গত পর্বে আলোচনা করেছিলাম যে, প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর উপর কোনো না কোনো স্তরে জিহাদ ফরয। কেউ এ দায়িত্ব থেকে মুক্ত নয়। এখন প্রশ্ন হলো, এ ফরয বহাল থাকবে কতদিন?
সহজে বললে এ ফরয বহাল থাকবে আজীবন। যতদিন আপনি জীবিত থাকবেন এ ফরয আদায় করে যেতে হবে। এভাবেই চলবে কেয়ামত পর্যন্ত। কারণ, যতদিন কুফরের শক্তি থাকবে ততদিন তা চূর্ণ করে ইসলাম বিজয়ী করার জন্য আপনাকে জিহাদ করে যেতে হবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন,
ইমাম জাসসাস রহ. (৩৭০ হি.) বলেন:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
অতএব, যতদিন পৃথিবীর বুকে কুফরের দাপট থাকবে ততদিন জিহাদ ফরয। হয় মুসলমান হবে নয়তো জিযিয়া দিয়ে নত হয়ে মুসলিমদের অধীনে বসবাস করবে। তৃতীয় কোনো পথ নেই। আর স্পষ্ট যে, কেয়ামত অবধি কুফরের এ শক্তি কোথাও না কোথাও থেকেই যাবে। এটিই আল্লাহ তাআলার ফায়সালা। তাই জিহাদও ফরয থেকে যাবে। কেয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
অন্য হাদিসে ইরশাদ করেন,
সহজে বললে এ ফরয বহাল থাকবে আজীবন। যতদিন আপনি জীবিত থাকবেন এ ফরয আদায় করে যেতে হবে। এভাবেই চলবে কেয়ামত পর্যন্ত। কারণ, যতদিন কুফরের শক্তি থাকবে ততদিন তা চূর্ণ করে ইসলাম বিজয়ী করার জন্য আপনাকে জিহাদ করে যেতে হবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ
তোমরা তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করতে থাক, যতক্ষণ না (যাবতীয়) ফিতনার (চূড়ান্ত) অবসান হয় এবং আল্লাহর (যমিনে আল্লাহর দেয়া) জীবনব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গরূপে ক্ষমতাসীন হয়। -আনফাল: ৩৯
তোমরা তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করতে থাক, যতক্ষণ না (যাবতীয়) ফিতনার (চূড়ান্ত) অবসান হয় এবং আল্লাহর (যমিনে আল্লাহর দেয়া) জীবনব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গরূপে ক্ষমতাসীন হয়। -আনফাল: ৩৯
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
فإذا كان بعض الدين لله وبعضه لغير الله وجب القتال حتى يكون الدين كله لله. اهـ
অতএব, যদি জীবনব্যবস্থার কিছু অংশ আল্লাহর হয় আর কিছু অংশ গাইরুল্লাহর হয়, তাহলে কিতাল ফরয- যাবৎ না আল্লাহর দেয়া জীবনব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গরূপে ক্ষমতাসীন হয়। -মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৫১১
অতএব, যদি জীবনব্যবস্থার কিছু অংশ আল্লাহর হয় আর কিছু অংশ গাইরুল্লাহর হয়, তাহলে কিতাল ফরয- যাবৎ না আল্লাহর দেয়া জীবনব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গরূপে ক্ষমতাসীন হয়। -মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৫১১
আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন,
فَإِذَا انْسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
অত:পর যখন নিষিদ্ধ মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা করা এবং তাদেরকে পাকড়াও কর, তাদেরকে অবরোধ কর এবং তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে বসে থাক। তবে তারা যদি তাওবা করে – মুসলমান হয়ে যায় – এবং সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয়, তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। –তাওবা: ৫
আরো ইরশাদ করেন, অত:পর যখন নিষিদ্ধ মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা করা এবং তাদেরকে পাকড়াও কর, তাদেরকে অবরোধ কর এবং তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে বসে থাক। তবে তারা যদি তাওবা করে – মুসলমান হয়ে যায় – এবং সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয়, তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। –তাওবা: ৫
قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ
