সামনে আসছে কুরবানি। কুরবানি ওয়াজিব। কিন্তু ওয়াজিব কোনটি? গোশত খাওয়া? খাওয়ানো? পশু সাদাকা করা? পশুর মূল্য সাদাকা করা?
না! ওয়াজিব হচ্ছে পশু জবাই করে রক্ত প্রবাহিত করা। এটিই মূলত কুরবানি: জবাই করে রক্ত প্রবাহিত করা। ১
হাদিসে এসেছে,
এই রক্ত প্রবাহিত করার নাম কুরবানি। কুরবানির দিন এর চেয়ে প্রিয় কোনো আমল নেই।
সায়িদ ইবনুল মুসায়্যিব রহ. বলেন,
কারণ, কুরবানি আর সাদাকা এক জিনিস নয়। সাদাকা অবশ্যই নেক কাজ, কিন্তু তাতে রক্ত প্রবাহিতকরণ নেই। আর এই দিনে রক্ত প্রবাহিত করাই আল্লাহর নির্দেশ। সাদাকা তার সমতুল্য নয়।
কুরবানির পশু বা পশুর মূল্য সাদাকা করার দ্বারা কুরবানি আদায় হবে না। এমনকি সমুদয় সম্পদ সাদাকা করে দিলেও কুরবানি আদায় হবে না। কুরবানির জন্য রক্ত প্রবাহিত করাই আবশ্যক। ২
জবাই শেষ তো ওয়াজিব আদায় হয়ে গেল। এরপর গোশত তার নিজের। খেতেও পারবে, খাওয়াতেও পারবে, সাদাকাও করতে পারবে।
এই যে জবাই, এই যে রক্ত ঝরানো- এটিই ইবাদাত। আল্লাহর পছন্দনীয় ইবাদাত।
এখানে প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ নেই যে, একটি প্রাণীকে এভাবে হত্যা করা কেন ইবাদাত হলো? কারণ, সব কিছুর মালিক আল্লাহ তাআলা। তিনি যা ইবাদাত হিসেবে নির্ধারণ করে দিবেন তাই ইবাদাত হবে, যদিও তা রক্ত ঝরানো হয়। প্রশ্ন করার অধিকার কারও নেই।
আপনি হয়তো এতোদিন শুধু নামায রোযাকে ইবাদাত মনে করে আসছিলেন। আজ বুঝতে পারলেন, রক্ত ঝরানোও ইবাদাত হতে পারে।
যদি তাই হয়, তাহলে আপনার জন্য বুঝা একেবারেই সহজ হয়ে যাবে যে, কাফের হত্যাও ইবাদাত হতে পারে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
বরং কাফের তো পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,
যেখানে বে-গুনাহ পশু জবাই করা ইবাদাত, সেখানে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট কাফের হত্যা কেন ইবাদাত হবে না?!
কুরবানির এটিই শিক্ষা। ইব্রাহিম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা সন্তান জবাই করতে আদেশ দেন। তিনি আল্লাহর আদেশ পালনের জন্য সন্তান জবাই করেন। আল্লাহ তাআলা যদিও নিজ কুদরতে ইসমাইল আলাইহিস সালামকে জবাই হতে না দিয়ে তদস্থলে দু্ম্বা জবাই করিয়ে দেন, কিন্তু ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম কিন্তু সন্তানই জবাই করেছেন।
এ সন্তান জবাই করা কি ইবাদাত ছিল না? প্রাণপ্রিয় সন্তান জবাই যদি ইবাদাত হয়, তাহলে আল্লাহর দুশমনকে জবাই করা ইবাদাত হবে না কেন?
