করে দেওয়া হয়েছিল তাদের বাড়িঘর ও তাদের বিষয়-সম্পত্তি থেকে, যারা কামনা করছিল আল্লাহ্*র কাছ থেকে অনুগ্রহ ও সন্তষ্টি, এবং সাহায্য করছিল আল্লাহ্*কে ও তাঁর রসূলকে। এরাই খোদ সত্যপরায়ণ। (সূরা হাশর ৫৯:৮)
সূরা সাফ্ফ এর উপরোক্ত(৬১:১৪) আয়াতে আল্লাহ তার ঈমানদার বান্দাদেরকে তার সাহায্যকারী হওয়ার জন্য আদেশ করেছেন। আর ঈমানদারদের উচিত তার মালিকের কথায় সাড়া দেওয়া।
উপরোক্ত দুটি আয়াতেই আল্লাহ নবীগণের সঙ্গীদেরকে তার (আল্লাহর) সাহায্যকারী বলে ঘোষণা করেছেন, আল্লাহর দ্বীন প্রচার ও প্রসারের কাজে নবীগণের সঙ্গীরাই তাদেরকে সাহায্য করেছেন। আর ঈমানদারদের সাথে কাফিরদের যে সংঘাত এ সংঘাতে আল্লাহ তার পক্ষ থেকে সাহায্যের বিষয়টি তার পথে জিহাদ ও মুজাহিদদের সাথেই সম্পর্কিত করে দিয়েছেন।
কি সেই কাজ যার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের অঙ্গীকার রয়েছে?
ঈমানদারদের লক্ষ করে আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَارَةٍ تُنْجِيكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ [٦١:١٠]
অর্থ: ওহে যারা ঈমান এনেছ! আমি কি তোমাদেরকে সন্ধান দেব এমন এক বাণিজ্যের যা তোমাদেরকে রক্ষা করবে মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে? (সূরা সাফ্ফ ৬১:১০)
تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ*ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ [٦١:١١]
অর্থ: তোমরা আল্লাহ্*তে ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করবে, আর আল্লাহ্*র পথে জিহাদ করবে তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের জীবন দিয়ে। এইটিই হচ্ছে তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে! (সূরা সাফ্ফ ৬১:১১)
يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ*ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ [٦١:١٢]
অর্থ: তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন, এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে যার নিচে দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি, আর নন্দন কাননের উৎকৃষ্ট গৃহসমূহে। এটিই মহাসাফল্য! (সূরা সাফ্ফ ৬১:১২)
وَأُخْرَىٰ تُحِبُّونَهَا*ۖ نَصْرٌ مِنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ*ۗ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ [٦١:١٣]
অর্থ: আর অন্য একটি যা তোমরা ভালবাস -- আল্লাহ্*র কাছ থেকে সাহায্য ও আসন্ন বিজয়। আর সুসংবাদ দাও মুমিনদের। (সূরা সাফ্ফ ৬১:১৩)
সূরা সাফ্ফ এর এই আয়াতসমূহে আল্লাহ তায়ালা ঈমানদারদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক বাণিজ্যের সংবাদ দিয়েছেন যা তাদেরকে রক্ষা করবে মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে? আর সে বাণিজ্য হচ্ছে ঈমান ও জিহাদের বাণিজ্য। এ বাণিজ্যের দ্বারা ঈমানদাররা আল্লাহর ক্ষমা লাভ করে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। ঈমানদার মাত্রই আল্লাহর সাহায্য ও আসন্ন বিজয়ের প্রতি যে ভালবাসা সে ক্ষেত্রে পরাক্রমশালী আল্লাহ তার সাহায্য জিহাদ ও মুজাহিদদের জন্য নিধারিত করে দিয়েছেন।
ঈমান এনে মাল ও জান দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করাই হচ্ছে সেই কাজ যার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের অঙ্গীকার রয়েছে।
সুতরাং যারা আল্লাহর সাহায্য পেয়ে বিজয়ী হতে চায় তাদের উচিত ঈমান ও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর পথকে বেছে নেয়া।
এ বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করতে ..
ক্বিতাল ফি সাবিলিল্লাহ সম্পর্কে আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ [٩:١٤]
অর্থ: তোমরা তাদেরকে হত্যা করতে থাক, আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন তোমাদের হাতে, আর তাদের লাঞ্ছিত করবেন, আর তোমাদের সাহায্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে, এবং মুমিনদের অন্তরসমূহকে প্রশান্ত ও ঠান্ডা করবেন। (সূরা তাওবা ৯:১৪)
সূরা তাওবা এর ১ থেকে ১৪ নম্বর আয়াতের আলোকে- যে সব কাফির, মুশরিক তাওবা করে ঈমান আনয়ন করছে না, যারা ঈমানদারদের সাথে কোন প্রকার জিযিয়া চুক্তিতে আবদ্ধ নয় (তবে মুশরিকদের মধ্য থেকে যারা ঈমানদারদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সঠিক ভাবে তাদের চুক্তি রক্ষা করে চলছে তারা ব্যতিত এদের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি রক্ষা করতে হবে), আল্লাহ ও তার রাসূল (সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেগুলোকে হারাম বলেছেন ঐ বস্তুগুলোকে যারা হারাম মনে করে না, যে সব মুশরিক ঈমান আনয়ন করে নামাজ পরছে না ও যাকাত প্রদান করছে না, যারা আল্লাহর রাস্তায় লোকদেরকে বাধা প্রদান করছে, যে সব আহলে কিতাব সল্পমুল্যে আল্লাহর দীনকে বিক্রয় করে দিয়েছে, যারা ঈমানদারদের সাথে চুক্তি দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করে ফেলেছে, যারা আল্লাহর দ্বীন ইসলামকে নিয়ে ঠাট্রা বিদ্রুপ করছে, যারা ঈমানদারদেরকে তাদের আবাসস্থল থেকে বের করে দিয়েছে এদেরকে যারা হত্যা করবে এদেরকে যারা লাঞ্ছিত করবে আল্লাহর কথাকে উচু করার জন্য সংগ্রামী এমন মুজাহিদ/মুক্বতিলদেরকেই আল্লাহ তার পক্ষ থেকে সাহায্য করবেন ।
বিষয়টি একেবারে স্পষ্ট যে ..
ক্বিতাল ফি সাবিলিল্লাহ ই হচ্ছে সেই পথ যে পথে অংশগ্রহণকারীরা পাবে আল্লাহর সাহায্য।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের সকলকে তার পক্ষ থেকে দেয়া হিদায়াত গ্রন্থ অনুসারে আমল করার তাওফিক দান করুন। তিনি আমাদেরকে প্রকৃত ঈমানদারও তার সাহায্যকারী হিসেবে কবুল করুন। আমীন............
হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও প্রার্থনা শ্রবণকারী।
দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর বান্দা ও তার রসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করুন। আমীন...
সমস্ত প্রশংসা অংশিদারমুক্ত এক আল্লাহ’র জন্য, আমি সাক্ষ্য *দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন কল্যাণ ও অকল্যাণ দাতা নেই তার কাছেই আমি তাওবাহ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
রচনায়ঃ হুজাইফা
Comment