পূর্বদিক থেকে সূর্য উদয় হয়ে পশ্চিম দিকে অস্ত যাওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে; কিন্তু শরীয়ত, যুক্তি ও শিষ্টাচারের আলোকে এ ব্যাপারে বিন্দু পরিমাণ সন্দেহ নেই যে, আজ আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালবাসা অন্তরে লালনকারী প্রত্যেকের উপর ‘জিহাদ’ ফরযে আইন হয়ে গিয়েছে। ফুকাহায়ে কেরাম, মুহাদ্দিসিন, মুফাসসিরিন ও উসূলীন– সকলেই এ ব্যাপারে ঐক্যমত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, যদি কাফেররা মুসলমানদের কোন ভূমির উপর আক্রমণ করে অথবা সামান্য পরিমাণ ভূমি –যার উপর এক মুহূর্তের জন্য হলেও মুসলমানদের শাসন ছিল– কাফেরদের হাতে চলে যায় তাহলে জিহাদে বের হওয়া ঠিক তেমন-ই ‘ফরজে আইন’ হয়ে যায় যেমন নামাজ, রোজা আদায় করা ‘ফরজে আইন’ হয়। বরং ইসলামী ভূমি রক্ষা করা- ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজে আইন! ১
এটা সবল, দুর্বল– প্রত্যেক ঈমানদারের নিকট আল্লাহ ও তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালবাসার দাবি। আর দুনিয়ার সবাই জানে যে, প্রেমিকের নিকট ভালবাসার দলিল চাওয়া– অনর্থক ও অহেতুক প্রলাপ ছাড়া কিছুই না। ‘জিহাদ’ ফরজে আইন হওয়ার ব্যাপারে দলিল চাওয়ার বিষয়টি বাস্তবেও এমন-ই, বর্তমানে দলিল চাওয়া একটি অহেতুক প্রলাপ হয়ে গেছে। দলিল তলবের বিষয়টি আমরা অহেতুক বলতাম না, কিন্তু যখন দেখি, আল্লাহ তায়ালার পর সর্বাধিক সম্মান ও মর্যাদার অধিকারি মুহাম্মদ মুস্তফা, আহমাদ মুজতাবা, আমাদের দেহ-মনের প্রশান্তি, চোখের শীতলতা– প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর উপর নাযিলকৃত আল্লাহ তায়ালার পবিত্র কালামের শানে বেয়াদবির নিকৃষ্টতম ধারাবাহিকতা চলতে থাকে আর এ সবকিছু শুনে ঠান্ডা মাথায় হজম করে দলিল জানতে চাওয়া হয় তখন ঈমানের কাঠগড়ায় নিজের বিবেককে দাড় করিয়ে বলুন তো দেখি– এটা কোন ধরনের জিজ্ঞাসা?
[ এ ধরনের ধ্রীষ্টতা কেবল ইউরোপ-আমেরিকাতে নয় বরং ‘লা ইলাহা ইল্লাহ’ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত, আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত দেশে গরু-ছাগল ও কুকুর-শুকরের মত চতুষ্পদ জন্তুর ভাষা ও কলমের দ্বারা এবং ঐ সকল নাপাক হাতের দ্বারা এ ধরনের বেয়াদবী করা হচ্ছে যেগুলো কয়েক সপ্তাহ পূর্বেও (চৌদ্দ ব্ৎসর পূর্বে সাইলেন্স অপারেশনের পরেও) কুরআনে পাকের বিভিন্ন কপি ইসলামাবাদের নোংড়া ড্রেনে নিক্ষেপ করেছে।]
উলামায়ে কেরাম বলেন, এ সকল বেয়াদবদের ধারাবাহিকতা বন্ধ করা এবং এর বদলা নেওয়ার সর্বোত্তম ও কার্যকরী পন্থা হল- ‘আল-জিহাদ’। এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পবিত্রতম সাহাবায়ে কেরামের পন্থা। যদি আপনার মা-বোন, স্ত্রী-মেয়ে ও ঘরের সম্মানের উপর কেউ আঘাত করে তাহলে আপনি ভাই-ভাতিজা ও ছেলে-সন্তান সকলকে নিয়ে সম্মানে আঘাতকারীদে প্রতিহত করেন। কিন্তু যখন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মান, কুরআনের মর্যাদা এবং উম্মতের জন্য কুরবান হওয়া, আঠারো বছর যাবত কাফেরদের জিন্দানখানায় ধুকে ধুকে মারা যাওয়া আফিয়া সিদ্দিকীর সতীত্বের কথা আসে তখন টুইটারে টুইট করে, ফেইসবুকে ইস্টাটাস দিয়ে, বিভিন্ন সেমিনারে ভাষণ দিয়ে, পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখে, রাস্তায় মিছিল করে এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে অভিব্যক্তি পেশ করাকে ‘প্রতিশোধ’ মনে করেন এবং ভাবেন ‘জিহাদ’ করছেন ?! ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন,
“সর্বসম্মত ঐক্য মত হল, ‘জিহাদ’ বলার দ্বারা উদ্দেশ্য হয় ‘কিতাল’ আর যেখানে “ফি সাবিলিল্লাহ” র পরিভাষা আসবে সেখানে কেবল ‘জিহাদ’-ই উদ্দেশ্য হবে।” ২
নিজের ইচ্ছেমত কিছু করার নাম জিহাদ নয় বরং জিহাদের মধ্যে কেবল ঐ সকল আমল-ই অন্তর্ভূক্ত হবে যা কোন না কোনভাবে ‘কিতাল অর্থাৎ যুদ্ধ’ এর কাজকে শক্তিশালি করে। আর জিহাদ ফি সাবিলিলিল্লাহর উদ্দেশ্যে সকল মুসলমান বের হওয়া অথবা এই গুরুত্বপূর্ণ ফরজে আইনকে আদায় করার অর্থ হল, আমাদের প্রত্যেক আমল চাই তা হোক জ্ঞান অর্জন বা সম্পদ ব্যায়(ব্যয়), দাওয়াত ও তাবলীগ, সমকালিন(সমকালীন) বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা অর্জন (মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি), কলম বা মিডিয়া অথবা অন্য যে কোন কাজই হোক না কেন সবগুলোই যেন ‘কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ’কে শক্তি প্রদানকারী ও সহযোগী হয়। তাছাড়া প্রায়ই দেখা যায়, জিহাদের ময়দানে সরাসরি কিতালের সুযোগ খুব কম আসে। নিজেদের প্রস্তুতি, মালামালের বন্দোবস্ত, দাওয়াত, সফর, উপস্থিতি এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনার পর অনেক বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে জিহাদের সূচনা হয়। ৩
এর একটি বড় উদাহারণ হল, ‘গাযওয়ায়ে তাবুক’। যাতে প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (যিনি আমীর ছিলেন) সকলকেই বের হতে বলেছিলেন, দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল, তৎকালীন মিডিয়া তথা কবিতার মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়েছিল, অর্থ-সম্পদ এই পরিমাণ ব্যয় হয়েছিল যার দরুন রাষ্ট্রীয় কোষাগার খালি হয়ে গিয়েছিল এমনকি সাধারণ জনগনও অর্থ-সংকটে পরে গিয়েছিল। তারপর দীর্ঘ সফর করা হয় এবং এর ব্যবস্থার জন্যও অনেক শ্রম ব্যয় করতে হয়। কিন্তু সেখানেও সরাসরি ‘কিতাল’ বা সমরযুদ্ধের সুযোগ হয়নি, (সেখানেও কিন্তু মূল লক্ষ্য কিতাল-ই ছিল)। ৪
সুতরাং আজও ‘জিহাদ’ ফরজে আইন; বরং ফরজ তো হয়ে গিয়েছে সেদিন-ই যেদিন ফার্ডিন্যান্ডও ঈসাবেলার সেনাবাহিনী মুসলমানদের আন্দালুস দখল করে নিয়েছে। এই ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’ই ইসলাম ও মুসলমানদের মাথা উঁচু করার মাধ্যম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানে আঘাতকারীকে প্রতিহত করার পথ। আর তাঁর আনিত দীনের বাস্তবায়নও এই জিহাদের প্রাথমিক ও মৌলিক শাখা– দাওয়াত, ইদাদ এবং কিতালের মাধ্যমেই হবে। মুসলিম উম্মাহর মা-বোন, মেয়ে, আঠারো বছর যাবত কাফেরদের যিন্দানখানায় পড়ে থাকা আফিয়া সিদ্দিকীর সম্মানহানি এবং মুসলমানদের পবিত্রতম রমনীদের পক্ষ থেকে কাফেরদের উপর প্রতিশোধ নেয়ার পথ (এটাই)। মসজিদে আকসা থেকে হারামাইন শরীফাইন পর্যন্ত ভূমিকে ইহুদী, খ্রিস্টানদের কালো থাবা থেকে রক্ষা করারও পন্থা এটাই। যে বাবরী মসজিদের উপর আজ রাম মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে সেই রাম মন্দিরকে ধূলোয় মিশিয়ে তার উপর পুনরায় বাবরী মসজিদ নির্মাণ করা ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’র দ্বারা-ই সম্ভব।
