. ★★মুমিনের বন্দীদশা★★
শাইখ আবু হুজাইফা আস-সুদানী(হাফিজাহুল্লাহ)
******************************
আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন -
كتب عليكم القتال وهو كره لكم
" তোমাদের ওপর কিতালকে ফরয করা হয়েছে, যদিও তা তোমাদের নিকট অপছন্দনীয়। "(সূরা বাকারা আয়াত: ২১৬)
'জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ'র পথ অনেক কঠিন,তার সফর অনেক কষ্টকর এবং তার চাপ অনেক তীব্র ; কিন্ত তার আঞ্জাম
অনেক মধুর। 'জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ' হলো -
ত্যাগ ও কুরবানির পথ। ' জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ' মানে হলো - মাতাপিতা, স্ত্রী, সন্তান- সন্ততি এবং নিজ আবাস পরিত্যাগ করা। জিহাদ মানে হলো - নিরাপত্তাঝুঁকি এবং বন্দিত্ব। আল্লাহ্-র রাস্তায় শহীদ হওয়াই হলো মুজাহিদের পরম চাওয়া।
মুজাহিদগণ সব সময় টেনশনে থাকেন যে, কখন এসে আপতিত হয় বন্দিত্বের এ বিপদ। জিহাদ করতে গিয়ে একজন মুজাহিদের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়। এর কাছে জিহাদের অন্যান্য কষ্টকর মুহূর্তগুলু হার মানে। কিন্ত আমরা পছন্দ করি আর না করি, মুজাহিদকে অবশ্যই জানতে হবে, এ বন্দিত্ব তাঁর সম্ভাব্য বিপদ ও কষ্টকর মুহূর্তগুলির অন্যতম । তাঁর ধারণায় এটা রাখতে হবে যে, সে যেকোনো সময় এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পারে, এই কষ্ট তাঁকে সহ্য করতে হতে পারে।
সতর্কতাই উত্তম প্রতিকার । এজন্য মুজাহিদকে বন্দিত্ব এড়ানোর কৌশল প্রক্রিয়া অবলম্বন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়। সবচেয়ে বড় কৌশল ও অবলম্বন হলো - একমাত্র আল্লাহ্ -র ওপরই পরিপূর্ণ আস্থা রাখা , তাঁর প্রতি ইতিবাচক ধারণা পোষণ করা এবং একমাত্র আল্লাহ্ই যথেষ্ট ' এ কথার ওপর পূর্ণ একীন রাখা।
সত্যিকার অর্থে আল্লাহ্ -র বান্দা হতে পারলে এ ধরনের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জিত হবে।
আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন..
أليس الله بكاف عبده
" আল্লাহ্ই কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন? "(সূরা যুমার আয়াত: ৩৬)
যে যতটুকু আল্লাহর নিকটবর্তী বান্দা হতে পারবে, আল্লাহ্ সে পরিমাণেই তার জন্য যথেষ্ট হবেন।
আল্লাহর দাসত্ব ও গোলামি যতই বৃদ্ধি পাবে, আল্লাহ্ ততই তোমার জন্য যথেষ্ট হবেন। যেমনটি আল্লামা ইবনুল ক্বাইয়্যিম রহ. বলেছেন। আল্লাহর নিকট খুব দুআ ও কান্নাকাটি করতে হবে। তারপর মুজাহিদ তাঁর ব্যক্তিগত ও দলগত নিরাপত্তা লাভ করতে সক্ষম হবে। তবেই সে কখনো বন্দি হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির শান্তভাবে মোকাবেলা করতে পারবে ....!
