হলুদ মিডিয়ার জঙ্গি নিউজ এবং ইসলাম বিরোধী অন্যান্য ভাইরাল নিউজ! হতে পারে আদর্শিক মেসেজ পৌছে দেয়ার হাতিয়ার। ( অনলাইন দাওয়াহ আইডিয়া )
(এই প্রবন্ধের মুখাতাব বিশেষ ভাবে অনলাইন দাওয়াহয় একটিভ ভাইদের প্রতি যাদের নিরাপদ আইডি আছে)
এই বিষয় নিয়ে লেখার চিন্তা মাথায় এসেছে জঙ্গি নিউজের কমেন্ট গুলো পড়তে পড়তে৷ যেখানে প্রায় সবাই নিউজকে "নাটক" হিসেবে আক্ষ্যায়িত করছে৷
আমরা 4th জেনারেশন ওয়্যারের যুগে অবস্থান করছি৷ আমরা 4GW কে নিজেদের যুদ্ধ কৌশল হিসেবে নির্ধারন করেছি৷ আর এ যুদ্ধের ৫০% বা কেউ বলেছেন ৮০% ফলাফল নির্ভর করে মিডিয়ার উপর৷ জনসাধারনকে শত্রুর বিরুদ্ধে দাড় করানো এবং নিজেদের সমর্থনে নিয়ে আসা এই যুদ্ধে মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোর অন্যতম৷
তদুপরি বাংলাদেশের মতো ভূমিতে যেখানে গেরিলা যুদ্ধের মৌলিক চার উপকরনের তিনটিই নেই৷ একটির সম্ভাবনা আছে সেটা হলো - জনসমর্থন
এমন ভূমিতে অবশ্যই জনসাধারনের মনস্তত্ব বুঝে মিডিয়ায় কাজ করা উচিৎ৷ কিভাবে আমাদের সমর্থনে আসবে৷ আর কিভাবে দূরে সরে যাবে৷
যাই হোক মূল কথায় আসি৷
হলুদ মিডিয়া মাঝে মাঝে জঙ্গি নিউজ করে৷ নিউজে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, "জঙ্গিরা খিলাফাহয় বিশ্বাসী৷ খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছিল, তারা ইসলামী শরীয়াহ চায়, গনতন্ত্র বিরোধী" ইত্যাদি ইত্যাদি৷
এর মোকাবেলায় আমাদের অনেকে বয়ানে,আলোচনায় বা নিউজের কমেন্টে কৌশলি জবাব দিয়েছি৷ বলেছি - "এগুলো মিডিয়ার নাটক,সাজানো নাটক,জঙ্গি নাটক, নির্বাচনী থ্রিলার" ইত্যাদি ইত্যাদি৷
আমাদের এসব কৌশলি জবাব, জনসাধারনের উপর প্রভাব ফেলেছে৷ আমরা তাদেরকে এসব নাটক হিসেবে বিশ্বাস করাতে পেরেছি৷ তারা এখন এসব নটক-ই মনে করে৷ ঐসব জঙ্গি নিউজের কমেন্টগুলো দেখলে জনসাধারনের এমন চিন্তা-ভাবনার অনুমান করা যায়৷
আমরা হয়তো এভাবে নিরাপত্তার কৌশল অবলম্বন করতে চেয়েছি৷ কিন্তু আমার মনে হয়, এখন আমাদের মুহাসাবা করা দরকার৷ এই কাজ আমাদের জন্য কতটুকু ফায়দা জনক৷
(আমার ব্যক্তিগত মুহাসাবা) -
যদি প্রশ্ন করা হয়, এর ফলে কতটুকু লাভ হয়েছে,হচ্ছে? আর কতটুকু ক্ষতি হচ্ছে?
তাহলে আমার মনে হয় উত্তর আসবে, আমাদের উদ্দেশ্যগত দিক থেকে এসব নিউজকে নিজেদের পক্ষে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারি নি৷ ফলে লাভের চেয়ে সুযোগ হাতছাড়াই বেশি হয়েছে৷
কি লাভ হয়েছে?