বেনারসে বাদশাহ আওরঙ্গজেব আলমগীর রহ. এর নির্মিত ‘জ্ঞানব্যাপী জামে মসজিদ’কে শহীদ করে ‘কাশী বিশ্বনাথ মন্দির’ (যেটাকে ভগবত সন্ত্রাসীরা আজকাল নিজেদের ‘মক্কা’ বানিয়ে নিয়েছে) বানানোর সংকল্প করেছে।৫ দিল্লীর কুতুব মিনার ও তার পার্শ্ববর্তী মসজিদ– ‘মসজিদে কুওয়তে ইসলাম’, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ দিল্লীর জামে মসজিদ– যেখানে শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ রহ. ও শাহ্ আব্দুল আজিজ রহ. হাদিসের মসনদ সুসজ্জিত করেছেন এবং মাওলানা শাহ ইসমাইল শহীদ রহ. ও মাওলানা আব্দুল হাই বারহানুভী রহ. এর মত মুজাহিদগণ বসবাস করতেন– সেই মসজিদকে মন্দির বানানোর পায়তারা করছে; আর তাজমহলকে ‘তেইজ মন্দির’ বানানোর ব্যবস্থা করছে। এদের গর্দান কেবল চাপাতির জোরেই ভাঙ্গা যাবে।
ইসলামাবাদের ‘লাল মসজিদ’ এবং ঢাকার ‘বাইতুল মুকাররম’ মসজিদের পাহারা কেবল ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’র মাধ্যমেই সম্ভব। যাতে করে আমেরিকা বা ভারতের ফ্রন্ট লাইন জোটের পাকিস্তানি অথবা বাংলাদেশি কোন সদস্য মসজিদগুলোকে পায়ের বুট দ্বারা অসম্মান করতে না পারে। কাশ্মীরকে ‘জিহাদী নবী’র ‘জিহাদী গোলামরা’ই দারুল ইসলাম বানাতে পারবে। আমেরিকা, ইসরাইল ও ভারত– এই ত্রি-শয়তানকে এই জিহাদের দ্বারাই খণ্ড-বিখণ্ড করা যাবে।
আজ খোদা-প্রদত্ত রাষ্ট্র– পাকিস্তানে এফ, এ, টি, এফ [Financial Action Task Force (FATF)] এর ইশারায় এবং তাদের চাপিয়ে দেয়া শর্তের কারণে মসজিদ মাদরাসার ওয়াকফ সম্পত্তির উপর আইন প্রণয়ন করে সেগুলোকে ‘মানি লন্ডারিং’ এর অপবাদ দেওয়া হয়েছে এবং এর মাধ্যমে মিম্বর ও মেহরাবগুলোকে তাদের করতলগত করা হয়েছে। সেগুলোকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার পদ্ধতিও কেবল ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’। শরীয়তের বাস্তবায়নের জন্য মেহনতী উলামায়ে কেরাম, দায়ী ও মুজাহিদগণকে বন্দী করে, গুপ্ত টর্চার সেলে নিয়ে ড্রিল মেশিন দিয়ে তাদের শরীর পঙ্গু করে দিয়ে এবং ইস্ত্রি দিয়ে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দিয়ে তারপর তাদের মা-বোন ও স্ত্রী-সন্তানদের ইজ্জত-সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এবং তাদের বিরুদ্ধে বিশালাকারে সেনা অভিযান করা অসম্ভব ছিল। কারণ এরপর হয়ত মসজিদ-মাদরাসার ওয়াকফ সম্পত্তির পালা আসতো না। কিন্তু আজ এফ, এ, টি, এফের শর্তের মাধ্যমে সবগুলোই চলে এসেছে। এখন সকল মতাদর্শের উলামায়ে কেরাম ও ধর্মীয় নেতারা এর বিরুদ্ধে সমাবেশ করে নিন্দা জ্ঞাপন করছেন এবং বর্তমান সরকারকে এ আইন উঠিয়ে নিতে বলছেন, এমনকি তারা এ আইনকে শরীয়ত বিরোধীও বলতেও দ্বিধা করছেন না। এখন তাঁরা প্রশ্ন উঠাচ্ছেন যে, ‘পাকিস্তানের ইসলামী সংবিধান’ আজ কোথায়?
