Announcement

Collapse
No announcement yet.

আদর্শের উপর অটল থাকাই বিজয়

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আদর্শের উপর অটল থাকাই বিজয়

    আল্লাহ দুনিয়ার সুন্নাহ এমন করে রেখেছেন যে, আদর্শের উপর অটল থাকার পর কখনো বাহ্যিক বিজয় আসবে, কখনো বাহ্যিক পরাজয় আসবে, আবার কখনোও বা বিজয়ে বিলম্ব হবে। কিন্তু সবগুলোই বিজয়। আসলে মুমিনের জীবনটাই এমন। পূর্ণ দ্বীনের উপর অটল থাকার পর হালাত যাই আসুক সবগুলোর তার বিজয়।হাদিসে কত উত্তম কথা এসেছে আলহামদুলিল্লাহ-
    عجَبًا لِأَمر المُؤمِن إِنَّ أمرَه كُلَّه له خير، وليس ذلك لِأَحَد إِلَّا لِلمُؤمِن: إِنْ أَصَابَته سَرَّاء شكر فكان خيرا له، وإِنْ أَصَابته ضّرَّاء صَبَر فَكَان خيرا له​
    মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক। তার প্রতিটি কাজই তার জন্য ভালো। এটা মুমিন ব্যতীত অন্য কারো জন্য নয়। যদি তাকে কল্যাণ স্পর্শ করে সে আল্লাহর শোকর আদায় করে। ফলে এটা তার জন্য মঙ্গলময় হয়। আর যদি তাকে ক্ষতি স্পর্শ করে সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে এটাও তার জন্য মঙ্গলময় হয়। [ মুসলিম ]

    সুবহানাল্লাহ! এখানে ব্যর্থতার কোনকিছু নেই। কিন্তু এটাই বড় পরীক্ষা যে কয়জন এটা সবরের সাথে নিতে পারে। কারণ এটা তো ক্ষণস্থায়ী বিষয় না যা চলে যাবে, বা সাময়িক কোন পরীক্ষা নয়। এই পরীক্ষার সময় সারাজীবন। এর পদে পদে আছে অনেক বিপদ, নিঃসঙ্গতা, কুরবানি, ভয়, ঝুঁকি ইত্যাদি। তাই মুখে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়িত্বের কথা বলা যতই সহজ হোক, বাস্তবজীবনে পদে পদে এটা আমলে পরিণত করা মানুষের সংখ্যা একান্তই নগণ্য।

    যারাই দ্বীনের চাহিদা অনুযায়ী এপথে চলতে যাবে সারাজীবনে দ্বীন হতে হবে তার প্রধান পেশা, দ্বীনের জন্য তার আসবে অনেক বিপদ। বিপদ আসাটা এখানে সফলতার মাপকাটি। এটা আবশ্যিক বিষয়। এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কুরআন হাদিসে এই বিষয়টা পরিষ্কার।

    أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ* وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۖ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ
    মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না? আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নেবেন মিথ্যুকদেরকে। [সূরা আনকাবুত- ২,৩]

    أشَدُّ النّاسِ بَلاءً الأَنْبِياءُ ثمَّ الأَمْثَلُ فالأَمْثَلُ يُبْتَلى الرَّجُلُ على حَسَبِ دِينِهِ فإِنْ كانَ في دِينِهِ صُلْباً اشْتَدَّ بَلاؤُهُ وإنْ كانَ في دِينِهِ رِقَّةٌ ابْتُلِيَ على قَدْرِ دِينِهِ فَما يَبْرَحُ البَلاءُ بالعَبْدِ حَتّٰـى يَتْرُكَهُ يَمْشِي عَلَى الْأَرْضِ وَمَا عَلَيْهِ خَطِيئَةٌ
    সকল মানুষ অপেক্ষা নবীগণই অধিকতর কঠিন বিপদের সম্মুখীন হন। অতঃপর যারা তাদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী নেককার। এরপর যারা পরের ধাপের নেককার। মানুষকে তার দ্বীনের (পূর্ণতার) পরিমাণ অনুযায়ী বিপদগ্রস্ত করা হয়; সুতরাং তার দ্বীনে যদি মজবুতি থাকে তবে (যে পরিমাণ মজবুতি আছে) ঠিক সেই পরিমাণ তার বিপদও কঠিন হয়ে থাকে। আর যদি তার দ্বীনে দুর্বলতা থাকে তবে তার দ্বীন অনুযায়ী তার বিপদও (হালকা)হয়। পরন্তু বিপদ এসে এসে বান্দার শেষে এই অবস্থা হয় যে, সে জমীনে চলা ফেরা করে অথচ তার কোন পাপ অবশিষ্ট থাকে না।​ [তিরমিযী, ইবনে মাজাহ]

    অর্থাৎ কারো দ্বীন পালন করতে কষ্ট আসলে তা সফলতার আলামত। আর কষ্ট না হওয়া ব্যর্থতা বা কম সফলতার আলামত। যদিও নিজ থেকে কষ্ট চাওয়া যাবে না, কিন্তু দ্বীনের কাজ করলে কষ্ট বিপদ আসবে। তো এটা কখন আসবে? শুধু নিয়াত করে বসে থাকলেই তো আসবে না, কুরবানির সাথে কাজ শুরু করলে কষ্ট আসার রাস্তা চালু হবে।

