বদরের স্মৃতিবিজরিত রামাদান আমাদের ডাক দিয়ে যায়।
দেখতে দেখতে আমাদের থেকে আমাদের থেকে বিদায় নিচ্ছে পবিত্র মাহে রামাদান, উম্মাহর সোনালী ইতিহাসের এক গৌরবগাঁথা মাস। এই মাসে সংঘটিত হয়েছিল সৃষ্টি কুলের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সশরীর অংশ গ্রহণে কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযান গাযওয়ায়ে বদর। আজো যা আমাদের চেতনাকে শানিত করে, যা থেকে আমরা খোঁজে পাই জিহাদের পথে চলার অদম্য সাহস ও প্রেরণা। এদিনে সল্প সংখ্যক সহায় সম্বলহীন ও প্রায় নিরস্ত্র মুসলিম বাহিনীকে আল্লাহ তায়ালা বিশাল এক রণ সাজে সজ্জিত কাফের বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় দান করেছিলেন। গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন কাফেরদের দম্ব-অহংকার ও অন্যায় আস্ফালন। এদিন এই দুর্বল মুসলিমদের হাতে নিহত হয়েছিল ৭০ কাফের সেনা, বন্দি হয়েছিল আরো ৭০ জন।
এসম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَلَقَدۡ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ بِبَدۡرٖ وَأَنتُمۡ أَذِلَّةٞۖ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
নিশ্চয় আল্লাহ বদরের যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করেছেন যখন তোমরা ছিলে দুর্বল। কাজেই আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পারো। ( সুরা আলে ইমরান, ১২৩)
আমরা কি জানি, এই মহান বিজয়ের পিছনে কি কারণ ছিলো? কিভাবে দুর্বল ও প্রায় অস্ত্রহীন কিছু মুমিন প্রতাপশালী কাফেরদের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিলো? নিশ্চয় এর কারণ ছিলো মুসলিমদের তাকওয়া, সবর ও নিজেদের সাধ্যানুযায়ী উপকরণ গ্রহণ করার পর আল্লাহর উপর ভরসা করে কাফেরদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া। মুসলিমরা সেদিন সংখ্যায় ও অস্ত্রবলে দূর্বল হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা ছিলো উজ্জ্বল ঈমানী শক্তি ও অদম্য জিহাদী চেতনায় বলীয়ান। জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণ ছাড়াই যখন তাঁদের সামনে জিহাদের তাকাযা এসে যায় তখন তাঁরা ছিলেন জিহাদের প্রতিজ্ঞায় অটল।
মুহাজিরদের মধ্য থেকে সেদিন মিকদাদ ইবনে আমর রাঃ এর ভাষ্য ছিলোঃ " হে আল্লাহর রাসূল, আপনি আল্লাহর নির্দেশে এগিয়ে যান। আমরা আপনার সাথে আছি। আল্লাহর শপথ, আমরা এমন কথা বলব না, যা বনী ইসরাঈল মূসা আঃ কে বলেছিল যে, "আপনি ও আপনার রব গিয়ে যুদ্ধ করুন। আমরা এখানে বসে রইলাম।" বরং আমরা বলবোঃ "আপনি ও আপনার রব গিয়ে যুদ্ধ করুন, আমরাও আপনাদের সাথে আছি। ওই সত্ত্বার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহ প্রেরণ করেছেন, যদি আপনি আমাদেরকে নিয়ে বারকে গামাদ স্থান পর্যন্তও যান তবু আমরা সেখানে পৌঁছা পর্যন্ত আপনার সাথে যুদ্ধ করে যাব।"
অপরদিকে আনসারদের মধ্য থেকে সাদ ইবনে মুয়াজ রাঃ বলেনঃ " হে আল্লাহর রাসূল, আপনি যেদিকে ইচ্ছা এগিয়ে যান। ওই সত্ত্বার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহ প্রেরণ করেছেন, যদি আপনি আমাদের নিয়ে সমুদ্রেও ঝাঁপ দেন, তবুও আমরা সমুদ্রে আপনার সাথে ঝাঁপিয়ে পড়ব।"