এটিই কুরবানির শিক্ষা: কাফের তো পরের কথা, আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রয়োজনে আমার সন্তানকেও জবাই করে দিতে হলে দেবো।
এমনটাই বুঝেছেন সাহাবায়ে কেরাম। এজন্য যেদিন থেকে কালিমা পড়ে মুসলমান হয়েছেন; পিতা মাতা, সন্তান-সন্ততি, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সব ত্যাগ করেছেন। প্রয়োজনে অস্ত্র ধরেছেন। *যুদ্ধ করেছেন। হত্যা করেছেন। এটিই কুরবানির শিক্ষা। এটিই দ্বীনের সহীহ বুঝ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।
==================
না! ওয়াজিব হচ্ছে পশু জবাই করে রক্ত প্রবাহিত করা। এটিই মূলত কুরবানি: জবাই করে রক্ত প্রবাহিত করা। ১
হাদিসে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا عَمِلَ آدَمِيٌّ مِنْ عَمَلٍ يَوْمَ النَّحْرِ أَحَبَّ إِلَى اللَّهِ مِنْ إِهْرَاقِ الدَّمِ » -سنن الترمذي ت شاكر: 1493
আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কুরবানির দিন (কুরবানির পশু জবাই করে) রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দের কোনো আমল আদম সন্তান করতে পারে না। -সুনানে তিরমিযি ১৪৯৩
আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কুরবানির দিন (কুরবানির পশু জবাই করে) রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দের কোনো আমল আদম সন্তান করতে পারে না। -সুনানে তিরমিযি ১৪৯৩
এই রক্ত প্রবাহিত করার নাম কুরবানি। কুরবানির দিন এর চেয়ে প্রিয় কোনো আমল নেই।
সায়িদ ইবনুল মুসায়্যিব রহ. বলেন,
لأن أضحي بشاة أحب إلي من أن أتصدق بمائة درهم –مصنف عبد الرزاق الصنعاني : 8166
(কুরবানির দিন দুই দিরহাম দিয়ে) একটি ছাগল কুরবানি দেয়া আমার কাছে (কুরবানি না দিয়ে) শত দিরহাম সাদাকা করার চেয়েও বেশি পছন্দের। -মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ৮১৬৬
(কুরবানির দিন দুই দিরহাম দিয়ে) একটি ছাগল কুরবানি দেয়া আমার কাছে (কুরবানি না দিয়ে) শত দিরহাম সাদাকা করার চেয়েও বেশি পছন্দের। -মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ৮১৬৬
কারণ, কুরবানি আর সাদাকা এক জিনিস নয়। সাদাকা অবশ্যই নেক কাজ, কিন্তু তাতে রক্ত প্রবাহিতকরণ নেই। আর এই দিনে রক্ত প্রবাহিত করাই আল্লাহর নির্দেশ। সাদাকা তার সমতুল্য নয়।
কুরবানির পশু বা পশুর মূল্য সাদাকা করার দ্বারা কুরবানি আদায় হবে না। এমনকি সমুদয় সম্পদ সাদাকা করে দিলেও কুরবানি আদায় হবে না। কুরবানির জন্য রক্ত প্রবাহিত করাই আবশ্যক। ২
জবাই শেষ তো ওয়াজিব আদায় হয়ে গেল। এরপর গোশত তার নিজের। খেতেও পারবে, খাওয়াতেও পারবে, সাদাকাও করতে পারবে।
এই যে জবাই, এই যে রক্ত ঝরানো- এটিই ইবাদাত। আল্লাহর পছন্দনীয় ইবাদাত।
এখানে প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ নেই যে, একটি প্রাণীকে এভাবে হত্যা করা কেন ইবাদাত হলো? কারণ, সব কিছুর মালিক আল্লাহ তাআলা। তিনি যা ইবাদাত হিসেবে নির্ধারণ করে দিবেন তাই ইবাদাত হবে, যদিও তা রক্ত ঝরানো হয়। প্রশ্ন করার অধিকার কারও নেই।
আপনি হয়তো এতোদিন শুধু নামায রোযাকে ইবাদাত মনে করে আসছিলেন। আজ বুঝতে পারলেন, রক্ত ঝরানোও ইবাদাত হতে পারে।
যদি তাই হয়, তাহলে আপনার জন্য বুঝা একেবারেই সহজ হয়ে যাবে যে, কাফের হত্যাও ইবাদাত হতে পারে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
{فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ } [التوبة: 5]
মুশরিকদের যেখানেই পাও হত্যা কর। -তাওবা: ৫
আল্লাহর আদেশে পশু জবাই করা যেমন ইবাদাত হতে পারে, আল্লাহর আদেশে মানুষ হত্যাও ইবাদাত হতে পারে। মুশরিকদের যেখানেই পাও হত্যা কর। -তাওবা: ৫
বরং কাফের তো পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ عِنْدَ اللَّهِ الَّذِينَ كَفَرُوا فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ (55)
নিঃসন্দেহে সমস্ত জীবের মাঝে আল্লাহর নিকট তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা কুফর অবলম্বন করেছে, যে কারণে তারা ঈমান আনছে না। -আনফাল: ৫৫
নিঃসন্দেহে সমস্ত জীবের মাঝে আল্লাহর নিকট তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা কুফর অবলম্বন করেছে, যে কারণে তারা ঈমান আনছে না। -আনফাল: ৫৫
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,
أُولَئِكَ كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ (179)
তারা চতুষ্পদ জন্তুর মতো; বরং এরা আরও বিপথগামী। -সূরা আ’রাফ (৭) : ১৭৯
তারা চতুষ্পদ জন্তুর মতো; বরং এরা আরও বিপথগামী। -সূরা আ’রাফ (৭) : ১৭৯
যেখানে বে-গুনাহ পশু জবাই করা ইবাদাত, সেখানে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট কাফের হত্যা কেন ইবাদাত হবে না?!
