দূরদৃষ্টির সাথে জিহাদ
পর্ব - ০৩
পর্ব - ০৩
আমার প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা!
.
আমি আপনাদের সামনে সংক্ষিপ্তভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে কায়িদাতুল জিহাদের কর্মপন্থার কিছু ধারা তুলে ধরা জরুরী মনে করছি:
.
প্রথমত: আমরা বিশ্বাস করি, সাধারণ মুসলিমগণ আমাদের ভাই এবং আমরা মনে করি, তাদেরকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা তাদের জান, সম্মান, এমনকি তাদের ফাসেকদের সম্পদকেও আমাদের উপর হারাম মনে করি। একারণে আমরা বিশ্বাস করি, পাকিস্তানের বাজার, বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মত সাধারণ স্থানগুলোতে যে সকল মুসলিমগণ আছে, তারা আমাদের ভাই।
তবে যদি নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির কুফরী উলামায়ে কেরামের নিকট অকাট্য দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তার কথা ভিন্ন। এর উপর ভিত্তি করে আমরা বিশ্বাস করি, তাদের জান ও মালে স্পর্শ করাও আমাদের উপর হারাম।
.
দ্বিতীয়ত: আমরা বিশ্বাস করি, আমেরিকা, ভারত ও তাদের মিত্ররা আমাদের শত্রু। আর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও তার শাসকরা আমেরিকার কর্মচারি মাত্র। তারাই পাকিস্তানে শরীয়ত প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায়। তারাই কুফরী শাসনব্যবস্থার প্রতিরক্ষা করছে, বরং তার নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং আমেরিকান ডলারের বিনিময়ে মুসলমানদেরকে হত্যা করছে। একারণে তারা আমাদের শত্রু।
.
তৃতীয়ত: আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই যে, আমরা পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তার সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অফিসার ও সৈনিকদেরকে হত্যা করাকে বিশুদ্ধ ইবাদত মনে করি। কিন্তু একই সময়ে আমরা এই আকিদাও রাখি যে, তাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে হত্যা করা অকাট্যভাবে শরীয়ত বিরোধী। চাই তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হোক বা না হোক। আমরা মনে করি, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সন্তানদের ব্যাপারে যতক্ষণ পর্যন্ত কার্যগতভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার প্রমাণ না পাওয়া যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে হত্যা করা হারাম।
.
অনুরূপভাবে সেনাবাহিনীর লোকদের পিতামাতাদেরকেও। জেনে রাখুন, মুরতাদ সেনাবাহিনীর সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যার ব্যাপারে আজ পর্যন্ত আরব বা আজমের কোন মুজাহিদ আলেম ফাতওয়া দেননি। অপরদিকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা নাজায়েয হওয়ার ব্যাপারে আমাদের সামনে শায়খ আতিয়্যাতুল্লাহ রা: ও শায়খ আবু মুহাম্মদ আল-মাকদিসী হাফিজাহুল্লাহর মত বড় বড় মুজাহিদ আলেমদের স্পষ্ট ফাতওয়া রয়েছে।
.
চতুর্থত: আমরা বলি, দ্বীনের সাথে শত্রুতাকারী ধর্মহীন দলগুলোর নেতারা, যারা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার পথে বাঁধা হয়ে আছে, তারা ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে গেছে এবং আমরা বিশ্বাস করি, তাদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো জায়েয আছে। কিন্তু এর পাশাপাশি আমরা এটাও স্পষ্টভাবে বলি যে, আমরা এই সকল দলের সাধারণ সমর্থকদেরকে কাফের বলি না এবং তাদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানোও জায়েয মনে করি না।
.
পঞ্চমত: আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র কুফর। কিন্তু এতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে কাফের বলি না। এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর এরূপ ব্যাখ্যা যে, তারা দ্বীনের খেদমত ও শরীয়ত বাস্তবায়নের জন্য পার্লামেন্টের সদস্য হচ্ছে, এগুলো ভ্রান্ত ব্যাখ্যা।
.
তথাপি এর উপর ভিত্তি করে আমরা এসকল দলগুলোকে কাফের বলি না এবং তাদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানোও জায়েয মনে করি না। কিন্তু যেহেতু তাদের এহেন কর্ম কুফরী শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করছে, এজন্য আমরা তাদেরকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে এই হারাম কাজ থেকে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করি।
.
এই কর্মনীতি। এটাই সুস্পষ্ট দলিলের উপর প্রতিষ্ঠিত জামাআতু কায়িদাতিল জিহাদের মতাদর্শ। এই মতাদর্শ হক্কানী উলামায়ে কেরাম ও জিহাদী নেতৃবৃন্দের কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সারাংশ এবং এর ভিত্তিতেই আমরা এর সাথে যুক্ত মুজাহিদদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি এবং এর দিকেই অন্যান্য সকল মুজাহিদদেরকে আমরা আহ্বান করি।
.
.
(উদ্ধৃত অংশটি শাইখ উস্তাদ উ@স]ম। ম]হ-মুদ হাফিজাহুল্লাহর "দূরদৃষ্টির সাথে জিহ|দ" থেকে চয়ন করা হয়েছে।)
Comment