আমরা গেরিলা যুদ্ধের পরিবেশ-পরিস্থিতি, শর্ত-সক্ষমতা অর্জন করা পর্যন্ত সাংগঠনিকভাবে ৪র্থ ধাপ সশস্ত্র যুদ্ধের ডাক দেই না। এটাই আমার নীতিগত ধারণা। কিন্তু আমরা জনগণকে সশস্ত্র সড়কে নিয়ে আসতে চাই। কারণ, এ-পথে সূচনালগ্নে তেমন ধৈর্য-সক্ষমতার প্রয়োজন পড়ে না এবং পড়ে না তেমন উপযুক্ত পরিবেশ-পরিস্থিতির। হুশিয়ার ও বুদ্ধিদীপ্ত জনআন্দোলন রাষ্ট্রের পট পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম। বিশেষকরে জনগণ যদি হয় শোষিত ও নিপিড়ীত। কিন্তু ইসলাম স্বীয় নীতিবহির্ভূত কোনো পদক্ষেপ সমর্থন করে না।
আওয়ামী দুঃশাসনের শোষননীতির থাবায় বাংলার মুসলমানরা একটু একটু নড়েচড়ে বসছে। সশস্ত্র বাহিনীর স্বাধীন ও দৃঢ়চেতা সদস্যরা কিছু হয়তো করতে চায়। কিন্তু কথা হল, তাদের আন্দোলনের মুখ কেবল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ; কুফরের বিরুদ্ধে নয়।
ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব এই সরকারকে উৎখাত করে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিস্থাপনকল্পে বিপ্লব ও আন্দোলন করার আহ্বান করেছেন। তাহলে কি আমার ভায়েরা আবার-ও সেই ঘোলাজল খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন? ৭১-রে যে সরকার গঠিত হয়েছিল, তা কি পূর্ণ সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না? সেই সুষ্ঠু সরকার-ই তো আজকের নির্মম জালেমে পরিণত হল তাই না? তো এখন যদি আবার সেই আগের গণতন্ত্রকেই এখতিয়ার করে নেন, তাহলে শোষণ থেকে মুক্তি কিভাবে সম্ভব?! তাছাড়া গণতন্ত্র দিয়ে কি শত্রুরাষ্ট্র ভারতের নখরথাবা ছিন্নভিন্ন করা যাবে? না। কেবল ইসলামী সরকার-ই পারে দানব মোদীর কালোচোখ উপড়ে ফেলতে। তার আরামের ঘুম হারাম করে দিতে। আর তাই তো মোদী ও ভারতীয় গোয়েন্দা কোম্পানি 'র' তালেবান সরকারকে বাঘের মতো ভয় পায়।
আরব বসন্তের ধাক্কায় ক্ষমতাসীন আরব শাসকগুলো একে একে ছিটকে পড়ল। কিন্তু যখন এই বিপ্লব কুফরের বিরুদ্ধে ছিল না, নকল স্বাধীনতা ছাড়া আর কিছুই হাসিল হয় নি। বরং উল্টো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের ধ্বংস তরান্বিত করল। আমার ভায়েরা, এখনো কি আপনারা গণতন্ত্রের ধোঁকায় পড়ে থাকবেন? মনে রাখবেন, মায়ের মতো মুসলমানদেরকে আগলে রাখবে কেবল ইসলামী শাসনব্যবস্থা। অন্তরে যদি সামান্য পরিমাণ-ও আল্লাহভীতি থাকে, তবে আল্লাহর ওয়াস্তে বিপ্লবের এই শ্লোগান বদলে ফেলুন। শুধু শোষণ নয়, প্রথমে কুফরের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। কারণ, কুরআনের ভাষায় কুফর হল সবচ' বড় জুলুম। ইসলাম কেবল জুলুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সমর্থন করে না। কিন্তু কুফরের শাসন সহ্য-ও করে না। কারণ, ইসলামের দৃষ্টিতে জালেম শাসক ততটুকু ক্ষতিকর নয়, যতটুকু ক্ষতিকর কাফের শাসক। অতএব, যতক্ষণ পর্যন্ত এই বিদ্রোহের রুখ কুফরের বিরুদ্ধে না ফেরানো হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই বিদ্রোহ নীতিগত বৈধতা রাখে না।
আমার দেশের অধিকাংশ মুসলমান-ই ধর্মপ্রাণ। আপনাদেরকেই বলছি, আপন ধর্মকে চিনুন। ১৩শ বছর ধরে যে ধর্ম আমাদেরকে শাসননীতি শিখাল, এই শতাব্দীতে এসে তা কি বেকার হয়ে গেল? ষোড়শ শতকের আগপর্যন্ত তো অসভ্য ইউরোপ অন্ধকারে-ই ছিল। আর আজ সেই নাস্তিক্যবাদী ও বস্তুবাদীদের শাসননীতি-ই আমাদের সর্বশেষ নীতি হিসেবে মনোনীত হল?
সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলবো, প্রশিক্ষণকালে আপনাদেরকে দেশপ্রেম, জনসেবা ও স্বাধীনতা রক্ষার সবক দেওয়া হয়েছিল। তাহলে ইসলাম রক্ষা, ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা এই দুই সবক দেওয়া হয় নি কেন? ইসলাম রক্ষা ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার নীতিতে চলে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি মক্কা বিজয় করেন নি? সোয়া লক্ষ নাগরিকের সেবা নিশ্চিত করেন নি? পুরো আরব উপদ্বীপের স্বাধীনতা রক্ষা করেন নি? তখন তো গণতন্ত্রের নামগন্ধও ছিল না।
খলীফা উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর জগতজোড়া ঘটনাগুলো আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। অর্ধ পৃথিবীর প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুরো অর্ধ পৃথিবীর প্রেম তো তাঁর বুকেও ছিল। লক্ষ লক্ষ নাগরিকের সেবা তো তিনিও নিশ্চিত করেছেন। পুরো অর্ধ পৃথিবীব্যপী ইসলামি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সীমান্ত রক্ষা তো তিনিও করেছেন। কিন্তু তিনি তো এসবের জন্য গণতন্ত্রের কোনো প্রয়োজন বোধ করেন নি?
এসব সবকের বাস্তবায়নের জন্য তো গণতন্ত্রের দরকার হয় না? কেননা, আমাদের তো আল্লাহপ্রদত্ব নিখুঁত ও নিপুণ রাষ্ট্রনীতি আছে। আছে যৌক্তিক ও সম্পূর্ণ মানবিক সংবিধান। গণতন্ত্রের দরকার তো সেই ইউরোপ ও আমেরিকার জন্য, যাদের কাছে আল্লাহপ্রদত্ব কোনো শাসননীতি ও সংবিধান নেই? তবে কোন্ দুঃখে আপনারা সুষ্ঠু! গণতন্ত্রের শ্লোগান তুলছেন? আপনাদের পবিত্র মুখে কেবল সুষ্ঠু ইসলামের শ্লোগান-ই শোভা পায়।
এরা আপনাদেরকে এসব শিরোনামের আড়ালে ধোঁকা দিয়েছে। আর তাই, যে ব্রেণ ওয়াশ করা হয়েছিল আপনাদের, তার ফলাফল হিসেবে আজকের এই কঠিন মুহূর্তে-ও সেই একই ধোঁয়াশার শ্লোগান তুলে যাচ্ছেন।
আমার এখনো বুঝে আসে না যে, সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম ও মুসলমানদের কী ফায়দা। কেননা, সুষ্ঠু গণতন্ত্র বলে, "সার্বভৌমত্ব জনগণের"। আপনারা বলুন, এই জঘন্য কুফরি বিশ্বাস দিয়ে আমাদের কী ফায়দা? সুষ্ঠু গণতন্ত্র বলে, " সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ"। নাউজুবিল্লাহ! আপনারাই বলুন, এই বর্বর আকিদা দিয়ে আমরা মুসলমানদের কী ফায়দা?
সুষ্ঠু গণতন্ত্র বিশ্বাসের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, অবাধ ব্যক্তিমালিকানা স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার নীতিতে আবদ্ধ। একটু বিশ্লেষণ করে বলবেন কি, এই চার নীতি দিয়ে আমি ও আমরা কী উপকারটি অর্জন করলাম? এই চারটি মূলনীতি মেনে নেওয়া মানে কি কুরআনের সাথে সরাসরি বেয়াদবি করা নয়? ও, স্বাধীনতা শব্দ দেখে মনে হয় এসবকে নিষ্পাপ মনে করেছেন৷
তাহলে আমি প্রশ্ন করতে চাই, আপনাকে যদি কেউ বিশ্বাসের স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনি এক আল্লাহতে বিশ্বাসী হতেও পারেন। আবার এক আল্লাহকে অস্বীকার-ও করতে পারেন? নাউজুবিল্লাহ! আপনাকে কেউ যদি বাক স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনি এক আল্লাহর কথা বলতে-ও পারেন, আবার এক আল্লাহকে বেয়াদবের মতো গালিও দিতে পারেন? কোনো বিচার হবে না! আপনাকে কেউ যদি মালিকানার স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনার সামনে হাজারো মানুষ ক্ষুৎপিপাসায় কাতরাতে কাতরাতে আসলেও আপনি নিজ মালিকানায় কোটি কোটি আটকে রেখে তাদেরকে নির্মমভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারেন? এটা কোনো অপরাধ নয়, যা আজকের বর্বর পুঁজিবাদী ধারায় চলছে? কেউ যদি আপনাকে ব্যক্তি স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনি মানুষের চরিত্রে ভূষিত হয়ে সোনার মানুষ-ও হতে পারেন, আবার পশুদের মতো জন্মদাতা মায়ের সাথে যিনাও করতে পারেন? কোনো সমস্যা নেই?
