কয়েক অবস্থায় ইকদামী জিহাদ ফরযে আইন:
উপরে বর্ণিত ফরযে কেফায়া হচ্ছে ইকদামী জিহাদের স্বাভাবিক বিধান। তবে বিশেষ কিছু সূরতে ইকদামী জিহাদও ফরযে আইন হয়ে যায়;
এক. ইমাম নির্দিষ্টভাবে জিহাদের মুখাতব কোনো ব্যক্তি বা জামাআতকে আদেশ করলে, উক্ত ব্যক্তি ও জামাআতের উপর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়। -আহকামুল কুরআন: ৩/১৪৬ (ইলমিয়্যাহ); আল-ইনসাফ: ৪/১১৭ (দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবী)
হাদীসে এসেছে,
“ইবনে আব্বাস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (মক্কা) বিজয়ের পরে (মক্কা থেকে) হিজরতের বিধান নেই। তবে জিহাদ ও (জিহাদের) নিয়ত (-এ হিজরত) বাকি আছে। যখন জিহাদে বের হওয়ার জন্য আহ্বান করা হবে, তোমরা বের হয়ে যাও। -সহীহ বুখারী: ২৭৮৩; সহীহ মুসলিম: ১৩৫৩
তদ্রূপ জিহাদ করতে সক্ষম এমন সাবালককে ইমাম বিশেষ প্রয়োজনের তাগীদে জিহাদের জন্য বাধ্য করতে পারবে। -ফিকহুল জিহাদ; দিময়াতী: ৩৭
দুই. মুসলিম ও কাফের সৈন্যদল যুদ্ধের ময়দানে পরস্পর মুখোমুখি হওয়ার পর উপস্থিত ব্যক্তিদের উপর জিহাদ ফরয হয়ে যায়। তাই তাদের জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা জায়েয নয়। -আহকামুল কুরআন: ৩/৮৬ (ইলমিয়্যাহ); আল-ইনসাফ: ৪/১১৭ (দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবী)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
“হে ঈমানদারগণ, যখন তোমরা কোনো দলের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হও, তখন তোমরা অটল থাকো এবং বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” –সূরা আনফাল: ৪৫
তিন. মুসলিমরা সংখ্যায় এত কম যে, সকল মুসলিম বের না হলে কাফেরদের এলাকায় প্রবেশ করে ইকদামী জিহাদ করা সম্ভব নয়, তখন ইকদামী জিহাদ আদায়ের লক্ষ্যে সকল মুসলিমের উপর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়। -বাদায়েউস সানায়ে: ৯/৩৪০ (দারুল হাদিস); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২২ (দারুল ফিকর)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের পার্শবর্তী কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রাখো, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।” –সূরা তাওবা: ১২৩
তদ্রূপ জিহাদ করার মত যথেষ্ট সংখ্যক লোক থাকা সত্বেও বিশেষ বিভাগ; যেমন টেকনেলোজি, আইটি, সাইবার হামলা, হ্যাক করার মাধ্যমে শত্রুদের তথ্য গ্রহণ করা ইত্যাদি বিভাগে যোগ্য লোকের অভাব দেখা দিলে, যোগ্য ব্যক্তির উপর তা ফরযে আইন হয়ে যায়।
ইকদামী জিহাদ আদায়ের পদ্ধতি:
স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যেক বছরে অন্তত একবার ইকদামী জিহাদ করা ফরয। কোনো ওযর ছাড়া এতে শীতলতা করার সুযোগ নেই। –কিতাবুল উম্ম: ৪/১৭৭ (দারুল মা’রেফা); মাজমাউল আনহুর: ১/৬৩২ (দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবী); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২২ (দারুল ফিকর)
তবে বছরে আরো অধিক পরিমাণ জিহাদ করার সামর্থ হলে এবং পরিস্থিতি এর উপযোগী মনে হলে সামর্থ অনুযায়ী জিহাদ করা আবশ্যক। -ফাতহুল বারী: ৬/৩৮ (দারুল ফিকর)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
“আর তোমরা তাদের (কাফেরদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং দীন একমাত্র আল্লাহর হয়ে যায়। এতে যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তাহলে জালিম ছাড়া অন্য কারো প্রতি কোনো কঠোরতা নেই।” –সূরা বাকারা: ১৯৩