    আল্লাহর দ্বীনের উপর অটল থাকার পর পরীক্ষা বিভিন্ন সূরতে আসতে পারে। কোন হতে পারে সহজে বোধগম্য। আবার কোনটা হতে পারে একটু জটিল। যেমন- দ্বীনের উপর পূর্ণ অটল থেকে কারো বিজয় বিলম্ব হচ্ছে বা বাহ্যিকভাবে আপাতত আসছে না। যা যুগে যুগে আল্লাহর পরীক্ষা ও সুন্নাহর অংশ। অপরদিকে শরিয়াহ যেখানে ছাড়ের অবকাশ দেয়নি সেখানে কেউ ছাড় দিয়ে হুকুমত কায়েম করল। বিভিন্ন ইসলামী কাজ করল। তবু একে প্রকৃত বিজয় বলা যাবে না। কেননা আদর্শের উপর অটল না থাকলে বাহ্যিক যতকিছুই আসুক এটাকে প্রকৃত বিজয় বলা যাবে না। এটা অনেক সময় অনেকের ফিতনায় পড়ার কারণ হতে পারে। অনেকের সবর করা কঠিন হতে পারে। অনেকে বলতে পারে এতটুকু করলে সমস্যা কী? বা সঠিক পথের দিকে আহ্বানকারীকে বিভিন্ন ট্যাগ দেওয়া হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ- দ্বীন কায়েম করতে গিয়ে পার্লামেন্টারি সিস্টেম সহ কিছু বিষয় যা ইসলামের মূলের সাথে সাংঘর্ষিক। বাকি শরিয়াহর গণ্ডির মধ্যে থেকে কেউ কাজ করে গেলে বা সফল হলে তার অবদানকে আবার খাটো করা যাবে না। এটা এমন একটা বিষয় যা আমাদের চলমান হালাতে সাফ থাকা জরুরি। এমন বিভিন্ন হালাত আমাদের সামনে আসছে ও সামনেও আসতে পারে।

    আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ির মাঝে তাঁর পছন্দনীয় মধ্যমপন্থায় রাখুন। আমীন।

    وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا
    এরূপে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী জাতি বানিয়েছি। [সূরা বাকারা-১৪৩]





    فَلۡيُقَٰتِلۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يَشۡرُونَ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا بِٱلۡأٓخِرَةِۚ وَمَن يُقَٰتِلۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَيُقۡتَلۡ أَوۡ يَغۡلِبۡ فَسَوۡفَ نُؤۡتِيهِ أَجۡرًا عَظِيمٗا

    কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জিহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে জিহাদ করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব।(সূরা নিসা, আয়াত ৭৪)

  • #2
    পূর্ণ দ্বীনের উপর অটল থাকার পর হালাত যাই আসুক সবগুলোর মুমিনের বিজয়। আলহামদুলিল্লাহ

    Comment


    • #3
      অর্থাৎ কারো দ্বীন পালন করতে কষ্ট আসলে তা সফলতার আলামত। আর কষ্ট না হওয়া ব্যর্থতা বা কম সফলতার আলামত। যদিও নিজ থেকে কষ্ট চাওয়া যাবে না, কিন্তু দ্বীনের কাজ করলে কষ্ট বিপদ আসবে। তো এটা কখন আসবে? শুধু নিয়াত করে বসে থাকলেই তো আসবে না, কুরবানির সাথে কাজ শুরু করলে কষ্ট আসার রাস্তা চালু হবে।
      আর এ কষ্টের ধরনের ভিন্নতাও অনেক কষ্টকর। কিছু কষ্ট এমন যা বুঝাটা বড়ই দুষ্কর। উদাহরণ স্বরুপ : কোন দ্বীনি ভাই কোন একটা দ্বীনি জামা'আতে যুক্ত হলেন ঐ জামায়াতের মুল কাজে শরীক হওয়ার নিয়্যাতে। এখন যুক্ত হওয়ার পর দেখতেছেন। উনাকে দিয়ে কোন কাজ নেওয়া হচ্ছে না। দীর্ঘ দিন কোন কোন অজুহাতে বা কারণে বসিয়ে রাখা হচ্ছে। উনার সামনে এটা স্পষ্ট যে, এই দলের লোকেরা কাজ করছেন এমন নয় যে কাজ করছেননা। উনাকে দিয়ে আপাতত নিচ্ছেননা এই আরকি। কিন্তু তিনি সবর করতে পারেননি। উনাকে কাজে লাগানোর সময় আসার আগেই উনি আবার ফিরে গেলেন।

      তো এ পথের কষ্ট গুলোকে বুঝা তখনই সহজ হয় যখন নিয়্যাত মজবুত হয়। নিয়্যাত মজবুত না হলে কোন কষ্টই বোধগম্য নয়। তাই আমাদের উচিত নিয়্যাতকে বিশুদ্ধ করা ও বার বার উচ্চ আওয়াজে মুজাকারা করা।

      আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দ্বীনের উপর অটলতা ও অবিচলতা দান করুক আমিন।
      হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

      Comment


      • #4
        জাঝকাল্লাহু খাইরান আহসানাল যাঝা। আল্লাহ তাআলা ভাইয়ের ইলমে বারাকাহ দান করুন। আমাদের সকলকে ইকামতে দ্বীনের কাজে শরিক হওয়ার তৌফিক দিন।

        "ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য অধিক উপযুক্ত"। শাইখ ওসামা বিন লাদেন রহ.

        Comment


        • #5
          আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ির মাঝে তাঁর পছন্দনীয় মধ্যমপন্থায় রাখুন। আমীন।
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment

          Working...
          X