তবে এখানে স্মরণ রাখার বিষয় হল– শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সীমিত পরিসরে কিছু সভা-সমাবেশ, মিটিং-মিছিল, আবেদন ও স্মারকলিপি পেশ করার দ্বারা এ সমস্যার সমাধান হবে না। বরং এর সমাধানও ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’ (দাওয়াত, ইদাদ ও কিতাল) এবং দীন প্রতিষ্ঠা ও শরীয়ত বাস্তবায়নের আন্দোলনের দ্বারা হবে। “যে বস্তু জোরে ছিনিয়ে নেয়া হয় তা জোরের মাধ্যমেই ফিরিয়ে আনতে হয়”।
যদি এ আইনের সমাধান দাওয়াত ও জিহাদ ছাড়া অন্য কিছুর মাধ্যমেই হত তাহলে ঐ বিশাল সমাবেশের মাধ্যমেই হয়ে যেত– যেটা পাকিস্তানের সকল ধর্মীয় দল ও মতাদর্শের সিনিয়রদের প্লাটফর্ম ‘অল পার্টিস তাহরীকে তাহাফ্ফুজে মাসাজিদ ওয়া মাদারিস’ এর অধীনে হয়েছিল। যেখানে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, জামাতে ইসলামী, জমিয়তে আহলে হাদীস, এত্তেহাদে তানযিমাতে মাদারেস, বেফাকুল মাদারেসুল আরাবিয়া, বেফাকুল মাদারেসুস সালাফিয়া, রাবেতাতুল মাদারেসসহ আরো অনেক দল সম্মিলিতভাবে স্মারকলিপি প্রদান করেন। কিন্তু এগুলোর দ্বারা কি বিষয়টির কোন সমাধান হয়েছে!?৬
এখানে আনন্দের যে বিষয় সেটি হল, আলহামদুলিল্লাহ ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ; বড় একটি প্লাটফর্ম থেকে এ প্রশ্ন উঠানো হয়েছে যে, ‘পাকিস্তানের ইসলামী সংবিধান ও আইন আজ কোথায়?’ এবং প্রণয়নকৃত আইনকে শরীয়ত বিরোধী বলা হয়েছে। মূলত এই বিষয়টিকেই কুফরী শাসন ব্যবস্থা আলোচনায় আসতে দিতে চায় না। এটা কেমন অবিচার যে, সাত আসমানের উপর থেকে নাযিলকৃত পবিত্র শরীয়ত ও তার বিচার-ফায়সালা নিয়ে মতামত পেশ করা যাবে, কিন্তু বর্তমানে প্রচলিত ‘আইন ও নীতিমালা’ ইসলামী হয়েছে কিনা– তা নিয়ে প্রশ্ন উঠানো যাবে না বরং এটাকে এমন মনে করা হয় যেন তা ‘কুফরে বাওয়াহ’ বা প্রকাশ্য কুফুরের থেকে মারাত্মক। বর্তমান রাজনীতিতে ‘আইন’কে ওহীর সমপর্যায়ের, বরং তার চেয়েও সম্মানী ‘সহীফা’ (পবিত্র পুস্তিকা) মনে করা হয়। আর এ জন্যই ইংরেজি কালো বই সামনে রেখে প্রণয়নকৃত আইনের বিরোধিতা কেউ যদি করে তাহলে তার শাস্তি হয় হত্যা না হয় জোরপূর্বক অপহরণ আর না হয় জেলখানার অন্ধাকার কক্ষ। অথচ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে যারা বেয়াদবী করে তাদেরকে প্রাদেশিক গভর্নর, হাইকোর্টের চীফ জাস্টিস বানানো হয় এবং কাদিয়ানীদের খুব ঘনিষ্টতম আত্মীয়কে সেনা প্রধান করা হয়।
