আত–তিবইয়ান পাবলিকেসন্স পরিবেশিত
“জিহাদেঅংশগ্রহণ এবংসহায়তার৩৯টিউপায়”।।
মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৯ম পর্ব
==================================================
=====
“জিহাদেঅংশগ্রহণ এবংসহায়তার৩৯টিউপায়”।।
মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৯ম পর্ব
==================================================
=====
২২. তাঁদের প্রকাশিত বই ও প্রকাশনা ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করাঃ
এটি পূর্ববর্তী পদ্ধতি “তাঁদের সংবাদ প্রচার করা ও মুসলিমদের মাঝে তা ছড়িয়ে দেয়া” এর সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিটি বিষয় প্রচার করা যা উৎসাহিত করে ও মানুষকে জিহাদের দিকে আহবান করে মুজাহিদীনদের সাহায্য করে এবং জিহাদের বিভিন্ন পদ্ধতির সদ্ব্যবহার করার ব্যাপারে চিন্তা করা তোমাদের জন্য জরুরী। উদাহরণ স্বরূপ তাদের ত্যাগ ও সাহসীকতার ঘটনাগুলো সংগ্রহ করা, সেগুলো ফটোকপি করা এবং তা মানুষের মাঝে ও ইন্টারনেটে প্রচার করা; এ ছাড়া গুয়ান্তানামো কারাগারের বন্দীদের চিঠি সংগ্রহ করা এবং তা থেকে সর্বশ্রেষ্ঠগুলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যেন তা তাদের মাঝে বন্দীদের জন্য সমবেদনা বৃদ্ধি করে দেয়। অনুরূপভাবে সকলের উচিত মুজাহিদীন ও তাঁদের কার্যাবলী নিয়ে কিছু প্রচার মাধ্যমের প্রজেক্ট তৈরী করার জন্য চেষ্টা করা। এখানে আমি একজন পুন্যবতী বোনের কথা উল্লেখ করব যিনি নিজ কাঁধে চেচনিয়ার সর্বশেষ খবর সংগ্রহ করার দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন। তিনি শামিল বাসায়েভ ও খাত্তাবের সর্বশেষ সাক্ষাৎকার এবং কিছু কবিতা, ঘটনা ও বিবৃতি সংগ্রহ করে সেগুলোকে এক সাথে সংকলন করে তা মানুষের মাঝে বিতরন করেছিলেন। এখন যদি আপনি নিজে প্রকাশ করতে অপারগ হন তবে জিহাদ ও মুজাহিদীনদের সহায়তা করার নিমিত্তে মুজাহিদীনদের সাথে সম্পৃক্ত প্রকাশনা, বই ইত্যাদি প্রচার করা আপনার দায়িত্ব।
২৩. এরূপ ফাতাওয়া দেয়া যা তাঁদের সাহায্য করবেঃ
এটা আলিমগণের কর্তব্য এবং তাঁদের উপর মুজাহিদীনদের অধিকার, কারণ এটি তাদের দায়িত্ব যে তারা উম্মাহ্কে পরিচালিত করবে মুজাহিদীনদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, জান, মাল ও দু’আর মাধ্যমে তাদের সাহায্য করার জন্য। এবং এটা ইলমের ছাত্রদের এবং দায়ীদের উপর দায়িত্ব যে তারা উম্মাহ্কে এই বিরাট কর্তব্যের দিকে ডাকবে, ঠিক যেভাবে তা জ্ঞানীদের নিকটবর্তীদের, যারা হতে পারে শিক্ষার্থী অথবা তাদের আত্মীয়, উপর দায়িত্ব হলো তাদেরকে (জ্ঞানীদেরকে) উৎসাহিত করা এবং তাদের এমন কথা বলার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাকে শক্তিশালী করা যা মুজাহিদীন ভাইদের সাহায্য করতে উৎসাহিত করবে। যখন আলেমগণ তা করবে তখন তাৎক্ষণিক ও এক আশ্চর্যজনক প্রভাব দেখা যাবে যা হয়েছিল আমাদের সময়কার মুজাহিদীনদের শাইখ হামূদ বিন ‘উক্বলা’ (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি ক্ষমাশীল হোক)- এর ক্ষেত্রে। মুসলিম বা মুজাহিদীনদের উপর এমন কোন বিপদ আপতিত হয় নাই যখন তাঁকে এই ব্যাপারে দৃঢ় ও অনমনীয় পদক্ষেপ নিতে দেখা যাই নাই