“তোমরা কিতাল কর আহলে কিতাবের সেসব লোকের সাথে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তার রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম করে না এবং সত্য দ্বীন গ্রহণ করে না, যতক্ষণ না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিযিয়া প্রদান করে।” –তাওবা: ২৯
“তোমরা কিতাল কর আহলে কিতাবের সেসব লোকের সাথে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তার রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম করে না এবং সত্য দ্বীন গ্রহণ করে না, যতক্ষণ না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিযিয়া প্রদান করে।” –তাওবা: ২৯
ইমাম জাসসাস রহ. (৩৭০ হি.) বলেন:
فتضمنت الآيتان وجوب القتال للكفار حتى يسلموا أو يؤدوا الجزية.اهـ
এ দুই আয়াত বুঝাচ্ছে, কাফেরদের বিরুদ্ধে কিতাল চালিয়ে যাওয়া ফরয, যতক্ষণ না তারা হয়তো মুসলমান হয়ে যায়, নতুবা জিযিয়া প্রদানে সম্মত হয়। -আহকামুল কুরআন: ৩/৫২১
এ দুই আয়াত বুঝাচ্ছে, কাফেরদের বিরুদ্ধে কিতাল চালিয়ে যাওয়া ফরয, যতক্ষণ না তারা হয়তো মুসলমান হয়ে যায়, নতুবা জিযিয়া প্রদানে সম্মত হয়। -আহকামুল কুরআন: ৩/৫২১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
أمرت أن أقاتل الناس حتى يشهدوا أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله ويقيموا الصلاة ويؤتوا الزكاة
আমি ততক্ষণ পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা এই স্বাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং
নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে। -সহীহ বুখারি: ২৫
আমি ততক্ষণ পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা এই স্বাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং
নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে। -সহীহ বুখারি: ২৫
অতএব, যতদিন পৃথিবীর বুকে কুফরের দাপট থাকবে ততদিন জিহাদ ফরয। হয় মুসলমান হবে নয়তো জিযিয়া দিয়ে নত হয়ে মুসলিমদের অধীনে বসবাস করবে। তৃতীয় কোনো পথ নেই। আর স্পষ্ট যে, কেয়ামত অবধি কুফরের এ শক্তি কোথাও না কোথাও থেকেই যাবে। এটিই আল্লাহ তাআলার ফায়সালা। তাই জিহাদও ফরয থেকে যাবে। কেয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
الجهادُ ماضٍ منذُ بعثني اللهُ إلى أن يقاتلَ آخِرُ أُمتي الدجالَ، لا يبطِلُه جَوْر جائرٍ، ولا عَدل عادلٍ. -سنن أبي داود: 2532، قال المحققون: حسن لغيره. اهـ
যখন থেকে আমাকে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন তখন থেকে নিয়ে আমার উম্মতের শেষ অংশ দাজ্জালের বিরুদ্ধে কিতাল করা পর্যন্ত জিহাদ চলতে থাকবে। কোনো জালেমের জুলুম বা কোনো ইনসাফগারের ইনসাফ তা বাতিল করতে পারবে না। -সুনানে আবু দাউদ: ২৫৩২
যখন থেকে আমাকে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন তখন থেকে নিয়ে আমার উম্মতের শেষ অংশ দাজ্জালের বিরুদ্ধে কিতাল করা পর্যন্ত জিহাদ চলতে থাকবে। কোনো জালেমের জুলুম বা কোনো ইনসাফগারের ইনসাফ তা বাতিল করতে পারবে না। -সুনানে আবু দাউদ: ২৫৩২
অন্য হাদিসে ইরশাদ করেন,
لا تزال عصابة من أمتى يقاتلون على أمر الله قاهرين لعدوهم لا يضرهم من خالفهم حتى تأتيهم الساعة وهم على ذلك
আমার উম্মতের একটা দল কেয়ামত পর্যন্ত কিতাল করতে থাকবে। তারা থাকবে আল্লাহর আদেশের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাদের শত্রুদের উপর হবে প্রতাপশালী। তাদের বিরোধীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কেয়ামত অবধি তারা এ অবস্থার উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকবে। –সহীহ মুসলিম: ৫০৬৬
অতএব, জিহাদের দায়িত্ব শেষ- এমন ভাবার কোনো সুযোগ কোনো মুমিনের নেই মৃত্যু অবধি। আমার উম্মতের একটা দল কেয়ামত পর্যন্ত কিতাল করতে থাকবে। তারা থাকবে আল্লাহর আদেশের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাদের শত্রুদের উপর হবে প্রতাপশালী। তাদের বিরোধীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কেয়ামত অবধি তারা এ অবস্থার উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকবে। –সহীহ মুসলিম: ৫০৬৬
Comment