Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ১২ || জিহাদে অংশগ্রহণ এবং সহায়তার ৩৯টি উপায় ।। মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) || ১০ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ১২ || জিহাদে অংশগ্রহণ এবং সহায়তার ৩৯টি উপায় ।। মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) || ১০ম পর্ব

    আততিবইয়ান পাবলিকেসন্স পরিবেশিত
    জিহাদেঅংশগ্রহণ এবংসহায়তার৩৯টিউপায়।।
    মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আস-সালিম (‘ইসা আল-‘আশীন) হাফিযাহুল্লাহ
    এর থেকে || ১০ম পর্ব


    ==================================================
    =====


    ২৫. শারীরিক যোগ্যতা অর্জন করাঃ

    যে ব্যক্তি জিহাদে অংশ গ্রহণ করার নিয়্যত বা ইচ্ছা রাখে তার অন্য কোন সুযোগ নেই শারীরিক যোগ্যতা অর্জন ছাড়া যা তাকে আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য বের হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে কারণ এটা মুজাহিদীনদের জন্য অত্যাবশ্যক। সুতরাং তাকে অবশ্যই হাঁটা, জগিং করা এবং অনেক দূরের দূরত্বে দৌঁড়ানোর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে শারীরিক অবস্থা এমন এক অবস্থায় উপনীত করতে হবে যা তাকে জিহাদের ডাক পাওয়া মাত্রই বেরিয়ে যেতে সাহায্য করবে এবং যেন সে তাঁর ভাইদের উপর বোঝা না হয়ে পড়ে যা তাদেরকে বয়ে বেড়াতে হবে… ইত্যাদি এবং প্রকৃতপক্ষে এটা বসনিয়ায় (এবং অন্যান্য স্থানের) ক্ষেত্রে ঘটেছিল যেখানে কিছু ভাইকে শারীরিক সক্ষমতা না থাকার জন্য কারা বরণ করতে হয়েছিল। শাইখ ইউসুফ আল-উয়াইরি (আল্লা­হ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলেছেন, “নিশ্চয়ই, মুজাহিদীনদের শারীরিক সক্ষমতা, তাঁর বহুদূরে দৌঁড়ানোর ক্ষমতা, অনেক ভারী ভার বহন করার ক্ষমতা এবং অনেক লম্বা সময়ের জন্য তার প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করার ক্ষমতা হল প্রধান উপাদান যা যুদ্ধ ক্ষেত্রে তাঁর প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করে। একজন মুজাহিদ হতে পারে অস্ত্র চালনায় পারদর্শী, কিন্তু শারীরিক যোগ্যতা না থাকার কারণে, বন্দুক চালনা করার জন্য সে উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ করতে পারে না বা দেয়াল বেয়ে উঠতে পারে না। এ সব কিছুই ঘটে শারীরিকভাবে অযোগ্য হওয়ার কারণে এবং যেই মুজাহিদের খুব ভালো শারীরিক যোগ্যতা থাকে সে প্রয়োজনীয় সব রকম কাজ সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতিতে সম্পাদন করতে পারে যদিও সে অস্ত্র চালনায় তেমন পারদর্শী নয়। কারণ সে গুলি চালানোর জন্য সবচেয়ে উত্তম স্থানে নিজেকে নিয়ে যেতে পারে এবং সে এ সকল কিছুই করতে পারবে দ্রুততার সাথে ও সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিতে কারণ ক্লান্তি ও অবসাদ তাকে আচ্ছাদিত করতে পারেনা, তার মনোযোগ কেড়ে নিতে পারে না এবং তার গতি-কে প্রভাবিত করতে পারে না। এ জন্য আমরা পরিশেষে বলতে পারি যে, মুজাহিদদের জন্য শারীরিক যোগ্যতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিশেষ করে শহর কেন্দ্রীক যুদ্ধের ক্ষেত্রে।” আমাদের এ সময়ে আমরা যে যুগে বাস করছি, দেখতে পাই যে পৃথিবীতে বর্তমানে সবগুলো জিহাদই সংঘটিত হচ্ছে গেরিলা যুদ্ধ এবং শহর কেন্দ্রীক যুদ্ধের রূপে এবং এজন্য প্রয়োজন উঁচু মানের শারীরিক যোগ্যতা। সুতরাং, হে আমার ভাইয়েরা! তুমি যেন অন্যদের জন্য বোঝা হয়ে না যাও, তাই এখন থেকেই প্রয়োজনীয় শারীরিক যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা শুরু করে দাও। আমার ভাইয়েরা, শারীরিক যোগ্যতার এ বিষয়টিকে তুচ্ছ ভাবে নিও না- এবং জেনে রাখো এ জন্য পুরষ্কারটাও অনেক বড় যদি তা এক খাঁটি নিয়্যাতে অর্জনের চেষ্টা করা হয়, এবং তুমি তা কর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার নিয়্যাতে। এবং একজন দৃঢ় ঈমানদার আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় একজন দুর্বল ঈমানদারের চেয়েএবং দৃঢ়তার মধ্যে শারীরিক ও কায়িক শক্তি অন্তর্ভুক্ত। শাইখ ও মুজাহিদ ইউসূফ আল-উয়াইরি (আল্লা­হ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলছেনে, “একজন মুজাহিদের মাঝে যে সকল শারীরিক যোগ্যতার দরকার তার মধ্যে নিম্ন লিখিত কাজগুলো করার ক্ষমতা র্অন্তভুক্তঃ
    • কোন রকম বিরতি ছাড়া ১০ কি: মি: (প্রায় ৬.২ মাইল) জগিং (ব্যায়ামের উদ্দেশ্যে দৌঁড়) করা এবং খুব খারাপ অবস্থার ক্ষত্রেও তা যেনো ৭০ মিনিটের চেয়ে বেশী সময় না নেয়।
    • ১৩.৫ মিনিটের মধ্যে ৩ কি: মি: (প্রায় ২ মাইল) দৌঁড়ানো।
    • শুধু ১২-১৫ সকেন্ডের বিরতীতে ১০০ মিটার দৌঁড়ানো।
    • কোন বিশ্রাম না নিয়ে একটানা কমপক্ষে ১০ ঘন্টা হাঁটা।
    • কোন বিশ্রাম না নিয়ে ২০ কিলোগ্রাম (প্রায় ৪৪ পাউন্ড) ওজনের জিনিস কমপক্ষে ৪ ঘন্টা বহন করা।
    • না থেমে একটানা কমপক্ষে ৭০ বার বুক-ডন দেয়া (একজন হয়ত একবারে ১০ বার পুশ আপ দিতে পারবে, অতঃপর প্রতিদিন ৩টি করে বৃদ্ধি করা যতক্ষণ না তা ৭০ পর্যন্ত পৌঁছে)।
    • একবারে না থেমে ১০০টি সিটআপ (উঠ-বস করা) দেয়া (হয়ত একজন প্রথমে ১০টি সিটআপ দিতে পারবে, অতঃপর প্রতদিনি ৩টি করে বৃদ্ধি করা যতক্ষণ না তা ৭০ পর্যন্ত পৌঁছে)।
    • বাহু দিয়ে হামাগুড়ি করে ৫০ মিটার দূরত্ব পার হওয়া সর্বোচ্চ ৭০ সেকেন্ডে।
    • ফার্টলিক অনুশীলন করা (এটা এমন একটি অনুশীলন যার মধ্যে হাটা, দ্রুত গতিতে হাঁটা, জগিং এবং দৌঁড় অন্তর্ভূক্ত এবং এটা হলো এই রকমঃ মুজাহীদগণ সাধারণত শুরু করনে ২ মিনিট সাধারণভাবে হাঁটার মাধ্যমে, অতঃপর দ্রুত বেগে ২ মিনিট হাঁটেন, অতঃপর ২ মিনিট জগিং করেন, এরপর ২ মিনিট দৌঁড়ান এবং এরপর ১০০ মিটার দূরত্ব আরো দ্রুত বেগে দৌঁড়ান, অতঃপর তিনি আবার হাঁটতে থাকনে এবং এভাবেই চলতে থাকে অবিরত, তারা এটা করতে থাকনে বিরাম ১০ বার পর্যন্ত।)

