Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদের ফযীলত সিরিজ; পর্ব ৭

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদের ফযীলত সিরিজ; পর্ব ৭

    অন্যদের উপর মুজাহিদের মর্যাদা শত স্তর বেশি:
    আল্লাহ তাআলা বলেন,
    لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى وَفَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا (95) دَرَجَاتٍ مِنْهُ وَمَغْفِرَةً وَرَحْمَةً وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا –سورة النساء: 95، 96
    “কোন উজর ছাড়া ঘরে উপবিষ্টকারী মুসলিম এবং মাল ও জান দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী সমান নন। আল্লাহ মাল ও জান দ্বারা জিহাদকারীদেরকে উপবিষ্টদের উপর মর্যাদা দিয়েছেন। এবং আল্লাহ প্রত্যেকের জন্য জান্নাতের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহিদদেরকে উপবিষ্টকারীদের তুলনায় মহান প্রতিদান দিয়ে মর্যাদাবান করেছেন। তথা আল্লাহর পক্ষ হতে (জান্নাতের) অনেক স্তর, মাগফিরাত ও রহমত। আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালূ।” –সূরা নিসা: ৯৫, ৯৬
    উক্ত আয়াতের তাফসীরে বিশিষ্ট তাবেয়ী ইমাম ইবনে মুহাইরীয রহ. বলেন,
    "فضل الله المجاهدين على القاعدين"، إلى قوله:"درجات"، قال: الدرجات سبعون درجة، ما بين الدرجتين حُضْرُ الفرس الجواد المُضَمَّر سبعين سنة.
    “স্তরসমূহ’ দ্বারা উদ্ধেশ্য হচ্ছে, (জান্নাতের) সত্তর স্তর। দুই স্তরের মধ্যবর্তী জায়গা হচ্ছে, দ্রুতগামী প্রশিক্ষিত ঘোড়া লাফিয়ে সত্তর বছর পাড়ি দেওয়া জায়গার মত।”[1]
    ইমাম আবু বকর জাসসাস রহ. (৩৭০ হি.) বলেন,
    وقوله تعالى: "وفضل الله المجاهدين على القاعدين أجرا عظيما درجات منه"، ذكر ههنا: "درجات منه" وذكر في أول الآية: {درجة}؛ فإنه روي عن ابن جريج: أن الأول على أهل الضرر فضلوا عليهم درجة واحدة، والثاني على غير أهل الضرر فضلهم عليهم درجات كثيرة وأجرا عظيما. وقيل إن الأول على الجهاد بالنفس ففضلوا درجة واحدة، والآخر الجهاد بالنفس والمال ففضلوا درجات كثيرة. وقيل إنه أراد بالأول درجة المدح والتعظيم وشرف الدين، وأراد بالآخر درجات الجنة.
    فإن قيل: هل في الآية دلالة على مساواة أولي الضرر للمجاهدين في سبيل الله من أجل معنى الاستثناء فيها؟ قيل له: لا دلالة فيها على التساوي؛ لأن الاستثناء ورد من حيث كان مخرج الآية تحريضا على الجهاد وحثا عليه، فاستثنى أولي الضرر؛ إذ ليسوا مأمورين بالجهاد لا من حيث ألحقوا بالمجاهدين.
    “আল্লাহ তাআলার বাণী ‘এবং আল্লাহ মুজাহিদদেরকে ঘরে উপবিষ্টকারীদের উপর মহান মর্যাদা দিয়েছেন; অনেক স্তর দিয়ে’ আল্লাহ এখানে ‘অনেক স্তর’ বলেছেন, অথচ আয়াতের শুরুতে ‘এক স্তর’ বলেছেন। ইবনে জুরাইজ রহ. থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রথমটিতে অক্ষম ব্যক্তিদের তুলনায় মুজাহিদদেরকে এক স্তর ফযীলত দেওয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয়টিতে সক্ষম ব্যক্তিদের তুলনায় অনেক স্তর ও মহান প্রতিদানের ফযীলত দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, প্রথমটিতে জান দিয়ে জিহাদকারীদেরকে এক স্তর ফযীলত দেওয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয়টিতে জান ও মাল দ্বারা জিহাদকারীদেরকে অনেক স্তরের ফযীলত দেওয়া হয়েছে। আরও কেউ কেউ বলেন, প্রথমটি দ্বারা উদ্ধেশ্য হচ্ছে, প্রশংসা, সম্মান ও দীনের মর্যাদা এবং দ্বিতীয়টি দ্বারা উদ্ধেশ্য হচ্ছে, জান্নাতের স্তরসমূহ।
    যদি প্রশ্ন করা হয় যে, উক্ত আয়াতে কি অক্ষম ব্যক্তিরা (ফযীলতের ক্ষেত্রে) মুজাহিদদের সমান হওয়ার উপর দলীল রয়েছে, যেহেতু আয়াতে অক্ষমদেরকে আলাদা করা হয়েছে? উত্তর হচ্ছে, আয়াতে সমান হওয়ার উপর কোন দলীল নেই। কেননা আয়াত যেহেতু জিহাদের উপর উদ্বুদ্ধকরণের জন্য অবতীর্ণ হয়েছে, তাই অক্ষমদেরকে আলাদা করা হয়েছে। কেননা তারা জিহাদের ব্যাপারে আদিষ্ট নয়; তাদেরকে মুজাহিদদের সমান বানানো হয়নি।”[2]
    আবু হুরায়রা রাদি. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,
    «مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَبِرَسُولِهِ، وَأَقَامَ الصَّلاَةَ، وَصَامَ رَمَضَانَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يُدْخِلَهُ الجَنَّةَ، جَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوْ جَلَسَ فِي أَرْضِهِ الَّتِي وُلِدَ فِيهَا»، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَفَلاَ نُبَشِّرُ النَّاسَ؟ قَالَ: «إِنَّ فِي الجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ، أَعَدَّهَا اللَّهُ لِلْمُجَاهِدِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، مَا بَيْنَ الدَّرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، فَإِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ، فَاسْأَلُوهُ الفِرْدَوْسَ، فَإِنَّهُ أَوْسَطُ الجَنَّةِ وَأَعْلَى الجَنَّةِ -أُرَاهُ- فَوْقَهُ عَرْشُ الرَّحْمَنِ، وَمِنْهُ تَفَجَّرُ أَنْهَارُ الجَنَّةِ»
    “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনলো, নামায পড়লো ও রোযা রাখলো, সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করুক অথবা তার জন্মস্থানে বসে থাকুক, আল্লাহ তাকে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সাহাবীরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমরা কি মানুষদেরকে উক্ত সুসংবাদ দিবো না? রাসূল বললেন, জান্নাতে একশটি স্তর রয়েছে, যা আল্লাহ মুজাহিদদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন। দুই স্তরের মধ্যবর্তী জায়গা হচ্ছে আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী জায়গার মত। যখন তোমরা আল্লাহর কাছে চাও, তখন জান্নাতুল ফিরদাউস চাও। কেননা তা জান্নাতের মধ্যবর্তী ও উচু জান্নাত। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার ধারণা (রাসূল এও বলেছেন, এর উপরে আল্লাহর আরশ। উক্ত জান্নাত থেকেই জান্নাতের নদীসমূহ প্রবাহমান হয়।”[3]
    আবু সাঈদ খুদরী রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে সম্বোধন করে বলেন,
    يَا أَبَا سَعِيدٍ، مَنْ رَضِيَ بِاللهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا، وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ»، فَعَجِبَ لَهَا أَبُو سَعِيدٍ، فَقَالَ: أَعِدْهَا عَلَيَّ يَا رَسُولَ اللهِ، فَفَعَلَ، ثُمَّ قَالَ: «وَأُخْرَى يُرْفَعُ بِهَا الْعَبْدُ مِائَةَ دَرَجَةٍ فِي الْجَنَّةِ، مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ»، قَالَ: وَمَا هِيَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: «الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ، الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ»
    “হে আবু সাঈদ, যে আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে নবী হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিল, তার জন্য জান্নাত অনিবার্য। আবু সাঈদ রাদি. উক্ত সুসংবাদ শুনে আশ্চর্য হলেন। বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, উক্ত সুসংবাদটি আবার বলুন। রাসূল আবার বললেন, অতঃপর বলেন, আরেকটি সুসংবাদ, যা দিয়ে আল্লাহ বান্দাকে জান্নাতে একশত স্তর উপরে উঠাবেন। দুই স্তরের মধ্যবর্তী জায়গা আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী জায়গার মত। আবু সাঈদ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, উক্ত সুসংবাদ কী? রাসূল বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।”[4]
    অন্য হাদীসে স্তরের বিবরণ এভাবে এসেছে কাআ’ব বিন মালিক রাদি. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন,
    «ارْمُوا مَنْ بَلَغَ الْعَدُوَّ بِسَهْمٍ رَفَعَهُ اللَّهُ بِهِ دَرَجَةً» قَالَ ابْنُ النَّحَّامِ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَمَا الدَّرَجَةُ؟ قَالَ: «أَمَا إِنَّهَا لَيْسَتْ بِعَتَبَةِ أُمِّكَ، وَلَكِنْ مَا بَيْنَ الدَّرَجَتَيْنِ مِائَةُ عَامٍ»
    “তোমরা নিক্ষেপ করো। যে শত্রুর গায়ে একটি নিক্ষেপ লাগাতে পারবে, আল্লাহ উক্ত নিক্ষেপের বিনিময়ে (জান্নাতে) তার এক স্তর বৃদ্ধি করবেন। ইবনুন নাহহাম রাদি. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, স্তর কী? রাসূল বলেন, স্তর দ্বারা তোমার মায়ের দরজার চৌকাঠ উদ্ধেশ্য নয়। বরং দুই স্তরের মধ্যবর্তী একশত বছরের রাস্তা।”[5]

