স্বামীর চেহারাটাও ভালোভাবে মনে নেই মুহতারামা মহুয়ার। মাত্র চারদিনের সংসার ছিল তার। ভালো করে মুকুলকে বুঝে ওঠার আগেই চোখের সামনেই তাকে ধরে নিয়ে গেল পুলিশ। সেই দেখাই যে শেষ দেখা হবে সেটা কী আর জানতেন...! আবেগের অশ্রু লুকিয়ে ফেলে চার মাস আগের কথা মনে করতে বসেন মহুয়া ।
‘সেদিন ছিলো ২৩ ফেব্রুয়ারি। এর চারদিন আগেই মুকুল রানার সঙ্গে বিয়ে হয় আমার। উনি বললেন, তার বাড়িতে (শ্বশুরবাড়ি) নিয়ে যাবেন। আমরা তৈরি হয়ে একটা ইঞ্জিনভ্যানে চড়ে জগন্নাথপুর থেকে যশোর শহরের বসুন্দিয়া বাজারে যাই। সেখানে নামা মাত্র কয়েকজন লোক ‘এই যে মুকুল’ বলে ওনার শার্টের কলার চেপে ধরে টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যায়। আমি দৌড়ে বাজারের একপাশে এসে একটা মোবাইল ফোনের দোকানে ঢুকি। সেখান থেকে ফোন করে বাড়িতে ঘটনাটা জানাই। সেই শেষ দেখা আমাদের। আর তার খোঁজ পাইনি। চার মাস পর খোঁজ পাইলাম তার লাশের।’
ডিবি পুলিশের দাবি করা কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত মুকুল রানার বিষয়ে এটুকু তথ্যই দিতে পেরেছেন তার বিধবা স্ত্রী মহুয়া সুলতানা পিয়ারী। এ ঘটনার পর পুলিশ তার এক ভাইকেও জঙ্গি সন্দেহে ধরে নিয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করারও সাহস হারিয়ে ফেলেছেন তিনিসহ তাদের পুরো পরিবার। অবস্থা এমনই যে, স্বামীর পর এবার যদি ভাইয়ের কিছু ঘটে এই আশঙ্কায় স্বামীর মরা মুখটাও দেখতে যাননি তিনি।
এ বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মহুয়া সুলতানা পিয়ারীর সঙ্গে বিয়ে হয় সাতক্ষীরার ধুলিহর ইউনিয়নের বালুইগাছা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে মুকুল রানার। বিয়ের দিন বিকেলে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি যান এবং পরদিন ফের স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসেন। এর চারদিন পর আবারও স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে সাদা পোশাকের পুলিশ মুকুলকে আটক করে। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি মহুয়ার ভাই আমির হোসেন (ইঞ্জিনচালিত ভ্যানচালক) এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালী থানায় জিডি করেন। এরপর তারা বেশ কয়েকবার যশোর, নড়াইলসহ বিভিন্ন স্থানে মুকুলের সন্ধান করেও তার কোনও হদিস পাননি।
মহুয়া জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তাকে অনেক খুঁজেছে বলে শ্বশুর তাকে কয়েক দফা ফোনে জানান।
মুকুল আটকের ১৭ দিন পর তার ছোট ভাই মুজিবর রহমান ঢাকায় যান ভাবির চিকিৎসা সংক্রান্ত খোঁজ-খবর নিতে। ওই সময় তাকেও পুলিশ আটক করে।
কিন্তু কী কারণে তার স্বামী ও ভাইকে পুলিশ আটক করেছে- তা এই পরিবারের কেউই বলতে পারেননি।
এক প্রশ্নের জবাবে মহুয়া ও তার মা মাহমুদা বেগম জানান, আমরা কোনও রাজনৈতিক দল করি না। গরীব মানুষ, কীভাবে সংসার চলবে এই চিন্তায় আমাদের দিন কাটে।
