জিহাদ হচ্ছে সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী:
ইসলাম ও মুসলিমদের বিজয় দেখলে অনেক মিথ্যুকরা ইসলাম গ্রহণ করার বেশ ধরে বিজয়ের ফল উপভোগ করতে চাইবে অথবা ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের জাল বুনতে চাইবে। এটা চিরসত্য এবং পরম বাস্তবতা। যুগেযুগে এমনটি হয়েছে এবং বর্তমানেও হচ্ছে। তবে আল্লাহ তাআলা সত্য ও মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য একটি নিপুণ কষ্টিপাথর দিয়েছেন। তা দ্বারা সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করা একেবারেই সহজ। আর সে কষ্টিপাথরটি হচ্ছে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। মিথ্যা যে উদ্ধেশ্যেই ইসলামের ছদ্মবেশ ধারণ করুক না কেন, সে কখনও এর জন্য জীবনের বাজি লাগাতে পারে না। কেননা মিথ্যা তো মিথ্যাই। আল্লারহর উপর যার ঈমান নেই, শেষদিবসের প্রতি যার বিশ্বাস নেই, সে কীভাবে জিহাদে নিজের জান কুরবান দিতে পারে! সর্বোপরি যে দুনিয়া অর্জনের জন্য ইসলামের ছদ্মবেশ ধরতে হয়েছে, জিহাদে গিয়ে যদি সে জীবনকেই বিলিয়ে দিতে হয়, তাহলে লাভটা কোথায়?
এজন্য স্বয়ং আল্লাহ তাআলা জিহাদের মাধ্যমেই মুমিন ও মুনাফিক, সত্যবাদি ও মিথ্যাবাদি যাচাই করেন।
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
অন্যত্র এরশাদ করেন,
অন্যত্র এরশাদ করেন,
আয়াতের ব্যাখ্যায় শাইখ শাব্বীর আহমদ উসমানী রহ. বলেন, “এখানে জিহাদ শরীয়তসিদ্ধ হওয়ার আরেকটি কারণ বলা হয়েছে। অর্থাৎ ঈমান ও এবাদতের মৌখিক দাবীদার তো অনেক। কিন্তু যতক্ষণ পরীক্ষার কষ্টিপাথরে রেখে মাপা না হবে, ভালো ও মন্দ স্পষ্ট হবে না। জিহাদের মাধ্যমে আল্লাহ দেখতে চান যে, কতজন মুসলিম আছে, যারা তাঁর রাস্তায় নিজেদের জান ও মাল কুরবান করতে প্রস্তুত এবং আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুসলিম ছাড়া কাউকে, সে যতই নিকটবর্তী আত্মীয় হোক না কেন, বিশ্বস্ত ও বিশেষ বন্ধু বানাবে না। এ হচ্ছে কষ্টিপাথর, যদ্দরুন মুমিনের ঈমান যাচাই করা হয়। যতক্ষণ বাস্তবিক জিহাদ করা না হবে, শুধু যবান দ্বারা শব্দের অপচয় করার মাধ্যমে সফলতা অর্জন হবে না। অতঃপর আমল যা কিছু করা হবে, তার খবরও আল্লাহর কাছে আছে; সত্য ও একনিষ্ঠতার সাথে করেছে নাকি যশ ও সুখ্যাতির জন্য করেছে। আমল যেমন হবে তেমনই ফল পাবে।” -তাফসীরে উসমানী: ১/৫৪৫ (মাকতাবায়ে জাভেদ, দেওবন্দ)
আরও এরশাদ করেন,
আয়াতের ব্যাখ্যায় শাইখ শাব্বীর আহমদ উসমানী রহ. বলেন, “যাতে দেখে নিতে পারি, তোমাদের মধ্য কারা জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল” অর্থাৎ জিহাদের বিধান দ্বারা (মুমিনদেরকে) পরীক্ষা উদ্ধেশ্য। এমন কঠিন পরীক্ষায় স্পষ্ট হবে, কারা আল্লাহর রাস্তার যোদ্ধা এবং কঠিনতম পরীক্ষার সময় ধৈর্যশীল আর কারা এমন নয়। “এবং যাতে তোমাদের অবস্থাদি যাচাই করতে পারি” অর্থাৎ (জিহাদের মাধ্যমে) প্রত্যেকের ঈমান ও আনুগত্যের পরিধি বুঝা যাবে এবং সকলের অভ্যন্তরীণ অবস্থা প্রায়োগিকভাবে স্পষ্ট হয়ে যাবে।” -তাফসীরে উসমানী: ২/৫৬৯ (মাকতাবায়ে জাভেদ, দেওবন্দ)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
ইসলাম ও মুসলিমদের বিজয় দেখলে অনেক মিথ্যুকরা ইসলাম গ্রহণ করার বেশ ধরে বিজয়ের ফল উপভোগ করতে চাইবে অথবা ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের জাল বুনতে চাইবে। এটা চিরসত্য এবং পরম বাস্তবতা। যুগেযুগে এমনটি হয়েছে এবং বর্তমানেও হচ্ছে। তবে আল্লাহ তাআলা সত্য ও মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য একটি নিপুণ কষ্টিপাথর দিয়েছেন। তা দ্বারা সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করা একেবারেই সহজ। আর সে কষ্টিপাথরটি হচ্ছে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। মিথ্যা যে উদ্ধেশ্যেই ইসলামের ছদ্মবেশ ধারণ করুক না কেন, সে কখনও এর জন্য জীবনের বাজি লাগাতে পারে না। কেননা মিথ্যা তো মিথ্যাই। আল্লারহর উপর যার ঈমান নেই, শেষদিবসের প্রতি যার বিশ্বাস নেই, সে কীভাবে জিহাদে নিজের জান কুরবান দিতে পারে! সর্বোপরি যে দুনিয়া অর্জনের জন্য ইসলামের ছদ্মবেশ ধরতে হয়েছে, জিহাদে গিয়ে যদি সে জীবনকেই বিলিয়ে দিতে হয়, তাহলে লাভটা কোথায়?
