Announcement

Collapse
No announcement yet.

মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সহায়তা করা যাবে কি?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সহায়তা করা যাবে কি?

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম​

    "মুজাহিদরা"কেন পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে?

    মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
    یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡیَہُوۡدَ وَالنَّصٰرٰۤی اَوۡلِیَآءَ ۘؔ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ؕ وَمَنۡ یَّتَوَلَّہُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاِنَّہٗ مِنۡہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی
    الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ
    হে মুমিনগণ! ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা নিজেরাই একে অন্যের বন্ধু! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদেরকে বন্ধু বানাবে, সে তাদেরই মধ্যে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদেরকে হিদায়াত দান করেন না। (সূরা মায়িদার:৫১)

    মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
    مِنْ قَبْلُ هُدًى لِلنَّاسِ وَأَنْزَلَ الْفُرْقَانَ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَاللَّهُ عَزِيزٌ ذُو انْتِقَام٤
    মানব জাতিকে (সঠিক) পথ প্রদর্শনের জন্যে ইতিপূর্বে (আল্লাহ তা’আলা আরো কিতাব নাযিল করেছেন) , তিনি (হক ও বাতিলের মধ্যে) ফয়সালা করার মানদন্ড (হিসেবে কোরআন) অবতীর্ণ করেছেন; (তা সত্ত্বেও) যারা আল্লাহ তা’আলার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করবে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি; আল্লাহ তা’আলা অসীম ক্ষমতার মালিক, তিনি চরম প্রতিশোধ গ্রহণকারীও বটে! (সূরা আল ইমরান:৪)

    মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
    لَا یَتَّخِذِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الۡکٰفِرِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ۚ وَمَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ فَلَیۡسَ مِنَ اللّٰہِ فِیۡ شَیۡءٍ اِلَّاۤ اَنۡ تَتَّقُوۡا مِنۡہُمۡ تُقٰىۃً ؕ وَیُحَذِّرُکُمُ اللّٰہُ نَفۡسَہٗ ؕ وَاِلَی اللّٰہِ الۡمَصِیۡرُ
    মুমিনগণ যেন মু’মিনগণ ব্যতীত কাফিরদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যে কেউ এইরূপ করবে তার সঙ্গে আল্লাহ্ র কোন সম্পর্ক থাকবে না; তবে ব্যতিক্রম, যদি তোমরা তাদের নিকট হতে আত্মরক্ষার জন্যে সতর্কতা অবলম্বন কর। আর আল্লাহ্ তাঁর নিজের সম্বন্ধে তোমাদেরকে সাবধান করছেন এবং আল্লাহ্ র দিকেই ফিরে যেতে হবে।(সূরা আল ইমরান:২৮)

    সূরা আল ইমরান:২৮ এর শানে নুজুলঃ
    হযরত ইবনে আব্বাস (রাজিঃ) থেকে বর্ণিত, কা'আব ইবনে আশরাফের সাথে চুক্তিবদ্ধ হাজ্জাজ ইবনে আমর ও কাইছ ইবনে যায়েদের কতিপয় আন্‌ছারীর সাথে গোপন আঁতাত করে, যেন তাদেরকে ধর্মান্তর করা যায়। তখন রিফা'আ ইবনে মুনযের এবং আবদুল্লাহ ইবনে জোবাইর ও ছা'আদ ইবনে খায়ছম (রাজিঃ) ঐ আনসারীদেরকে ইহুদীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন ও গোপন আঁতাত পরিহার করার জন্য উপদেশ দিলে আনসারী দল তা প্রত্যাখ্যান করে, এ প্রেক্ষিতে এ আয়াতটি অবতীর্ন হয়।

    (১) সূরা মায়িদার ৫১ নং আয়াতের তাফসীরে ইমাম কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ- আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ “যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে” অর্থাৎ মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদেরকে (কাফিরদেরকে) সাহায্য সহযোগিতা করবে, নিশ্চয়ই সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন যে, তার হুকুম উক্ত কাফিরদের হুকুমের মতই হবে। আর তা একজন মুসলিমের জন্য মুরতাদ থেকে মিরাস প্রতিষ্ঠিত হওয়া থেকে বিরত রাখবে। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই কাফিরদের সাথে মুওয়ালাত বা সুসম্পর্ক করেছিলো। অতঃপর কাফিরদের সাথে মুওয়ালাত বা সুসম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে এই বিধান কিয়ামত পর্যন্ত বহাল থাকবে। [তাফসীরে কুরতুবী]

    (২) শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব রহিমাহুল্লাহ ঈমান ভঙ্গকারী ১০টি বিষয়ের আলোচনায় বলেনঃ- ঈমান ভঙ্গকারী ৮ম বিষয়ঃ- মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। দলীল হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ “যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা যালিমদেরকে হিদায়াত দান করেন না”। [নাওয়াক্বিদ্বুল ইসলাম, শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব রহিমাহুল্লাহ]

