জিহাদ সংক্রান্ত বিষয়ে সংশয়গ্রস্থ ভাইদের আলোকবর্তিকা।
পাকিস্তানের বিন্নুরী টাউন করাচির উস্তাদ শায়েখ ফজল মুহাম্মাদ বিন নুর মুহাম্মাদ ইউসুফ জাঈ এর মন্তব্য যেটা তিনি ❝জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ পর এতেরাজাত কা ইলমি জায়েজা❞ নামক কিতাবের শুরুতে লিখেছেনঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله وحده والصلاة والسلام علي من لا نبي بعده اما بعد
একঃ
প্রথম শতাব্দী তথা নববী যুগ ও সাহাবা যুগের প্রতি ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোন থেকে তাকালে এ বাস্তবতা দোদিপ্যমান হয় যে,পৃথিবীতে ইসলাম বিস্তার লাভ করেছে পবিত্র জিহাদের মাধ্যমে। আর সুপ্রতিষ্ঠিত ও স্থির থেকেছে মসজিদ, মাদ্রাসা ও উলামাগনের মাধ্যমে।
দুইঃ
যখন থেকে মুসলমানরা জিহাদবিমুখ হয়েছে তখন থেকে ই ইসলামের সম্প্রসারণ থেকে গিয়েছে। আর যে ভুখন্ড থেকে মাদারিস, মাসাজিদ,ও উলামা গন হারিয়ে গেছেন, সেখান থেকে ধীরে ধীরে ইসলাম ও বিদায় নিয়েছে। স্পেনের ইতিহাস আজো আমাদের সামনে।একারনে আল্লাহ তায়ালা যেমনিভাবে ইসলাম কে কিয়ামত অবধি শ্বাশত দ্বীন হিসাবে নির্ধারণ করেছেন তেমনি ভাবে জিহাদকে ও শ্বাশত বিধান রুপে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনঃ
জিহাদ হল মুসলমান দের ইবাদত, মুয়ামালাত,মুয়াশারাত,ও ইজ্জত আব্রু সহ সকল ধর্মীয় শিয়ারের সংরক্ষণ ব্যবস্থা। তাগুত ও কুফুরী বাহিনী এ ব্যবস্থা ভেংগে দিতে চায়। আল্লাহ না করুন যদি এ ব্যবস্থা ভেংগেই জায় তাহলে মুসলমান রা তাদের মর্জাদার উপর আর টিকে থাকতে পারবে না। এমনকি ইসলামের স্বচ্ছ পরিচয় টুকুও দুনিয়া থেকে মুছে যাবে।
চারঃ
জিহাদ আর সন্ত্রাস এর মাঝে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। জারা জিহাদকে সন্ত্রাস বলে তারা হয়তো কাফের, না হয় মুনাফেক। প্রকৃত পক্ষে জিহাদ সকল বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, ও সন্ত্রাসের বিলুপ্তি ও অবসান ঘটায়। এবং নিম্ন শ্রেণীর মানুষকে উচু মর্জাদায় পৌছায়। মুসলমানদের ১৪শত বছরের ইতিহাস এর জলন্ত সাক্ষী।
পাচঃ
কুরআন অবতীর্নের সময়কালে জারা জিহাদ থেকে গা বাচিয়ে রেখেছে বা জিহাদ প্রসঙ্গে দ্বিধা সংকোচ ও আপত্তি তুলেছে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তার রাসুলের জবানে মুনাফিক আখ্যা দিয়েছেন। প্রকৃত মুমিন আর ভেজাল মুমিন নিরুপনের কস্টি পাথর হল জিহাদ।
ছয়ঃ
কুরআন–হাদিস ও মুসলমানদের ইতিহাসের মাধ্যমে জিহাদ আমাদের সামনে দ্বিপ্রহর এর ন্যায় সুস্পষ্ট। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু যেহেতু জিহাদ মানে জীবনের বাজী লাগানো। বিপদ সংকুল কণ্টকাকীর্ণ পথে নিজেকে সপে দেয়া।এ কারণে হীনমন্য আর কাপুরুষের দল সর্বদা জিহাদ থেকে পালানোর চেষ্টা করে থাকে। আর ❝নিজের বদলে কুরআন বদলাও❞এ মূলনীতির আলোকে জিহাদ বিষয় এ বিভিন্ন ধরনের সংশয় সৃষ্টি করতে থাকে।
যদি তাদের দিলে জিহাদের সামান্য জজবাও থাকত তাহলে তারা সংশয় সৃষ্টির পরিবর্তে সৃষ্ট সংশয় এর জবাব খুজতো।
কিন্তু এমনটা তাদের থেকে কখন ই হয়নি। এ কারণে অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল কোন এক মর্দে মুমিন এই ময়দানে আসবে এবং "লাউমাতা লা–ইম" এর আশংকা ঝেড়ে ফেলে এই মহান ফরজ বিধান কে সংশয় সৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করবে। আলহামদুলিল্লাহ এই মহান খেদমত এর তাজ আল্লাহ তায়ালা মাওলানা ইলিয়াস ঘুম্মান হাফিজাহুল্লাহ এর মাথায় পরিয়েছেন। জিনি এই ময়দানের ই শাহসওয়ার এবং বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি ❝জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ পর এতেরাজাত কা ইলমী জায়েজা❞নামে অত্যন্ত মুল্যবান একটি সংকলন ( তাগুতের জিন্দানখানায় থাকাকালীন সময়ে) উম্মতের সামনে পেশ করেছেন।
মাশাল্লাহ! সুস্পষ্ট এবং সাবলীল ভাষায় দলীল ভিত্তিক আলোচনার দ্বারা তিনি এ বিষয়ের হক আদায় করেছেন। আল্লাহ তায়ালা তার এ কারনামা কে কবুল করুন এবং আখেরাতে নাজাতের উসীলা বানায় দেন আমিন।
ফজল মুহাম্মাদ বিন নুর মুহাম্মাদ ইউসুফ জাঈ
উস্তাদ, জামিয়াতুল ইসলামিয়া বিন্নুরী টাউন, করাচী, পাকিস্তান।
৯–১০–১৪২৫হিঃ
প্রিয় তালিবুল ইলম ভাইদের প্রতি আরজ,উক্ত রিসালাহ টা উর্দু সংগ্রহ করতে পারলে সংগ্রহ করে মুতালায়া করুন। আর না পারলে সেটার বাংলা ❝পুন্যের সন্ধানে❞ নামক বইটা সংগ্রহ করে মুতালায়া করুন। ইনশাআল্লাহ আপনার সমস্ত সংশয় দূর হয়ে যাবে। বারবার মুতালায়া করুন। আপনার বক্ষ উন্মোচিত হবে ইনশাআল্লাহ। জামানার নব্য সৃষ্ট সংশয় সমুহের নিরশন হয়ে যাবে।
Comment