জেলখানায় কয়েকজন বন্দী ভাইদের জিজ্ঞেস করেছিলাম , আপনারা কি বন্দী হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন? তাদের অনেকেই না-বাচক উত্তর দিয়েছিলেন।
এদের কাছে বন্দিত্ব আকস্মিক একটা ধাক্কা ছিল। শুরু শুরু তারা অনেক কঠিন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
তাদের এই কষ্টকর অভিজ্ঞতাকে নির্ঘাত ' ওজন কমানোর ফেজ' বলা যেতে পারে। তবে আল্লাহ্ তাদের প্রতি খুব দ্রুত সদয় হয়েছেন। তারা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেননি। প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়ে তারা মানসিকভাবে স্থির হতে সক্ষম হয়েছিলেন।
১৪২২ হিজরীতে আমরা কাসিম থেকে রিয়াদ ফিরছিলাম।
আমরা চারজন ছিলাম। সবাই ছিলাম এক সেলের সদস্য। আমাদের মধ্য থেকে একজন আমাদের ভবিষ্যতের সামরিক অপারেশন এবং বন্দিত্ববরণসহ অন্যান্য কষ্টকর মুহূর্তগুলোর ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন।
তাঁর এ কথা পরবর্তী সময়ে অনেক কাজে এসেছিলো। আমরা চারজনই একসাথে বন্দী হয়েছিলাম।
প্রথমজন ৫ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে ১১ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন।
দ্বিতীয়জন ১৫ বছরের পরিপূর্ণ সাজা ভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন।
তৃতীয়জন ১২ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে এবং চতুর্থজন ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ১৬ বছর ধরে কারাভোগ করছেন। আল্লাহ্ তাঁদেরকে মুক্তি দান করুন (আমিন) এবং সকল বন্দীদের কষ্ট দূরীভূত করে দিন ( আমিন)।
জনৈক জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন -
' মুমিন বান্দা আল্লাহর পথে জিহাদ করে।
যদি তাতে সে ব্যর্থ হয়, তখন সেখানেও তার লাভ থাকে।
আর যদি সে কষ্ট ভোগ করে, তখন সেটা আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়।
আর যদি সে দেশ থেকে বিতাড়িত হয়, তখন সেটা হয় তার নতুন পথের সন্ধান।
আর যদি সে বন্দী হয় তখন এটা হয় তার জন্য ইবাদত।
আর যদি সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করে, তখন সে নেতৃত্ব অর্জন করে।
আর যদি মৃত্যুবরণ করে, তখন হয় সে শহীদ।
সর্বোপরি, তার জন্য রয়েছে অনেক অনেক কল্যাণ ও উপকার.....।
আল্লাহ্ আমাদের হিদায়েত দান করুন আমিন....!
আল্লাহ্ আমাদের কবুল করুন...........আমিন.
শাইখ আবু হুজাইফা আস-সুদানী(হাফিজাহুল্লাহ)
******************************
আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন -
كتب عليكم القتال وهو كره لكم
" তোমাদের ওপর কিতালকে ফরয করা হয়েছে, যদিও তা তোমাদের নিকট অপছন্দনীয়। "(সূরা বাকারা আয়াত: ২১৬)
'জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ'র পথ অনেক কঠিন,তার সফর অনেক কষ্টকর এবং তার চাপ অনেক তীব্র ; কিন্ত তার আঞ্জাম
অনেক মধুর। 'জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ' হলো -
ত্যাগ ও কুরবানির পথ। ' জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ' মানে হলো - মাতাপিতা, স্ত্রী, সন্তান- সন্ততি এবং নিজ আবাস পরিত্যাগ করা। জিহাদ মানে হলো - নিরাপত্তাঝুঁকি এবং বন্দিত্ব। আল্লাহ্-র রাস্তায় শহীদ হওয়াই হলো মুজাহিদের পরম চাওয়া।
মুজাহিদগণ সব সময় টেনশনে থাকেন যে, কখন এসে আপতিত হয় বন্দিত্বের এ বিপদ। জিহাদ করতে গিয়ে একজন মুজাহিদের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়। এর কাছে জিহাদের অন্যান্য কষ্টকর মুহূর্তগুলু হার মানে। কিন্ত আমরা পছন্দ করি আর না করি, মুজাহিদকে অবশ্যই জানতে হবে, এ বন্দিত্ব তাঁর সম্ভাব্য বিপদ ও কষ্টকর মুহূর্তগুলির অন্যতম । তাঁর ধারণায় এটা রাখতে হবে যে, সে যেকোনো সময় এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পারে, এই কষ্ট তাঁকে সহ্য করতে হতে পারে।
সতর্কতাই উত্তম প্রতিকার । এজন্য মুজাহিদকে বন্দিত্ব এড়ানোর কৌশল প্রক্রিয়া অবলম্বন করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়। সবচেয়ে বড় কৌশল ও অবলম্বন হলো - একমাত্র আল্লাহ্ -র ওপরই পরিপূর্ণ আস্থা রাখা , তাঁর প্রতি ইতিবাচক ধারণা পোষণ করা এবং একমাত্র আল্লাহ্ই যথেষ্ট ' এ কথার ওপর পূর্ণ একীন রাখা।
সত্যিকার অর্থে আল্লাহ্ -র বান্দা হতে পারলে এ ধরনের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জিত হবে।
আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন..
