Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০৫ || আল্লাহ্ আমাদের বিজয়ের জন্য প্রস্তুত করছেন|| - ইমাম আনওয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ) || ২য় পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০৫ || আল্লাহ্ আমাদের বিজয়ের জন্য প্রস্তুত করছেন|| - ইমাম আনওয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ) || ২য় পর্ব

    আত্তিবয়ান পাবলিকেশন্স
    কর্তৃক প্রকাশিত

    আল্লাহ্ আমাদের বিজয়ের জন্য প্রস্তুত করছেন
    ইমাম আনওয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)
    এর থেকে
    পর্ব : ২য়

    ==================================================
    ===============================
    আল্লাহ্‌ আমাদের বিজয়ের জন্য প্রস্তুত করছেন


    (১) আল্লাহ্‌ কোন পরিণতি চাইলে, তার উপায় তিনি সৃষ্টি করবেন

    এই শিরোনামটি ইমাম ইবনে আসীর-এর ইতিহাস গ্রন্থ ‘আল-কামিল’ থেকে নেয়া। আল্লাহ্‌ কোন পরিণতি বা চূড়ান্ত সমাপ্তি চাইলে, তিনি যথার্থ উপায় ও উপলক্ষ্য সৃষ্টি করবেন, যা সেই নির্ধারিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবে। আল্লাহ্ তা‘আলা এই উম্মতের জন্য বিজয় চাইলে, তিনি বিজয়ের উপযুক্ত ক্ষেত্র তৈরি করবেন। বর্তমানে যা কিছু ঘটছে, সেই ঘটনা প্রবাহ থেকে বিজয়ের আগাম বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।

    উপরোক্ত বিধানটি সঠিক বলে প্রতীয়মান হলে আমরা যাচাই করে প্রমাণ করতে সক্ষম হব যে, অভীষ্ট লক্ষ্য বা পরিণতি সঠিক ও উপযুক্ত পথে ধাবিত হচ্ছে। বিজয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ ধারণা হল, চূড়ান্ত পরিণামে, এই উম্মতের বিজয় অর্জিত হবে। আল্লাহ্‌ তা‘আলা কুরআনে এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদিসে বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই প্রতিশ্রুতিতে আমাদের সবার ইয়াক্বীন তথা দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা উচিত। ইয়াক্বীনের বিষয় আসলে আকীদাহ-র সাথে সংশ্লিষ্ট। মুসলিম হিসেবে আপনাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, এই উম্মাহ চূড়ান্ত বিজয় লাভ করবে তা কেউ অস্বীকার করলে বুঝতে হবে, তার ঈমানে সমস্যা রয়েছে। কেন? কারণ এর পক্ষে অকাট্য দলিল প্রমাণাদি রয়েছে। তার কতিপয় নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

    আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,

    وَلَقَدْ كَتَبْنَا فِي الزَّبُورِ مِنْ بَعْدِ الذِّكْرِ أَنَّ الْأَرْضَ يَرِثُهَا عِبَادِيَ الصَّالِحُون

    আমরা পূর্ববর্তী উপদেশের (তাওরাত) পর যবূর কিতাবে লিখে দিয়েছি যে, সৎকর্মপরায়ণ বান্দাগণ অবশেষে পৃথিবীর অধিকার ও কর্তৃত্ব লাভ করবে।”


    সুতরাং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তা‘আলার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাগণ পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। আল্লাহ্‌ তা‘আলা বলেন,

    قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ اسْتَعِينُوا بِاللَّهِ وَاصْبِرُوا إِنَّ الْأَرْضَ لِلَّهِ يُورِثُهَا مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ

    আমার বান্দা ও রাসূলগণের ব্যাপারে এই কথা সত্য হয়েছে যে, তাঁরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে; এবং আমার বাহিনীই (সর্বশেষে) বিজয়ী হবে।”


    আল্লাহ্ নবীদের প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি তাদের বিজয় দান করবেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ

    إِنَّ الْأَرْضَ لِلَّهِ يُورِثُهَا مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ

    “…নিশ্চয়ই এই পৃথিবী আল্লাহর; তাঁর বান্দাদের মাঝে যাকে খুশি তিনি কর্তৃত্ব দান করেন, তবে চূড়ান্তভাবে মুত্তাকীগণ এর কর্তৃত্ব লাভ করবে।”