    (৩) ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সহায়তার ব্যাপারে শাইখ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহিমাহুল্লাহ এর ফাতাওয়াঃ- “মুসলিম হত্যার তৃতীয় রূপ হচ্ছে এই — কোন মুসলিম কাফেরদের পক্ষ নিয়ে তাদের সাহায্য ও বিজয়ের জন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করে অথবা যুদ্ধে তাদের সহায়তা করে কিংবা যখন মুসলিম ও কাফেরদের যুদ্ধ চলতে থাকে তখন কাফেরদের সমর্থন জানায়, এমতাবস্থায় উপরোক্ত অপরাধটি কুফরি ও সীমালঙ্ঘনের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয় এবং ঈমান ধ্বংস ও ইসলাম শূন্যতার এমন জঘন্য ও নিকৃষ্ট অবস্থায় পৌঁছায়, যার চেয়ে মারাত্মক কুফর ও কুফরি কর্মকান্ড কল্পনা করা যায় না। দুনিয়ায় যে কোন মুসলিমের পক্ষে সম্পাদন করা সম্ভব অথবা কোন মুসলিমের কল্পনায় আসতে পারে এমন যাবতীয় পাপ, সকল সীমালঙ্ঘন, সকল অপবিত্রতা এবং সর্বপ্রকার অবাধ্যতা এই অপরাধের সামনে তুচ্ছ। যে মুসলিম এতে লিপ্ত হবে, সে নিশ্চিত কাফের এবং নিকৃষ্টতম কাফের। সে শুধু মুসলিম হত্যায় জড়িত হয়েছে এতটুকুই নয় বরং ইসলামের বিরুদ্ধে হক্ক এর শত্রুদের আনুগত্য ও সহায়তা করেছে এবং এটি সকলের ঐক্যমতে সর্বসম্মতিক্রমে কুফরে সরীহ বা সুস্পষ্ট কুফর। শরীয়ত যেখানে অমুসলমানদের সাথে কোন প্রকার মহব্বতের সম্পর্কের বৈধতা দেয় না, সেক্ষেত্রে যুদ্ধে সুস্পষ্ট সহযোগিতার পরেও কি করে ঈমান ও ইসলাম বাকি থাকতে পারে”। [অধ্যায়ঃ কতলে মুসলিম, মা’আরেফে মাদানী, মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী রহিমাহুল্লাহ]

    (৪) শাইখ আব্দুল আযীয বিন বায রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ- “ইসলামের উলামাগণ এই ব্যাপারে ইজমা পোষণ করেছেন যে, যে কেউ মুমিনদের উপর কাফিরদের সমর্থন করবে এবং যে কোনো উপায়ে তাঁদেরকে সহযোগিতা করবে, সে তাঁদের মতই একজন কাফের হয়ে যাবে”। [মাজমূ’ ফাতাওয়া, ১/২৭৪]

    (৫) বিংশ শতাব্দীর জগৎ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফকীহ আল্লামা আহমাদ শাকের রহিমাহুল্লাহ তাঁর “কালিমাতুল হাক্ব” কিতাবে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সহযোগিতাকারীর ব্যাপারে সুস্পষ্ট ভাষায় যে ফাতাওয়া দেন, তার একাংশ হচ্ছেঃ- “ব্রিটিশদের সহযোগিতার ব্যাপারে কথা হলো, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অথবা বড় যে কোনো ধরনের সহযোগিতা হলো চূড়ান্ত ইরতিদাদ (দ্বীন ত্যাগ) ও নিশ্চিত কুফরি। এতে কোনো অজুহাত বা ভুল ব্যাখ্যা কোনোটাই গ্রহণযোগ্য নয়। মূঢ় জাতীয়তাবাদ, ভঙ্গুর রাজনীতি এবং ভণ্ডামিপূর্ণ তোষামোদ কিছুই এ দ্বীনি বিধান থেকে কাউকে রক্ষা করবে না। বিশেষ ব্যক্তি, সরকার বা নেতাদের মাঝে যদি তা সংঘটিত হয় তবে ইরতিদাদ (দ্বীন ত্যাগ) ও কুফরির ক্ষেত্রে এদের সবাই একই।…….সুতরাং ওরা (ফ্রান্স) ও ব্রিটিশরা হুকুমের ব্যাপারে একই। প্রত্যেক স্থানে তাদের রক্ত ও সম্পদ হালাল। বিশ্বের যে কোনো স্থানের মুসলিমদের জন্য ওদেরকে কোনো প্রকারের সহযোগিতা করা নাজায়েয। যদি কেউ সহযোগিতা করে তবে তার হুকুম তাদের মতোই যারা ব্রিটিশদের সহযোগিতা করে, তা হলো ইরতিদাদ (দ্বীন ত্যাগ) যা সম্পূর্ণরূপে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আর এটা যে কোনো প্রকার বা প্রকৃতির সহযোগিতা হোক না কেনো। …….সুতরাং বিশ্বের যে কোনো স্থানে অবস্থিত প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্যই জেনে রাখা উচিৎ যে, কেউ যদি মুসলিমদের শত্রু, তাদের দাসে পরিণতকারী ব্রিটিশ, ফ্রান্স ও আরো যারা আছে এবং তাদের দোসরদের সহযোগিতা করে, একইভাবে যে কোনো রকমের সহযোগিতা অথবা তাদের সাথে এমন শান্তি স্থাপন করা এবং তাদের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা না করা, বিবৃতি বা কর্মের মাধ্যমে বিশ্বাসী ভাইদের বিরুদ্ধাচরণ করা, যদি উল্লেখকৃত যে কোনো একটি কাজ কেউ করে আর পরে সলাত আদায় করে, তবে তার সলাতের কোনো মূল্য নেই”। [কালিমাতুল হাক্ব, পৃষ্ঠা ১২৬-১৩৭]

    সুতরাং জগৎ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফকীহদেয় মতাদর্শে বিশ্বের যেকোনো মুসলিম দেশের সরকার ও সেনাবাহিনী, তাদের সহযোগী যাদের উপরই উপরোক্ত ফাতাওয়া বর্তাবে তারাই মুজাহিদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হবে -ইনশাআল্লাহ।

    সংগৃহীত:



Working...
X