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা ফিতনা দূরীভূত হওয়া পর্যন্ত জিহাদ করার আদেশ করেছেন। সুতরাং ফিতনা দূরীভূত হওয়া এবং কুফুরের দাপট খর্ব হওয়া পর্যন্ত সামর্থ অনুযায়ী জিহাদ চালিয়ে যাওয়া আবশ্যক।
তবে সামর্থ ও শক্তির বিবেচনায় জিহাদ করার সক্ষমতা না থাকলে, দুএক বছর বিলম্ব করারও সুযোগ আছে। তবে এক্ষেত্রে জিহাদের প্রস্তুতি নেওয়া আবশ্যক। –কিতাবুল উম্ম: ৪/১৭৭ (দারুল মা’রেফা); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২২ (দারুল ফিকর)
সারকথা হচ্ছে, জিহাদ ও জিহাদের প্রস্তুতি ছাড়া একটা বছরও অতিবাহিত করার কোনো সুযোগ নেই। পর্যাপ্ত সংখ্যক লোক জিহাদ ও জিহাদের প্রস্তুতিতে না থাকলে পুরো উম্মত গুণাহগার হবে।
উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্বের এক প্রান্তে জিহাদ করার মাধ্যমে অন্য প্রান্তের জিহাদের ফরযিয়াত আদায় হবে না। বরং প্রত্যেক এলাকার বাসিন্দাদের উপর তাদের পার্শবর্তী কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরয। -আল-হাওয়াশিস সা’দিয়্যাহ (ফাতহুল কাদিরসহ): ৫/৪২৩, ৪২৫ (ইলমিয়্যাহ); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২৪ (দারুল ফিকর)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের পার্শবর্তী কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রাখো, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।” –সূরা তাওবা: ১২৩
সুতরাং প্রত্যেক এলাকার জন্য তাদের পার্শবর্তী এলাকার কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরয।
মৌলিক জিহাদ সবার উপর ফরয:
উপরিউক্ত বিধান হচ্ছে ময়দানের জিহাদের ক্ষেত্রে। অন্যথায় মৌলিকভাবে জিহাদ প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয; হোক তা জান, মাল, পরামর্শ, জিহাদের দাওয়াত, দোয়া কিংবা অন্য যেকোনো ভাবে। -আহকামুল কুরআন (জাসসাস): ৩/১৪৮ (ইলমিয়্যাহ); যাদুল মাআ’দ: ৩/৬৪ (মুআসসাসাতুর রিসালাহ); ফাতহুল বারী: ৬/৩৮ (দারুল ফিকর)
আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম রহ. (৭৫১ হি.) বলেন,
“তাহকীকী কথা হচ্ছে, মৌলিকভাবে জিহাদ ফরযে আইন; হোক তা অন্তর দ্বারা; মাল দ্বারা কিংবা হাত দ্বারা। সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের উপর আবশ্যক হচ্ছে, সে যেন উপর্যুক্ত কোনো এক পদ্ধতিতে জিহাদ করে। তবে (নির্দিষ্টভাবে) জান দ্বারা (ময়দানের) জিহাদ করা ফরযে কেফায়া। আর (নির্দিষ্টভাবে) মাল দ্বারা জিহাদ করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে দুটি মত রয়েছে। বিশুদ্ধতম মত হচ্ছে মাল দ্বারা জিহাদ করাও ওয়াজিব। কেননা, কোরআনে জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করার হুকুম সমানভাবে রয়েছে।” –যাদুল মা’আদ: ৩/৬৪ (মুআসসাসাতুর রিসালাহ)
আগের পর্ব:
ফিকহুল জিহাদ; অষ্টম পর্ব ➤দিফায়ী জিহাদে ফরযে আইন এবং ইকদামী জিহাদ ফরযে কেফায়া
উপরে বর্ণিত ফরযে কেফায়া হচ্ছে ইকদামী জিহাদের স্বাভাবিক বিধান। তবে বিশেষ কিছু সূরতে ইকদামী জিহাদও ফরযে আইন হয়ে যায়;
এক. ইমাম নির্দিষ্টভাবে জিহাদের মুখাতব কোনো ব্যক্তি বা জামাআতকে আদেশ করলে, উক্ত ব্যক্তি ও জামাআতের উপর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়। -আহকামুল কুরআন: ৩/১৪৬ (ইলমিয়্যাহ); আল-ইনসাফ: ৪/১১৭ (দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবী)