এবং তা করার ক্ষেত্রে তিনি সৃষ্টির কাউকেই ভয় করেন নাই। বরং তাঁর সম্পর্কে একজন স্মৃতিচারণ করেছেন এভাবে যে, একবার তিনি একটি ফার্মের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যেখানে একটি পুরনো মরচে ধরা কামান পড়েছিল তখন তিনি বললেন, “যদি মুজাহিদীনরা এর দ্বারা কোন প্রকারে উপকৃত হত, তবে আমি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতাম।” আল্লাহ্ তাঁর উপর রহমত বর্ষণ করুন; যেহেতু তিনি ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য তীব্র আবেগ নিয়ে ফাতাওয়া প্রকাশ করতেন, এবং শাইখের জীবন বৃত্তান্ত এটা বর্ণিত রয়েছেঃ “শাইখ (আল্লাহ্ তাঁকে ক্ষমা করুন) মুসলিমদের মাঝে অতীতেও ছিলেন এবং বর্তমানেও আছেন ও ভবিষ্যতে থাকবেন। তিনি খবরগুলো পর্যবেক্ষণ করতেন এবং তা দীর্ঘক্ষণ ধরে করতেন এবং তা করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা থেকে তিনি নিজে রেডিও ব্যবহার করতেন এবং খুঁজে বের করতেন কোন কেন্দ্র থেকে খবর প্রচার করা হচ্ছে (যেহেতু শাইখ অন্ধ ছিলেন, এবং তাঁকে তা করতে হত রেডিওর নাম্বার না দেখেই)। প্রকৃতপক্ষে, তিনি প্রায়ই তাঁর পাশের ব্যক্তির কাছ থেকে রেডিওটি ছিনিয়ে নিতেন যখন তারা সংবাদের চ্যানেল খুঁজে না পেত এবং নিজেই ডায়াল ঘুরাতেন তা বের করার জন্য এবং তিনি বিশেষ সংবাদগুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারতেন কারণ তিনি জানতেন কোন ধরনের উপস্থাপক কোন ধরনের সংবাদ উপস্থাপন করতো। এবং ইন্টারনেটের খবরগুলো প্রতিদিন তাঁকে পড়ে শুনানো হত, যেখানে তাঁকে অন্তত এক বা দুই ঘন্টা বসে থেকে তা শুনতে হত কিন্তু তিনি বিরক্ত বা অস্থির হতেন না।
সুতরাং, আপনি দেখতে পাবেন যে তাঁর সচেতনতা থেকেই মুসলিমদের সব রকম অবস্থাই তিনি জানতেন এবং সকল সাম্প্রতিক খবরা-খবর তিনি রাখতেন। সুতরাং এমন কেউ নেই যে তাঁর কাছে গিয়ে সাম্প্রতিক খবর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করত না, যা শাইখ তাদেরকে জানাতেন এবং তাকে তাঁর নিজের বিশেষণ ও সিদ্ধান্ত জানাতেন।
সাম্প্রতিক ঘটনা সমূহের প্রতি এরূপ সচেতনতার পাশাপাশি শাইখ (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) ইতিহাস, অতীতের ঘটনা, যুদ্ধ, রাজনীতি, এমনকি রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব জীবিত বা মৃত, তাদের ইতিহাস ও মতাদর্শ সম্পর্কেও ভাল জ্ঞান রাখতেন। ফলে তিনি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিত্ব ও ঘটনার সাথে সমন্বয় সাধন করতে পারতেন। তাঁর পর্বততুল্য জ্ঞান এবং সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ সম্পর্কে তাঁর গভীর বোধশক্তির কারণে শাইখ (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) মুসলিমদের জন্য রহমত স্বরূপ ছিলেন। মুসলিমদের ব্যাপারে তাঁর এই উদ্বেগ মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিল; কারণ তিনি সব সময় আফগানিস্তান, তালেবান সরকার ও মুজাহিদীনদের সর্বশেষ খবরা-খবর সম্পর্কে বলতেন এবং ইন শা আল্লাহ্ তাঁর সমাপ্তি ছিল উত্তম।
