আল্লাহর রাস্তার ধুলাবালি লাগলে জাহান্নাম হারাম হয়ে যায়:
আবু আবস রাদি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
আরেক বর্ণনায় এসেছে,
আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
উক্ত ফযীলত অর্জন করার জন্য সালাফদের অনেকে আরোহী থাকা সত্বেও পায়ে হেঁটে জিহাদে যেতেন।
আবুল মুসাব্বিহ মুকরায়ী রহ. বলেন,
জাবির রাদি. এর কথা “আমি আমার খচ্চরের দেখবাল করবো এবং গোত্র থেকে অমুখাপেক্ষি থাকবো” উক্ত শব্দ ইবনুল মুবারকের অন্য সনদে বর্ণিত হয়েছে, “আমি আমার খচ্চর দেখবাল করবো যাতে আমি আমার গোত্র থেকে অমুখাপেক্ষি থাকতে পারি।[6] আল্লাহু আ’লাম।
বিপরিতে ধুলো থেকে নিজেকে বাচিয়ে হাঁটার ব্যাপারে হাদীসে নিষেধ এসেছে।
রাবী’ বিন যায়েদ রাদি. বলেন,
[1] সহীহ বুখারী: ৯০৭
[2] সহীহ বুখারী: ২৮১১
[3] মুসনাদে আহমদ: ২১৯৬২, মুসনাদে আবু ইয়া’লা: ৪/৫৭, কিতাবুল জিহাদ লিইবনিল মুবারক: পৃ: ৪৫। হাইসামী রহ. বলেন, “মুসনাদে আহমাদের দুই সনদের এক সনদের ‘আবুল মুসাব্বিহ’ নামক একজন ব্যক্তি ছাড়া বাকি সকল বর্ণনাকারীরা সহীহ হাদীসের বর্ণনাকারী। ‘আবুল মুসাব্বিহ’ তিনি নির্ভরযোগ্য। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৮৫
[4] জামে’ তিরমিযী: ১৬৩৩। তিরমিযী হাসান সহীহ বলেছেন।
[5] সহীহ ইবনে হিব্বান: ১০/৪৬৪, কিতাবুল জিহাদ লিইবনিল মুবারক: পৃ: ৪৪। উক্ত হাদীসটি সংক্ষেপে মুসনাদে আহমদ: ২১৯৬২ বর্ণিত হয়েছে। হাইসামী রহ. বলেন, “মুসনাদে আহমাদের দুই সনদের এক সনদের ‘আবুল মুসাব্বিহ’ নামক একজন ব্যক্তি ছাড়া বাকি সকল বর্ণনাকারীরা সহীহ হাদীসের বর্ণনাকারী। ‘আবুল মুসাব্বিহ’ তিনি নির্ভরযোগ্য। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৮৫
[6] কিতাবুল জিহাদ লিইবনিল মুবারক: পৃ: ৪৫
[7] মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ: ১০/২৭০, সুনানে কুবরা লিন-নাসায়ী: ৮/১১৪, মু’জামে কাবীর: ৫/৬৯, মারাসীলে আবু দাউদ: পৃ: ২৩৪। হাইসামী রহ. বলেন, “উক্ত হাদীসের বর্ণনাকারী সবাই নির্ভরযোগ্য”। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৮৭
আবু আবস রাদি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
«مَنِ اغْبَرَّتْ قَدَمَاهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ»
“যার কদম দুটি আল্লাহর রাস্তায় ধূলিমলিন হবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের উপর হারাম করে দিবেন।”[1]অন্য বর্ণনায় এসেছে,
«مَا اغْبَرَّتْ قَدَمَا عَبْدٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَمَسَّهُ النَّارُ»
“কোন বান্দার পা দুটি আল্লাহর রাস্তায় ধূলিমলিন হবে, আর জাহান্নাম তাকে স্পর্শ করবে, তা হবে না।”[2]আরেক বর্ণনায় এসেছে,
مَنِ اغْبَرَّتْ قَدَمَاهُ فِي سَبِيلِ اللهِ سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ، فَهُمَا حَرَامٌ عَلَى النَّارِ "
“যার কদম দুটি আল্লাহর রাস্তায় দিনের একটু মুহূর্ত ধূলিমলিন হবে, উক্ত পা দুটি জাহান্নামের উপর হারাম হয়ে যাবে।”[3]আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
«لَا يَلِجُ النَّارَ رَجُلٌ بَكَى مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ حَتَّى يَعُودَ اللَّبَنُ فِي الضَّرْعِ، وَلَا يَجْتَمِعُ غُبَارٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدُخَانُ جَهَنَّمَ»
“যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না; যতক্ষণ না দুধ স্তনে ফিরে যায়। আল্লাহর রাস্তার ধুলো এবং জাহান্নামের ধোঁয়া একত্র হবে না।”[4]উক্ত ফযীলত অর্জন করার জন্য সালাফদের অনেকে আরোহী থাকা সত্বেও পায়ে হেঁটে জিহাদে যেতেন।
আবুল মুসাব্বিহ মুকরায়ী রহ. বলেন,
بَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ بِأَرْضِ الرُّومِ فِي طَائِفَةٍ عَلَيْهَا مَالِكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْخَثْعَمِيُّ إِذْ مَرَّ مَالِكٌ بِجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَهُوَ يَمْشِي يَقُودُ بَغْلًا لَهُ فَقَالَ لَهُ مَالِكٌ: أَيْ أَبَا عَبْدِ اللَّهِ ارْكَبْ، فَقَدْ حَمَلَكَ اللَّهُ، فَقَالَ جَابِرٌ: أُصْلِحُ دَابَّتِي، وَأَسْتَغْنِي عَنْ قَوْمِي، وَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: "مَنِ اغْبَرَّتْ قَدَمَاهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ" فَأَعْجَبَ مَالِكًا قَوْلُهُ، فَسَارَ حَتَّى إِذَا كَانَ حَيْثُ يُسْمِعُهُ الصَّوْتَ نَادَاهُ بِأَعْلَى صَوْتِهِ يَا أَبَا عَبْدِ اللَّهِ ارْكَبْ، فَقَدْ حَمَلَكَ اللَّهُ، فَعَرَفَ جَابِرٌ الَّذِي أَرَادَ بِرَفْعِ صَوْتِهِ، وَقَالَ: أُصْلِحُ دَابَّتِي، وَأَسْتَغْنِي عَنْ قَوْمِي، وَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: "مَنِ اغْبَرَّتْ قَدَمَاهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ" فَوَثَبَ النَّاسُ عَنْ دَوَابِّهِمْ، فَمَا رَأَيْنَا يَوْمًا أَكْثَرَ مَاشِيًا مِنْهُ.
আমরা এক বড় দলে রোম এলাকায় (জিহাদের) সফর করছি। মালিক বিন আব্দুল্লাহ খাসআমী দলের আমীর ছিলেন। তিনি জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদি. এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করার সময় দেখেন, তিনি খচ্চর হাঁকিয়ে পায়ে হেঁটে সফর করছেন। তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আবু আব্দুল্লাহ, (জাবির রাদি. এর ছেলের নামও আব্দুল্লাহ ছিল, তাই তাঁর উপনাম আবু আব্দুল্লাহ) আল্লাহ আপনাকে বাহন দিয়েছেন, আপনি আরোহণ করেন। জাবির রাদি. বললেন, আমি আমার খচ্চরের দেখবাল করবো এবং গোত্র থেকে অমুখাপেক্ষি থাকবো। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যার কদম দুটি আল্লাহর রাস্তায় ধূলিমলিন হবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের উপর হারাম করে দিবেন। দলনেতা মালিক রহ. এর কাছে হাদীসটি পছন্দ লাগলো। মালিক সামনে এগিয়ে, জাবির রাদি.কে তার আওয়াজ শুনাতে পারবেন, এতটুকু দূরে গিয়ে উচ্চস্বরে ডাক দিয়ে বললেন, হে আবু আব্দুল্লাহ, আল্লাহ আপনাকে বাহন দিয়েছেন, আপনি আরোহণ করেন। জাবির রাদি. তাঁর উচ্চস্বরে বলার উদ্ধেশ্য বুঝতে পেরে বললেন, আমি আমার খচ্চরের দেখবাল করবো এবং গোত্র থেকে অমুখাপেক্ষি থাকবো। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যার কদম দুটি আল্লাহর রাস্তায় ধূলিমলিন হবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের উপর হারাম করে দিবেন। (উক্ত হাদীস শুনে) সকল মানুষ তাদের বাহন থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়ে। আমরা উক্ত যুদ্ধের চেয়ে বেশি পায়ে হেঁটে সফরকারী অন্য কোন যুদ্ধে দেখিনি।”[5]জাবির রাদি. এর কথা “আমি আমার খচ্চরের দেখবাল করবো এবং গোত্র থেকে অমুখাপেক্ষি থাকবো” উক্ত শব্দ ইবনুল মুবারকের অন্য সনদে বর্ণিত হয়েছে, “আমি আমার খচ্চর দেখবাল করবো যাতে আমি আমার গোত্র থেকে অমুখাপেক্ষি থাকতে পারি।[6] আল্লাহু আ’লাম।
