কাবা ঘরে এবাদত এবং হাজীদের পানি পান করানোর চেয়ে উত্তম আমল হচ্ছে জিহাদ:
আল্লাহ তাআলা বলেন,
উক্ত আয়াতের শানে নুযূল তথা অবতীর্ণ হওয়ার পেক্ষাপটে নু’মান বিন বাশীর রাদি. থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন,
আয়াতের ব্যাখ্যায় হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহ. (১৩৬২ হি.) বলেন, “আয়াতের উদ্ধেশ্য হচ্ছে, ঈমান এবং জিহাদ প্রত্যেকটি হাজীদের পানি পান করানো ও মসজিদে হারামের আবাদ রাখা থেকে উত্তম। অর্থাৎ ঈমানও উভয় আমল থেকে উত্তম এবং জিহাদও উভয় আমল থেকে উত্তম।”[2]
[1] সহীহ মুসলিম: ১৮৭৯
[2] বয়ানুল কুরআন: ২/১১৬
আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا يَسْتَوُونَ عِنْدَ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ (19) الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ (20) يُبَشِّرُهُمْ رَبُّهُمْ بِرَحْمَةٍ مِنْهُ وَرِضْوَانٍ وَجَنَّاتٍ لَهُمْ فِيهَا نَعِيمٌ مُقِيمٌ (21) خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ -سورة التوبة: 19-22
“তোমরা কি হাজীদের পানি পান করানো ও মসজিদে হারামের আবাদ রাখাকে সেই ব্যক্তির সমতূল্য করে ফেলেছো, যে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে? এরা আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান নয়। আর আল্লাহ (উভয়কে সমানকরণের মাধ্যমে) অন্যায়কারীদেরকে বুঝ দান করেন না। যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহর কাছে (হাজীদের পানি পানকারী ও মসজিদে হারামের আবাদকারীর তুলনায়) মর্যাদায় অনেক শ্রেষ্ট এবং তারাই পূর্ণ সফলকাম। তাদের রব তাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন, স্বীয় রহমত ও সন্তোষের এবং এমন জান্নাতের, যেখানে আছে তাদের জন্য স্থায়ী নেআমত। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহর কাছে মহাপুরস্কার রয়েছে।” –সূরা তাওবা: ১৯-২২উক্ত আয়াতের শানে নুযূল তথা অবতীর্ণ হওয়ার পেক্ষাপটে নু’মান বিন বাশীর রাদি. থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন,
كُنْتُ عِنْدَ مِنْبَرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ رَجُلٌ: مَا أُبَالِي أَنْ لَا أَعْمَلَ عَمَلًا بَعْدَ الْإِسْلَامِ إِلَّا أَنْ أُسْقِيَ الْحَاجَّ، وَقَالَ آخَرُ: مَا أُبَالِي أَنْ لَا أَعْمَلَ عَمَلًا بَعْدَ الْإِسْلَامِ إِلَّا أَنْ أَعْمُرَ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ، وَقَالَ آخَرُ: الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ أَفْضَلُ مِمَّا قُلْتُمْ، فَزَجَرَهُمْ عُمَرُ، وَقَالَ: لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ عِنْدَ مِنْبَرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ، وَلَكِنْ إِذَا صَلَّيْتُ الْجُمُعَةَ دَخَلْتُ فَاسْتَفْتَيْتُهُ فِيمَا اخْتَلَفْتُمْ فِيهِ، فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ التوبة: 19 الْآيَةَ إِلَى آخِرِهَا.
“আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মিম্বারের কাছে ছিলাম। এক ব্যক্তি বলল, ইসলাম গ্রহণ করার পরে হাজীদের পানি পান করানো ছাড়া অন্য কোন আমল না করলেও আমার কোন পরওয়া নেই। আরেকজন বলল, ইসলাম গ্রহণের পরে মসজিদে হারাম আবাদ রাখা ছাড়া অন্য কোন আমল না করলেও আমার কোন পরওয়া নেই। তৃতীয় আরেকজন বলল, তোমরা যা বলছো, তার চেয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা উত্তম। উমর রাদি. তাদেরকে ধমক দিয়ে বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মিম্বারের কাছে তোমরা উচ্চস্বরে কথা বলো না। ঐ দিন জুমাবার ছিল। (উমর যদিও ধমক দিয়ে তাদেরকে চুপ করে দিয়েছেন) কিন্তু আমি জুমআর নামায পড়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘরে প্রবেশ করে তোমাদের বিরোধপূর্ণ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন আল্লাহ তাআলা (সূরা তাওবার উক্ত আয়াত); “তোমরা কি হাজীদের পানি পান করানো ও মসজিদে হারামের আবাদ রাখাকে সেই ব্যক্তির সমতূল্য করে ফেলেছো, যে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে?” শেষ পর্যন্ত অবতীর্ণ করেন।”[1]আয়াতের ব্যাখ্যায় হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহ. (১৩৬২ হি.) বলেন, “আয়াতের উদ্ধেশ্য হচ্ছে, ঈমান এবং জিহাদ প্রত্যেকটি হাজীদের পানি পান করানো ও মসজিদে হারামের আবাদ রাখা থেকে উত্তম। অর্থাৎ ঈমানও উভয় আমল থেকে উত্তম এবং জিহাদও উভয় আমল থেকে উত্তম।”[2]
[1] সহীহ মুসলিম: ১৮৭৯
[2] বয়ানুল কুরআন: ২/১১৬