Announcement

Collapse
No announcement yet.

৯/১১ঃ আইনের চোখে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ৯/১১ঃ আইনের চোখে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু

    Download full post in PDF https://archive.org/details/civilian_202502

    টুইন টাওয়ার ৯/১১

    তথাপি টুইন টাওয়ারে হামলার ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন মনে আসতে পারে। কারণ জনসাধারণের নিকট এই ইস্যু স্পষ্ট নয়। তালেবান আফগানিস্তান দখলের পরে বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে টুইন টাওয়ার হামলার দায় অস্বীকার করেছে। আসলেও কাজটি আল কায়েদার, তাই দাবিটি কৌশলগতভাবে মিথ্যা নয়। কিন্তু আল কায়েদা কি তার আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে? কিংবা টুইন টাওয়ারের বেসামরিক হত্যা কি combat ethics লঙ্ঘন করেছে?
    • আদর্শের প্রতীক

    অধমের ক্ষুদ্র জ্ঞানে এখানে শাইখ বিন লাদেন রাহ: আমেরিকার পুজিবাদী অর্থনীতির প্রতীকের উপর হামলা করেছেন; দুনিয়ালোভী কাফিরদের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু টাকার উপর হামলা করেছেন। পরদিন ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় An Icon of Capitalism: 'Now It's All Gone'শিরোনামে লিখা হয়,"For three decades the twin towers of New York's World Trade Center stood as the symbol of American economic might, as powerful an icon for capitalism as the Statue of Liberty is for freedom." https://www.washingtonpost.com/archi...-34a24dc0a8b1/
    মিডিয়ায় মানুষের জীবনের নিরাপত্তার যে আবেগপূর্ণ বক্তব্য আমেরিকা প্রচার করেছে সেটা বিশ্বাসযোগ্য না। জীবনের কোন মূল্য থাকলে ফিলিস্তিনের এই দশা কেন? পুজিবাদের মূর্তির অবমাননা ধর্মান্ধ আমেরিকা মেনে নিতে পারে নি, সে বিক্ষুব্ধ উন্মাদ মাতালে পরিণত হয়ে লাভ-ক্ষতি বিচারের বিবেকটুকুও হারিয়ে ফেলেছিল। আফগান বিজয়ের পর rand এর মুনাফা নির্ণায়ক গাণিতিক মডেলের প্রস্তাবনা প্রকাশ থেকেই তা সহজে অনুমেয়। (rand এর রিপোর্টটি 'তালেবান কি আমেরিকার তৈরি' শিরোনামে ফোরামে পোস্ট করেছিলাম ) আমেরিকার চোখে বিন লাদেন তখন একজন শাতিম পর্যায়ের ব্যক্তি।
    • অস্ত্রশালা

    টুইন টাওয়ার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মিডিয়া বেসামরিক হত্যার চিত্র সবার সামনে তুলে আনলেও এক দিক থেকে, টুইন টাওয়ার নিষ্পাপ - নিরীহ স্থাপনা নয়; সেখানে 1.2 মিলিয়ন বা 12 লক্ষ রাউন্ড গুলি সেখানে মজুদ ছিল। ( US Department of Labor (May 2002). "A Dangerous Worksite; The World Trade Center" https://www.osha.gov/Publications/da...s_worksite.pdf )
    • অর্থনৈতিক গুরুত্ব

    যাইহোক, এই হামলায় যে আমেরিকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে তা তো স্পষ্ট। বিশেষ করে যখন উইকিপিডিয়ায় এই শিরোনামে স্বতন্ত্র নিবন্ধ-ই রয়েছে; https://en.wikipedia.org/wiki/Econom...ber_11_attacks
    রয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সমীক্ষা;
    https://www.newyorkfed.org/research/epr/02v08n2/0211rapa/0211rapa.html
    স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, https://siepr.stanford.edu/publications/policy-brief/economic-impact-911
    এবং সমীক্ষা আজও চলমান।
    https://www.investopedia.com/financial-edge/0911/the-impact-of-september-11-on-business.aspx
    সুতরাং প্রশ্নটা বেসামরিকদের সাথে সম্পৃক্ত না করে,হওয়া উচিত- শত্রুর অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা কি ঠিক?


