স্মৃতির পাতায় ৫-৬ই মে...আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটা বিস্ময়কর কাহিনী।
==========================================
গত ১৩ সালের ৬ই মে। ফজরের আজানের ধ্বনী চারিদিক থেকে ভেসে আসছে। ঠিক এই মূহুর্তে মতিঝিলের কোন এক ময়লার স্তুপকে আশ্রয়স্থাল হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম। মূহু মূহু বুলেট আর গ্রেনেডের আওয়াজে বুঁকের ভিতরটা ভয়ে “দপ” “দপ” করে কেঁপে উঠছে বার বার! না জানি মানুষরূপী ঐ হায়েনা ও নরখাদকগুলো কখন হামলে পড়ে..!
এখন আঁকাশ একটু ফর্সা। সেই সাথে গুলি আর গ্রেনেডের আয়াজও কুমেছে। নিজের জান বাঁচানোর জন্য যার যার গন্তব্যে রওয়ানা শুরু। আমিও বঙ্গ ভবনের প্রাচিরের কোল ঘেষে রওয়ানা দিয়েছি মাদরাসার উদ্দেশে! দূর দূর বুঁক কাঁপছে না জানি পুলিশ গুলি চালায় কি, না! আমি এবছরই ঢাকয় এসেছি। রাস্তা-ঘাটেরর তেমন কোন কিছুই আমার চিনা নেই। কিন্তু যে কোন মূল্যে আমাকে তো যেতেই হবে আমার গন্তব্যে। অচেনা পথে চলতে চলতে এক সময় বাইতুল মোকাররমের সামনের অবস্থা দেখে আৎকে উঠলাম, চারিদিকে এ কি বিভৎস অবস্থা..! মনে হচ্ছে যুদ্ধপরবর্তী অবস্থা! শুধু ছায় আর ইট-পাথরের ধ্বংসস্তুপ পড়ে আছে চারিদিকে। পুলিশ লাইন দিয়ে বসে আছে, মনে হচ্ছে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতি মধ্যেই আমার সামনে একজন পুলিশ এসে হাজির, তৃরস্কারের সূরে বলে উঠল, “কেমন আছো হুজুর”? পরবর্তির অবস্থার কথা না ভেবেই আমিও পাল্টা তার মতেই উচ্চ স্বরে জবাব দিলাম, "অনেক ভালো আছি”! বসে থাকা পুলিশগুলো শুনে হা.. করে তাকিয়ে আছে আমার পানে। পুলিশটা আমার কাছে এসে বললো, বাড়ি কোথায় তোর? আমি বললাম...! পুলিশ আমাকে চোখ রাঙ্গিয়ে বললো পাছার উপর মনে হয় ডান্ডা পড়েনি না??? লাঠিটা উপরে তুলে বললো পাছার উপর একটা দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে!! সোজা যাবি!!!
এমনিতেই মাথার টুপি পায়ের জুতা আগেই হারিয়ে ফেলেছি আর পরনের পানজাবির অবস্থাও ছিলো খুবই করুণ ময়লা দ্বারা ভর্তি ছিল..! গাড়ি না পেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে প্রায় মুহাম্মদপুরে এসে পড়লাম। সকাল হয়তো ৭ টা বাজে মাদারাসায় এসে পৌছালাম। আমাকে পেয়ে ছোট চাচা বাচ্চার মতো হাওমাও করে কেঁদে ফেললো আর কান্না সুরে বললো কই ছিলি তুই! আমি বুঝেছিলাম তখন আমাকে তিনি কত ভালোবাসেন..! আমার উস্তাদ, সাথী এবং বাড়ির সবাই ধরেই নিয়েছিলো আমি হয়তো দুনিয়াতে বেঁচে নেই।
পরে আমার চাচা তাঁর ভাব ব্যক্ত করে বলেছিলেন `আমি নিশ্চিৎ ধরে নিয়েছিলাম তুমি হয়তো দুনিয়াতে আর নেই! কিন্তু আমি বারবার চিন্তা কররছিলাম, আমার ভাতিজার যদি মৃত্যুই হয় থাকে তবে তার লাশ কোথায় পাবো আমি আর কোথায়-ই বা খুজবো। আর আমি আমার ভায়ের কাছে কিভাবে মুখ দেখাবো, আমি কি নিয়ে তাদের কাছে যাবো! সব ছাত্র উপস্থিত কিন্তু তোকে নিখোজ দেখে আমি পুরাই ভেঙ্গে পড়েছিলাম। আমি বারবার খোদার দরবারে প্রার্থনা করেছি, আমার ভাতিজাকে তুমি আমার বুঁকে ফিরিয়ে দাও!
আমি আর লিখতে পারছি না চোখের পানিতে আর বাঁধ মানছেনা, কিবোর্ড পুরা ভিজে গেছে, চোখের পানিতে। শুধু আমার প্রাণ প্রিয় চাচার ভালোবার সেই কথা এবং সৃতিগুলো মনে পড়ে..!
