بسم الله الرحمن الرحيم
মুজাহিদদের আমল ও আখলাক অত্যন্ত উত্তম হওয়া উচিত। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাকে সাহায্য করবে আল্লাহ তাকে ভালবাসবে আল্লাহ তাকে আল্লাহর পথে অটুট রাখবেন এই পথের পথিক ও উত্তম মুয়াল্লিম হলে শাইখ আবু মুসাব আস সুরি (আল্লাহ শাইখকে তাগুতের জেল থেকে মুক্তিদান করুক)। উনার অনবদ্য কিতাব দাওয়াতুল মুকাওয়ামা থেকে আজকে আমরা দেখব যে মুজাহিদের দৈন্দিন আমল কেমন হওয়া উচিত। আমরা চেস্টা করব শাইখের নাসিহা গুলো মানার।
""মুজাহিদদের ইবাদাত, পরহেজগারি ও আখলাকের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ও পরামর্শমুলক তারবিয়াহ (শিক্ষামূলক) কর্মসূচি""
(১) - ঈমান সংস্কারের জন্য সবসময় কাজ করা, নিজের নিয়ত সংশোধন করা এবং সর্বদা সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি ইখলাস আনা।
(২) - সালাতের ওয়াক্তের শুরুতে সালাত আদায় করাতে সচেস্ট হওয়া। এবং যদি সম্ভব হয় জামাতে আদায় করতে আগ্রহী হওয়া এবং এর রুকু ও সিজদা সম্পূর্ণ করা এবং এর পূর্ব ও পরের সুন্নতগুলি আদায় করা এবং সালাত খুশুর সাথে আদায় করা ও সালাত পরিপূর্ণ করা এবং ধারাবাহিকতার সাথে উত্তমরুপে আদায় করা।
(৩) প্রত্যেক সালাতের পর মাসনুন জিকিরগুলো আদায় করা, এবং নামাযের পর নামাজের স্থান সেগুলো আদায় না করে ত্যাগ না করা। জিকিরের পর আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করা।
(৪) - যাকাত প্রদানের আগ্রহ - যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে, তার উপর যাকাত ওয়াজিব - এবং এটির হকদার অনুসন্ধান করা এবং স্বেচ্ছায় তা পরিশোধ করা, এবং ধার্মিক ও অভাবী যারা এর প্রাপ্য তাদের অনুসন্ধান করা, বিশেষত আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে এবং আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদীনদের পরিবার ও মুহাজির, কাছ থেকে আল্লাহর পথে আহত হওয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ করে শত্রুদের হাতে বন্দী ও শহিদের পরিবার।
(৫) - ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখার চেষ্টা করা এবং সর্বোত্তমের জন্য আকাঙ্ক্ষা করা এবং এই সময় প্রচুর ইবাদত করা, বিশেষ করে তারাবীহ নামায পড়া, কুরআন পাঠ করা এবং প্রচুর পরিমাণে দান করা।
(৬) - যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফরয হজ করা এবং যৌবনে হজ আদায় করার চেস্টা করুন।
(৭) – সকালের যিকির (সকালের নামায ও সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী) এবং সন্ধ্যার যিকির (বিকালের নামায ও সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ে) করা ফরয। এবং দিনে ১০০ বার ইস্তিগফার করার আমল অন্তর্ভুক্ত করুন। ঘুমের আগের জিকিরগুলো করা এবং ঘুমের আগে সেশ কথা যাতে হয় শাহাদাহ পাঠ।
(৮) – দুহা নামাযের (সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে দুপুর আগে পর্যন্ত), দুই, চার বা আট রাকাতের সুন্নতের প্রতি লেগে থাকা।