এমনিভাবে খাঁটি ঈমান, অটল ধৈর্য ও পর্বতসম দৃঢ়তা নিয়ে মুসলিম বাহিনী সেদিন লাভ করেছিল পৃথিবীর ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল বিজয়। তাঁরা ছিলেন একই সাথে রাতের নীরব প্রহরে একান্ত নিভৃতে আল্লাহর কাছে আকুতি মিনতি কারী ও দিনে সাহসী ঘোড়সওয়ার। এর বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তাঁদেরকে দান করেছিলেন অনন্য এক বিজয়।
বদরের এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস থেকে আমাদের অনেক কিছুই শিখার আছে। তাতে রয়েছে আমাদের চলার পথের রুহানী খোরাক। চলমান সময়ে উম্মাহর দুঃখজনক দুরবস্থা ও লাঞ্ছনা আমাদের কারো নিকট অজানা নয়। উম্মাহর এই ক্রান্তিলগ্নে আজ আমাদের বড়ই প্রয়োজন আরেক নতুন বদরের। বড়ই প্রয়োজন বদরের চেতনায় উজ্জীবিত একদল মর্দে মুমিনের। যারা হবে দৃঢ় ঈমান, খাঁটি তাওয়াক্কুল ও পর্বতসম ধৈর্যের ক্ষেত্রে অনন্য এক দৃষ্টান্ত। যারা নির্ভেজাল ঈমানী শক্তি ও সাধ্যানুযায়ী উপকরণকে সম্বল করে তাগুতের মসনদকে ভেঙে দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। নিজেদের জান, মাল, সময় ও মেধাকে যারা দ্বীনের রাহে কুরবান করে দিবে। ফিরিয়ে আনবে উম্মাহর গৌরবোজ্জ্বল সোনালী অতীত।
হে আল্লাহ, আমাদেরকে এই বরকতময় কাফেলায় শামীল করুন। দ্বীনের জন্য নিজের সামর্থ্যের সবটুকু বিলিয়ে দেওয়ার তাউফীক দান করুন। রক্তের শেষ ফোঁটা বাকি থাকা পর্যন্ত এই পথে অটল রাখুন। আমীন, ইয়া রব্বাল আলামীন।
দেখতে দেখতে আমাদের থেকে আমাদের থেকে বিদায় নিচ্ছে পবিত্র মাহে রামাদান, উম্মাহর সোনালী ইতিহাসের এক গৌরবগাঁথা মাস। এই মাসে সংঘটিত হয়েছিল সৃষ্টি কুলের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সশরীর অংশ গ্রহণে কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযান গাযওয়ায়ে বদর। আজো যা আমাদের চেতনাকে শানিত করে, যা থেকে আমরা খোঁজে পাই জিহাদের পথে চলার অদম্য সাহস ও প্রেরণা। এদিনে সল্প সংখ্যক সহায় সম্বলহীন ও প্রায় নিরস্ত্র মুসলিম বাহিনীকে আল্লাহ তায়ালা বিশাল এক রণ সাজে সজ্জিত কাফের বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় দান করেছিলেন। গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন কাফেরদের দম্ব-অহংকার ও অন্যায় আস্ফালন। এদিন এই দুর্বল মুসলিমদের হাতে নিহত হয়েছিল ৭০ কাফের সেনা, বন্দি হয়েছিল আরো ৭০ জন।
এসম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَلَقَدۡ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ بِبَدۡرٖ وَأَنتُمۡ أَذِلَّةٞۖ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
নিশ্চয় আল্লাহ বদরের যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করেছেন যখন তোমরা ছিলে দুর্বল। কাজেই আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পারো। ( সুরা আলে ইমরান, ১২৩)