    সামরিক লক্ষ্যবস্তুর সংজ্ঞা

    এই প্রশ্নে আমেরিকার কোন অভিযোগ থাকা উচিত না। কারণ আমেরিকা স্বয়ং মনে করে যে, শত্রুর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এমন কিছুকে মিলিটারী লক্ষ্যবস্তু বানানো যাবে।(Department of Defense, Department of Defense Law of War Manual (Washington, DC: Office of General Counsel of the Department of Defense, 2015), 210.)
    সামরিক লক্ষ্যবস্তুর সংজ্ঞা-
    any object which by its nature, location, purpose or use makes an effective contribution to military action and whose total or partial destruction, capture or neutralization, in the circumstances ruling at the time, offers a definite military advantage. (Department of Defense, Department of Defense Law of War Manual, 206.)
    অর্থ- যে কোন বস্তু যা তার প্রকৃতি, অবস্থান, উদ্দেশ্য বা ব্যবহারের দ্বারা সামরিক কর্মকাণ্ডে কার্যকর অবদান রাখে এবং যার সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস, লুণ্ঠন বা নিরপেক্ষকরণ, সেই সময়ে শাসিত পরিস্থিতিতে, একটি নির্দিষ্ট সামরিক সুবিধা প্রদান করে।
    আরও বলা হয়েছে যে, যদি তা শত্রুর যুদ্ধ চালিয়ে নেয়ার সক্ষমতা তৈরি করে। “war-fighting or war-sustaining capability of an opposing force.” (Ibid 210)
    এমনকি বস্তুর জন্য যুদ্ধে সরাসরি অবদান রাখা জরুরী নয়।“need not be ‘direct’ or ‘proximate,’
    আবার এই আক্রমণের দ্বারা তাৎক্ষণিক বিজয় বা লাভ প্রাপ্ত হওয়া আবশ্যক নয়"provide immediate tactical or operational gains or that the object make an effective contribution to a specific military operation...restricted to immediate tactical gains, but may be assessed in the full context of the war strategy”
    এই আইন কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই সার্বভৌম ক্ষমতার বলে বানানো। সেখানে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার প্রতিনিধিত্ব করে বেসামরিক হত্যা করে বেড়াতে সমস্যা কোথায়?বিতর্ক এখানেই শেষ হয়ে যায়। কারণ অন্যের বেলায় যা করতে আগ্রহী, নিজের উপর তা আপতিত হলে মেনে নিতে অসুবিধা কি?
    এই আইন অনুযায়ী, ইসরাইলকে সহযোগিতার অপরাধে আমেরিকার বুকে হাজার বার 9/11 সংঘটিত করা উচিত।


