এ বিজয় যেন মক্কাবিজয়েরই নমূনা। যার সূচনা হয়েছিল তালেবানদের মতোই সন্ধির মাধ্যমে। ইনশাআল্লাহ ফাতহে মক্কার মতো এ বিজয়ও ভবিষ্যত ইসলামী পরাশক্তির ভিত্তি হবে।
রাসূল ﷺ মক্কায় প্রবেশ করছেন বিজয়ী হয়ে। তাঁকে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে না, জাতীয় সঙ্গীত বাজছে না, নেই কোনো লাল গালিচা, আর তাঁর মাঝেও নেই কোনো অহংকারের ছাপ। তিনি বুক উঁচু করে, অবনত মস্তকে, আল্লাহর প্রতি বিনম্র চিত্তে সেখানে প্রবেশ করছেন। তিনি উটের পিঠে, ঢোকার সময় তিনি আল্লাহর কাছে সাজদারত, তিনি এতোটাই নিচু হয়ে আছেন যে তাঁর দাড়ি উটের সাথে লেগে আছে। তাঁর মধ্যে ঔদ্ধত্য নেই, আছে নম্রতা, নেই উত্তেজনা, আছে সাকিনাহ, প্রশান্তি।"
.
সীরাহ মুহাম্মাদ ﷺ থেকে। ফাতহে মক্কা। আজও ফাতহ হচ্ছে। সাকিনাহ ঝরে পড়ছে। নম্রতা, অহংকারহীনতার এই ধারা আজও বহমান। নিশ্চয়ই একক ক্ষমতার অধিকারী শুধুই একজন, সমস্ত প্রশংসা ও কৃতিত্ব শুধু তাঁর জন্যই নিবেদিত।
খুলাফায়ে রাশেদার খেলাফত কাল দেখিনি!
উমর ইবনে আব্দুল আজিজের খেলাফত কাল দেখিনি!
পরবর্তীতে ভারত উপমদেশের খেলাফত কাল দেখিনি!
কিন্তু হয়ত এখন দেখতে পাবো খুলাফায়ে রাশেদার প্রতিচ্ছবি,উমর ইবনে আব্দুজ আজিজ এর প্রতিচ্ছবি-তাদের রুহানী সন্তানদের খেলাফত!
দেখিনি রাসুল সা: এর মক্কা বিজয়,কিন্তু আজ দেখতে পাচ্ছি উনার উম্মতের কাবুল বিজয়।
এ বিজয় আমাদের কাঙ্খিত বিজয়,এ বিজয় শুধু তালেবানের বিজয় নয়,এ বিজয় ইসলামের বিজয়। জয় হোক ইসলামের।
প্রতিটি কোনায় কোনায় যেন ইসলামের পকাকা উণ্ডিত হয় সে কামনাই করি।
وَ لَا تَہِنُوۡا وَ لَا تَحۡزَنُوۡا وَ اَنۡتُمُ الۡاَعۡلَوۡنَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ
আর তোমরা নিরাশ হয়ো না ও বিষন্ন হয়ো না এবং তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও ।
যত কঠিন সংঘর্ষ হবে,বিজয়ের আনন্দ ততই মধুর হবে।
অবশেষে বিজয়!দীর্ঘ ২০ বছরের সংগ্রামের সমাপ্তি।
সেদিনের শিকল পড়া সেই মাজলুম লোকটিই আজ আফগান তালেবানদের বিশেষ ব্যক্তিত্বের একজন।
ছবি দুটি বিশ্বের সকল মজলুম আলেম ওলামাদের অনুপ্রেরণার প্রতিক হবে বলে আমি আশা করি । ( ইনশাআল্লাহ)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না;যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।(সূরা আলে ইমরান-১৩৯)
বিজয়ের এই সুবাতাস ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়।
মহান রবের কাছে আমাদের এই কামনা।
অবিশ্বাস্য হলেও উভয় ছবির ব্যক্তি এক ও অভিন্ন। সবকটা ছবি একই ব্যক্তির। হ্যাঁ; মাঝখানে অনেক সময় বয়ে গেছে। কিন্তু তারা আল্লাহর রাস্তা থেকে সটকে পড়েন নি। পাহাড়ের মতো অবিচল থেকেছেন। সবরের পরীক্ষায় তারা আজ উত্তীর্ণ হয়েছেন।
আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা তার ওয়াদা বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এ ঘটনাসমূহ মুমিনগণের ঈমানকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেবে।
সময়ে সবকিছুই বদলে দেয়।