আমরা কি জানি, এই মহান বিজয়ের পিছনে কি কারণ ছিলো? কিভাবে দুর্বল ও প্রায় অস্ত্রহীন কিছু মুমিন প্রতাপশালী কাফেরদের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিলো? নিশ্চয় এর কারণ ছিলো মুসলিমদের তাকওয়া, সবর ও নিজেদের সাধ্যানুযায়ী উপকরণ গ্রহণ করার পর আল্লাহর উপর ভরসা করে কাফেরদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া। মুসলিমরা সেদিন সংখ্যায় ও অস্ত্রবলে দূর্বল হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা ছিলো উজ্জ্বল ঈমানী শক্তি ও অদম্য জিহাদী চেতনায় বলীয়ান। জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণ ছাড়াই যখন তাঁদের সামনে জিহাদের তাকাযা এসে যায় তখন তাঁরা ছিলেন জিহাদের প্রতিজ্ঞায় অটল।
মুহাজিরদের মধ্য থেকে সেদিন মিকদাদ ইবনে আমর রাঃ এর ভাষ্য ছিলোঃ " হে আল্লাহর রাসূল, আপনি আল্লাহর নির্দেশে এগিয়ে যান। আমরা আপনার সাথে আছি। আল্লাহর শপথ, আমরা এমন কথা বলব না, যা বনী ইসরাঈল মূসা আঃ কে বলেছিল যে, "আপনি ও আপনার রব গিয়ে যুদ্ধ করুন। আমরা এখানে বসে রইলাম।" বরং আমরা বলবোঃ "আপনি ও আপনার রব গিয়ে যুদ্ধ করুন, আমরাও আপনাদের সাথে আছি। ওই সত্ত্বার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহ প্রেরণ করেছেন, যদি আপনি আমাদেরকে নিয়ে বারকে গামাদ স্থান পর্যন্তও যান তবু আমরা সেখানে পৌঁছা পর্যন্ত আপনার সাথে যুদ্ধ করে যাব।"
অপরদিকে আনসারদের মধ্য থেকে সাদ ইবনে মুয়াজ রাঃ বলেনঃ " হে আল্লাহর রাসূল, আপনি যেদিকে ইচ্ছা এগিয়ে যান। ওই সত্ত্বার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহ প্রেরণ করেছেন, যদি আপনি আমাদের নিয়ে সমুদ্রেও ঝাঁপ দেন, তবুও আমরা সমুদ্রে আপনার সাথে ঝাঁপিয়ে পড়ব।"
এমনিভাবে খাঁটি ঈমান, অটল ধৈর্য ও পর্বতসম দৃঢ়তা নিয়ে মুসলিম বাহিনী সেদিন লাভ করেছিল পৃথিবীর ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল বিজয়। তাঁরা ছিলেন একই সাথে রাতের নীরব প্রহরে একান্ত নিভৃতে আল্লাহর কাছে আকুতি মিনতি কারী ও দিনে সাহসী ঘোড়সওয়ার। এর বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তাঁদেরকে দান করেছিলেন অনন্য এক বিজয়।
বদরের এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস থেকে আমাদের অনেক কিছুই শিখার আছে। তাতে রয়েছে আমাদের চলার পথের রুহানী খোরাক। চলমান সময়ে উম্মাহর দুঃখজনক দুরবস্থা ও লাঞ্ছনা আমাদের কারো নিকট অজানা নয়। উম্মাহর এই ক্রান্তিলগ্নে আজ আমাদের বড়ই প্রয়োজন আরেক নতুন বদরের। বড়ই প্রয়োজন বদরের চেতনায় উজ্জীবিত একদল মর্দে মুমিনের। যারা হবে দৃঢ় ঈমান, খাঁটি তাওয়াক্কুল ও পর্বতসম ধৈর্যের ক্ষেত্রে অনন্য এক দৃষ্টান্ত। যারা নির্ভেজাল ঈমানী শক্তি ও সাধ্যানুযায়ী উপকরণকে সম্বল করে তাগুতের মসনদকে ভেঙে দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। নিজেদের জান, মাল, সময় ও মেধাকে যারা দ্বীনের রাহে কুরবান করে দিবে। ফিরিয়ে আনবে উম্মাহর গৌরবোজ্জ্বল সোনালী অতীত।
হে আল্লাহ, আমাদেরকে এই বরকতময় কাফেলায় শামীল করুন। দ্বীনের জন্য নিজের সামর্থ্যের সবটুকু বিলিয়ে দেওয়ার তাউফীক দান করুন। রক্তের শেষ ফোঁটা বাকি থাকা পর্যন্ত এই পথে অটল রাখুন। আমীন, ইয়া রব্বাল আলামীন।
Comment