হাদীসে এসেছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ هِجْرَةَ بَعْدَ الفَتْحِ، وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ، وَإِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُوا» -رواه البخاري (2783) ومسلم (1353)
“ইবনে আব্বাস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (মক্কা) বিজয়ের পরে (মক্কা থেকে) হিজরতের বিধান নেই। তবে জিহাদ ও (জিহাদের) নিয়ত (-এ হিজরত) বাকি আছে। যখন জিহাদে বের হওয়ার জন্য আহ্বান করা হবে, তোমরা বের হয়ে যাও। -সহীহ বুখারী: ২৭৮৩; সহীহ মুসলিম: ১৩৫৩
তদ্রূপ জিহাদ করতে সক্ষম এমন সাবালককে ইমাম বিশেষ প্রয়োজনের তাগীদে জিহাদের জন্য বাধ্য করতে পারবে। -ফিকহুল জিহাদ; দিময়াতী: ৩৭
দুই. মুসলিম ও কাফের সৈন্যদল যুদ্ধের ময়দানে পরস্পর মুখোমুখি হওয়ার পর উপস্থিত ব্যক্তিদের উপর জিহাদ ফরয হয়ে যায়। তাই তাদের জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা জায়েয নয়। -আহকামুল কুরআন: ৩/৮৬ (ইলমিয়্যাহ); আল-ইনসাফ: ৪/১১৭ (দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবী)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ -سورة الأنفال: 45
“হে ঈমানদারগণ, যখন তোমরা কোনো দলের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হও, তখন তোমরা অটল থাকো এবং বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” –সূরা আনফাল: ৪৫
তিন. মুসলিমরা সংখ্যায় এত কম যে, সকল মুসলিম বের না হলে কাফেরদের এলাকায় প্রবেশ করে ইকদামী জিহাদ করা সম্ভব নয়, তখন ইকদামী জিহাদ আদায়ের লক্ষ্যে সকল মুসলিমের উপর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়। -বাদায়েউস সানায়ে: ৯/৩৪০ (দারুল হাদিস); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২২ (দারুল ফিকর)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُمْ مِنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ -سورة التوبة: 123
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের পার্শবর্তী কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রাখো, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।” –সূরা তাওবা: ১২৩
তদ্রূপ জিহাদ করার মত যথেষ্ট সংখ্যক লোক থাকা সত্বেও বিশেষ বিভাগ; যেমন টেকনেলোজি, আইটি, সাইবার হামলা, হ্যাক করার মাধ্যমে শত্রুদের তথ্য গ্রহণ করা ইত্যাদি বিভাগে যোগ্য লোকের অভাব দেখা দিলে, যোগ্য ব্যক্তির উপর তা ফরযে আইন হয়ে যায়।
ইকদামী জিহাদ আদায়ের পদ্ধতি:
স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যেক বছরে অন্তত একবার ইকদামী জিহাদ করা ফরয। কোনো ওযর ছাড়া এতে শীতলতা করার সুযোগ নেই। –কিতাবুল উম্ম: ৪/১৭৭ (দারুল মা’রেফা); মাজমাউল আনহুর: ১/৬৩২ (দারু ইহয়াইত তুরাসিল আরাবী); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২২ (দারুল ফিকর)
তবে বছরে আরো অধিক পরিমাণ জিহাদ করার সামর্থ হলে এবং পরিস্থিতি এর উপযোগী মনে হলে সামর্থ অনুযায়ী জিহাদ করা আবশ্যক। -ফাতহুল বারী: ৬/৩৮ (দারুল ফিকর)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِلَّهِ فَإِنِ انْتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ إِلَّا عَلَى الظَّالِمِينَ -سورة البقرة: 193
“আর তোমরা তাদের (কাফেরদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং দীন একমাত্র আল্লাহর হয়ে যায়। এতে যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তাহলে জালিম ছাড়া অন্য কারো প্রতি কোনো কঠোরতা নেই।” –সূরা বাকারা: ১৯৩
