Announcement

Collapse
No announcement yet.

হে মুজাহিদ ভাই, "নিজেকে" কাফেরদের হাতে সোপর্দ নয়; বন্দীত্ব ও অসম্মানজনক জীবন থেকে সম্মানজনক মৃত্যুই কাম্য।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • হে মুজাহিদ ভাই, "নিজেকে" কাফেরদের হাতে সোপর্দ নয়; বন্দীত্ব ও অসম্মানজনক জীবন থেকে সম্মানজনক মৃত্যুই কাম্য।

    বিসমিল্লাহিররাহমানিররাহিম
    হে মুজাহিদ ভাই, "নিজেকে" কাফেরদের হাতে সোপার্দ নয়; বন্দীত্ব ও অসম্মানজনক জীবন থেকে সম্মানজনক মৃত্যুইকাম্য।

    বন্দীত্ব এমন এক জীবনের সূচনা করে যা মুসলিম উম্মাহ, পরিবার ও নিজের জন্য সবচেয়ে অসম্মানজনক। এর মাধ্যমে উম্মাহ, পরিবারের হৃদয়ে গভীর ক্ষত ও অপমানের এক ঘৃণ্য বেসাতি পুরা হয় । বন্দীত্ব এমন একটি বিষয় যা, সমগ্র মুসলিম উম্মাহ হয় লাঞ্ছিত এবং কুফফার গোষ্ঠী হয় আনন্দিত। বন্দীত্ব এমন এক অন্ধকার জীবনে প্রবেশদ্বার যা কখনো কখনো ঈমানের আলো থেকে কুফরী অন্ধকারে নিক্ষেপ করে। তাই আমাদের উচিত নয় নিজেকে, কাফেরদের হাতে সোপার্দ করা। বন্দীত্ব ও অসম্মানজনক জীবন থেকে সম্মানজনক মৃত্যুইকাম্য।
    হাদীস শরীফে এসেছে:
    الإسلام يَعلُوْ ولا يُعلَى عليه
    অর্থাৎ: ইসলাম সর্বদা উঁচুতে থাকবে, নিচু হবে না। উপরোক্ত কায়দা থেকে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম একটি পরিস্থিতিকে ব্যতিক্রম বলেছেন।
    এ ব্যাপারে ইমাম বুখারী রহ. একটি অধ্যায় কায়েম করেছেন। অধ্যায়টির নাম:
    باب هل يستأسر الرجلُ؟ ومن لم يستأسر
    অর্থাৎ: “কেউ বন্দীত্ব বরণ করবে, কি করবে না”? এ অধ্যায়ে তিনি হাদীদুল আশারাহ বা দশ সাহাবীর হাদীসটি উল্লেখ করেছেন; যে দশজনকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোয়েন্দা বানিয়ে পাঠিয়ে ছিলেন। পথিমধ্যে তাদেরকে বনী লিহয়ানের কিছু লোক ঘিরে ফেলে ভয়-ভীতি দেখাতে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সাহাবীদের সেই দলটি একটি টিলার ওপর আশ্রয় নেন। এক পর্যায়ে বনী লিহয়ানের লোকগুলো দশ জনের ওই বাহিনীকে প্রস্তাব দেয় যদি তাঁরা নিচে নেমে এসে আত্মসমর্পণ করে তাহলে তারা (মুশরিকরা) তাঁদেরকে নিরাপত্তা দিবে। তখন সাহাবীদের কেউ কেউ মুশরিকদের প্রতিশ্রুতির ওপর নেমে আসেন। কিন্তু হযরত আসেম বিন সাবিত রাযি. –যিনি ওই বাহিনীর আমীর ছিলেন- তিনি বললেন, আমি কাফেরদের নিরাপত্তা নিয়ে আত্মসমর্পণ করবো না। ফলে তিনি প্রাণপণ লড়াই করে শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়ে যান।
    হাফেয ইবনে হাজার রহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, “বন্দী ব্যক্তির জন্য কাফেরের নিরাপত্তা গ্রহণ না করার অবকাশ রয়েছে; এমনকি নিহত হওয়ার আশংকা থাকলেও আত্মসমর্পণ না করার সুযোগে আছে। কেননা তাদের কাছে আত্মসমর্পণের অর্থ হলো, তার ওপর কাফেরদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও তাদের আইন-কানুন প্রয়োগ হওয়া। তবে এটা ওই ক্ষেত্রে যখন সে ‘আযীমত’ তথা শরিয়তের কঠোর নীতি অবলম্বনের ইচ্ছা করবে। অন্যথায় যদি সে ‘রুখছত’ তথা শরীয়তের সহজ নীতি অবলম্বনের ইচ্ছা করে তাহলে তার জন্য কাফেরের নিরাপত্তা গ্রহণ করার অবকাশ আছে। তবে দু‘টোর যে কোনোটি বেছে নেয়ার এখতিয়ার যে রয়েছে, এ ব্যাপারে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম একমত।
    তবে ইমাম আহমদ রহ. থেকে একটি বর্ণনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি আত্মসমর্পণকে হারাম বলেছেন। তিনি বলেনঃ
    لا يُعجبني أن يستأسر، يقاتل أحب إليَّ، الأسر شديد ولا بد من الموت .
    “বন্দী হওয়া আমার কাছে সংগত মনে হয় না; বরং শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়াই আমার কাছে বেশি পছন্দনীয়। কারণ, বন্দী জীবন খুবই কঠিন। মৃত্যু তো একদিন আসবেই।” অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম যদিও দু‘টোর যে কোনোটি বেছে নেয়ার এখতিয়ার দিয়েছেন কিন্তু ‘আযীমত’ তথা শরিয়তের কঠোর নীতি অবলম্বন করে কাফেরের হাতে আত্মসমর্পণ না করাই যে উত্তম, এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই। কেননা আত্মসমর্পণ করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
    শহীদ ইউসুফ উয়াইরী রহ. বলেনঃ
    "ولأن استسلام المجاهد مع ما فيه من الانهزام وشيء من الذل وما فيه من كسر قلوب المسلمين ، وثلمةٍ في موقف المجاهدين ، وما فيه من سرور العدو وغبطته وشماتته بالمجاهدين والمسلمين عامة ورفع معنوياته ، مع ما في الاستسلام من جميع تلك المفاسد إلا أنه أيضاً لا يحقق للمستسلم ما خاف على نفسه منه وهو الموت فإنه سيصبر إلى قِتلة أشنع وأذل مما سيقتل عليها لو لم يستسلم هذا إن لم يمر قبل ذلك على التعذيب والتنكيل وانتزاع المعلومات التي قد تضر غيره" اهـ “... ... তাছাড়া কোনো মুজাহিদ যদি শত্রুর হাতে আত্মসমর্পণ করে তাহলে একদিকে যেমন রয়েছে পরাজয়, লাঞ্ছনা, মুসলমানদের মনোবলে ভাঙ্গন তৈরি ও মুজাহিদীনের অবস্থানে ফাটল সৃষ্টি করার মতো বিষয়; অপরদিকে মুজাহিদীনসহ সকল মুসলিমের ব্যাপারে শত্রুপক্ষকে খুশি করার বিষয়। এর ফলে শত্রুপক্ষের মনোবলকে আরও চাঙ্গা করা হয়। এতকিছুর পরও আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সে যেই মৃত্যু থেকে বাঁচতে চাচ্ছিল তা থেকেও নিস্তার নেই। বরং এক্ষেত্রে সে আরো জঘন্য লাঞ্ছনাকর মৃত্যুর সম্মুখীন হবে। তাছাড়া রয়েছে তথ্য ফাঁস হওয়ার মতো ভয়ংকর বিষয়, যা অন্য ভাইদেরকেও আক্রান্ত করবে। তাই নিজেকে" কাফেরদের হাতে সোপার্দ নয়; বন্দীত্ব ও অসম্মানজনক জীবন থেকে সম্মানজনক মৃত্যুই কাম্য।