    সাধারণ হাঁটা হল দ্রুত হাঁটা, জগিং দ্রুত হাটা থেকে, দৌঁড়ানো জগিং থেকে আলাদা। সাধারণ হাঁটার সঙ্গে সবাই পরচিত, দ্রুত হাঁটা হল, যে একজন ব্যক্তি দ্রুত বেগে হাঁটবে এভাবে যে তার পা মাটি থেকে ততটুকুর খুব বেশী উপরে উঠবেনা যতটুকু হাঁটার সময় ওঠে। জগিং এর ক্ষেত্রে, তা ১ কি:মি: (প্রায় ০.৬ মাইল) দূরত্ব তিক্রম করা ৫.৫ মিনিটের কম সময়ের মধ্য। দৌঁড়ানোর ক্ষেত্রে, ১ কি: মি দূরত্ব অতক্রিম করা ৪.৫ মিনিটরে চেয়ে কম সময়ের মধ্য। মুজাহিদীনরা এ পর্যায়ের শারীরিক যোগ্যতা এক মাসের মধ্যে র্অজন করতে পারে যদি সে কঠোর সাধনা করে। শর্ত থাকে যে সে পর্যায়ক্রমে উন্নতি সাধন করবে এবং তার মাংসপেশী ক্ষতিগ্রস্থ না হয় বা ছিঁড়ে না যায়। উদাহরণ স্বরূপ, যদি কোন ব্যক্তি মাসের শুরুতে ১৫ মিনিট জগিংকরে এবং প্রতি দিন ২ মিনিট করে সে সময় বৃদ্ধি করতে থাক, তাহলে এক মাসের মধ্যে ঐ ব্যক্তি কোন রকম বিরতি ছাড়াই পুরো এক ঘন্টা জগিং করতে সক্ষম হবে (এক মাসে ২০ দিন হিসেব করে, যদি সে সপ্তাহে পাঁচ দিন এই শারীরিক ব্যায়ামের কাজটি করে)। অনুরূপভাবে, যদি সে মাসের শুরুতে ১০টি বুক-ডন (Push up) দিয়ে আরম্ভ করে এবং প্রতিদিন ৩টি করে বৃদ্ধি করতে থাকে, তবে সে এক মাসের মধ্যে বিরতিহীনভাবে ৭০টি পুশ আপ (Push up) দিতে সক্ষম হবে। সুতরাং, পর্যায়ক্রমে এবং অবিরাম অগ্রসর হওয়া কোন ব্যক্তির শারীরিক যোগ্যতা অর্জনের উপর অনেক বড় প্রভাব ফেলে। শুধু তাই নয়, কোন ব্যক্তির শারীরিক অনুশীলনের মধ্যে অবশ্যই কিছু শক্তিমত্তা অর্জন ও মাংসপেশীর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য কিছু কৌশল থাকা উচিত এবং মুজাহিদীনদেরকে অবশ্যই সেসব ওয়েট ট্রেইনিং-এর উপর জোর দিতে হবে যা খুব বেশী ব্যায়ামের সরঞ্জাম ছাড়াই করা যায়, যেন সে তার শরীর চর্চা যে কোন স্থানে চালিয়ে যেতে পারে। ব্যায়ামের সরঞ্জাম একজনের শরীরকে অক্ষম করে দিতে পারে যদি অনেক দিন ধরে সেগুলো থেকে দূরে থাকে। সবচেয়ে উত্তম প্রকৃতির ব্যায়াম হল সেটি যা সহজে এবং শরীরের নিজস্ব শক্তির উপর নির্ভর করে করা যায়।