মুকুল রানার শ্বশুরের নাম মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস, পেশায় কৃষক। সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা মেলেনি তার। বাড়িতে থাকা তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম জানান, সকালেই তিনি ক্ষেতে চলে গেছেন কাজ করতে। মাহমুদা জানান, আমরা গরিব মানুষ, দিন এনে দিন খেতে হয়। তাদের তিন ছেলে, এক মেয়ে। বড় দুজন জাকির হোসেন ও আমির হোসেন আলাদা থাকেন। ছোট ছেলে মুজিবর রহমান তাদের সঙ্গে থাকতেন।
মুকুল রানার বাবা আবুল কালাম আজাদ
তিনি জানান, ছোট ছেলে মুজিবর রহমানের বসুন্দিয়া বাজারে ছোট একটা আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকান ছিল। তাকে আটকের পর তাদের সংসার চালাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।
মেয়ে জামাই নিহত, তার লাশ উদ্ধার বা জানাজার বিষয়ে তেমন কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি এই পরিবারের সদস্যদের। আপনারা কেন সাতক্ষীরায় যাননি- এমন প্রশ্নের জবাবে মহুয়ার মা মাহমুদা জানান, আমার ছোট ছেলে আটকের পর আমরা সবকিছুই হারিয়েছি। আমাদের তেমন স্বচ্ছলতা নেই যে সাতক্ষীরায় যাবো। বিষয়টি মেয়ের শ্বশুরকেও জানিয়েছি।
প্রসঙ্গত, মাহমুদা যশোরের নওয়াপাড়া কওমি আমিনিয়া মাদ্রাসায় মেশকাত (এইচএসসি সমমান) পড়ছেন।
এদিকে, মহুয়ার দাবিকে সমর্থন করেছেন তার শ্বশুর নিহত মুকুলের বাবা আবুল কালাম আজাদ। তিনিও বলেছেন, তার ছেলে মুকুলকে নববিবাহিতা স্ত্রীর সামনেই আটক করে সাদা পোশাকের পুলিশ। বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে আটকের সময় ছেলের সঙ্গে থাকা বিয়ের নতুন ল্যাগেজ, ২৫ হাজার টাকা, স্বর্ণের আংটি, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনও পুলিশ নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন আবুল কালাম আজাদ।
মুকুলের বাবা আরও বলেন, কিছুদিন আগে ছয়জঙ্কে ধরিয়ে দিতে ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল সে ছবিতে আমার ছেলে মুকুল রানার পরনে যে শার্ট ছিল সেটা আমরা কখনও তাকে পরতে দেখিনি। যেদিন পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায় সেদিন তার পরনে যে শার্টটি ছিল সেটি বিয়ের সময় সাতক্ষীরার ধুলিহর বাজারের একটি দর্জির কাছ থেকে সে বানিয়ে নিয়েছিল। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার পরেও তার পরিধানে ছিল একই শার্ট।
http://www.banglatribune.com/country...A6%BE%E0%A7%9F
মুহতারাম ভাইয়েরা! আমরা আমাদের এই মুহতারামা বোনের কথা কি ভাবছি? হে ভাইয়েরা! আমি এই শহীদ ভাইয়ের রক্তের বদলা নিতে প্রস্তুত আছি। আপনারা কি এই ভাইয়ের বদলা নিবেননা!?
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রক্তে প্রচণ্ড স্রোত সৃষ্টি করে দিন, যা আমাদের শহীদ ভাইদের বদলা নিতে প্রবাহিত হবে। হে আল্লাহ! আমার এই ভাইয়ের পরিবার ও পরিজনকে সবর অবলম্বন করার তাওফিক দান করুন! হে আল্লাহ! শহীদ এই ভাইয়ের রক্তকে উম্মাহর জাগরণের উসিলা বানান।
হে আল্লাহ! হে আল্লাহ! আপনি উত্তম ফাইসালা করেন! আমিন! আমিন!!