    লক্ষ্যবস্তুর উদাহরণএগুলো আইন প্রণয়নের পরের উদাহরণ। আইন প্রণয়ন, এমনকি 9/11 এর আগেই এই আইনের প্রয়োগ ছিল। যেমন-
    • লক্ষ্যবস্তু হতে পারে সুদানের একটা সাধারণ ওষুধের ফ্যাক্টরি(New York Times, 10/27/99, London Observer, 8/23/98).
    • ওয়াশিংটন পোস্টেরKrauthammer (4/8/99) বলেন লক্ষ্যবস্তুর আশেপাশের বেসামরিক মরলে অসুবিধা নেই, finally they are hitting targets–power plants, fuel depots, bridges, airports, television transmitters–that may indeed kill the enemy and civilians nearby.”
    অবশেষে তারা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছে - বিদ্যুৎ কেন্দ্র, জ্বালানি ডিপো, সেতু, বিমানবন্দর, টেলিভিশন ট্রান্সমিটার - যা প্রকৃতপক্ষে শত্রু এবং কাছাকাছি বেসামরিক লোকদের হত্যা করতে পারে"
    • রাস্তায়, বাজারে যেকোনো স্থানে, এমনকি আমেরিকার গাড়ি চাপা খেয়ে আপনি মারা যেতে পারেন।
    (3/26/03) Forty-eight hours, you’ve got to get out of there, and flatten the place. Then the war would be over. We could have done that in two days…. You flatten Baghdad, you flatten all the troops, we know where they go, there’s nowhere to hide in the desert. We know where everybody’s moving."
    আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে, তোমাকে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে হবে, এবং জায়গাটি সমতল করতে হবে। তাহলে যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে। আমরা দুই দিনের মধ্যে এটা করতে পারতাম... তুমি বাগদাদকে সমতল করো, তুমি সমস্ত সৈন্যকে মিশিয়ে দাও, আমরা জানতে পারব তারা কোথায় যায়, মরুভূমিতে লুকানোর জায়গা নেই। আমরা জেনে যাব সবাই কোথায় যাচ্ছে।
    their infrastructure must be destroyed and the population made to endure yet another round of intense pain…. Maybe then the people there will finally overthrow Saddam.”
    তাদের অবকাঠামো ধ্বংস করতে হবে এবং জনগণকে আরও এক দফা তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে... হয়তো তখন সেখানকার জনগণ অবশেষে সাদ্দামকে উৎখাত করবে।

    (1/19/99) Blow up a different power station in Iraq every week, so no one knows when the lights will go off or who’s in charge.”
    ইরাকে প্রতি সপ্তাহে একটি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র উড়িয়ে দাও, যাতে কেউ জানে না কখন আলো নিভে যাবে বা কে এর দায়িত্বে থাকবে।”
    • সামরিক লক্ষ্যবস্তু আপনার ঘরবাড়িও হতে পারে। ফক্স নিউজের বিল ও'রাইলি বলেন,(4/26/99) "I would rather destroy their infrastructure, totally destroy it. Any target is OK. I’d warn the people, just as we did with Japan, that it’s coming, you’ve got to get out of there, OK, but I would level that country so that there would be nothing moving–no cars, no trains, nothing.”
    "আমি বরং তাদের অবকাঠামো ধ্বংস করে দেব, সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেব। যেকোনো কিছুকে লক্ষ্যবস্তু বানাবো। আমি জনগণকে সতর্ক করে দেব, ঠিক যেমন আমরা জাপানের সাথে করেছিলাম যে, এটি আসছে, তোমাদের সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে হবে, ঠিক আছে, কিন্তু আমি সেই দেশটিকে এমনভাবে সমতল করে দেব যাতে কিছুই নড়াচড়া না করে - গাড়ি না, ট্রেন না, কিছুই না।" People living in the war zones have been killed in their homes, in markets, and on roadways. They have been killed by bombs, bullets, fire, improvised explosive devices (IEDs), and drones. Civilians die at checkpoints, as they are run off the road by military vehicles, when they step on a mine or cluster bomb, as they collect wood or tend to their fields, and when they are kidnapped and executed for purposes of revenge or intimidation. They are killed by the United States, by its allies, and by insurgents and sectarians in the civil wars spawned by the invasions.
    যুদ্ধক্ষেত্রে বসবাসকারী মানুষদের- তাদের বাড়িতে, বাজারে এবং রাস্তায় হত্যা করা হয়েছে। বোমা, গুলি, আগুন, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) এবং ড্রোনের আঘাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বেসামরিক মানুষ চেকপয়েন্টে মারা যায়, সামরিক যানবাহন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়, মাইন বা ক্লাস্টার বোমার আঘাতে, কাঠ সংগ্রহ করার সময় বা তাদের ক্ষেতে কাজ করার সময়, এবং প্রতিশোধ বা ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তার মিত্রদের দ্বারা এবং আক্রমণের ফলে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহী এবং সাম্প্রদায়িকদের দ্বারা তাদের হত্যা করা হয়।
    https://watson.brown.edu/costsofwar/costs/human/civilians
    • নিউ ইয়র্ক টাইমসের ফ্রাইডম্যান(4/23/99) লিখেছেন, It should be lights out in Belgrade: Every power grid, water pipe, bridge, road and war-related factory has to be targeted.”
    বেলগ্রেডে আলো নিভিয়ে দেওয়া উচিত: প্রতিটি বিদ্যুৎ গ্রিড, জলের পাইপ, সেতু, রাস্তা এবং যুদ্ধ-সম্পর্কিত কারখানাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে হবে।”