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা ফিতনা দূরীভূত হওয়া পর্যন্ত জিহাদ করার আদেশ করেছেন। সুতরাং ফিতনা দূরীভূত হওয়া এবং কুফুরের দাপট খর্ব হওয়া পর্যন্ত সামর্থ অনুযায়ী জিহাদ চালিয়ে যাওয়া আবশ্যক।
তবে সামর্থ ও শক্তির বিবেচনায় জিহাদ করার সক্ষমতা না থাকলে, দুএক বছর বিলম্ব করারও সুযোগ আছে। তবে এক্ষেত্রে জিহাদের প্রস্তুতি নেওয়া আবশ্যক। –কিতাবুল উম্ম: ৪/১৭৭ (দারুল মা’রেফা); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২২ (দারুল ফিকর)
সারকথা হচ্ছে, জিহাদ ও জিহাদের প্রস্তুতি ছাড়া একটা বছরও অতিবাহিত করার কোনো সুযোগ নেই। পর্যাপ্ত সংখ্যক লোক জিহাদ ও জিহাদের প্রস্তুতিতে না থাকলে পুরো উম্মত গুণাহগার হবে।
উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্বের এক প্রান্তে জিহাদ করার মাধ্যমে অন্য প্রান্তের জিহাদের ফরযিয়াত আদায় হবে না। বরং প্রত্যেক এলাকার বাসিন্দাদের উপর তাদের পার্শবর্তী কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরয। -আল-হাওয়াশিস সা’দিয়্যাহ (ফাতহুল কাদিরসহ): ৫/৪২৩, ৪২৫ (ইলমিয়্যাহ); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২৪ (দারুল ফিকর)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُمْ مِنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ -سورة التوبة: 123
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের পার্শবর্তী কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়। জেনে রাখো, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।” –সূরা তাওবা: ১২৩
সুতরাং প্রত্যেক এলাকার জন্য তাদের পার্শবর্তী এলাকার কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরয।
মৌলিক জিহাদ সবার উপর ফরয:
উপরিউক্ত বিধান হচ্ছে ময়দানের জিহাদের ক্ষেত্রে। অন্যথায় মৌলিকভাবে জিহাদ প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয; হোক তা জান, মাল, পরামর্শ, জিহাদের দাওয়াত, দোয়া কিংবা অন্য যেকোনো ভাবে। -আহকামুল কুরআন (জাসসাস): ৩/১৪৮ (ইলমিয়্যাহ); যাদুল মাআ’দ: ৩/৬৪ (মুআসসাসাতুর রিসালাহ); ফাতহুল বারী: ৬/৩৮ (দারুল ফিকর)
আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম রহ. (৭৫১ হি.) বলেন,
والتحقيق أن جنس الجهاد فرض عين إما بالقلب، وإما باللسان، وإما بالمال، وإما باليد، فعلى كل مسلم أن يجاهد بنوع من هذه الأنواع. أما الجهاد بالنفس ففرض كفاية، وأما الجهاد بالمال ففي وجوبه قولان: والصحيح وجوبه؛ لأن الأمر بالجهاد به وبالنفس في القرآن سواء.
“তাহকীকী কথা হচ্ছে, মৌলিকভাবে জিহাদ ফরযে আইন; হোক তা অন্তর দ্বারা; মাল দ্বারা কিংবা হাত দ্বারা। সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের উপর আবশ্যক হচ্ছে, সে যেন উপর্যুক্ত কোনো এক পদ্ধতিতে জিহাদ করে। তবে (নির্দিষ্টভাবে) জান দ্বারা (ময়দানের) জিহাদ করা ফরযে কেফায়া। আর (নির্দিষ্টভাবে) মাল দ্বারা জিহাদ করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে দুটি মত রয়েছে। বিশুদ্ধতম মত হচ্ছে মাল দ্বারা জিহাদ করাও ওয়াজিব। কেননা, কোরআনে জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করার হুকুম সমানভাবে রয়েছে।” –যাদুল মা’আদ: ৩/৬৪ (মুআসসাসাতুর রিসালাহ)
আগের পর্ব:
ফিকহুল জিহাদ; অষ্টম পর্ব ➤দিফায়ী জিহাদে ফরযে আইন এবং ইকদামী জিহাদ ফরযে কেফায়া