এখন বলুন, এসব অপরাধ আর পশুত্ব-ই যদি হয় সুষ্ঠু গণতন্ত্রের নীতি, তাহলে সেই গণতন্ত্রের শ্লোগান দিতে আপনাদের লজ্জা করে না? নিজের ঈমান ও আত্মসম্মান আপনাকে বাঁধা দেয় না?
অতএব, আমি সশস্ত্র বাহিনীসহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে বলবো, বিপ্লব যদি হয় তবে এই সরকারের কুফর ও শিরকের বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র নামের এই বেহায়া-বেয়াদব ও নিপীড়ন যন্ত্রের বিরুদ্ধে। না হয় বলতে দ্বিধা নেই, এই গণতন্ত্র আবার-ও এমন ফ্যাসিবাদী সরকার নিয়ে আসবে, যার জুলুম আর দুঃশাসন হবে আগের চেয়েও অধিক ভয়ংকর! আজকের এই স্বাধীনতার পরিণতিও তাই হবে, যা হয়েছিল ৭১-র স্বাধীনতার আজকের এই করুণ পরিণতি। যদি সুশাসন ও সত্যিকার শান্তি চান, যদি বাস্তবে জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা চান, তবে কসম দিয়ে বলছি, "ইসলামের দিকে ফিরে আসুন"।
হে মুসলমান ভায়েরা, এবার এমন সরকার প্রতিষ্ঠা করুন, যারা বিশ্বব্যাপী সালাত কায়েম করবে। যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার ঝাণ্ডাবাহী হবে। কেবল সৎ ও পবিত্র কর্মের আদেশ দেবে এবং পাপাচার, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও গর্হিত কর্মে নিবৃত রাখবে।
আওয়ামী দুঃশাসনের শোষননীতির থাবায় বাংলার মুসলমানরা একটু একটু নড়েচড়ে বসছে। সশস্ত্র বাহিনীর স্বাধীন ও দৃঢ়চেতা সদস্যরা কিছু হয়তো করতে চায়। কিন্তু কথা হল, তাদের আন্দোলনের মুখ কেবল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ; কুফরের বিরুদ্ধে নয়।
ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব এই সরকারকে উৎখাত করে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিস্থাপনকল্পে বিপ্লব ও আন্দোলন করার আহ্বান করেছেন। তাহলে কি আমার ভায়েরা আবার-ও সেই ঘোলাজল খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন? ৭১-রে যে সরকার গঠিত হয়েছিল, তা কি পূর্ণ সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না? সেই সুষ্ঠু সরকার-ই তো আজকের নির্মম জালেমে পরিণত হল তাই না? তো এখন যদি আবার সেই আগের গণতন্ত্রকেই এখতিয়ার করে নেন, তাহলে শোষণ থেকে মুক্তি কিভাবে সম্ভব?! তাছাড়া গণতন্ত্র দিয়ে কি শত্রুরাষ্ট্র ভারতের নখরথাবা ছিন্নভিন্ন করা যাবে? না। কেবল ইসলামী সরকার-ই পারে দানব মোদীর কালোচোখ উপড়ে ফেলতে। তার আরামের ঘুম হারাম করে দিতে। আর তাই তো মোদী ও ভারতীয় গোয়েন্দা কোম্পানি 'র' তালেবান সরকারকে বাঘের মতো ভয় পায়।
আরব বসন্তের ধাক্কায় ক্ষমতাসীন আরব শাসকগুলো একে একে ছিটকে পড়ল। কিন্তু যখন এই বিপ্লব কুফরের বিরুদ্ধে ছিল না, নকল স্বাধীনতা ছাড়া আর কিছুই হাসিল হয় নি। বরং উল্টো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের ধ্বংস তরান্বিত করল। আমার ভায়েরা, এখনো কি আপনারা গণতন্ত্রের ধোঁকায় পড়ে থাকবেন? মনে রাখবেন, মায়ের মতো মুসলমানদেরকে আগলে রাখবে কেবল ইসলামী শাসনব্যবস্থা। অন্তরে যদি সামান্য পরিমাণ-ও আল্লাহভীতি থাকে, তবে আল্লাহর ওয়াস্তে বিপ্লবের এই শ্লোগান বদলে ফেলুন। শুধু শোষণ নয়, প্রথমে কুফরের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। কারণ, কুরআনের