Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল-ই'দাদ || গুরুত্ব ও পরিসমাপ্তি কিছু কথাঃ —৪র্থ (শেষ পর্ব)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল-ই'দাদ || গুরুত্ব ও পরিসমাপ্তি কিছু কথাঃ —৪র্থ (শেষ পর্ব)

    পরিশেষে বলবো ই'দাদের গুরুত্ব অপরিসীম। ই'দাদের গুরুত্বের বিষয়টি কমপক্ষে আমরা এদিক থেকেও বিবেচনা করতে পারি যে, এটি একটি পবিত্র জিহাদ পরিচালনার মাধ্যম -কারণ ই'দাদ বিহীন তো জিহাদ চলবেই না (যা আমরা পূর্বে আলোচনা করে এসেছি)

    আর এই ই'দাদই শত্রুকে ভীত-সন্ত্রস্ত রাখার একটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম -যা শত্রুকে সীমালঙ্ঘনের মত দুঃসাহস থেকে বিরত রাখবে ইনশাআল্লাহ।

    তাই শত্রু যখন জানতে পারবে যে, মুসলমানদের নিকট তাদের নিজেদের অধিকার ও ইজ্জত আব্রু রক্ষা করার মতো এবং শত্রুর আগ্রাসন প্রতিহত করার মতো শক্তি সমার্থ রয়েছে তখন তারা আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখানো তো বহু দূরের বিষয় -বরং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, তারা মুসলমানদের উপর যে কোন আক্রমণ করার পূর্বে তার পরিণাম নিয়ে হাজার বার চিন্তা-ভাবনা করবে ইনশাআল্লাহ!

    আর বিপরীতে যদি তারা নিশ্চিত ভাবে জানতে পারে যে, মুসলমানদের নিকট প্রতিহত করার মতো কোন শক্তি সামর্থ্য নেই যার দ্বারা তারা তাদের ইজ্জত-সম্মান, অধিকার রক্ষা করতে পারবে -তখন লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, তারা সকলে মিলেই একযোগে মুসলমানদের জানমালের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে যখন ইচ্ছা তখনই এবং এর পরিণাম নিয়ে বিন্দুমাত্র সময় ভাবার কোন প্রয়োজনও মনে করবেনা! কারণ মুসলমানদের তো কোন শক্তি নেই...! এ-যুগে তার অসংখ্য-অগণিত দৃষ্টান্ত বিদ্যমান।

    একমাত্র মুসলিম জাতি ব্যতীত সকল জাতি ও রাষ্ট্রের শক্তি-সক্ষমতা ও অস্ত্র-শস্ত্র রয়েছে এমনকি তাদের রাষ্ট্র গুলোর ওপর শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য নিরাপত্তামূলক প্রাচীর/ব্যাবস্থাও রয়েছে। -কিন্তু নিরীহ মুসলিমদের জন্য রাষ্ট্র ও তার নিরাপত্তার জন্য প্রাচীর (প্রতিহত ব্যবস্থা) তৈরি করা অবৈধ! এমনকি মুসলমানদের নিকট -নিজেদের অধিকার ও ইজ্জত-আব্রু রক্ষা করার শক্তি সামর্থ্যটুকু পর্যন্ত নেই!!

    সমকালিন এমন কোনো জাতি নেই যাদের ঘরগুলো সংরক্ষিত নয়! এমনকি তাদের দরজা গুলোতে লাগনো আছে মজবুত মজবুত সর্বাধুনিক তালা। -তবে একমাত্র উম্মতে মুসলিমার দরজা গুলোই হলো আইন আইনানুগত! তাতে কোনো তালার ব্যবস্থা নেই -নেই কোন সুরক্ষিত দুর্গ! যে কেউই ঘর থেকে কিছু নিতে ইচ্ছুক সে-ই নিতে পারবে অথবা তার বাড়ির দেয়াল টপকাতে পারবে এমনকি তাতে মলত্যাগ করতে-ও কোন দ্বিধাবোধ করে না!!

    এসব কিছু কাফেরদের জন্যে বৈধ -কিন্তু মুসলমানদের জন্য সবকিছু অবৈধ আর মুসলমানদের যত প্রাপ্ত অধিকার ছিল সব
    বাতিল ও অবৈধ!!!

    এটাই অত্যাচারি কাফেরদের ন্যায়বিচার এবং এটাই সশস্ত্র হওয়ার নোংরা প্রতিযোগিতার নীতি!! আর বিশ্বের সকল কুফফার ও তাগুত শক্তিরা ইসলাম ও মুসলমানদের থেকে এটাই চায়।

    কিন্তু তাদের এসকল অসৎ ও নোংরা উদ্দেশ্য কিভাবে বাস্তবায়ন হবে —যদি আল্লাহর এই আয়াত তথা

    {وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَآخَرِينَ مِنْ دُونِهِمْ لا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ يَعْلَمُهُمْ وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ شَيْءٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنْتُمْ لا تُظْلَمُونَ}.