কুরবানির এটিই শিক্ষা। ইব্রাহিম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা সন্তান জবাই করতে আদেশ দেন। তিনি আল্লাহর আদেশ পালনের জন্য সন্তান জবাই করেন। আল্লাহ তাআলা যদিও নিজ কুদরতে ইসমাইল আলাইহিস সালামকে জবাই হতে না দিয়ে তদস্থলে দু্ম্বা জবাই করিয়ে দেন, কিন্তু ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম কিন্তু সন্তানই জবাই করেছেন।
এ সন্তান জবাই করা কি ইবাদাত ছিল না? প্রাণপ্রিয় সন্তান জবাই যদি ইবাদাত হয়, তাহলে আল্লাহর দুশমনকে জবাই করা ইবাদাত হবে না কেন?
এটিই কুরবানির শিক্ষা: কাফের তো পরের কথা, আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রয়োজনে আমার সন্তানকেও জবাই করে দিতে হলে দেবো।
এমনটাই বুঝেছেন সাহাবায়ে কেরাম। এজন্য যেদিন থেকে কালিমা পড়ে মুসলমান হয়েছেন; পিতা মাতা, সন্তান-সন্ততি, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সব ত্যাগ করেছেন। প্রয়োজনে অস্ত্র ধরেছেন। *যুদ্ধ করেছেন। হত্যা করেছেন। এটিই কুরবানির শিক্ষা। এটিই দ্বীনের সহীহ বুঝ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।
==================
[1]
القربة في الأضحية هي إراقة الدم. - بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (5/ 64)
[2]
لا يقوم غيرها مقامها حتى لو تصدق بعين الشاة أو قيمتها في الوقت لا يجزيه عن الأضحية؛ لأن الوجوب تعلق بالإراقة. - بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (5/ 66)
... بخلاف الهدايا والضحايا؛ لأن الواجب فيها إراقة الدم حتى لو هلك بعد الذبح قبل التصدق لا يلزمه شيء. وإراقة الدم ليس بمال فلا يقوم المال مقامه. - بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (2/ 26)
الذّبْح فِي مَوْضِعه أفضل من الصَّدَقَة بِثمنِهِ وَلَو زَاد كالهدايا وَالْأَضَاحِي فَإِن نفس الذّبْح وإراقة الدَّم مَقْصُود فَإِنَّهُ عبَادَة مقرونة بِالصَّلَاةِ كَمَا قَالَ تَعَالَى {فصل لِرَبِّك وانحر} وَقَالَ {قل إِن صَلَاتي ونسكي ومحياي ومماتي لله رب الْعَالمين} الْأَنْعَام 162 فَفِي كل مِلَّة صَلَاة ونسيكة لَا يقوم غَيرهمَا مقامهما وَلِهَذَا لَو تصدق عَن دم الْمُتْعَة وَالْقرَان بأضعاف أَضْعَاف الْقيمَة لم يقم مقَامه وَكَذَلِكَ الْأُضْحِية. - تحفة المودود بأحكام المولود (ص: 65)
القربة في الأضحية هي إراقة الدم. - بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (5/ 64)
[2]
لا يقوم غيرها مقامها حتى لو تصدق بعين الشاة أو قيمتها في الوقت لا يجزيه عن الأضحية؛ لأن الوجوب تعلق بالإراقة. - بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (5/ 66)
... بخلاف الهدايا والضحايا؛ لأن الواجب فيها إراقة الدم حتى لو هلك بعد الذبح قبل التصدق لا يلزمه شيء. وإراقة الدم ليس بمال فلا يقوم المال مقامه. - بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (2/ 26)
الذّبْح فِي مَوْضِعه أفضل من الصَّدَقَة بِثمنِهِ وَلَو زَاد كالهدايا وَالْأَضَاحِي فَإِن نفس الذّبْح وإراقة الدَّم مَقْصُود فَإِنَّهُ عبَادَة مقرونة بِالصَّلَاةِ كَمَا قَالَ تَعَالَى {فصل لِرَبِّك وانحر} وَقَالَ {قل إِن صَلَاتي ونسكي ومحياي ومماتي لله رب الْعَالمين} الْأَنْعَام 162 فَفِي كل مِلَّة صَلَاة ونسيكة لَا يقوم غَيرهمَا مقامهما وَلِهَذَا لَو تصدق عَن دم الْمُتْعَة وَالْقرَان بأضعاف أَضْعَاف الْقيمَة لم يقم مقَامه وَكَذَلِكَ الْأُضْحِية. - تحفة المودود بأحكام المولود (ص: 65)
Comment