- একটা ফায়দা অবশ্য হয়েছে যে, জনসাধারন হলুদ মিডিয়ার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে৷ এবং তাদেরকে অবিশ্বাস করতে শুরু করেছে৷
কিন্তু আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে,হচ্ছে তা নিম্নরূপ -
জনসাধারনকে আমরা বাস্তবতা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি৷ জঙ্গি নাটকের মিথ্যা মেসেজ পৌছে দিয়েছি৷ যদি কখনো বাস্তবেই কিছু ঘটে তবুও তারা সেটাকে নাটকই মনে করে৷ আল্লাহ না করুন! ফলাফল হয়তো এমনও হতে পারে, যদি কখনো আমাদের ভাইয়েরা আমাদের অন্তর প্রশান্ত করে, আর মিডিয়া নেগেটিভ ভাবে তা প্রচার করে৷ তখন জনসাধারণ আমাদের সমর্থনের পরিবর্তে হয়তো সেই আগের নাটক গানই গাইতে থাকবে৷
এসব জঙ্গি নিউজ কে পূঁজি করে৷ আমরা দুইটি লক্ষ্য অর্জন করতে পারতাম৷ যা হাতছাড়া করেছি৷ তা হলো -
১- আমরা এসব নিউজকে ইসলামী খিলাফাহর চেতনা প্রচার করা,সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতি উদ্ধুদ্ধ করার কাজে ব্যবহার করতে পারতাম৷ (অর্থাৎ জনসাধারণকে আমাদের সমর্থনে নিয়ে আসা) এই সুযোগ আমরা হাত ছাড়া করেছি৷
২- এবং শরীয়াহ বিরোধী,খিলাফাহ বিরোধী সেক্যুলারদেরকে ইসলামের শত্রু,মুসলিমদের শত্রু,মুরতাদ হিসেবে এবং অপরাধী হিসেবে মুসলিম জনসাধারনের নিকট উপস্থাপন করার সুযোগ হাত ছাড়া করেছি৷
.
জনসাধারণের কাছে মিডিয়াকে হলুদ মিডিয়া বা মিথ্যাবাদি প্রমান করার চাইতে; সেক্যুলার রাষ্ট্র,সেক্যুলার ও ইসলামের সংঘর্ষ, সেক্যুলার মিডিয়ার ইসলাম বিদ্বেষ প্রমান করা বেশি ফলদায়ক ছিল৷
সারকথা
- মুসলিম জনসাধারণ এখন দেশীয় হলুদ মিডিয়ার প্রতি বিশ্বাসে ফাটল ধরেছে ঠিক৷
- কিন্তু তারা জঙ্গি নিউজে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন কারীদেরকে স্পষ্ট সমর্থন করে না৷
- এবং তারা সেক্যুলারিজম কে এখনো শত্রু মনে করে না৷ অপরাধী মনে করে না৷
অথচ, শেষের দুইটি আমাদের জন্য বেশি সহায়ক৷ এই দুইটা হলে প্রথমটা এমনিই অর্জন হয়ে যায়৷
.