    কাফির আইনজ্ঞদের চোখে
    • আলাবামা-র ম্যাক্সওয়েল বিমান ঘাটির মেজর ইজরায়েল কিং বেসামরিক হতাহত সর্বনিম্ন রেখে অর্থনৈতিক স্থাপনায় হামলার জন্য সুস্পষ্ট আইন প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন।https://apps.dtic.mil/sti/pdfs/AD1054604.pdf
    • ক্রেইগটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এরিক বোহম স্বীকার করেছেন যে, আমেরিকার আইনে এগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো বৈধ, কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনে নয়। মজার ব্যাপার হল, ভাষার এই মার্জিত ব্যবহার আল কায়েদার ক্ষেত্রে দেখা যায় না; তখন নৈতিকতার মানদণ্ড এনে মায়াকান্না জুড়ে দেয়া হয়। এরিক লিখেছেন, This Note then makes the argument that the United States applies a broader interpretation to what military objects are, when compared to their international counterparts. this Note acknowledges the likelihood that objects, such as oil depots, may be lawful targets of military attack when applying the Untied States approach, but may not be under international law.
    অর্থাৎ, এই নোটটি যুক্তি দেয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষের তুলনায় সামরিক বস্তু কী তা নিয়ে একটি বিশদ ব্যাখ্যা প্রদান করে। এই নোটটি এই সম্ভাবনা স্বীকার করে যে Untied States এর আইন পদ্ধতি অনুযায়ী, তেল ডিপোর মতো বস্তুগুলি সামরিক আক্রমণের বৈধ লক্ষ্যবস্তু হতে পারে, কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বৈধ না।
    • Ryan Goodman লিখেছেন যে, এসব স্থাপনায় হামলার যৌক্তিকতা নিয়ে বুদ্ধি খরচের চেয়ে হামলার তীব্রতার অনুপাত নিয়ে গবেষণা করা উচিত। মানে, বেসামরিক স্থাপনায় হামলার যৌক্তিকতা তো সুস্পষ্ট।
    "intellectual resources may be better spent not on the question whether such objects are legitimate military targets under the law of armed conflict, but on second-order questions such as how to apply proportionality analysis and how to identify limiting principles to guard against unintentional slippery slopes."
    "বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সশস্ত্র সংঘাতের আইন অনুযায়ী এই জাতীয় বস্তুগুলি বৈধ সামরিক লক্ষ্যবস্তু কিনা এই প্রশ্নে নয়, বরং অনুপাত বিশ্লেষণ কীভাবে প্রয়োগ করা যায় এবং অনিচ্ছাকৃত পিচ্ছিল ঢাল থেকে রক্ষা করার জন্য সীমাবদ্ধ নীতিগুলি কীভাবে চিহ্নিত করা যায় সেগুলির মতো দ্বিতীয় ক্রম প্রশ্নগুলিতে ব্যয় করা যেতে পারে।" Bohm, E. R. (2015). Targeting objects of economic interest in contemporary warfare. Creighton Int'l & Comp. LJ, 6, 74.
    • মারকো সাসোলি তো আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে একদম আমেরিকার মনের কথা বলেছেন, Were the laws of war-they will be designated in this chapter by the more modern term international humanitarian law (IHL)-violated or are they inadequate to protect civilians in contemporary armed conflicts?
