Announcement

Collapse
No announcement yet.

সম্মানের মর্যাদা হনন

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সম্মানের মর্যাদা হনন

    রাখাল রাহা ও অন্যান্য শাতিমদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ সমাবেশগুলোতে বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী আলেম কিছু উল্লেখযোগ্য যুক্তি পেশ করেছেন। যেহেতু কিছুদিন আগেই শাতিম নিয়ে আমি ব্যাপক বিশ্লেষণাত্মক নিবন্ধ রচনা করেছিলাম, তাই আলোচনার ধারাবাহিকতায় আরও কিছু সংযোজন করার ইচ্ছা হল।
    একজন তরুণ সালাফী বক্তা শাতিম হত্যাকে অনেকটা ডুয়েল লড়ার মত উপমা দিয়েছেন।
    • মানব ইতিহাস জুড়ে বিস্তর ভূখণ্ড দ্বারা বিচ্ছিন্ন সংস্কৃতির মাঝে সম্মান রক্ষার্থে এই প্রথার প্রচলন রয়েছে। আমেরিকার প্রতিষ্ঠাতা জনক এবং ভাইস প্রেসিডেন্টও এরকম কাজে অংশ নিয়েছেন। ইউরোপে উনবিংশ শতাব্দী অবধি কোড ডুয়েলো বিদ্যমান ছিল।
    • আবার জার্মানিতে অনেক ক্ষেত্রে যখন প্রমাণাদি দ্বারা বিচারের রায় দেয়া সম্ভব হয় না। তখন লড়াইয়ের দ্বারা মীমাংসা করা হত। যেহেতু ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের চিন্তার কাঠামো এতই স্বতন্ত্র যে এগুলোর মধ্যে সমতা করা যাবে না। তাই রাখাল রাহাকে ১৬ কোটি মুসলিম হত্যা করে নিজের জীবন বাচানোর সুযোগ দেয়া যেতে পারে।
    • জাপানের সামুরাইয়ের কেনজুতসু, কুমিতে সংস্কৃতিতে প্রতিপক্ষকে আমৃত্যু লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জের প্রথা আছে। সম্মানকে যে ব্যক্তির অধিকৃত সম্পদ মনে করা হয় তা সেপ্পুকু বা হারাকিরি প্রথা থেকেও স্পষ্ট। একজন সেকুলার কোন আদর্শে বিশ্বাস করে না। সে বস্তুবাদী। তার কাছে আত্মমর্যাদার কোন মূল্য নেই।
    • ভিয়েতনামে ক্যাথোলিক সরকার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের উপর নির্যাতন- নিপীড়ন চালালে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী থিচ কুয়াং দুক ব্যস্ত চৌরাস্তায় আত্মদাহ করে সরকারকে জানিয়ে দেন যে, বৌদ্ধরা নিজেদের ধর্মবিশ্বাসে কোন ছাড় দিবে না।
    • নর্স সংস্কৃতির ভাইকিংরা একইভাবে holmgang, আজটেক যোদ্ধারা "tlachtli" বা "xochiyaoyotl" লড়াইয়ে অংশ নিত নিজেদের সম্মান ও মর্যাদা প্রকাশের জন্য ।
    এই উদাহরণগুলো বলার উদ্দেশ্য এই যে, সম্মান বাচানোর জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত থাকা আবহমান কাল থেকে প্রচলিত । সম্মানকে লঙ্ঘনীয় মনে করার ইতিহাস ১০০ বছরের কিছু বেশি । এগুলির প্রায় কোনটাই ইসলাম সমর্থন না করলেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানের ব্যাপারে কিঞ্চিৎ অনুরূপ হুকুম ইসলামে বিদ্যমান আছে বলা যায়।