এ ভূমির মুসলিমদের কাছে তাদের শত্রুকে আমরা এখনো স্পষ্ট করতে পারি নি৷ ইসলাম ও সেক্যুলারিজমের দ্বন্দ স্পষ্ট করতে পারি নি৷
তবে সুযোগ মিস করলেও আশা করি এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি৷ এখন আমরা যা করতে পারি তা হলো-
(attack is the best defence - সর্বোত্তোম প্রতিরক্ষা হচ্ছে আক্রমন করা৷) এই মূলনীতির প্রয়োগ করা।
এ মূলনীতির আলোকে এসব নিউজের জবাবে,কমেন্টে আমাদেরকে আক্রমণাত্মক হওয়া উচিৎ৷ কিন্তু আমরা এতদিন ডিফেন্সিভ জবাব দিয়েছি৷
অর্থাৎ আমরা এতদিন নিজেরা নিরাপরাধ সাজার চেষ্টা করেছি৷ সেক্যু প্রশাসনের অপরাধের দিকে বেশি ফোকাস দিতে পারি নি৷
এসব নিউজের কমেন্টে আমাদের (যাদের নিরাপদ ফেবু,মিডিয়ার অন্যান্য আইডি আছে) "নির্বাচনী নাটক,সুন্দর থ্রিলার,ইত্যাদি টাইপের কমেন্ট এখন বর্জন করতে হবে৷ নিজেরা নিরাপরাধী সাজার চাইতে সেক্যুলার প্রশাসনের অপরাধ প্রমান করার দিকে ফোকাস দিতে হবে৷ যাতে মুসলিম জনসাধারণ সেক্যুদেরকেই আসামী মনে করে৷ এই ধরনের মনস্তাত্বিক আক্রমণাত্মক কমেন্ট করতে হবে৷ অর্থাৎ কমেন্টে স্বয়ং সেক্যুলারিজম কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে৷ ইসলামের সাথে সেক্যুলার নীতির সাংঘর্ষিকতা স্পষ্ট করে ধরতে হবে৷ সেক্যুদেরকে ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে৷
তাদের অপরাধী হিসেবে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ছোট বড় কমেন্ট হতে পারে। যেমন -
- কোন মুসলমান ইসলামী শরীয়াহ কে নেগেটিভ ভাবে উপস্থাপন করতে পারে না।
- যারা শরীয়াহ প্রতিষ্ঠায় বাধা দেয় তারা ইসলামের শত্রু৷ ইসলামে তাদের কোন জায়গা নেই৷
- খিলাফাহ বিরোধীদের সাথে ইসলাম ও মুসলমানের কোন সম্পর্ক নেই৷
- আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন অমান্যকারীদের ইসলামে কোন স্থান নেই৷ তোমরা শরীয়াহর দুশমন৷ স্পষ্ট অপরাধী৷
- সেক্যুলাররা ইসলামের শত্রু৷
- শরীয়াহ বিরোধীরা মুসলিম হয় কীভাবে!
- খিলাফাহ বিরোধীরা মুসলিম হয় কীভাবে!
- সেক্যুলার প্রশাসন ইসলামের দুশমন৷
- জিহাদ বিরোধীরা মুসলিম হতে পারে না।
.
আমাদের কে সঠিকতার উপর কমেন্ট উদাহরণ -
- যদি নাটক হয়েও থাকে৷ তবুও ইসলামী শরিয়াহ বাস্তবায়ন ফরজ৷ সবার উচিত ইসলামী শারিয়াহ বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করা৷
- খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা প্রত্যেক মুসলমানেরই থাকতে হবে। তাছাড়া তার ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ !
-
(এখানে উদাহরণ স্বরূপ দেখানো হলো মাত্র নচেৎ বড় ছোট নিউজের টপিক অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক আরো উত্তম কমেন্ট হতে পারে৷ )
.
হলুদ মিডিয়ার নিউজের কমেন্ট সেকশন আমাদের জন্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ?
