মহান আল্লাহ বলেনঃ
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ خَرَجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ وَ هُمْ الْوَقْ حَذَرَ الْمَوْتِ فَقَالَ لَهُمُ اللهُ مُوْتُوا ثُمَّ أَحْيَاهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ
لا يَشْكُرُونَ
তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা তাদের গৃহসমূহ থেকে বের হয়েছে মৃত্যুর ভয়ে এবং তারা ছিল হাজার-হাজার? অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা মরে যাও’! তারপর তিনি তাদেরকে জীবিত করলেন। নিশ্চয় আল্লাহ তো মানুষের উপর | অনুগ্রহশীল। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ শুকরিয়া আদায় করে না।
এই আয়াতে একটি ঘটনা বর্ননা করা হয়েছে। ঘটনাটি হলো কোন এক শহর বনী ইসরাইলের কিছু লোক বাস করতো। তাদের মাঝে যখন মহামারী দেখা দিলো তখন তাদের কিছু সংখ্যক ব্যক্তি মৃত্যুর ভয়ে সেখান থেকে অন্যত্র চলে গেলো।যাদের সংখ্যা ছিলো প্রায় দশ হাজার।তারা দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী একটা প্রশস্ত জায়গায় অবস্থান নিলো।
কিন্তু তারা সেখানে যাওয়ার পর দুইজন ফেরেশতা দুই দিক থেকে বিকট আওয়াজ করলো ফলে একজনও বেঁচে রইল না। সবাই মারা গেলো।
মহামারীর সময় নিয়ম হলো মহামারীর এলাকা থেকে বের না হওয়া। কিন্তু তারা মৃত্যু থেকে বাচার জন্য বের হলো। ফলে যাহা থেকে তারা পলায়ন করলো তাহাই তাদের উপর এসে নাযিল হলো
এই আয়াতের পরেই মহান আল্লাহ বলেন
وَ قَاتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۴۴﴾
তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ব কর এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।( সুরা বাকারা ২৪৪)
এখন প্রশ্ন হলো উপরোক্ত ঘটনার পর কেন মহান রব কিতালের আয়াত আনলেন?
সাধারনত জিহাদ ও কিতালের বিষয় সামনে আসলে অনেক ভয় সামনে এসে দাড়ায়। তা হলো যে মানুষ টা মুরগী জবাই করতেও মায়া লাগে তাকে হয়ত নিকৃষ্ট কাফের হত্যা করতে হবে।অথবা যে নিজে ইনজেকশান দিতে ভয় পায় তার শরীরে বুলেট কিংবা তলোয়ারের আঘাত পড়তে পারে। পরিবার পরিজন ছেড়ে হিজরত করতে হতে পারে, আরামে বিছানা,সুস্বাদ খাবার ত্যাগ দেওয়া লাগতে পারে। মোটকথা অনেক ভয় কাজ করে। এমনকি অনেক সময় বাস্তবেই ত্যাগ দেওয়া লাগে।
এখন কেউ যদি বিপদের ভয়ে বা জিহাদ ও কিতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে যেই বিপদের ভয়ে মুখ ফেরাবে সেই বিপদই তাদের উপর এসে উপস্থিত হবে।
আজ দ্বীন কায়েমের জন্য গনতন্ত্র কে বেচে নেওয়া হয়েছে কারন এ পথ সহজ,দেখতে অনেক সুন্দর দেখা যায়,এটার মধ্যে ভোট যুদ্ব হয়, যেটাতে কেউ মারা যায় না কেননা ব্যালট পেপার দিয়ে কাউকে মারা যায় না । অথচ এটার কারনে আজ পরিস্থিতি কি উন্নতি হয়েছে নাকি অবনতি? আজ থেকে বিশ বছর আগে দেশে ইসলাম ও মুসলামের পরিস্থিতি যেমন ছিলো আজ কি তেমন আছে? বরং এক ভয়াবহ রক্তাক্ত দিনের অপেক্ষা করছে সবার জন্য।
অনেকে অভাব অনটনের ভয়ে এ পথ ছেড়ে দিচ্ছে। কিন্তু এই বিপদই এসে একদিন উপস্থিত হবে। যুগে যুগে এমনিই ঘটেছে। বনী ইসরাইলের লোকেরা যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে জিহাদের আদেশ পালন করে নি তখন তাদেরকে আল্লাহ চল্লিশ বছর উদ্বান্তের মত ঘুরিয়েছেন। তারা সারাদিন তীহ প্রান্ত থেকে বের হওয়ার জন্য হাঁটতো। কিন্তু দিন শেষে তারা নিজেদের সেখানেই পেত যেখান থেকে বের হয়েছে।
আজকের অবস্থা ঠিক তেমন, বিভিন্ন ফিতনার মোকাবিলা করার জন্য কত রকম কৌশল করা হয়। অথচ দিন শেষে দেখা যায় আগের চেয়ে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে । শান্তি পূর্ন ভাবে সব ঠিক করতে যেয়ে দিন দিন অবস্থা অবনতি হচ্ছে। ভালোবাসা দিয়ে বিশ্ব জয় করতে গিয়ে আজ পরাজিত হচ্ছে সব জায়গায়। কারন রাসূল সাঃ এর চেয়ে বেশি ভালোবাসা কার অন্তরে আছে, কিন্তু সেই ভালোবাসার মার্যাদা আবু জাহেলরা দেয় নি। আজও দিবে না। এটাই বাস্ববতা। এটাকে মেনে নিতে হবে।
অনেকে মনে করেন কিতাল যখন শুরু হবে তখন গিয়ে কিতাল করবো, সবার আগে থাকবো। কিন্তু কিতালতো হঠাৎ করেই হয়ে যায় না, এর জন্য দীর্ঘদিন পরিকল্পনা ও প্লান করে আগাতে হয়, অনেক ধৈর্য্য ধরতে হয়। অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়। সেই প্রস্তুতির জন্য আমরা কি করতেছি?
Comment