    এবার একজন সূফী পীরের উত্তরসূরীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শাতিম তার বেচে থাকার অধিকার হারায় মর্মে আরও কিছু সংক্ষিপ্ত আলোচনা যুক্ত করা যাক।
    • ইসলামি আইনের চোখে দেখলে শাতিমকে হত্যা বৈধ। মুসলমানদের আইন সংবিধানে যুক্ত করা হয় নি, এটা শাসকের দোষ। রাষ্ট্র গঠন করতে সার্বভৌমত্ব লাগে। কিন্তু রাষ্ট্র না থাকলে সার্বভৌমত্ব না থাকার বিষয়টা আমার কাছে স্পষ্ট না। কারণ সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক জনগণ, আর ইসলামী রাষ্ট্র না থাকলেও মুসলিম জনগণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নি। তাই সার্বভৌম ক্ষমতা লোপ পায় নি, শুধু ক্ষমতার প্রয়োগকারী অনুপস্থিত বা অনিচ্ছুক। এমতাবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে vigilante activity ছাড়া উপায় নেই।
    • তানজীম দ্বারা নিহত হলে সেটা armed conflict. সুতরাং এখানে বেচে থাকার অধিকার প্রদান করা যায় না।
    • শাতিমের কাজ একটি স্বেচ্ছামৃত্যু প্রক্রিয়া বা এউথানাসিয়া Euthanasia। কারণ শাতিমকে যে আমরা হত্যা করি এটা তো সুবিদিত। বেহুদা না জানার বা জোরপূর্বক হত্যার নাটক করার কিছু নেই। আর বহু দেশে স্বেচ্ছামৃত্যু আইনসম্মত। https://worldpopulationreview.com/co...thanasia-legal
    আর শাতিমের বেচে থাকার ইচ্ছা আছে কিনা জানা জরুরি না। কোমায় থাকা বা অজ্ঞান থাকা রোগীকেও মারা যায়। https://www.nhs.uk/conditions/euthan...isted-suicide/
    একইভাবে গর্ভের শিশুর বেচে থাকার ইচ্ছাও ধর্তব্য না। https://www.ohchr.org/en/statements/...ioritized-over
    শুধু তাই না, জ্ঞান থাকা লোকের ক্ষেত্রেও বেচে থাকার ইচ্ছা আছে কিনা জানা জরুরি না। https://www.bbc.co.uk/ethics/euthana...volinvol.shtml
    একইভাবে সন্তান প্রসবের পরেও , কোনও শারীরিক ত্রুটি না থাকলেও পিতামাতার আর্থিক, মানসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে হত্যা করা যৌক্তিক বলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। https://jme.bmj.com/content/39/5/261
    শাতিমের ব্যাপারটি এরকম ব্যতিক্রমের একটি যেখানে জীবনের অধিকার ধর্তব্য না।
    • শাতিমকে বাচাতে harm principle ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়। মনে রাখতে হবে, ক্ষতি এখানে অসংজ্ঞায়িত ও আপেক্ষিক । আবার, শুধু সম্পদ ও প্রাণ কেন এই নীতির অন্তর্ভুক্ত হবে? পাশাপাশি সম্মান কেন জান-মালের সাথে এই নীতির অন্তর্গত হবে না? এসব প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় না। (উল্লেখ্য, বস্তুবাদী চোখে সম্মান ব্যক্তির অধিকৃত কিছু না। একারণে নারীবাদীর স্বেচ্ছায় রূপ ও দেহ বিসর্জন দিতে দেখা যায়)
    আজকাল পরিবেশের ক্ষতি করলে জেল-জরিমানা হয়। অথচ পরিবেশ হাত-মুখ কিছুই নেই। এটাকে জোরপূর্বক আইনি সত্বা বানিয়ে রাষ্ট্র পরিবেশের পক্ষ নিয়ে আইনি লড়াই করে। এমতাবস্থায় কেন ব্যক্তির সম্মান ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা আইনি নিরাপত্তা পাবে না? কিংবা কটূক্তিকারী শাস্তি পাবে না তার কোন জবাব নেই।
    সংক্ষেপে, হাতের স্বাধীনতা নাকচ করা মর্মে উদারপন্থীদের যৌক্তিক ভিত্তি মজবুত নয়।
    কিছুটা বিদ্রুপাত্মক ও প্রহসনমূলক এই আলোচনার উদ্দেশ্য হল, আমাদের চিন্তার নিয়ন্ত্রণ কুফফার গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার খোড়াক যোগানো এবং শাতিম হত্যার হিকমত বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে উপলব্ধির চেষ্টা করা ।​

  • #2
    জাযাকাল্লাহ ভাই, আল্লাহ্‌ তাআলা আপনার ইলম ও কলমে বারাকাহ দান করুন, আমীন

    আগের পর্বগুলোও পড়েছি, অন্য ভাইদের সুবিধার্থে এখানে লিঙ্ক দিয়ে দিলাম-

    কটূক্তির মূল্যায়ন - ১
    https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/আল-জিহাদ/203035-কটূক্তির-মূল্যায়ন-১

    কটূক্তি মূল্যায়ন - ২
    https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/আল-জিহাদ/203096-কটূক্তি-মূল্যায়ন-২

    শাতিমের জন্য মব জাস্টিস ১
    https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/আল-জিহাদ/203228-শাতিমের-জন্য-মব-জাস্টিস-১


    Last edited by Rakibul Hassan; 3 days ago.

    Comment


    • #3
      ফা জাঝাকআল্লাহু খইরন।

      সংযোজন:
      মানুষের মুখের কথার কারণে কারও ক্ষতি হয় না, এমন ধারণা বাতুলতা ছাড়া কিছু নয়। আজকাল শোনা যায় online bullying এর শিকার হয়ে কেউ কেউ আত্মহত্যা করে। প্রমাণ স্বরূপ লিংক দিয়ে কলেবর বৃদ্ধি করব না। এতে বুঝা যায় যে, কথা দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি হয় না- উদারবাদীদের এই দাবিটি ভুয়া।
      ​​​​​​​যখন কথা দ্বারা ক্ষতির বিষটি প্রমাণ হয়ে গেল, তখন পরম বাক-স্বাধীনতার যৌক্তিকতা থাকে না। আর যখন সীমারেখা আরোপের আলোচনা আসে, তখন ইসলামী সীমারেখা অনুসরণের চেয়ে অন্যকিছুকে উত্তম প্রমাণ করা যায় না।

      Comment


      • #4
        শাতিম বিষয়ক আমার সব পোস্ট পিডিএফ আকারে পাওয়া যাবে এই লিংকে ইনশাআল্লাহ
        https://archive.org/details/shatim_202501
        Last edited by Munshi Abdur Rahman; 2 days ago.

        Comment

        Working...
        X