    [1] তাফসীরে তাবারী: ৯/৯৭
    [2] আহকামুল কুরআন: ২/৩১৩
    [3] সহীহ বুখারী: ২৭৯০
    [4] সহীহ মুসলিম: ১৮৮৪
    [5] সুনানে নাসায়ী: ৩১৪৪, মুসনাদে আহমদ: ১৮০৬৩, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ: ১০/২৭৮, সহীহ ইবনে হিব্বান: ১০/৪৭৭ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. হাদীসটি সহীহ বলেছেন -আল-ইসাবাহ: ৪/৩০৪
    رحم الله عبدا صوبني فيما أخطأت وحرضني فيما أصبت

  • #2
    জাযাকাল্লাহ খাইরান, আল্লাহ তাআলা আপনাকে ধারাবাহিক পোস্ট করার তাওফিক দিন, আমীন

    Comment


    • #3
      ওয়াইয়্যাকুম। আমীন
      رحم الله عبدا صوبني فيما أخطأت وحرضني فيما أصبت

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ। হে আল্লাহ, আমাদেরকে খাটি মুজাহিদ হিসেবে কবুল করো। আমীন

        Comment


        • #5
          Originally posted by musa yusuf View Post
          মাশাআল্লাহ। হে আল্লাহ, আমাদেরকে খাটি মুজাহিদ হিসেবে কবুল করো। আমীন
          আল্লাহুম্মা আমীন
          رحم الله عبدا صوبني فيما أخطأت وحرضني فيما أصبت

          Comment

          Working...
          X