এসব হলুদ মিডিয়া অনলাইনে যত মানুষের নিকট পৌছে আমাদের কোন মিডিয়া এতটা পৌছায় না৷ এবং এসব মিডিয়ার সাথে যেসব শ্রেণী-পেশার মানুষ যুক্ত থাকে, তারা আমাদের মিডিয়ার সাথে যুক্ত থাকে না৷ এখন আমরা তো তাদের পেজ,চ্যানেলে মিডিয়ায় পোষ্ট,ভিডিও আপলোড করতে পারি না৷ কিন্তু কমেন্টে তো আমাদের মেসেজ ছড়িয়ে দিতে পারি৷
আমাদের কমেন্টের কারণে যদি পোষ্ট বেশি ছড়ায় তাহলে আমাদের বার্তাও সাথে সাথে পৌছে যাবে৷ এর জন্য প্রয়োজনে এক জন একাধিকবার একই কমেন্ট করতে হবে৷ বা ভিন্ন কমেন্ট করবে৷ যাতে ইসলামের আদর্শ,মানহায জনসাধারণের নিকট স্পষ্ট হয়ে যায়৷ এত পরিমাণ কমেন্ট করতে হবে যাতে মানুষের চোখে পড়ে৷ হয়তো তখন কেউ চিন্তা-ভাবনা শুরু করবে৷ হক্ব জানতে শুরু করবে৷
হলুদ মিডিয়ার জঙ্গি নিউজ আমাদের বিষয়ের ( ইমারাহ,খিলাফাহ,জিহাদ ইত্যাদি) জন্য বেশি প্রাসঙ্গিক৷ তবে অন্যান্য ইসলাম বিরোধী ভাইরাল নিউজ গুলোও আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক হতে পারে৷ যেমন - সেক্যুরালিজম,হিউম্যানিজম, জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি সংক্রান্ত নিউজে বুদ্ধিবৃত্তিক কমেন্ট,রিপ্লাই হতে পারে৷
এখানে আমাদের কমেন্ট হতে হবে টপিকের সাথে মিল রেখে৷ আমাদের মনস্তাত্বিক মেসেজ পৌছে দিতে হবে৷ এর মাধ্যমে জিহাদ,খিলাফাহ, ও শরীয়াহর ব্যপারে সর্বস্তরের আ'ম জনসাধারণের নিকট মেসেজ পৌছে যায়৷ যা হয়তো আমাদের ১০ জনের ফেসবুক আইডি থেকে দীর্ঘ দিন কাজ করেও পৌছানো সম্ভব হতো না৷
তবে প্রশ্ন হতে পারে একটা ভাইরাল নিউজে আমরা কত জন মিলে কয়টা কমেন্ট করতে পারবো? অন্যান্যদের কমেন্টের ভিড়ে আমাদের কমেন্ট দেখা যাবে? এর উত্তর হলো - হয়তো প্রথমদিকে আমাদের কমেন্ট আড়ালে পড়ে যাবে৷ কিন্তু কেউ না কেউ তো দেখবে! হয়তো এভাবে আগামীতে আমাদের থেকে অন্যান্যরাও এই ধরনের কমেন্ট করতে শুরু করবে৷ আন্দোলনের শুরুতে তো অল্প লোকই থাকে৷
এটি ছিল আমার ধারনা ও প্রস্তাবনা৷ আমাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি নিউজ এবং ভাইরাল নিউজকে যেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার বানাই৷ অভিজ্ঞ ভাইদের মূল্যায়ন আশা করছি৷
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সাহায্য করুন৷ প্রচেষ্টা কবুল করুন৷ ভুল গুলো সংশোধন করে দিন৷
(এই প্রবন্ধের মুখাতাব বিশেষ ভাবে অনলাইন দাওয়াহয় একটিভ ভাইদের প্রতি যাদের নিরাপদ আইডি আছে)
এই বিষয় নিয়ে লেখার চিন্তা মাথায় এসেছে জঙ্গি নিউজের কমেন্ট গুলো পড়তে পড়তে৷ যেখানে প্রায় সবাই নিউজকে "নাটক" হিসেবে আক্ষ্যায়িত করছে৷
আমরা 4th জেনারেশন ওয়্যারের যুগে অবস্থান করছি৷ আমরা 4GW কে নিজেদের যুদ্ধ কৌশল হিসেবে নির্ধারন করেছি৷ আর এ যুদ্ধের ৫০% বা কেউ বলেছেন ৮০% ফলাফল নির্ভর করে মিডিয়ার উপর৷ জনসাধারনকে শত্রুর বিরুদ্ধে দাড় করানো এবং নিজেদের সমর্থনে নিয়ে আসা এই যুদ্ধে মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোর অন্যতম৷