আমরা তাগুত গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ ও শাসকবর্গকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি- রক্তের বদলে রক্ত! ধ্বংসের বদলে ধ্বংস। ইনশা আল্লাহ কড়ায় গণ্ডায় উসুল করা হবে।
‘সেদিন ছিলো ২৩ ফেব্রুয়ারি। এর চারদিন আগেই মুকুল রানার সঙ্গে বিয়ে হয় আমার। উনি বললেন, তার বাড়িতে (শ্বশুরবাড়ি) নিয়ে যাবেন। আমরা তৈরি হয়ে একটা ইঞ্জিনভ্যানে চড়ে জগন্নাথপুর থেকে যশোর শহরের বসুন্দিয়া বাজারে যাই। সেখানে নামা মাত্র কয়েকজন লোক ‘এই যে মুকুল’ বলে ওনার শার্টের কলার চেপে ধরে টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যায়। আমি দৌড়ে বাজারের একপাশে এসে একটা মোবাইল ফোনের দোকানে ঢুকি। সেখান থেকে ফোন করে বাড়িতে ঘটনাটা জানাই। সেই শেষ দেখা আমাদের। আর তার খোঁজ পাইনি। চার মাস পর খোঁজ পাইলাম তার লাশের।’
ডিবি পুলিশের দাবি করা কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত মুকুল রানার বিষয়ে এটুকু তথ্যই দিতে পেরেছেন তার বিধবা স্ত্রী মহুয়া সুলতানা পিয়ারী। এ ঘটনার পর পুলিশ তার এক ভাইকেও জঙ্গি সন্দেহে ধরে নিয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করারও সাহস হারিয়ে ফেলেছেন তিনিসহ তাদের পুরো পরিবার। অবস্থা এমনই যে, স্বামীর পর এবার যদি ভাইয়ের কিছু ঘটে এই আশঙ্কায় স্বামীর মরা মুখটাও দেখতে যাননি তিনি।
এ বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মহুয়া সুলতানা পিয়ারীর সঙ্গে বিয়ে হয় সাতক্ষীরার ধুলিহর ইউনিয়নের বালুইগাছা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে মুকুল রানার। বিয়ের দিন বিকেলে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি যান এবং পরদিন ফের স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসেন। এর চারদিন পর আবারও স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে সাদা পোশাকের পুলিশ মুকুলকে আটক করে। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি মহুয়ার ভাই আমির হোসেন (ইঞ্জিনচালিত ভ্যানচালক) এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালী থানায় জিডি করেন। এরপর তারা বেশ কয়েকবার যশোর, নড়াইলসহ বিভিন্ন স্থানে মুকুলের সন্ধান করেও তার কোনও হদিস পাননি।
মহুয়া জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তাকে অনেক খুঁজেছে বলে শ্বশুর তাকে কয়েক দফা ফোনে জানান।
মুকুল আটকের ১৭ দিন পর তার ছোট ভাই মুজিবর রহমান ঢাকায় যান ভাবির চিকিৎসা সংক্রান্ত খোঁজ-খবর নিতে। ওই সময় তাকেও পুলিশ আটক করে।
কিন্তু কী কারণে তার স্বামী ও ভাইকে পুলিশ আটক করেছে- তা এই পরিবারের কেউই বলতে পারেননি।
এক প্রশ্নের জবাবে মহুয়া ও তার মা মাহমুদা বেগম জানান, আমরা কোনও রাজনৈতিক দল করি না। গরীব মানুষ, কীভাবে সংসার চলবে এই চিন্তায় আমাদের দিন কাটে।