যখন কিছু আলেম এবং ইলমের ছাত্ররা কারাগারে ছিলেন, তিনি সব সময় তাঁদের কথা জিজ্ঞেস করতেন এবং অবিরাম তাঁদের জন্য দু’আ করতেন যেন তাঁরা (কারাবন্দীগণ) সত্যের উপর অটল থাকতে পারে এবং ধৈর্য্য ধারণ করতে পারে। সুতরাং আল্লাহ্ যেন তাঁকে সর্বশ্রেষ্ঠ পুরষ্কারে পুরস্কৃত করেন।
২৪. আলেম ও দ্বীনের দা’য়ীদের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং তাঁদেরকে মুজাহিদীনদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করাঃ
এর কারণ হল শত্রুরা চায় মুসলিমদের শ্বাসরোধ করতে এবং তাঁদের একতার তীব্র অনুভূতিকে মুছে দিতে ও সাধারণ মুসলিমদেরকে ক্ষুদ্র ব্যাপারে আছন্ন করে রাখতে। সুতরাং যদি আলেমগণ জেগে ওঠেন, ফলশ্রুতিতে তারা জনগণকে জাগ্রত করবেন এবং যদি তারা ঘুমিয়ে থাকে, তবে একই ভাবে জনগণও ঘুমিয়ে থাকবে। সাধারণ মানুষ সাধারণত আলেমগণের সাথে থাকে, অন্তত ধর্মীয় ব্যাপারে, যার চূড়ায় রয়েছে জিহাদ এবং মুজাহিদীনদের সাহায্য করা। অতীতে যখন ক্রুসেডার ও তাতার কর্তৃক আক্রান্ত হয়েছিল, উম্মাহ্ দৃঢ় থাকতে পারত না যদি না আলেমগণ ও লোকেরা জিহাদে ঝাঁপিয়ে না পড়তো এবং জিহাদের পতাকার নিচে একত্রিত না হতেন। তিনি হলেন শাইখ আল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন), যিনি মানুষকে যুদ্ধ করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন, মুসলিম বাহিনীর পক্ষে তাতারদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাঁর বিখ্যাত উক্তি দ্বারা উম্মাহকে সুদৃঢ় রেখেছিলেন, “আল্লাহর শপথ, তোমরাই বিজয়ী হবে!” সুতরাং তারা তাঁকে বলল, “বলুন ইনশাআল্লাহ্!” তিনি উত্তর দিলেন “আমি ইনশাআল্লাহ্ বলি সুনিশ্চিত হলে, কোন শুভ কামনা থেকে নয়।” এভাবেই, ইবন ক্বুদামাহ (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) সালাহ্ উদ-দ্বীন আল-আইয়্যুবির (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) পাশে দঁড়িয়ে ছিলেন।
সুতরাং, এ কারণে আলেমগণের খুব কাছে থাকা এবং তাঁদেরকে মুজাহিদীনদের ঘটনা সম্পর্কে জানানো অবশ্য করণীয় যেন তারা জিহাদের পাশে দাঁড়ায় এবং অন্যদেরকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করে। যেহেতু ভ্রান্ত মতবাদ ও এর সহকারীরা তাঁদেরকে বিভ্রান্ত করে দিতে পারে জিহাদ সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টির মাধ্যমে এবং জিহাদের সাথে সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে সতর্ক করার মাধ্যমে, তাই আমাদেরকে অবশ্যই এই প্রবনতাকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিতে হবে এবং তাঁদের সংস্পর্শে থেকে মুজাহিদীন ও তাঁদের অধিকারের ব্যাপারে তাঁদের যে কর্তব্য রয়েছে সেই ব্যাপারে তাঁদের স্মরণ করিয়ে দিতে হবে। এর মাধ্যমে আল্লাহ্–হয়ত শাইখ আব্দুল্লাহ্ আয্যাম ও হামুদ বিন ‘উক্বলা (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন)-এর মত মানুষদের প্রত্যাবর্তন করাবেন।
সত্যবাদী আলেমগণ হলেন তারা যারা মুজাহিদীনদের পাশে সততার সহিত দাঁড়ায় এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো ও সত্য কথা বলার কারণে, মৃত্যু, জেল এবং যন্ত্রনা সহ্য করেন। এবং শাইখ ইউসুফ আল-উয়াইরি (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন)-কে হত্যা করার বিষয়টি আমাদের সামনেই রয়েছে।
আরও পড়ুন
Comment