    অর্থাৎ তোমরা তাদের (কাফের) সাথে মোকাবেলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে, যা দিয়ে তোমরা আল্লাহ ও তোমাদের শত্রুদেরকে ভীতসন্ত্রস্ত করবে এবং তাদেরকে ব্যাতিত অন্যদেরকেও যাদেরকে তোমরা জানো না, আর আল্লাহর রাস্তায় তোমরা যা খরচ করবে সেটার পরিপূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না। (সূরা আনফাল আঃ/৬০)

    —এর অনুসরণ মুসলিম জাতির চিন্তা-চেতনায় বিদ্যমান থাকে!?? কিভাবে তাদের এসকল অসৎ ও নোংরা উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে -যদি মুসলিম উম্মাহর দায়ীগণ নিজ জাতিকে প্রস্তুতি ও জাগরণ এর উপর উদ্বুদ্ধ করেন এবং এই লাঞ্ছনা ও গোলামীর শিকল ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধকরণ অব্যাহত রাখেন!??

    স্বরণ রাখা উচিত; মুসলিম জাতি ঘুমিয়ে পড়ে তবে তারা মরে না...

    মুসলিম জাতির অবনতি ঘটেছে... তবে শ্রীঘ্রই পদযাত্রা পুনরায় শুরু করবে ইনশাআল্লাহ...

    এবং তারা নিজ জাতি ও লোকদের নেতৃত্ব দেওয়া ও যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ...

    যেমনটা আল্লাহ তালা এ-জাতির জন্যই নির্ধারণ করে রেখেছেন।

    আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

    {كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ}

    তোমরাই উত্তম জাতি তোমাদেরকে বের করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্যে তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজ হতে বারন করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখবে। (সূরা আলে ইমরান আঃ/১১০)

    মুসলিম জাতি কোন এক পর্যায়ে হোঁচট খেতে পারে... তবে থামেনা...

    -বরং আপন গতিতেই বিরামহীন চলবে ইনশাআল্লাহ...


    আর এটাই কল্যাণ পুরস্কার ও বিজয়ের সুসংবাদ/ভবিষ্যদ্বাণী -যা সাড়ে চৌদ্দ শত বছর পূর্বেই রাসূল (সঃ) আমাদের'কে করে গিয়েছেন এবং তা অলরেডি বিভিন্ন প্রান্তে দিক-দিগন্তে বাস্তবায়ন হতেও দেখা যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।

    এমনকি ভবিষ্যতের সকল জাতি ও জনগোষ্ঠীর জন্যও সুসংবাদ হলো; অচিরেই এই কালো আঁধার দূরভীত হবে এবং নতুন দিগন্ত উদিত হবে ইনশাআল্লাহ -তা আর বেশি দূরে নয়।

    রাসূল(সঃ) বলেনঃ

    إن الله زوى - أي جمع وضمَّ - لي الأرض، فرأيت مشارقها ومغاربها، وإن أمتي سيبلغ ملكها ما زُوي لي منها

    -আল্লাহ তালা আমার জন্য এই জমিনকে সংকুচিত করে দিয়েছেন অতঃপর আমি তার পূর্ব হতে পশ্চিম মেরু পর্যন্ত প্রত্যক্ষ করেছি আমি যতখানি স্বচক্ষে দেখেছি আমার উম্মতের রাজত্ব ততটুকু পর্যন্ত পৌঁছাবে। (মুসলিম হাঃ/২৮৮৯)


    সুবহানাল্লাহ! উম্মতে মুসলিমাহ'র জন্য কত বড় সুসংবাদ...

    তামীম আদ দারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত; রাসূল (সঃ) আরও বলেনঃ

    ليبلغنَّ هذا الأمر ما بلغ الليل والنهار، ولا يترك الله بيت مدَرٍ ولا وبَرٍ إلا أدخله الله هذا الدين، بعز عزيزٍ أو بذلِّ ذليل، عزاً يعزُّ الله به الإسلام، وذلاً يذل به الكفر

    -অবশ্যই এই দ্বীন পৌঁছবে (ঐ পর্যন্ত) যেখানে রাত-দিন পৌঁছেছে। আল্লাহ তালা কোন ঘর ও শিবিরে এই দ্বীন প্রবিষ্ট না করে ছাড়বেন না; সম্মানীর সম্মানের সাথে হোক অথবা অসম্মানীর অসম্মানের সাথে হোক -এমন সম্মান যার দ্বারা আল্লাহ তালা ইসলাম'কে সম্মানিত করবেন এবং এমন অসম্মান, যার দ্বারা আল্লাহ তালা কুফরী'কে লাঞ্ছিত করবেন। (মুসনদে আহমাদ হাঃ/১৬৯৫৭ মুসতাদরাকে হাকেম হাঃ/৮৩২৬)

    আর এসব বিষয়াদি হবারই -অচিরেই ঘটবে, অবশ্যই কিছুকাল পরে হলেও তুমি এই বিষয়গুলো প্রত্যক্ষ করতে পারবে ইনশাআল্লাহ।

    আর সকল প্রশংসা বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ তায়া’লার জন্যই। দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নাবী (সঃ) এর উপর।


    সমাপ্ত।




    [[অনুদিত ও পরিমার্জিত]]


Working...
X