মুকুল রানার শ্বশুরের নাম মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস, পেশায় কৃষক। সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা মেলেনি তার। বাড়িতে থাকা তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম জানান, সকালেই তিনি ক্ষেতে চলে গেছেন কাজ করতে। মাহমুদা জানান, আমরা গরিব মানুষ, দিন এনে দিন খেতে হয়। তাদের তিন ছেলে, এক মেয়ে। বড় দুজন জাকির হোসেন ও আমির হোসেন আলাদা থাকেন। ছোট ছেলে মুজিবর রহমান তাদের সঙ্গে থাকতেন।
মুকুল রানার বাবা আবুল কালাম আজাদ
তিনি জানান, ছোট ছেলে মুজিবর রহমানের বসুন্দিয়া বাজারে ছোট একটা আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকান ছিল। তাকে আটকের পর তাদের সংসার চালাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।
মেয়ে জামাই নিহত, তার লাশ উদ্ধার বা জানাজার বিষয়ে তেমন কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি এই পরিবারের সদস্যদের। আপনারা কেন সাতক্ষীরায় যাননি- এমন প্রশ্নের জবাবে মহুয়ার মা মাহমুদা জানান, আমার ছোট ছেলে আটকের পর আমরা সবকিছুই হারিয়েছি। আমাদের তেমন স্বচ্ছলতা নেই যে সাতক্ষীরায় যাবো। বিষয়টি মেয়ের শ্বশুরকেও জানিয়েছি।
প্রসঙ্গত, মাহমুদা যশোরের নওয়াপাড়া কওমি আমিনিয়া মাদ্রাসায় মেশকাত (এইচএসসি সমমান) পড়ছেন।
এদিকে, মহুয়ার দাবিকে সমর্থন করেছেন তার শ্বশুর নিহত মুকুলের বাবা আবুল কালাম আজাদ। তিনিও বলেছেন, তার ছেলে মুকুলকে নববিবাহিতা স্ত্রীর সামনেই আটক করে সাদা পোশাকের পুলিশ। বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে আটকের সময় ছেলের সঙ্গে থাকা বিয়ের নতুন ল্যাগেজ, ২৫ হাজার টাকা, স্বর্ণের আংটি, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনও পুলিশ নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন আবুল কালাম আজাদ।
মুকুলের বাবা আরও বলেন, কিছুদিন আগে ছয়জঙ্কে ধরিয়ে দিতে ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল সে ছবিতে আমার ছেলে মুকুল রানার পরনে যে শার্ট ছিল সেটা আমরা কখনও তাকে পরতে দেখিনি। যেদিন পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায় সেদিন তার পরনে যে শার্টটি ছিল সেটি বিয়ের সময় সাতক্ষীরার ধুলিহর বাজারের একটি দর্জির কাছ থেকে সে বানিয়ে নিয়েছিল। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার পরেও তার পরিধানে ছিল একই শার্ট।
http://www.banglatribune.com/country...A6%BE%E0%A7%9F
মুহতারাম ভাইয়েরা! আমরা আমাদের এই মুহতারামা বোনের কথা কি ভাবছি? হে ভাইয়েরা! আমি এই শহীদ ভাইয়ের রক্তের বদলা নিতে প্রস্তুত আছি। আপনারা কি এই ভাইয়ের বদলা নিবেননা!?
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রক্তে প্রচণ্ড স্রোত সৃষ্টি করে দিন, যা আমাদের শহীদ ভাইদের বদলা নিতে প্রবাহিত হবে। হে আল্লাহ! আমার এই ভাইয়ের পরিবার ও পরিজনকে সবর অবলম্বন করার তাওফিক দান করুন! হে আল্লাহ! শহীদ এই ভাইয়ের রক্তকে উম্মাহর জাগরণের উসিলা বানান।
হে আল্লাহ! হে আল্লাহ! আপনি উত্তম ফাইসালা করেন! আমিন! আমিন!!
আমরা তাগুত গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ ও শাসকবর্গকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি- রক্তের বদলে রক্ত! ধ্বংসের বদলে ধ্বংস। ইনশা আল্লাহ কড়ায় গণ্ডায় উসুল করা হবে।
Comment