ভাষায় কুফর হল সবচ' বড় জুলুম। ইসলাম কেবল জুলুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সমর্থন করে না। কিন্তু কুফরের শাসন সহ্য-ও করে না। কারণ, ইসলামের দৃষ্টিতে জালেম শাসক ততটুকু ক্ষতিকর নয়, যতটুকু ক্ষতিকর কাফের শাসক। অতএব, যতক্ষণ পর্যন্ত এই বিদ্রোহের রুখ কুফরের বিরুদ্ধে না ফেরানো হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই বিদ্রোহ নীতিগত বৈধতা রাখে না।
আমার দেশের অধিকাংশ মুসলমান-ই ধর্মপ্রাণ। আপনাদেরকেই বলছি, আপন ধর্মকে চিনুন। ১৩শ বছর ধরে যে ধর্ম আমাদেরকে শাসননীতি শিখাল, এই শতাব্দীতে এসে তা কি বেকার হয়ে গেল? ষোড়শ শতকের আগপর্যন্ত তো অসভ্য ইউরোপ অন্ধকারে-ই ছিল। আর আজ সেই নাস্তিক্যবাদী ও বস্তুবাদীদের শাসননীতি-ই আমাদের সর্বশেষ নীতি হিসেবে মনোনীত হল?
সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলবো, প্রশিক্ষণকালে আপনাদেরকে দেশপ্রেম, জনসেবা ও স্বাধীনতা রক্ষার সবক দেওয়া হয়েছিল। তাহলে ইসলাম রক্ষা, ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা এই দুই সবক দেওয়া হয় নি কেন? ইসলাম রক্ষা ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার নীতিতে চলে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি মক্কা বিজয় করেন নি? সোয়া লক্ষ নাগরিকের সেবা নিশ্চিত করেন নি? পুরো আরব উপদ্বীপের স্বাধীনতা রক্ষা করেন নি? তখন তো গণতন্ত্রের নামগন্ধও ছিল না।
খলীফা উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর জগতজোড়া ঘটনাগুলো আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। অর্ধ পৃথিবীর প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুরো অর্ধ পৃথিবীর প্রেম তো তাঁর বুকেও ছিল। লক্ষ লক্ষ নাগরিকের সেবা তো তিনিও নিশ্চিত করেছেন। পুরো অর্ধ পৃথিবীব্যপী ইসলামি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সীমান্ত রক্ষা তো তিনিও করেছেন। কিন্তু তিনি তো এসবের জন্য গণতন্ত্রের কোনো প্রয়োজন বোধ করেন নি?
এসব সবকের বাস্তবায়নের জন্য তো গণতন্ত্রের দরকার হয় না? কেননা, আমাদের তো আল্লাহপ্রদত্ব নিখুঁত ও নিপুণ রাষ্ট্রনীতি আছে। আছে যৌক্তিক ও সম্পূর্ণ মানবিক সংবিধান। গণতন্ত্রের দরকার তো সেই ইউরোপ ও আমেরিকার জন্য, যাদের কাছে আল্লাহপ্রদত্ব কোনো শাসননীতি ও সংবিধান নেই? তবে কোন্ দুঃখে আপনারা সুষ্ঠু! গণতন্ত্রের শ্লোগান তুলছেন? আপনাদের পবিত্র মুখে কেবল সুষ্ঠু ইসলামের শ্লোগান-ই শোভা পায়।
এরা আপনাদেরকে এসব শিরোনামের আড়ালে ধোঁকা দিয়েছে। আর তাই, যে ব্রেণ ওয়াশ করা হয়েছিল আপনাদের, তার ফলাফল হিসেবে আজকের এই কঠিন মুহূর্তে-ও সেই একই ধোঁয়াশার শ্লোগান তুলে যাচ্ছেন।
আমার এখনো বুঝে আসে না যে, সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম ও মুসলমানদের কী ফায়দা। কেননা, সুষ্ঠু গণতন্ত্র বলে, "সার্বভৌমত্ব জনগণের"। আপনারা বলুন, এই জঘন্য কুফরি বিশ্বাস দিয়ে আমাদের কী ফায়দা? সুষ্ঠু গণতন্ত্র বলে, " সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ"। নাউজুবিল্লাহ! আপনারাই বলুন, এই বর্বর আকিদা দিয়ে আমরা মুসলমানদের কী ফায়দা?