    অর্থাৎ আল্লাহ্ জমিনের কর্তৃত্ব মু’মিন বা কাফির যাকে খুশি দান করেন কিন্তু আয়াতের শেষে মুত্তাকী মু’মিনদের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব লাভের কথা বলা হয়েছে।

    আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,

    يُرِيدُونَ أَنْ يُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَيَأْبَى اللَّهُ إِلا أَنْ يُتِمَّ نُورَهُ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ

    ওরা চায় ফুঁৎকার দিয়ে আল্লাহ্‌র আলো নিভিয়ে দিতে, কিন্তু আল্লাহ্ তা পূর্ণাঙ্গ করবেনই কাফিরদের নিকট যতই তা ঘৃণা ও গাত্রদাহের কারণ হোক।”


    কাফিরগণ প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে আল্লাহ্‌র আলো নির্বাপিত করতে; আল্লাহ্‌র আলো হল ইসলাম; মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রিসালাহ্। ওরা চায় ইসলামের ধারা প্রতিহত করতে আর আল্লাহ্ বলেন যে, ওদের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। ইসলামের উপর আঘাত হানার জন্য ওরা যে অঢেল অর্থ সম্পদ ব্যয় করে, তা সত্যিই অবাক করার মত। ভেবে দেখুন, আল্লাহ্ ওদের কত নিয়ামত দান করেছেন, ওদের হাতে কত সহায় সম্পদ রয়েছে অথচ সবকিছুই ওরা বিনিয়োগ করছে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য?

    কখনও আমরা অনুযোগ করে বলি, ওরা মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে, পৃথিবীর তাবৎ বহুল প্রচারিত সংবাদপত্র ওদের মুখপাত্র, সকল ক্ষমতাধর রেডিও স্টেশন ওদের দখলে, পৃথিবীর প্রভাবশালী মিডিয়া ওদের কব্জায়, সরকার ও পুলিশ বাহিনী ওদের বশীভূত; এক কথায় পৃথিবীর যাবতীয় কলকাঠি ওরাই নাড়ছে। ওদের হাতে যাবতীয় অর্থকড়ি, সহায় সম্বল। আমাদের কোন সুযোগই নেই ওদের বিরোধিতা বা সংগ্রাম করার, তাই আমাদের উচিত সংগ্রামের পথ পরিহার করে বিকল্প কোন উপায়ে ওদের মোকাবিলা করা; সম্মুখ সমরে আমাদের যাওয়া উচিত নয় যেহেতু কোনভাবেই আমরা ওদের সমকক্ষ হতে পারব না! বরং রাজনীতি ও কূটনীতির আশ্রয়ে ওদের মোকাবিলা করা শ্রেয়। কিন্তু আল্লাহ্‌ তা‘আলা বলেন,

    إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ لِيَصُدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ فَسَيُنْفِقُونَهَا ثُمَّ تَكُونُ عَلَيْهِمْ حَسْرَةً ثُمَّ يُغْلَبُونَ وَالَّذِينَ كَفَرُوا إِلَى جَهَنَّمَ يُحْشَرُونَ

    “…বস্তুত: এখন ওরা আরও ব্যয় করবে। তারপর তাই ওদের জন্য আক্ষেপের কারণ হবে এবং শেষ পর্যন্ত ওদের পরাজিত করা হবে …”


    সুতরাং ওরা ওদের অর্থ সম্পদ ব্যয় করুক, যেহেতু এভাবেই ওরা পরাজিত হবে। উপরোক্ত আয়াতের অর্থ অনুযায়ী, প্রথমে ওদের অর্থ সম্পদ ব্যয়িত হবে, অতঃপর ওরা পরাজিত হবে। ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযানে ওরা যখন বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে, তখন আমাদের বরং খুশি হওয়া উচিত। কেননা, তা নির্দেশ করে যে, ইসলামের বিজয় আসন্ন। নির্ধারিত পথেই ঠিকঠাক মত ইসলামের বিজয় ঘনিয়ে আসছে। আমেরিকা এখন অকপটে স্বীকার করছে, ভিয়েতনাম ও কোরিয়ান যুদ্ধের তুলনায় আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধে ওদের কত বেশি অর্থের যোগান দিতে হয়েছে। কোরিয়ান যুদ্ধ ও ভিয়েতনাম যুদ্ধে ওদেরকে যথাক্রমে ২০০ ও ৪০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। ইরাক যুদ্ধে ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ ইতিমধ্যে ৮০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে; এখনও যুদ্ধ অব্যাহত আছে। মার্কিন অর্থনীতি ক্রমশ মুখ থুবড়ে পড়ছে। এভাবেই সম্পন্ন হবে উক্ত আয়াতের অর্থের বাস্তবায়ন; অর্থাৎ ওরা অগণিত অর্থ সম্পদ ব্যয় করে পরিশেষে অনুশোচিত হবে। ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ আরোপিত ছিল না, কেউ ওদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়নি বরং ওরা নিজেরাই যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়। অহেতুক সমস্যায় জড়ানোর কারণে, ওরা আফসোস করবে; অঢেল অর্থ সম্পদ ব্যয় করেও ওদের শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের মাশুল গুণতে হবে।