এজন্য স্বয়ং আল্লাহ তাআলা জিহাদের মাধ্যমেই মুমিন ও মুনাফিক, সত্যবাদি ও মিথ্যাবাদি যাচাই করেন।
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
عَفَا اللَّهُ عَنْكَ لِمَ أَذِنْتَ لَهُمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَتَعْلَمَ الْكَاذِبِينَ (43) لَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالْمُتَّقِينَ (44) إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ -سورة التوبة: 43 – 45
“(হে নবী) আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, আপনি তাদের কেন (জিহাদে শরীক না হওয়ার) অনুমতি দিলেন, যে পর্যন্ত-না আপনার কাছে সত্যবাদীরা স্পষ্ট হয়ে যেত এবং মিথ্যাবাদীদের ব্যাপারে জেনে নিতেন। যারা আল্লাহ ও কিয়ামতের দিনের প্রতি ঈমান রাখে, তারা নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ করা থেকে আপনার কাছে অব্যাহতি চাইবে না। আর আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালোভাবে জানেন। নিঃসন্দেহে তারাই আপনার কাছে (জিহাদ করা থেকে) অব্যাহতি চাইবে, যারা আল্লাহ ও কিয়ামতের দিনের উপর ঈমান রাখে না এবং তাদের অন্তর (ইসলামের ব্যাপারে) সন্দেহে পতিত। সুতরাং তারা নিজেদের সন্দেহের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।” –সূরা তাওবা: ৪৩-৪৫অন্যত্র এরশাদ করেন,
إِنْ يَمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِثْلُهُ وَتِلْكَ الْأَيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَيَتَّخِذَ مِنْكُمْ شُهَدَاءَ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ (140) وَلِيُمَحِّصَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَيَمْحَقَ الْكَافِرِينَ (141) أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ -سورة آل عمران: 140 - 142
“তোমাদের যদি আঘাত লেগে থাকে, তবে তাদেরও অনুরূপ আঘাত লেগেছিল। (এমন হওয়ার কারণ হচ্ছে, প্রথমত) এ দিনগুলো আমি মানুষদের মধ্যে পালাক্রমে বদলাতে থাকি, (দ্বিতীয়ত) যাতে আল্লাহ প্রকৃত ঈমানদারদের জানতে পারেন এবং (তৃতীয়ত) তোমাদের থেকে কিছু সংখ্যককে শহীদ হিসাবে গ্রহণ করেন। আর আল্লাহ জালিমদেরকে ভালবাসেন না। এবং (আরো কারণ হচ্ছে,) আল্লাহ যাতে ঈমানদারদেরকে পরিশুদ্ধ করতে পারেন এবং কাফেরদেরকে সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দেন। তোমরা কি মনে করো যে, তোমরা জান্নাতে পৌঁছে যাবে, অথচ আল্লাহ এখনো তাদেরকে যাচাই করেননি, তোমাদের মধ্যে যারা জিহাদ করেছে এবং যারা ধৈর্যশীল?” –সূরা আলে ইমরান: ১৪০-১৪২অন্যত্র এরশাদ করেন,
أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تُتْرَكُوا وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلَا رَسُولِهِ وَلَا الْمُؤْمِنِينَ وَلِيجَةً وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ -سورة التوبة: 16
“তোমরা কি মনে করো যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে, অথচ আল্লাহ এখনো যাচাই করেননি, তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং আল্লাহ, তাঁর রসূল ও মুমিনদের ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করেননি। আর আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কৃতকর্মের ব্যাপারে সবিশেষ অবগত।” –সূরা তাওবা: ১৬আয়াতের ব্যাখ্যায় শাইখ শাব্বীর আহমদ উসমানী রহ. বলেন, “এখানে জিহাদ শরীয়তসিদ্ধ হওয়ার আরেকটি কারণ বলা হয়েছে। অর্থাৎ ঈমান ও এবাদতের