    হে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, বন্দীত্ব ও অসম্মানজনক জীবন থেকে হিফাজত করুন‌ এবং সম্মানজনক ও শহীদি মৃত্যুদান করুন-আমীন।




  • #2
    প্রিয় ভাই, আপনার পোস্টে উল্লেখিত উক্তিগুলোর রেফারেন্স দিলে উপকৃত হতাম। আল্লাহ আপনাকে জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      ✓✓আয়িয ইবন আমরা মুযানী (রাঃ) হতে বর্ণিত; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ইসলাম উঁচু থাকবে-নীচু হবে না।
      ( দারাকুতনী ৩য় খণ্ড ২৫২ পৃষ্ঠা, হাদীহ:৩১)

      ✓✓ওহে মুজাহিদ! লাঞ্ছনাকর বন্দী জীবন নয় সম্মানজনক মৃত্যুই মোদের কাম্য- শাইখ আব্দুল্লাহ ইবনে নাসির আর-রাশিদ।

      Comment


      • #4
        মুহতারাম ভাই! এটা তো মনে হয় ময়দানে লড়াইরত প্রকৃত মুক্বাতিল ভাইদের ব্যাপারে হতে পারে, যাদের একবার ধরতে পারলে হয়ত মৃত্যদণ্ড দিবে নয়ত যাবজ্জীবন কারাগারে রাখবে অথবা যদি পারে নিজেদের দলে নিয়ে তাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষ যারা জিহাদকে একটু ভালোবাসি , জিহাদ নিয়ে টুকটাক কিছু কথাবার্তা আলাপচারিতা করে বেড়ায়, আমরা ধরা খেলে হয়তো কিছুদিন পরে ছেড়েও দিবে বরং খুনোখুনি করলে আরও নিজের ফ্যামিলী বন্ধুবান্ধবসহ সমমনা অন্যান্য ভাইদের জন্য পরিবেশ আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে! এক্ষেত্রে পরিস্থিতির আলোকে আমাদের জন্য পালাতে না পারলে চুপচাপ থাকাই কি ভালো হবে না! অবশ্য এটা সংবেদশীল বিষয়, ব্যক্তি বিশেষে একেকজনের ক্ষেত্রে একেকটা কল্যাণকর হতে পারে।

        Comment

        Working...
        X