আমি সেই দিন থেকে প্রতিঙ্গা করেছি, `যেই হাতে কলম ধরেছি আবার সেই হাতে অস্ত্র তুলে নিবো এবং আমার ভায়ের এক এক ফোঁটা রক্তের বদলা উঠাবো। পৃথিবীর কোন মায়ের সন্তান নেই যে, আমার এপথ কে রুদ্ধ করতে পারে..! ইনশাআল্লা অচিরেই আমি আসছি আমার ভাইদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নিতে। তৈরী থাকো, হে মূর্তাদ তাগুতী শক্তি।
==========================================
গত ১৩ সালের ৬ই মে। ফজরের আজানের ধ্বনী চারিদিক থেকে ভেসে আসছে। ঠিক এই মূহুর্তে মতিঝিলের কোন এক ময়লার স্তুপকে আশ্রয়স্থাল হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম। মূহু মূহু বুলেট আর গ্রেনেডের আওয়াজে বুঁকের ভিতরটা ভয়ে “দপ” “দপ” করে কেঁপে উঠছে বার বার! না জানি মানুষরূপী ঐ হায়েনা ও নরখাদকগুলো কখন হামলে পড়ে..!
এখন আঁকাশ একটু ফর্সা। সেই সাথে গুলি আর গ্রেনেডের আয়াজও কুমেছে। নিজের জান বাঁচানোর জন্য যার যার গন্তব্যে রওয়ানা শুরু। আমিও বঙ্গ ভবনের প্রাচিরের কোল ঘেষে রওয়ানা দিয়েছি মাদরাসার উদ্দেশে! দূর দূর বুঁক কাঁপছে না জানি পুলিশ গুলি চালায় কি, না! আমি এবছরই ঢাকয় এসেছি। রাস্তা-ঘাটেরর তেমন কোন কিছুই আমার চিনা নেই। কিন্তু যে কোন মূল্যে আমাকে তো যেতেই হবে আমার গন্তব্যে। অচেনা পথে চলতে চলতে এক সময় বাইতুল মোকাররমের সামনের অবস্থা দেখে আৎকে উঠলাম, চারিদিকে এ কি বিভৎস অবস্থা..! মনে হচ্ছে যুদ্ধপরবর্তী অবস্থা! শুধু ছায় আর ইট-পাথরের ধ্বংসস্তুপ পড়ে আছে চারিদিকে। পুলিশ লাইন দিয়ে বসে আছে, মনে হচ্ছে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতি মধ্যেই আমার সামনে একজন পুলিশ এসে হাজির, তৃরস্কারের সূরে বলে উঠল, “কেমন আছো হুজুর”? পরবর্তির অবস্থার কথা না ভেবেই আমিও পাল্টা তার মতেই উচ্চ স্বরে জবাব দিলাম, "অনেক ভালো আছি”! বসে থাকা পুলিশগুলো শুনে হা.. করে তাকিয়ে আছে আমার পানে। পুলিশটা আমার কাছে এসে বললো, বাড়ি কোথায় তোর? আমি বললাম...! পুলিশ আমাকে চোখ রাঙ্গিয়ে বললো পাছার উপর মনে হয় ডান্ডা পড়েনি না??? লাঠিটা উপরে তুলে বললো পাছার উপর একটা দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে!! সোজা যাবি!!!
এমনিতেই মাথার টুপি পায়ের জুতা আগেই হারিয়ে ফেলেছি আর পরনের পানজাবির অবস্থাও ছিলো খুবই করুণ ময়লা দ্বারা ভর্তি ছিল..! গাড়ি না পেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে প্রায় মুহাম্মদপুরে এসে পড়লাম। সকাল হয়তো ৭ টা বাজে মাদারাসায় এসে পৌছালাম। আমাকে পেয়ে ছোট চাচা বাচ্চার মতো হাওমাও করে কেঁদে ফেললো আর কান্না সুরে বললো কই ছিলি তুই! আমি বুঝেছিলাম তখন আমাকে তিনি কত ভালোবাসেন..! আমার উস্তাদ, সাথী এবং বাড়ির সবাই ধরেই নিয়েছিলো আমি হয়তো দুনিয়াতে বেঁচে নেই।
পরে আমার চাচা তাঁর ভাব ব্যক্ত করে বলেছিলেন `আমি নিশ্চিৎ ধরে নিয়েছিলাম তুমি হয়তো দুনিয়াতে আর নেই! কিন্তু আমি বারবার চিন্তা কররছিলাম, আমার ভাতিজার যদি মৃত্যুই হয় থাকে তবে তার লাশ কোথায় পাবো আমি আর কোথায়-ই বা খুজবো। আর আমি আমার ভায়ের কাছে কিভাবে মুখ দেখাবো, আমি কি নিয়ে তাদের কাছে যাবো! সব ছাত্র উপস্থিত কিন্তু তোকে নিখোজ দেখে আমি পুরাই ভেঙ্গে পড়েছিলাম। আমি বারবার খোদার দরবারে প্রার্থনা করেছি, আমার ভাতিজাকে তুমি আমার বুঁকে ফিরিয়ে দাও!
আমি আর লিখতে পারছি না চোখের পানিতে আর বাঁধ মানছেনা, কিবোর্ড পুরা ভিজে গেছে, চোখের পানিতে। শুধু আমার প্রাণ প্রিয় চাচার ভালোবার সেই কথা এবং সৃতিগুলো মনে পড়ে..!
আমি সেই দিন থেকে প্রতিঙ্গা করেছি, `যেই হাতে কলম ধরেছি আবার সেই হাতে অস্ত্র তুলে নিবো এবং আমার ভায়ের এক এক ফোঁটা রক্তের বদলা উঠাবো। পৃথিবীর কোন মায়ের সন্তান নেই যে, আমার এপথ কে রুদ্ধ করতে পারে..! ইনশাআল্লা অচিরেই আমি আসছি আমার ভাইদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নিতে। তৈরী থাকো, হে মূর্তাদ তাগুতী শক্তি।
Comment