এখন প্রয়োজন হল, প্রণয়নকৃত এই নতুন আইনের কারণে যে সকল প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে সেগুলোকে কোন প্রকার চাপের কারণে ভেস্তে যেতে না দেয়া এবং এ রাষ্ট্র ও আইনকে শরয়ী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে পর্যালোচনা করা যে– পাকিস্তান ও পাকিস্তানের জনগণের এ উপমহাদেশে একটি মৌলিক অবস্থান রয়েছে। দীনের সহযোগিতা, কাশ্মীর, গুজরাত, আসাম ও বার্মাসহ এ অঞ্চলের সহযোগিতা করা যে পরিমাণ তাদের উপর আবশ্যক অন্য কারো উপর হয়ত সে পরিমাণ আবশ্যক নয়। পাকিস্তানীদের উপর আবশ্যক হওয়ার কারণও তাদের নিজস্ব দাবী– ‘পাকিস্তানের উদ্দেশ্য কী? লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ!’ আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’– কেবল একটি বাক্য নয় যে, মুখের উচ্চারণের দ্বারা তার ফরজ আদায় হয়ে যাবে।
বিজ্ঞজন তো বলেই দিয়েছে যে, ‘লা ইলাহা ইল্লাহ’র হয়েছে কী অর্জন
যদি না হয় চক্ষু-মন মুসলমান; তবে নাহি আসবে কোন সামান
পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক শাসকগণ যেখানে একে ‘মদীনায়ায়ে ছানী’ (দ্বিতীয় মদীনা) বানাবে সেখানে তারা বানিয়েছে সুদ-ঘুষের আড্ডাখানা, কখনো বা পি. আই. এলে নির্লজ্জ ও উলঙ্গ নৃত্যের আকৃতি, কখনো নারী আন্দোলনের র*্যালি, কখনো বা জিহাদী চলচ্চিত্রে (‘মেরা সুলতান’ থেকে শুরু করে ‘আর্তুগ্রুল’) মুজাহিদদের বীরঙ্গনা স্ত্রীদের প্রেমালাপের নিষিদ্ধ চিত্র। আর এর মাধ্যমে জাতির যুবকদের যে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে তার সমাধান ‘জিহাদ’ ব্যতিত আর কী হতে পারে? ৭ ‘নাহী আনিল মুনকার’ তথা অন্যায়ে বাধা প্রদান ব্যতিত মিষ্টি মিষ্টি দাওয়াত– ডংকাখানায় তোতা পাখির আওয়াজেরও কাজ দেয় না। كَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائِرٍ অর্থাৎ জালিম বাদশাহর সামনে সত্য কথা বলা– এর পরিবর্তে বাদশাহর স্ত্র্রীদের নেকাবঢাকা মুখ দেখে খুশি হওয়া এবং তাকে ‘মদীনায়ে ছানী’র কৃতিত্ব মনে করা মূলত নিজেদের মন, মস্তিষ্ক ও চক্ষুকে পর্দায় ঢেকে রাখারই নামান্তর।
এখানে গুরুত্বপূর্ণ ও চিন্তার বিষয় হল, আজ পাকিস্তানে চলমান করোনা ভাইরাসের মারাত্মক ঢেউ মূলত দীন-শরীয়ত থেকে বিমুখতা ফসল। আরেকটু পরিষ্কার করে বললে– দীন-শরীয়তের বিরোধী সংস্কৃতির আলোকে নিজেদের সামাজিক জীবন পরিচালনা করার ফলাফল। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ (سورة الأنفال 8: 25)
আর তোমরা এমন ফাসাদ থেকে বেঁচে থাক যা কেবল তাদের উপরই পতিত হবে না যারা তোমাদের মধ্যে জালেম। আর জেনে রেখ, আল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠোর। (সুরা আনফাল ৮:২৫ )
অবশ্য ঈমানদারদের মধ্য থেক অনেক পবিত্র ও তাক্ওয়াবান ব্যক্তি*ও করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ এ মহামারি তাদের জন্য ক্ষমা ও রহমতের দুয়ার হবে। কিন্তু বিগত দের বছর যাবত মহামারি করোনা ভাইরাসের ব্যাপক প্রকোপের দ্বারা এ কথাই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আসমানী এ আযাবের আঘাত বিশেষভাবে খোদাদ্রোহীদের উপর আসছে। যেই যেই স্থানে, যেই যেই জাতি সামাজিকভাবে আল্লাহর নাফরমানীতে যতবেশি লিপ্ত হয়েছে ততবেশি তারা এই খোদায়ী আযাবের শিকার হয়েছে।