মৌখিক দাবীদার তো অনেক। কিন্তু যতক্ষণ পরীক্ষার কষ্টিপাথরে রেখে মাপা না হবে, ভালো ও মন্দ স্পষ্ট হবে না। জিহাদের মাধ্যমে আল্লাহ দেখতে চান যে, কতজন মুসলিম আছে, যারা তাঁর রাস্তায় নিজেদের জান ও মাল কুরবান করতে প্রস্তুত এবং আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুসলিম ছাড়া কাউকে, সে যতই নিকটবর্তী আত্মীয় হোক না কেন, বিশ্বস্ত ও বিশেষ বন্ধু বানাবে না। এ হচ্ছে কষ্টিপাথর, যদ্দরুন মুমিনের ঈমান যাচাই করা হয়। যতক্ষণ বাস্তবিক জিহাদ করা না হবে, শুধু যবান দ্বারা শব্দের অপচয় করার মাধ্যমে সফলতা অর্জন হবে না। অতঃপর আমল যা কিছু করা হবে, তার খবরও আল্লাহর কাছে আছে; সত্য ও একনিষ্ঠতার সাথে করেছে নাকি যশ ও সুখ্যাতির জন্য করেছে। আমল যেমন হবে তেমনই ফল পাবে।” -তাফসীরে উসমানী: ১/৫৪৫ (মাকতাবায়ে জাভেদ, দেওবন্দ)
আরও এরশাদ করেন,
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّى نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنْكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُمْ -سورة محمد: 31
“এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো, যাতে দেখে নিতে পারি, তোমাদের মধ্য কারা জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল এবং যাতে তোমাদের অবস্থাদি যাচাই করতে পারি।” –সূরা মুহাম্মদ: ৩১আয়াতের ব্যাখ্যায় শাইখ শাব্বীর আহমদ উসমানী রহ. বলেন, “যাতে দেখে নিতে পারি, তোমাদের মধ্য কারা জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল” অর্থাৎ জিহাদের বিধান দ্বারা (মুমিনদেরকে) পরীক্ষা উদ্ধেশ্য। এমন কঠিন পরীক্ষায় স্পষ্ট হবে, কারা আল্লাহর রাস্তার যোদ্ধা এবং কঠিনতম পরীক্ষার সময় ধৈর্যশীল আর কারা এমন নয়। “এবং যাতে তোমাদের অবস্থাদি যাচাই করতে পারি” অর্থাৎ (জিহাদের মাধ্যমে) প্রত্যেকের ঈমান ও আনুগত্যের পরিধি বুঝা যাবে এবং সকলের অভ্যন্তরীণ অবস্থা প্রায়োগিকভাবে স্পষ্ট হয়ে যাবে।” -তাফসীরে উসমানী: ২/৫৬৯ (মাকতাবায়ে জাভেদ, দেওবন্দ)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
وَمَا أَصَابَكُمْ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيَعْلَمَ الْمُؤْمِنِينَ (166) وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ نَافَقُوا وَقِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا قَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوِ ادْفَعُوا قَالُوا لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا لَاتَّبَعْنَاكُمْ هُمْ لِلْكُفْرِ يَوْمَئِذٍ أَقْرَبُ مِنْهُمْ لِلْإِيمَانِ يَقُولُونَ بِأَفْوَاهِهِمْ مَا لَيْسَ فِي قُلُوبِهِمْ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا يَكْتُمُونَ -سورة آل عمران: 166، 167
“(মুমিন ও কাফের) উভয় বাহিনী (যুদ্ধের জন্য) মিলিত হওয়ার দিন তোমাদের উপর যা পতিত হয়েছিল, তা আল্লাহর হুকুমেই হয়েছিল এবং যাতে তিনি প্রকৃত মুমিনদেরকে যাচাই করতে পারেন। এবং যাতে মুনাফিকদেরকেও দেখতে পারেন। তাদেরকে বলা হয়েছিল, এসো, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করো অথবা (অন্তত) প্রতিরোধ করো। তারা বলেছিল, যদি আমরা তা যুদ্ধ মনে করতাম, তাহলে অবশ্যই তোমাদের অনুসরণ করতাম। অথচ সেদিন তারা ঈমান অপেক্ষা কুফুরের বেশি নিকটবর্তী ছিল। তারা মুখে এমন কথা বলে, যা তাদের অন্তরে নেই। তারা যা কিছু লুকিয়ে রাখে আল্লাহ তা ভালো করেই জানেন।” –সূরা আলে ইমরান: ১৬৬, ১৬৭