    কেউ অকৃতজ্ঞ হলে, ওরা অবশ্যই পাপাচারী। আমেরিকার যুদ্ধংদেহী মনোভাবের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায় আবু জাহলের ঘটনায়, যখন সে বদরের প্রান্তরে মুসলিম বাহিনীর মোকাবিলা করতে চেয়েছিল। মুসলিমগণ কাফিরদের বাণিজ্য কাফেলা তাড়া করতে উদ্যত হয়, কিন্তু কাফেলা নিরাপদে থাকায়, আবু সুফিয়ান তৎকালীন কাফির বাহিনী প্রধান আবু জাহলকে মক্কায় ফিরে যেতে বলে এবং যুদ্ধ এড়ানোর পরামর্শ দেয়। উদ্ধত, দুর্বিনীত আবু জাহল বলে, “না, আমরা তাদের মোকাবিলা করতে অগ্রসর হব! আমরা বদরে যাব, সেখানে তিনদিন আনন্দ ফুর্তি করব, মদ্য পান করব, মহিলারা আমাদের জন্য গান বাদ্য করবে। সমস্ত আরববাসীগণের অভিযানের কথা জানিয়ে দিতে চাই যেন তারা বুঝতে পারে যে কুরাইশদের দমানো বা লাঞ্ছিত করা সম্ভব নয়।” কাফিরগণ সেখানে তিন দিন আমোদ ফুর্তি করবে এবং এ খবর সমগ্র আরবে ছড়িয়ে পড়বে, কুরাইশদের সাথে এরপর কেউ যেন লড়তে সাহস না পায়।

    আবু জাহল যেরূপ যুদ্ধ বেছে নিয়েছিল, বর্তমানে আমেরিকা আবু জাহলের ন্যায় ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে; ওরা নিজে থেকে এই যুদ্ধ বেছে নিয়েছে। এ যুদ্ধের পরিণাম আমদের সবার জানা, যেহেতু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদিসে কুদসীতে বলেন যে আল্লাহ্‌ তা‘আলা বলেন, “যে কেহই আমার আওলিয়াকে শত্রু হিসেবে গণ্য করবে, আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব।”

    সুতরাং মুসলিমরা নয় বরং আল্লাহ্‌ তা‘আলা ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করছেন! আমেরিকা আল্লাহ্‌ তা‘আলার সাথে স্পর্ধামূলক যুদ্ধ কর্মে লিপ্ত!

    আল্লাহ্‌ তা‘আলা বলেন,

    وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آَمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا يَعْبُدُونَنِي لا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ

    তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে; আল্লাহ্ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসন কর্তৃত্বদান করবেন, যেমন তিনি শাসন কর্তৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে।তিনি অবশ্যই তাদের দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দকরেছেন এবং ভয়ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রদানকরবেন। তারা আমার ইবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য”


    খিলাফাহ্ (শাসন কর্তৃত্ব) তাদের দেয়া হবে যারা ঈমান আনয়ন পূর্বক সৎকর্ম করবে। মুসলিমগণ বর্তমানে ভয়ভীতির মাঝে দিন অতিবাহিত করছে। আল্লাহ্‌ তা‘আলা এই আয়াতে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি আমাদের নিরাপত্তা প্রদান করবেন। তিনি এই উম্মতকে খিলাফত ও নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; এবং এ দুনিয়াতে চূড়ান্তভাবে তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হবে।

    আরও পড়ুন
    ১ম পর্ব ------------------------------------------------------------------------- ৩য় পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 09-02-2023, 11:05 PM.

  • #2
    মাশাআল্লাহ মুহতারাম ভাই। খুবই উপকারী সিরিজ শেয়ার করছেন আপনারা।
    আল্লাহ আপনাদের সকল কাজ কবুল করে নিন ও জাযায়ে খাইর দান করুন।
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X