তদুপরি বাংলাদেশের মতো ভূমিতে যেখানে গেরিলা যুদ্ধের মৌলিক চার উপকরনের তিনটিই নেই৷ একটির সম্ভাবনা আছে সেটা হলো - জনসমর্থন
এমন ভূমিতে অবশ্যই জনসাধারনের মনস্তত্ব বুঝে মিডিয়ায় কাজ করা উচিৎ৷ কিভাবে আমাদের সমর্থনে আসবে৷ আর কিভাবে দূরে সরে যাবে৷
যাই হোক মূল কথায় আসি৷
হলুদ মিডিয়া মাঝে মাঝে জঙ্গি নিউজ করে৷ নিউজে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, "জঙ্গিরা খিলাফাহয় বিশ্বাসী৷ খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছিল, তারা ইসলামী শরীয়াহ চায়, গনতন্ত্র বিরোধী" ইত্যাদি ইত্যাদি৷
এর মোকাবেলায় আমাদের অনেকে বয়ানে,আলোচনায় বা নিউজের কমেন্টে কৌশলি জবাব দিয়েছি৷ বলেছি - "এগুলো মিডিয়ার নাটক,সাজানো নাটক,জঙ্গি নাটক, নির্বাচনী থ্রিলার" ইত্যাদি ইত্যাদি৷
আমাদের এসব কৌশলি জবাব, জনসাধারনের উপর প্রভাব ফেলেছে৷ আমরা তাদেরকে এসব নাটক হিসেবে বিশ্বাস করাতে পেরেছি৷ তারা এখন এসব নটক-ই মনে করে৷ ঐসব জঙ্গি নিউজের কমেন্টগুলো দেখলে জনসাধারনের এমন চিন্তা-ভাবনার অনুমান করা যায়৷
আমরা হয়তো এভাবে নিরাপত্তার কৌশল অবলম্বন করতে চেয়েছি৷ কিন্তু আমার মনে হয়, এখন আমাদের মুহাসাবা করা দরকার৷ এই কাজ আমাদের জন্য কতটুকু ফায়দা জনক৷
(আমার ব্যক্তিগত মুহাসাবা) -
যদি প্রশ্ন করা হয়, এর ফলে কতটুকু লাভ হয়েছে,হচ্ছে? আর কতটুকু ক্ষতি হচ্ছে?
তাহলে আমার মনে হয় উত্তর আসবে, আমাদের উদ্দেশ্যগত দিক থেকে এসব নিউজকে নিজেদের পক্ষে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারি নি৷ ফলে লাভের চেয়ে সুযোগ হাতছাড়াই বেশি হয়েছে৷
কি লাভ হয়েছে?
- একটা ফায়দা অবশ্য হয়েছে যে, জনসাধারন হলুদ মিডিয়ার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে৷ এবং তাদেরকে অবিশ্বাস করতে শুরু করেছে৷
কিন্তু আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে,হচ্ছে তা নিম্নরূপ -
জনসাধারনকে আমরা বাস্তবতা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি৷ জঙ্গি নাটকের মিথ্যা মেসেজ পৌছে দিয়েছি৷ যদি কখনো বাস্তবেই কিছু ঘটে তবুও তারা সেটাকে নাটকই মনে করে৷ আল্লাহ না করুন! ফলাফল হয়তো এমনও হতে পারে, যদি কখনো আমাদের ভাইয়েরা আমাদের অন্তর প্রশান্ত করে, আর মিডিয়া নেগেটিভ ভাবে তা প্রচার করে৷ তখন জনসাধারণ আমাদের সমর্থনের পরিবর্তে হয়তো সেই আগের নাটক গানই গাইতে থাকবে৷
এসব জঙ্গি নিউজ কে পূঁজি করে৷ আমরা দুইটি লক্ষ্য অর্জন করতে পারতাম৷ যা হাতছাড়া করেছি৷ তা হলো -
১- আমরা এসব নিউজকে ইসলামী খিলাফাহর চেতনা প্রচার করা,সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতি উদ্ধুদ্ধ করার কাজে ব্যবহার করতে পারতাম৷ (অর্থাৎ জনসাধারণকে আমাদের সমর্থনে নিয়ে আসা) এই সুযোগ আমরা হাত ছাড়া করেছি৷
২- এবং শরীয়াহ বিরোধী,খিলাফাহ বিরোধী সেক্যুলারদেরকে ইসলামের শত্রু,মুসলিমদের শত্রু,মুরতাদ হিসেবে এবং অপরাধী হিসেবে মুসলিম জনসাধারনের নিকট উপস্থাপন করার সুযোগ হাত ছাড়া করেছি৷
.