আর কিছু বুঝেন, চাই না বুঝেন, "তা/লে/বা/ন ইসলামি রাষ্ট্র চায়। তাঁরা আল্লাহর পৃথিবীতে আল্লাহর কালেমার পতাকাকে উড্ডীন করার জন্য দুনিয়ার সব সুখ শান্তি নিশ্চয়তাকে পায়ে ঠেলেছেন"- এতটুকু বুঝ থেকে ই তাঁদের সমর্থন করুন। তাঁদের বিজয় মানে আমাদের সকল মুসলিমদের বিজয়। আজকের দিন আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের। এতে অবশ্যই মন থেকে শুকরিয়া আদায় করুন "আল হামদুলিল্লাহ "। দুআ করুন প্রাণ খুলে।
এ যুগে আল্লাহর খাঁটি বান্দা ও ওলি দেখতে হলে ঐ তা/লে/বান ভাইদের দেখুন। তাঁরা শ্রেষ্ঠ। তাঁরা সত্য। তাঁরা সঠিক চিন্তা লালন করেন, সে অনুযায়ী কাজ করেন। তাঁরা সাহসী। তাঁরা বীর মুজাহিদ। তাঁরা রসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবাদের যোগ্য উত্তরসূরি। বর্তমানে তাঁদের তুলনা তাঁরা নিজেরাই।
দাজ্জালি মিডিয়া এতদিন যাদের জঙ্গি বলেছে। তারাই তাদের মুক্তিযোদ্ধা বলবে।
এতদিন বহু নামধারী মুসলিম ও মুনাফিক তা/লে/বানদের বিরোধিতা ও বিপক্ষে ছিল। আজ তারাই সুযোগ বুঝে খুব অভিনন্দন জানাবে। তাই সময় এসেছে ঐসব মুনাফিক চিনার। যারা সুযোগসন্ধানী। সময়ে সময়ে রূপ বদলায়। মানুষকে ধোঁকা দেয়। তাদের থেকে সাবধান। দূরত্ব বজায় রাখুন। সত্য সন্ধান করুন।সত্যের পক্ষে থাকুন। অন্ধ অনুসরণ ছাড়ুন।
একটি অনুরোধ, নিজেদের মাঝে কাঁদাছুড়াছুড়ি বন্ধ করুন। মিডিয়া সন্ত্রাস বা কোনো অজ্ঞ ব্যক্তির দলীলবিহীন কথায় আমাদের ভাই তা/লে/বানদের বিরোধিতা করবেন না।তাঁদের জন্য দুআ করুন।সমর্থন করুন।তাঁদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।
মক্কা বিজয়ের নমুনার আরেকদিক
নয়াদিগন্ত: সুহাইল শাহিন বলেন, 'আমরা আফগানিস্তান ও আফগান জনগণের খাদেম। আফগানিস্তানের কোনো মানুষের সাথে প্রতিশোধমূলক আচরণ করা হবে না। আমরা আফগান নাগরিকদের বিশেষ করে কাবুলের লোকদের আশ্বস্ত করছি যে তাদের সম্পদ ও জীবন নিরাপদ। কারো প্রতি প্রতিশোধ নেয়া হবে না।'
onebd.news: তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশের পর ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেছে। তালেবানের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহিন এক ঘোষণায় পুরো আফগানিস্তানে ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের দরজা ওই ব্যক্তিদের জন্যও উন্মুক্ত থাকবে যারা আমাদের বিরুদ্ধে হামলায় সহযোগিতা করেছে। খবর জিয়ো নিউজ উর্দূর।
সুহাইল শাহিন আরও বলেন, কাবুলের দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের জন্যও ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের সব দরজা খোলা থাকবে।
সাধারণত বিবেকের ওপর আবেগকে কখনো জয়ী হতে দিই না। কিন্তু আজ আমি ব্যর্থ হলাম। আবেগের কাছে হেরেও আখেরে জয়ী হলাম। কান্নাগুলো কোনো বাঁধ মানতে চাইছে না। সালাতুশ শুকরের পর কেমন যেনো আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লাম! স্মৃতিকাতর হয়ে উঠলাম!! মনে পড়ল কত কথা, কত ব্যথা, কত ইতিহাস!!!
আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিন। আজকের দিনটি মুসলিমদের অন্তরে লালিত স্বপ্ন পূরণ হওয়ার দিন। শেষরাতের কান্নায় কিংবা অন্য যেকোনো সময়ের দুয়ায় কখনো ভুলিনি তাঁদের। কিন্তু আজকের কান্না ছিল ভিন্ন রকমের। কারণ, এ কান্না ছিল প্রাপ্তি ও শোকরের। এ কান্না ছিল বিজয় ও আনন্দের।
সংগৃহীত পোস্টসমূহ
Comment