    ২৬. অস্ত্র দ্বারা প্রশিক্ষণ নেয়া এবং গুলি চালনা করতে শেখাঃ

    বই পড়ে বা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিভাবে গুলি চালনা করতে হয় তা শেখা এবং অস্ত্র দ্বারা প্রশিক্ষণ নেয়া এর অন্তর্ভূক্ত। কেননা একজন মানুষ হয়তো সক্ষম হবে সত্যিকারের গোলাবারুদ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিতে বা গোলাবারুদ ছাড়া শুধুমাত্র অস্ত্র দ্বারা অথবা শুধুমাত্র ছবিসহ ম্যানুয়াল পড়ার মাধ্যমে; প্রত্যেক স্থানেই এই ব্যাপারে কোন না কোন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ বলেছেনঃ


    وَأَعِدُّوا لَهُم مَّا اسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍ وَمِن رِّبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِۦ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَءَاخَرِينَ مِن دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ يَعْلَمُهُمْ ۚ وَمَا تُنفِقُوا مِن شَىْءٍ فِى سَبِيلِ اللَّهِ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لَا تُظْلَمُونَ



    তোমরাতাদের মুকাবিলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তুত রাখবেএতদ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত করিবে আল্লাহর শত্রুকে ও তোমাদের শত্রুকে এবংএতদ্ব্যতীত অন্যদেরকে যাদেরকে তোমরা জান না, আল্লাহ তাদেরকে জানেন।”


    এবং রসূল বলেছেন, “নিশ্চয়ই নিক্ষেপই শক্তি, নিক্ষেপই শক্তি এবং নিক্ষেপই শক্তি।”

    সুতরাং প্রাপ্ত বয়স্ক এবং সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিমের উপর অত্যাবশ্যক এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বকে অবহেলা না করা। ইবনে তাইমিয়াহ (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলেছেন, “যুদ্ধের সামর্থ্য অর্জন ও ঘোড়া প্রস্তুত করার মাধ্যমে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেয়া একজনের উপর বাধ্যতামূলক যখন তার যুদ্ধ করার সামর্থ্য না থাকে কারণ কোন বাধ্যতামূলক দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করা বাধ্যতামূলক কাজ।”

    সুতরাং নিক্ষেপ করতে শেখা এবং অস্ত্রের সাথে সুপরিচিত হওয়ার মধ্যে রয়েছে মর্যাদা এবং সাফল্য অর্জনের পথ। এবং তাদের অবস্থা কতই না অদ্ভুত যাদের অস্ত্র দেখলেই ভয়ে চুল সাদা হয়ে যায়

    ও উম্মাহ, সময়ের সাথে সাথে তোমরা অস্ত্র দেখতে ভুলে গিয়েছ।
    জীবনের জন্য কেঁদো না এবং সফলতার জন্য ব্যাকুল হয়ো না।”


    কি অদ্ভুতই না সেই মানুষ! যে শত্রুদের আঘাত করার ইচ্ছা পোষণ করে এবং যুদ্ধ ক্ষেত্রে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে চায় অথচ সে এটা পর্যন্ত জানেনা যে কিভাবে অস্ত্র ধরতে হয়! এতে কোন সন্দেহ নেই যে সে একজন গুনাহ্গার যার অস্ত্র চালনা শিক্ষার সুযোগ রয়েছে কিন্তু সে তা শিখে না কারণ আল্লাহ্ তার উপর যা বাধ্যতামূলক করেছেন তা পালন না করার জন্য। এবং আরো আশ্চর্যজনক সে সকল লোকের চিন্তাধারা যারা তাদের শক্তি এবং সময় ব্যয় করছে পৃথিবীর বিষয়াদি শেখার ব্যাপারে এবং কিভাবে আরাম আয়েশ বৃদ্ধি করা যায় এবং তারা বিরত থাকে অস্ত্র পরিচালনা শেখা থেকে। বাস্তবতা এই যে শত্রুরা তাদের দোরগোড়ায় এবং তাদের ভূমিতে আক্রমণ করেছে; এবং আল্লাহ্ই সকল সাহায্যের উৎস।


    আরও পড়ুন
    ৯ম পর্ব -------------------------------------------------------------------------------------------------- ১১তম পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 02-02-2024, 09:26 PM.
Working...
X