ভারতের গোয়েন্দা বিভাগ ‘র’ এর হামলা এবং অমুসলিমদের প্রতি ভ্রাতৃত্ব ও সহানুভূতির হাত প্রসারিত করার সাথে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীগুলো (শেষ যমানায় গাযওয়ায়ে হিন্দের সংঘটিত হওয়া)কে শিক পরিবারের প্রোপাগান্ডা হিসেবে প্রচার করা মূলত হিন্দুদের ছুরির আঘাতে যবাই হওয়ার পরিবর্তে নিজে নিজে আত্মহত্যা করার পদক্ষেপ নেয়ার নামান্তর। আর তা এমন আত্মহত্যা হয় যার ফলে দেহের পূর্বেই আত্মার মৃত্যু ঘটে।
২০২১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দশকের দিকে হাজী শরীয়তুল্লাহর ভূমি– বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণ-জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য হিন্দুত্ববাদীর মদদপুষ্ট হয়ে বসা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মুসলমানদের হত্যাকারী এবং ইসলামের দুশমন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। স্বাধীনতার সূবর্ণ-জয়ন্তী অনুষ্ঠানে মোদির যোগ দেয়া পরিকল্পিতভাবেই হয়েছে। বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা ও সংস্কৃতির ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্যই এ পরিকল্পনা । এহেন পরিস্থিতিতে হাজী শরীয়তুল্লাহ (রহ.), সাইয়্যেদ তিতুমীর শহীদ (রহ.) ও নবাব সিরাজুদ্দৌলা শহীদ রহ. এর বাংলায় অনেক ঈমানদার লোক মোদির বিরুদ্ধে মিছিলে ঘর থেকে বের হয়। কিন্তু সরকারের (মূলত আর এস এস এর) মদদপোষ্ট গুণ্ডাবাহিনী বাইতুল মুকাররম মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের উপর হামলা করে। ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশে বিশজনের মত মুমিন-মুসলমানকে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে শহীদ করা হয় এবং পঞ্চাশের মত মুসলিমকে ছুরি ও রামদা দিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। এর চেয়েও ন্যাক্কারজনক বিষয় হল– হিন্দুত্ববাদী বাংলাদেশী সরকার প্রসিদ্ধ একটি দীনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও গুণী আলেমের উপর ধর্ষণের মত গর্হিত কাজের অপবাদ দেয়। সায়্যেদ তিতুমীর ও হাজী শরীয়তুল্লাহ্ (রহ.) যেই ইসলাম বাস্তবায়নের জন্য বাংলার ভূমিকে জিহাদ ও দাওয়াতের আন্দোলন দাঁড় করেছিলেন এবং নবাব সিরাজুদ্দৌলাহ যেই ‘ওয়ার্ল্ড ওয়ার্ডার’এর উপনিবেশী শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে মুর্শিদাবাদে শাহাদাতের সুধা পান করেছিলেন সেই উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের কী পদ্ধতি হতে পারে?
