প্রাথমিক গেরিলা যুদ্ধ পাঠ-২
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
আগের পাঠে আমরা গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে কিছুটা জেনেছি। আমরা জেনেছি যে এটা দুর্বলদের একটি যুদ্ধকৌশল। এটি নিয়মতান্ত্রিক কোন যুদ্ধ নয়। এই বাহিনীর প্রচলিত সেনা, নেভি ও বিমানবাহিনী নেই।
গেরিলারা সাধারণত লোকালয়ে সাধারণ মানুষদের সাথে বাস করে থাকে। আর নিয়মিত বাহিনী একারনেই তাদের বিষয়ে সমস্যায় পরে কারন তারা চাইলেই ভারী অস্ত্র দিয়ে গেরিলাদের উপর হামলা করতে পারে না। গেরিলারা যুদ্ধের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রচারণার দিকে ব্যপক ভাবে খেয়াল রাখতে হয়। রাজনৈতিক দিকটি তাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ যে সামরিকদিক দিয়ে অনেক ভাল করলেও যদি রাজনৈতিক পরাজয় হয় তাহলে পুরো পরাজয়ী ঘটে। আর ইতিহাসে গেরিলা আন্দলনে এটি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
গেরিলা যুদ্ধ সাধারণত চার প্রকার। গেরিলা যুদ্ধ যে অঞ্চলে পরিচালিত হবে তার অবস্থা অনুযায়ী কোন পন্থায় গেরিলা যুদ্ধ করা হবে তা ধায্য করা হয়। এক্ষেত্রে একটি মুল বিষয় বলা যায় ভুখন্ড।
প্রকার সমুহ:
১. পাহাড়
২. বনজংগল
৩.শহুরে
৪. মরুভূমি
১. পাহাড়: যেসব অঞ্চল গুলো উচু উচু পাহাড় দিয়ে বেস্টিত। শত্রু চাইলেই আপনাকে শেষ করে দিতে পারবেনা। পাহাড় যদি গাছ পালা বেশী থাকে তাহলে আরও উত্তম।
২. বন জংগল: বন জংগল গেরিলা যুদ্ধ করার জন্য উত্তম জায়গা। বনে লুকনো সহজ, শত্রু যখন তখন হামলা সহজেই করতে পারে।
মনে রাখবেন ভাই শত্রু চাইলে পাহাড় ও বনে ভারীযান, ট্যাংক ইত্যাদি দিয়ে আপনাকে হামলা করতে পারবে না।
৩. শহুরে: শায়েখ আবু মুসাব ফা: আ: বলেছেন এটি গেরিলা যুদ্ধের সব থেকে কঠিন প্রকার। কারণ শহরে শত্রুর সাথে একি সাথে থাকা লাগে ভিন্ন পরিচয়ে। শহরে যে কোন সময়ে বাড়িতে, রোডে তল্লাশি করতে পারে। তবে সুবিধা হল শত্রু চাইলেই আপনাকে লোকালয়ে ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা করতে পারবেনা। শত্রু তখন বেশী বেশী রাজনৈতিক ক্যাম্পেইন প্রচারণা করে। এই যেমন ধরেন আমাদেত দেশে সিটিটিসি ও এটিইউ করে থাকে। আমাদের অঞ্চলের মুজাহিদের এই গেরিলা পন্থায় অভিজ্ঞ হওয়া আবশ্যক।
৪. মরুভূমি : এটা সব থেকে কঠিন বলা যায়। কারণ প্রতিরক্ষার জন্য গেরিলাদের এখানে বেশি উপকরণ থাকে না। আবার লজিস্টিক সাপোর্ট খুব কম থাকে গেরিলাদের।
শায়েখ আবু মুসাব আস সুরি হা: ওপেন ফন্ট যুদ্ধ শুরুতে গেরিলা যুদ্ধ করার জন্য কিছু ভুমিগত আবশ্যিক উপাদান বলেছেন, ১. ভুমিটি আয়তনে বড় হবে।
২. লম্বা ও বিভিন্ন ধরনের বরডার।
৩. দেশটি অবরোধ করা কঠিন।
৪. অঞ্চলে অসমতল ভুমি আছে। অর্থাৎ বন, পাহাড় আছে। শত্রুর সাথে সংঘর্ষ এ সাহায্য পাওয়া যাবে।
৫. খাদ্য, পানি পরযাপ্ত থাকবে অবরোধের সময়।
(শায়েখের দাওয়াতুল মুকাওয়ামর নাজারিয়াতুল আস্কারি থেকে)
প্রথম দিকে তামকিনের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। আপনাকে শত্রু সুযোগ দিলেও তামকিন নিবেন না। কারণ নিলে শত্রুর সামনে আপনি দেখা দিলেন। আর এই সুযোগে শত্রু আপনাকে না এসে শুধু আরটিলারি অথবা মিসাইল হামলা করে হত্যা করবে। যা শামে ১৯৮২ এর দিকে আসাদের বাবার সময়।
পরিশেসে আবার বলব গেরিলা যুদ্ধে রাজনৈতিক ফোকাস অনেক বেশী থাকে। তাই মুসলিম হিসেবে আমাদের সিয়াসাতুশ শারিয়া* (শারিয়া ভিত্তিক রাজনীতি) ও সামরিক দিক একসাথে দেখতে হবে।
*এটি কথিত ইসলামি রাজনীতি যা আমরা দেখছি তা নয়। এটি সম্পুর্ন শারিয়া নিরভর। প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহ কি বলেছেন এটা নিয়ে চিন্তা করা হয়। খিলাফাহ ব্যবস্থা এর মাধ্যমে চলত। তালেবান ভাইয়েরা এটার মাধ্যমে চলতে চেস্টা করেন।
আল্লাহ বুঝার তাওফিক দান করুক।
Comment