বিপরিতে ধুলো থেকে নিজেকে বাচিয়ে হাঁটার ব্যাপারে হাদীসে নিষেধ এসেছে।
রাবী’ বিন যায়েদ রাদি. বলেন,
بَيْنَمَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسِيرُ , إذْ هُوَ بِغُلاَمٍ مِنْ قُرَيْشٍ شَابٍّ مُعْتَزِلٍ عَنِ الطَّرِيقِ يَسِيرُ ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَلَيْسَ ذَلِكَ فُلاَنٌ ؟ قَالُوا : بَلَى ، قَالَ : فَادْعُوهُ ، قَالَ : مَا لَكَ اعْتَزَلْتَ من الطَّرِيقِ ؟ قَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، كَرِهْته لِلْغُبَارِ ، قَالَ : فَلاَ تَعْتَزِلُهُ , فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّهُ لَذَرِيرَةُ الْجَنَّةِ.
“একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর করছেন, এক কুরাইশী যুবক রাস্তা থেকে পৃথক হয়ে হাঁটছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে কি অমুক নয়? সাহাবীরা বললেন, জ্বি হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাকে ডাকো। (অতঃপর সে আসার পরে তাকে) বললেন, তোমার কী হলো, তুমি রাস্তা থেকে পৃথক হয়ে হাঁটছো? সে বললো, হে আল্লাহর রাসূল, ধুলোর কারণে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে অপছন্দ করছি। রাসূল বলেন, রাস্তা থেকে সরে হেঁটো না। ঐ সত্বার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের জান, উক্ত ধুলোবালি হচ্ছে জান্নাতের ‘যারীরা’ (এক ধরনের বিশেষ সুগন্ধি)।”[7][1] সহীহ বুখারী: ৯০৭
[2] সহীহ বুখারী: ২৮১১
[3] মুসনাদে আহমদ: ২১৯৬২, মুসনাদে আবু ইয়া’লা: ৪/৫৭, কিতাবুল জিহাদ লিইবনিল মুবারক: পৃ: ৪৫। হাইসামী রহ. বলেন, “মুসনাদে আহমাদের দুই সনদের এক সনদের ‘আবুল মুসাব্বিহ’ নামক একজন ব্যক্তি ছাড়া বাকি সকল বর্ণনাকারীরা সহীহ হাদীসের বর্ণনাকারী। ‘আবুল মুসাব্বিহ’ তিনি নির্ভরযোগ্য। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৮৫
[4] জামে’ তিরমিযী: ১৬৩৩। তিরমিযী হাসান সহীহ বলেছেন।
[5] সহীহ ইবনে হিব্বান: ১০/৪৬৪, কিতাবুল জিহাদ লিইবনিল মুবারক: পৃ: ৪৪। উক্ত হাদীসটি সংক্ষেপে মুসনাদে আহমদ: ২১৯৬২ বর্ণিত হয়েছে। হাইসামী রহ. বলেন, “মুসনাদে আহমাদের দুই সনদের এক সনদের ‘আবুল মুসাব্বিহ’ নামক একজন ব্যক্তি ছাড়া বাকি সকল বর্ণনাকারীরা সহীহ হাদীসের বর্ণনাকারী। ‘আবুল মুসাব্বিহ’ তিনি নির্ভরযোগ্য। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৮৫
[6] কিতাবুল জিহাদ লিইবনিল মুবারক: পৃ: ৪৫
[7] মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ: ১০/২৭০, সুনানে কুবরা লিন-নাসায়ী: ৮/১১৪, মু’জামে কাবীর: ৫/৬৯, মারাসীলে আবু দাউদ: পৃ: ২৩৪। হাইসামী রহ. বলেন, “উক্ত হাদীসের বর্ণনাকারী সবাই নির্ভরযোগ্য”। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৮৭