সুতরাং উপরোল্লিখিত মহান উদ্দেশ্যগুলোকে সামনে রেখে বাংলার বাইতুল মুকাররম মসজিদ থেকে শুরু করে সুন্দরবন পর্যন্ত এবং টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত স্থাপিত ছোট ছোট ছাপড়া মসজিদের নামাযি মুসল্লি ও মুসলমান নর-নারীর সম্মান এবং উলামায়ে কেরামের মান-মর্যাদা রক্ষার একটিই মাধ্যম; আর সেটি হল– ‘‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’’।
জিহাদ-ই ঐ পন্থা যার দ্বারা ‘পৃথিবীতে দারিদ্রতার বিমোচন’ এবং ‘দুনিয়া ও আখেরাতের স্বচ্ছলতা’ পর্যন্ত পৌঁছা সম্ভব। অন্যথায় আমাদের এমন ‘বুঝ’ যা সাহাবা কেরাম রা. এর অর্জন ছিল না তা আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে লাঞ্ছিত করে ছাড়বে।
সুতরাং এ সকল যুদ্ধের জন্য নিজেদের সন্তান, জান, মাল, চিন্তা-চেতনা, বয়ান-বক্তৃতা এবং কলম ও মিডিয়াকে ওয়াকফ করে গাজী ও শহীদি হামলাকারী, তায়েফাতুল মানসুরাহ বা সহযোগী সংগঠনের অংশ হিসেবে উলামা, দায়ী, মুজাহিদ ও মুকাতিল (ময়দানের সম্মুখ যোদ্ধা)র সংখ্যা দিন দিনি বৃদ্ধি করুন। এর পরিবর্তে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তির সার্টিফিকেট, মহান আল্লাহর অভিভাকত্ব, শাহাদাত ফি সাবিলিল্লাহর সুসংবাদ, সাইয়্যেদুনা ঈসা (আ.) ও সাইয়্যেদুনা মাহদী (রা.) এর সাহচর্য এবং এর চেয়েও বড় বিষয় হল– মহিয়ান, গরিয়ান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দুজাহানের সরদার হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে হাউজে কাউসারের পিয়ালা প্রাপ্তির ওয়াদা। আসুন আমরা সকল প্রকার মূর্তি ভেঙ্গে ফেলি; চাই তা নফস ও প্রবৃত্তির হোক, চাই তা জাতিয়তাবাদ বা রাজতন্ত্রের হোক অথবা আমেরিকা ও ভারতের ওয়ার্ল্ড ওয়ার্ডের হোক। ঐ সকল গাজীদের হাতে হাত মিলিয়ে এবং তাদের কন্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে ঘোষণা দিচ্ছি যে,
ألا قولو لأمريكا
لغير الله لن نركع
نجاهد في سبيل الله
لم نخضع ولن نخشع ৮
বলে দাও আমেরিকাকে
আমরা শির নত নাহি করি আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে
জিহাদ করি খোদার রাহে
না হয়েছি কারো অধীনস্ত, না ভয় করি কাউকে।
اللهم وفقنا كما تحب و ترضى و خذ دمائنا حتى ترضى. اللهم زدنا ولاتنقصنا وأكرمنا ولا تهنا وأعطنا ولا تحرمنا وآثرنا ولاتؤثر علينا وأرضنا و ارض عنا. الله انصر من نصر دين محمد صلى الله عليه وسلم واجعلنا منهم واخذل من خذل دين محمد صلى الله عليه وسلم ولاتجعلنا منهم، آمين يا رب العالمين!