    The answer first and foremost depends upon an accurate assessment of the facts. 1 Were the victims of cluster bomb attacks we saw on our TV screens actually civilians? If so, were they hurt or killed while working in Iraqi army headquarters or at home? If at home, was this home situated near important military facilities? Were the Iraqi authorities even deliberately placing military facilities on the roofs or in the courtyards of civilian houses? How important were those facilities for the Iraqi military authorities and how important was their destruction for the concrete US war plan? How many civilians were incidentally affected by a given attack
    যুদ্ধের আইন - আন্তর্জাতিক মানবিক আইন (IHL) - লঙ্ঘিত হয়েছিল নাকি সমসাময়িক সশস্ত্র সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আইনসমূহ অপর্যাপ্ত?
    প্রথমে এবং সর্বাগ্রে উত্তরটি নির্ভর করে তথ্যের সঠিক মূল্যায়নের উপর। 1 আমাদের টিভি স্ক্রিনে আমরা যাদের উপর ক্লাস্টার বোমা হামলা দেখেছি তারা কি আসলেই বেসামরিক নাগরিক ছিল? যদি তাই হয়, তাহলে তারা কি ইরাকি সেনা সদর দপ্তরে বা বাড়িতে কাজ করার সময় আহত বা নিহত হয়েছিল? যদি বাড়িতে থাকে, তাহলে এই বাড়িটি কি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার কাছাকাছি অবস্থিত ছিল? ইরাকি কর্তৃপক্ষ কি ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক বাড়ির ছাদে বা উঠোনে সামরিক স্থাপনা স্থাপন করেছিল? ইরাকি সামরিক কর্তৃপক্ষের জন্য সেই স্থাপনাগুলি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং মার্কিন যুদ্ধ পরিকল্পনার জন্য তাদের ধ্বংস কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল? ঘটনাক্রমে কতজন বেসামরিক নাগরিক একটি নির্দিষ্ট আক্রমণে নিহত হয়েছিল?" Sassoli, M. (2005). Targeting: The Scope and Utility of the Concept of Military Objectives for the Protection of Civilians in Contemporary Armed Conflicts. New Wars, New Laws, 181-210.
    মোটকথা, বেসামরিক মারা গেলেই হা-হুতাশ না উপরের প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। দু:খজনকভাবে 9/11 এর ব্যাপারে আমেরিকানদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায় না। উল্লেখ্য 9/11 এর আগেও আমেরিকা অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করেছে; বেসামরিক হত্যার নিদর্শন হিসাবে ফিলিস্তিন তো 77 বছর ধরে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
    এসকল আইনজ্ঞ খুব বেশি হলে আমাদের ব্যাপারে এতটুকু আপত্তি তুলতে পারে যে, কেন অফিস টাইমে হামলা করে অধিক সিভিলিয়ান মারা হল? সোজা উত্তর, টার্গেট নেভিগেশন রাতের বেলায় মুশকিল, তাই দিনের বেলায় তথা অফিস টাইমে হামলা হয়েছে।