أليس الله بكاف عبده
" আল্লাহ্ই কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন? "(সূরা যুমার আয়াত: ৩৬)
যে যতটুকু আল্লাহর নিকটবর্তী বান্দা হতে পারবে, আল্লাহ্ সে পরিমাণেই তার জন্য যথেষ্ট হবেন।
আল্লাহর দাসত্ব ও গোলামি যতই বৃদ্ধি পাবে, আল্লাহ্ ততই তোমার জন্য যথেষ্ট হবেন। যেমনটি আল্লামা ইবনুল ক্বাইয়্যিম রহ. বলেছেন। আল্লাহর নিকট খুব দুআ ও কান্নাকাটি করতে হবে। তারপর মুজাহিদ তাঁর ব্যক্তিগত ও দলগত নিরাপত্তা লাভ করতে সক্ষম হবে। তবেই সে কখনো বন্দি হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির শান্তভাবে মোকাবেলা করতে পারবে ....!
জেলখানায় কয়েকজন বন্দী ভাইদের জিজ্ঞেস করেছিলাম , আপনারা কি বন্দী হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন? তাদের অনেকেই না-বাচক উত্তর দিয়েছিলেন।
এদের কাছে বন্দিত্ব আকস্মিক একটা ধাক্কা ছিল। শুরু শুরু তারা অনেক কঠিন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
তাদের এই কষ্টকর অভিজ্ঞতাকে নির্ঘাত ' ওজন কমানোর ফেজ' বলা যেতে পারে। তবে আল্লাহ্ তাদের প্রতি খুব দ্রুত সদয় হয়েছেন। তারা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেননি। প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়ে তারা মানসিকভাবে স্থির হতে সক্ষম হয়েছিলেন।
১৪২২ হিজরীতে আমরা কাসিম থেকে রিয়াদ ফিরছিলাম।
আমরা চারজন ছিলাম। সবাই ছিলাম এক সেলের সদস্য। আমাদের মধ্য থেকে একজন আমাদের ভবিষ্যতের সামরিক অপারেশন এবং বন্দিত্ববরণসহ অন্যান্য কষ্টকর মুহূর্তগুলোর ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন।
তাঁর এ কথা পরবর্তী সময়ে অনেক কাজে এসেছিলো। আমরা চারজনই একসাথে বন্দী হয়েছিলাম।
প্রথমজন ৫ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে ১১ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন।
দ্বিতীয়জন ১৫ বছরের পরিপূর্ণ সাজা ভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন।
তৃতীয়জন ১২ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে এবং চতুর্থজন ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ১৬ বছর ধরে কারাভোগ করছেন। আল্লাহ্ তাঁদেরকে মুক্তি দান করুন (আমিন) এবং সকল বন্দীদের কষ্ট দূরীভূত করে দিন ( আমিন)।
জনৈক জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন -
' মুমিন বান্দা আল্লাহর পথে জিহাদ করে।
যদি তাতে সে ব্যর্থ হয়, তখন সেখানেও তার লাভ থাকে।
আর যদি সে কষ্ট ভোগ করে, তখন সেটা আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়।
আর যদি সে দেশ থেকে বিতাড়িত হয়, তখন সেটা হয় তার নতুন পথের সন্ধান।
আর যদি সে বন্দী হয় তখন এটা হয় তার জন্য ইবাদত।
আর যদি সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করে, তখন সে নেতৃত্ব অর্জন করে।
আর যদি মৃত্যুবরণ করে, তখন হয় সে শহীদ।
সর্বোপরি, তার জন্য রয়েছে অনেক অনেক কল্যাণ ও উপকার.....।
আল্লাহ্ আমাদের হিদায়েত দান করুন আমিন....!
আল্লাহ্ আমাদের কবুল করুন...........আমিন.
Comment