--------------------------
টিকা:
১.বিস্তারিত দেখুন শায়েখ আব্দুল্লাহ আযযাম শহীদ রহ. এর লিখিত ‘আহাম তরীন ফরযে আইন’ এবং শহীদ ইবনুন নুহাস রহ. এর স্নায়ুযুদ্ধ বিষয়ক ‘মাশারিউল আশওয়াক ইলা মাসারিউল উশ্শাক', সাথে আরো দেখতে পারেন শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা ফজল মুহাম্মদ ইউসূফযাই (হাফিজাহুল্লাহ) এর লেখা ‘দাওয়াতে জিহাদ’।
২ ‘মাশারিউল আশওয়াক’ এর উপর শায়খ আনওয়ার আওলাকী শহীদ রহ. এর অডিও লেকচার থেকে সংগৃহিত।
৩ শায়খ আনওয়ার আওলাকী শহীদ রহ. এর ‘মাশারিউল আশওয়াক’ এর অডিও লেকচার থেকে সংগৃহিত।
৪ যারা জিহাদ ফরজে আইন হওয়ার ব্যাপারে এ প্রশ্ন তুলে যে, যদি পুরো উম্মত জিহাদের জন্য বের হয়ে যায় তাহলে উম্মতের অন্যান্য বিষয়াদী কে সমাধা করবে? তাদের জন্য গাযওয়ায়ে তাবুকের ঘটনার মধ্যে বড় শিক্ষা রয়েছে। মুমিনের সংখ্যা শুধুমাত্র ত্রিশ হাজার-ই হোক না কেন তারপরও যদি সকলেই শত্রুর সামনে চলে আসে তাহলে যুগে সুপার পাওয়ারও মোকাবেলা করার ভয়ে বাহিরে না বের হয়ে ঘরে বসে থাকবে, তখন মুমিনরা বিজয় উৎসব করবে। তাছাড়া এখন দেখুন, আফগান জনগনের ‘ইমারাতে ইসলামিয়া’ এর নেতৃত্বে বর্তমানের ‘সুপার পাওয়ার’ এবং তার সহযোগিতায় আসা চল্লিশটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ন্যাটো বাহিনীকে পরাজয়ের গ্লানিত নাকানি-চুবানি খাওয়ানো ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’র ফরজ দায়িত্বে সম্মেলিতভাবে হাজিরা দেওয়ারু দ্বারাই সম্ভব হয়েছে।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, আর তা হল– ‘গাযওয়ায়ে তাবুক’ এমন এক যুদ্ধ যাতে সরাসরি কোন প্রকার আক্রমণ-ই হয়নি। অর্থাৎ এমন কোন অবস্থার সৃষ্টি হয়নি যার কারণে মানুষের কল্পনায় মৃত্যুর কথা আসে; কিন্তু এটা এমনই এক যুদ্ধ ছিল যা সত্যবাদী মুমিন ও মিথ্যাবাদী মুনাফেকদের মাঝে পার্থক্য স্পষ্ট করে দিয়েছে।
৫ এদারার (উল্লেখিত আলোচনার) এ কথাগুলো মূলত লেখা হয়েছে¬ ভারত থেকে একটি হৃদয় বিদারক বার্তা পৌঁছার পর। আর তা হল, বেনারসের সিভিল জজ ‘জ্ঞানব্যাপী জামে মসজিদের’ এরিয়াকে সার্ভে করার আদেশ দিয়েছে। যেন জানা যায়– তা মন্দিরের উপর নির্মাণ করা হয়েছে। আসলে এ পদক্ষেপ আওরাঙ্গজেব আলমগীর রহ. এর নির্মাণকৃত মসজিদকে শহীদ করার প্রথম ধাপ। اللهم أكفنا من حيث شئت ومن أين شئت
৬ মাসিক বায়্যিনাত ফেব্রুয়ারী ২০২১ সংখ্যা।
৭ ইসলামী চরিত্র ও কৃতিত্ব ধ্বংস করার এক পন্থা হল এই– যুবকদের জন্য হালালের পথ (বিবাহ যা দেহ ও মনের প্রশান্তির মাধ্যম)কে ডজন খানিকের মত প্রতিবন্ধকতার মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, আর অন্য দিকে টিভি, স্মার্ট ফোন থেকে নিয়ে রাস্তার নর্তকীরা পর্যন্ত ‘আমার দেহ আমার ইচ্ছা’র এমন স্লোগান তুলছে যে, আল আমান ওয়াল হাফিজ এবং এ সবকিছুর পর কুসূর থেকে লাহোর ও শিয়ালকোটের মোটরওয়ে পর্যন্ত এমন কিছু ঘটনা তৈরি করা– যেগুলোকে না আমাদের বুঝে আসে (আসলেই আমরা বুঝতে চাই না), না সেগুলোর কোন সমাধান পেশ করা হয় (যেগুলোকে আমরা আসলেই সমাধান করতে চাই না)।
৮ হাকীমুল উম্মত শায়খ আইমান আয যাওয়াহেরী ( আদামাল্লাহু ফুয়ুযাহু ওয়া বারাকাতুহু)
Comment