সুষ্ঠু গণতন্ত্র বিশ্বাসের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, অবাধ ব্যক্তিমালিকানা স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার নীতিতে আবদ্ধ। একটু বিশ্লেষণ করে বলবেন কি, এই চার নীতি দিয়ে আমি ও আমরা কী উপকারটি অর্জন করলাম? এই চারটি মূলনীতি মেনে নেওয়া মানে কি কুরআনের সাথে সরাসরি বেয়াদবি করা নয়? ও, স্বাধীনতা শব্দ দেখে মনে হয় এসবকে নিষ্পাপ মনে করেছেন৷
তাহলে আমি প্রশ্ন করতে চাই, আপনাকে যদি কেউ বিশ্বাসের স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনি এক আল্লাহতে বিশ্বাসী হতেও পারেন। আবার এক আল্লাহকে অস্বীকার-ও করতে পারেন? নাউজুবিল্লাহ! আপনাকে কেউ যদি বাক স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনি এক আল্লাহর কথা বলতে-ও পারেন, আবার এক আল্লাহকে বেয়াদবের মতো গালিও দিতে পারেন? কোনো বিচার হবে না! আপনাকে কেউ যদি মালিকানার স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনার সামনে হাজারো মানুষ ক্ষুৎপিপাসায় কাতরাতে কাতরাতে আসলেও আপনি নিজ মালিকানায় কোটি কোটি আটকে রেখে তাদেরকে নির্মমভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারেন? এটা কোনো অপরাধ নয়, যা আজকের বর্বর পুঁজিবাদী ধারায় চলছে? কেউ যদি আপনাকে ব্যক্তি স্বাধীনতা দেয়, তবে কি এর অর্থ এই নয় যে, আপনি মানুষের চরিত্রে ভূষিত হয়ে সোনার মানুষ-ও হতে পারেন, আবার পশুদের মতো জন্মদাতা মায়ের সাথে যিনাও করতে পারেন? কোনো সমস্যা নেই?
এখন বলুন, এসব অপরাধ আর পশুত্ব-ই যদি হয় সুষ্ঠু গণতন্ত্রের নীতি, তাহলে সেই গণতন্ত্রের শ্লোগান দিতে আপনাদের লজ্জা করে না? নিজের ঈমান ও আত্মসম্মান আপনাকে বাঁধা দেয় না?
অতএব, আমি সশস্ত্র বাহিনীসহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে বলবো, বিপ্লব যদি হয় তবে এই সরকারের কুফর ও শিরকের বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র নামের এই বেহায়া-বেয়াদব ও নিপীড়ন যন্ত্রের বিরুদ্ধে। না হয় বলতে দ্বিধা নেই, এই গণতন্ত্র আবার-ও এমন ফ্যাসিবাদী সরকার নিয়ে আসবে, যার জুলুম আর দুঃশাসন হবে আগের চেয়েও অধিক ভয়ংকর! আজকের এই স্বাধীনতার পরিণতিও তাই হবে, যা হয়েছিল ৭১-র স্বাধীনতার আজকের এই করুণ পরিণতি। যদি সুশাসন ও সত্যিকার শান্তি চান, যদি বাস্তবে জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা চান, তবে কসম দিয়ে বলছি, "ইসলামের দিকে ফিরে আসুন"।
হে মুসলমান ভায়েরা, এবার এমন সরকার প্রতিষ্ঠা করুন, যারা বিশ্বব্যাপী সালাত কায়েম করবে। যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার ঝাণ্ডাবাহী হবে। কেবল সৎ ও পবিত্র কর্মের আদেশ দেবে এবং পাপাচার, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও গর্হিত কর্মে নিবৃত রাখবে।
শ্লোগান এবার এটাই হওয়া চাই, "গণতন্ত্র নিপাত যাক, দ্বীন ইসলাম জিন্দাবাদ"!!!!
Comment