জনসাধারণের কাছে মিডিয়াকে হলুদ মিডিয়া বা মিথ্যাবাদি প্রমান করার চাইতে; সেক্যুলার রাষ্ট্র,সেক্যুলার ও ইসলামের সংঘর্ষ, সেক্যুলার মিডিয়ার ইসলাম বিদ্বেষ প্রমান করা বেশি ফলদায়ক ছিল৷
সারকথা
- মুসলিম জনসাধারণ এখন দেশীয় হলুদ মিডিয়ার প্রতি বিশ্বাসে ফাটল ধরেছে ঠিক৷
- কিন্তু তারা জঙ্গি নিউজে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন কারীদেরকে স্পষ্ট সমর্থন করে না৷
- এবং তারা সেক্যুলারিজম কে এখনো শত্রু মনে করে না৷ অপরাধী মনে করে না৷
অথচ, শেষের দুইটি আমাদের জন্য বেশি সহায়ক৷ এই দুইটা হলে প্রথমটা এমনিই অর্জন হয়ে যায়৷
.
এ ভূমির মুসলিমদের কাছে তাদের শত্রুকে আমরা এখনো স্পষ্ট করতে পারি নি৷ ইসলাম ও সেক্যুলারিজমের দ্বন্দ স্পষ্ট করতে পারি নি৷
তবে সুযোগ মিস করলেও আশা করি এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি৷ এখন আমরা যা করতে পারি তা হলো-
(attack is the best defence - সর্বোত্তোম প্রতিরক্ষা হচ্ছে আক্রমন করা৷) এই মূলনীতির প্রয়োগ করা।
এ মূলনীতির আলোকে এসব নিউজের জবাবে,কমেন্টে আমাদেরকে আক্রমণাত্মক হওয়া উচিৎ৷ কিন্তু আমরা এতদিন ডিফেন্সিভ জবাব দিয়েছি৷
অর্থাৎ আমরা এতদিন নিজেরা নিরাপরাধ সাজার চেষ্টা করেছি৷ সেক্যু প্রশাসনের অপরাধের দিকে বেশি ফোকাস দিতে পারি নি৷
এসব নিউজের কমেন্টে আমাদের (যাদের নিরাপদ ফেবু,মিডিয়ার অন্যান্য আইডি আছে) "নির্বাচনী নাটক,সুন্দর থ্রিলার,ইত্যাদি টাইপের কমেন্ট এখন বর্জন করতে হবে৷ নিজেরা নিরাপরাধী সাজার চাইতে সেক্যুলার প্রশাসনের অপরাধ প্রমান করার দিকে ফোকাস দিতে হবে৷ যাতে মুসলিম জনসাধারণ সেক্যুদেরকেই আসামী মনে করে৷ এই ধরনের মনস্তাত্বিক আক্রমণাত্মক কমেন্ট করতে হবে৷ অর্থাৎ কমেন্টে স্বয়ং সেক্যুলারিজম কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে৷ ইসলামের সাথে সেক্যুলার নীতির সাংঘর্ষিকতা স্পষ্ট করে ধরতে হবে৷ সেক্যুদেরকে ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে৷
তাদের অপরাধী হিসেবে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ছোট বড় কমেন্ট হতে পারে। যেমন -
- কোন মুসলমান ইসলামী শরীয়াহ কে নেগেটিভ ভাবে উপস্থাপন করতে পারে না।
- যারা শরীয়াহ প্রতিষ্ঠায় বাধা দেয় তারা ইসলামের শত্রু৷ ইসলামে তাদের কোন জায়গা নেই৷
- খিলাফাহ বিরোধীদের সাথে ইসলাম ও মুসলমানের কোন সম্পর্ক নেই৷
- আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন অমান্যকারীদের ইসলামে কোন স্থান নেই৷ তোমরা শরীয়াহর দুশমন৷ স্পষ্ট অপরাধী৷
- সেক্যুলাররা ইসলামের শত্রু৷
- শরীয়াহ বিরোধীরা মুসলিম হয় কীভাবে!
- খিলাফাহ বিরোধীরা মুসলিম হয় কীভাবে!
- সেক্যুলার প্রশাসন ইসলামের দুশমন৷
- জিহাদ বিরোধীরা মুসলিম হতে পারে না।
.
আমাদের কে সঠিকতার উপর কমেন্ট উদাহরণ -
- যদি নাটক হয়েও থাকে৷ তবুও ইসলামী শরিয়াহ বাস্তবায়ন ফরজ৷ সবার উচিত ইসলামী শারিয়াহ বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করা৷
- খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা প্রত্যেক মুসলমানেরই থাকতে হবে। তাছাড়া তার ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ !
-
(এখানে উদাহরণ স্বরূপ দেখানো হলো মাত্র নচেৎ বড় ছোট নিউজের টপিক অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক আরো উত্তম কমেন্ট হতে পারে৷ )
.
হলুদ মিডিয়ার নিউজের কমেন্ট সেকশন আমাদের জন্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ?
এসব হলুদ মিডিয়া অনলাইনে যত মানুষের নিকট পৌছে আমাদের কোন মিডিয়া এতটা পৌছায় না৷ এবং এসব মিডিয়ার সাথে যেসব শ্রেণী-পেশার মানুষ যুক্ত থাকে, তারা আমাদের মিডিয়ার সাথে যুক্ত থাকে না৷ এখন আমরা তো তাদের পেজ,চ্যানেলে মিডিয়ায় পোষ্ট,ভিডিও আপলোড করতে পারি না৷ কিন্তু কমেন্টে তো আমাদের মেসেজ ছড়িয়ে দিতে পারি৷
আমাদের কমেন্টের কারণে যদি পোষ্ট বেশি ছড়ায় তাহলে আমাদের বার্তাও সাথে সাথে পৌছে যাবে৷ এর জন্য প্রয়োজনে এক জন একাধিকবার একই কমেন্ট করতে হবে৷ বা ভিন্ন কমেন্ট করবে৷ যাতে ইসলামের আদর্শ,মানহায জনসাধারণের নিকট স্পষ্ট হয়ে যায়৷ এত পরিমাণ কমেন্ট করতে হবে যাতে মানুষের চোখে পড়ে৷ হয়তো তখন কেউ চিন্তা-ভাবনা শুরু করবে৷ হক্ব জানতে শুরু করবে৷
হলুদ মিডিয়ার জঙ্গি নিউজ আমাদের বিষয়ের ( ইমারাহ,খিলাফাহ,জিহাদ ইত্যাদি) জন্য বেশি প্রাসঙ্গিক৷ তবে অন্যান্য ইসলাম বিরোধী ভাইরাল নিউজ গুলোও আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক হতে পারে৷ যেমন - সেক্যুরালিজম,হিউম্যানিজম, জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি সংক্রান্ত নিউজে বুদ্ধিবৃত্তিক কমেন্ট,রিপ্লাই হতে পারে৷
এখানে আমাদের কমেন্ট হতে হবে টপিকের সাথে মিল রেখে৷ আমাদের মনস্তাত্বিক মেসেজ পৌছে দিতে হবে৷ এর মাধ্যমে জিহাদ,খিলাফাহ, ও শরীয়াহর ব্যপারে সর্বস্তরের আ'ম জনসাধারণের নিকট মেসেজ পৌছে যায়৷ যা হয়তো আমাদের ১০ জনের ফেসবুক আইডি থেকে দীর্ঘ দিন কাজ করেও পৌছানো সম্ভব হতো না৷
তবে প্রশ্ন হতে পারে একটা ভাইরাল নিউজে আমরা কত জন মিলে কয়টা কমেন্ট করতে পারবো? অন্যান্যদের কমেন্টের ভিড়ে আমাদের কমেন্ট দেখা যাবে? এর উত্তর হলো - হয়তো প্রথমদিকে আমাদের কমেন্ট আড়ালে পড়ে যাবে৷ কিন্তু কেউ না কেউ তো দেখবে! হয়তো এভাবে আগামীতে আমাদের থেকে অন্যান্যরাও এই ধরনের কমেন্ট করতে শুরু করবে৷ আন্দোলনের শুরুতে তো অল্প লোকই থাকে৷
এটি ছিল আমার ধারনা ও প্রস্তাবনা৷ আমাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি নিউজ এবং ভাইরাল নিউজকে যেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার বানাই৷ অভিজ্ঞ ভাইদের মূল্যায়ন আশা করছি৷
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সাহায্য করুন৷ প্রচেষ্টা কবুল করুন৷ ভুল গুলো সংশোধন করে দিন৷
Comment