    আন্তর্জাতিক আইনের বাস্তবতা

    আমরা এক আশ্চর্যজনক সময়ে বাস করছি যখন এক পক্ষ যুদ্ধ আইন মানতে বাধ্য থাকে, কিন্তু অপর পক্ষ লঙ্ঘন করে পার পেয়েও যায়। জর্জ অরওয়েল লিখেছিলেন, Highly civilized human beings are flying overhead, trying to kill me। কতবার একই আইন লঙ্ঘনের পরে অপর পক্ষ আইন লঙ্ঘনের অনুমতি পাবে? এক পক্ষ আন্তর্জাতিক চুক্তি কতবার লঙ্ঘনের পরেও সেই চুক্তি অপর পক্ষের জন্য বলবৎ থাকবে? আমরা হয়তো মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রজন্ম হিসাবে দাবি করি; কিন্তু আমরা সন্দেহাতীতভাবে কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন একমাত্র উন্মাদ প্রজন্ম। নতুবা এই সহজ সমীকরণ কেন বোধগম্য হয় না? অনুচ্ছেদ 36 এর প্রতি আনুগত্যের ঘোষণা যদি আমি না দেই, icj এর কর্তৃত্ব গ্রহণ না করি, তাহলে কিভাবে icj এর আইন দ্বারা আমাকে দোষী বা নির্দোষ সাব্যস্ত করা যেতে পারে? আমি বেসামরিক হত্যা করলেই কি, না করলেই কি? এগুলো নৈতিকতার প্রশ্ন নয়, মোরাল ম্যাটার নয়; এগুলো লিগ্যাল ম্যাটার, আইনি বিষয়। https://icj-cij.org/declarations
    যদি ধরেও নেয়া হয়, মুসলিমরা যেসকল চুক্তি ও কনভেনশন দ্বারা আন্তর্জাতিক আদালতকে বৈধতা দানের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, সেসবের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। তবুও তার সব চুক্তি উপসাগরীয় যুদ্ধে বাতিল হয়ে গেছে। চুক্তি উভয় পক্ষকে বাতিল করতে হয় না, যেকোনো এক পক্ষ লঙ্ঘন করলেই বাতিল হয়ে যায়। যদি প্রশ্ন করা হয়, চুক্তি বাতিল করার উসামা বিন লাদেন কে? অবশ্যই তিনি আমির, তিনি তা বাতিলের ক্ষমতা রাখেন। এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ভূখণ্ড থাকা আবশ্যক নয়। ভূখণ্ড দেশের উপাদান হতে পারে, নেতৃত্বের নয়। নতুবা 1971 সালে তাজ উদ্দিন সরকারের লিগ্যাল সিস্টেম বাংলাদেশের কোথায় বলবৎ ছিল? non state actor কে যদি আন্তর্জাতিক আইনে বিচার করা যায়, তাহলে সে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাতিলের ক্ষমতাও রাখেন।


    উপসংহার

    1। আমেরিকার নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিরা বেসামরিক হত্যার পক্ষে।
    2। বেসামরিক হত্যার লম্বা ইতিহাস রয়েছে আমেরিকার।
    3। মুসলমানরা বেসামরিক হত্যায় বাধ্য নন, এবং এরকম কোন ইচ্ছাও রাখে না।
    4। বেসামরিকদের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে তানজিম আমেরিকার চেয়ে যত্নশীল।
    5। টুইন টাওয়ার একটি অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তু।টার্গেট নেভিগেশন রাতের বেলায় মুশকিল, তাই দিনের বেলায় তথা অফিস টাইমে হামলা হয়েছে।
    6। এই জাতীয় লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা অলিখিতভাবে আমেরিকার আইনে বহু আগে থেকেই বৈধ।
    7। কিছু কিছু গবেষক অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলাকে সীমিত করার প্রস্তাব দিলেও সামরিক নীতিনির্ধারকরা এসব পরামর্শের দুই পয়সা দাম দেয় না। আন্তর্জাতিক আইনকেও দাম দেয় না।
    8। বিধিমালার চেয়ে সেনাবাহিনীর কর্ম অধিক গুরুত্ব পাবে। তাই সার্বিক বিবেচনায় তানজিমের অবস্থান অনেক যৌক্তিক।
    Last edited by Rakibul Hassan; 1 week ago.

  • #2
    রক্তের বদলে রক্ত আর ধ্বংসের বদলে ধ্বংস।
    বিইজনিল্লাহ

    Comment


    • #3
      9/11 এর এই হামলার ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছিল, যা সত্যি অকল্পনীয়

      আর এই আমেরিকা, তারা যেভাবে গর্ব করত তাদের নিরাপত্তা বিভাগ নিয়ে, তাদের এই চিন্তাধারা ধূলিসাৎ করে আল্লাহর সামান্য কিছু বান্দা দ্বারাই তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত ঘটিয়ে দিলেন।

      বস্তুত আল্লাহর কৌশলই সর্বশ্রেষ্ঠ।
      Last edited by Rakibul Hassan; 6 days ago.
      গুরাবা হয়ে লড়তে চাই, গুরাবা হয়েই শাহাদাহ চাই

      Comment

      Working...
      X