(৯) - প্রতিদিন কুরানের একটি অংশ পাঠ করা এবং প্রতি চন্দ্র মাসে অন্তত একবার কুরআন সরবনিম্ন খতমে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া। এবং প্রতি শুক্রবার সুরাহ কাহাফ পাঠ।
(১০) – প্রতিদিন কিয়ামুল লাইল আদায় করা, ভাইয়ের সামর্থ্য অনুসারে কুরানের অংশ পাঠ করা। সামর্থ্য থাকলে রাতের শেষ তৃতীয়াংশে নামায পড়বেন, অন্যথায় তিনি ঘুমের আগে যতটুকু পারেন সালাত আদায় করবেন ও বিতর আদায় করবেন। আর নবী সা: এর সুন্নত হল এগার রাকাত এবং শেষ রাতে বেশি বেশি ইস্তিগফার করা।
(১১) নফল সিয়াম পালনে সচেস্ট হওয়া এবং প্রতিমাসে অন্তত তিনদিন আয়ায়ামে বিজের সাওম পালন করা
(১৩,১৪,১৫)। সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা এবং সর্বোত্তম রোজা হল দাউদ (আঃ)-এর রোজা, একদিন রোজা রাখা এবং একদিন বিরত হওয়া।
(১২) সামর্থ্য অনুযায়ী সাপ্তাহিক বা মাসিক সাদাকাহতে ইহতিমাম করা।
(১৩) ঘুমাতে যাওয়ার আগে দিনের শেষে গভীর চিন্তা এবং মুহাসাবাহ করা এবং প্রতিদিনের ভাল এবং খারাপ কাজের পর্যালোচনা করা। এবং ইস্তিগফারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতবদ্ধ হওয়া এবং উপার্জনের উৎসের ব্যাপারে নিজের কঠিন মুহাসাবাহ করা এবং এটি সম্পূর্ণরূপে হালাল উৎস কিনা তা অনুসন্ধান করুন, এবং যারা এটির প্রাপ্য তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিন যদি আপনি সন্দেহ করে যে হারাম উপার্জন। এবং গোপনে এবং প্রকাশ্যে আল্লাহর মুরাকাবায় ফিরে যান।
(১৪) - পিতা-মাতার জীবিত থাকলে তাদের সন্তুষ্টি কামনা করা এবং তাদের সম্মান করা, সুসম্পর্ক ও আচার-ব্যবহার করা এবং আর মৃত হলে হজ্জ না করে থাকলে তাদের পক্ষ থেকে হজ্জ করা এবং তাদের নামে দান-খয়রাত করা। তারা মারা যাওয়ার পর তাদের বন্ধুদের সাথে সু-সম্পর্ক রাখা, এবং তাদের জন্য প্রচুর পরিমাণে ক্ষমা এবং রহমত চাওয়া।
(১৫) - আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখা, তাদের সাথে দেখা করা, তাদের সম্মান করা এবং তাদের প্রতি দয়া করা এবং তাদের সাথে সম্পর্ক এবং উপহারের দেয়া। এবং তাদের প্রয়োজন হলে আরথিক সাহায্য করা।
(১৬)- মানুষের সাথে উত্তম আচরণে মেলামেশা করা, তাদের প্রতি ইহসান করা, তারা খারাপ করলে ধৈর্য ধারণ করা, তাদের জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং মুসলমানদের জন্য দোয়া করা।
(১৭) - প্রত্যক কাজে আল্লাহর রসূলের সা: সুন্নাতের প্রতি ইহতিমাম করা, এবং তাঁর কথা ও কাজ এবং তার সুন্নাহ ও উনার সা: আনীত শারিয়াহ মেনে চলা। খাদ্য, পানীয়, পোশাক, নিদ্রা, জাগরণ, পরিবারের সাথে মেলামেশা, প্রতিবেশীদের সাথে সুসম্পর্ক, আত্মীয়তার সম্পর্ক এবং প্রতিটি বিষয়ে রাসুলের সা: সুন্নাহ মেনে চলা। এবং এসব অনুসরণে বিভিন্ন কিতাবের সাহায্য নেয়া (যেমন: ইমাম ইবনুল কাইয়্যিমের কিতাব জাদ আল-মাদ, আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন)।""
(শাইখ আবু মুসাব আস সুরি ফা: আ:, দাওয়াতুল মুকাওয়ামা, তারবিয়াহ খন্ড, পেজ: ২০৪-৫)
Comment