Announcement

Collapse
No announcement yet.

গুলশান হামলাঃ কুরআন-সুন্নাহ ও বাস্তবতার আলোকে একটি পর্যালোচনা!!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • গুলশান হামলাঃ কুরআন-সুন্নাহ ও বাস্তবতার আলোকে একটি পর্যালোচনা!!

    গুলশান হামলাঃ কুরআন-সুন্নাহ ও বাস্তবতার আলোকে একটি পর্যালোচনা!!
    ==========================================

    ১-
    শরীয়ী আলোকে যদি এই হামলাকে পর্যালোচনা করি, তাহলে এ হামলা আমার কাছে শরীয়াহসম্মত মনে হয়। কেননা ইসলামে যাদেরকে হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে, এখানে এদের কাউকে হত্যা করা হয় নি। কেননা এখানে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে প্রকৃত শত্রুকে। এরা হচ্ছে কাফির হারবি দেশের নাগরিক। ইটালী, জাপান, ভারত এরা প্রত্যেকেই ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত। আজ ইরাক-সিরিয়া, কাশ্মীরে এরাই হামলা চালাচ্ছে।
    আল্লাহ তা’আলা বলেন, যারা তোমাদের উপর সীমালঙ্ঘন করে তোমরা তাদের উপর সীমালঙ্ঘন করো, যেভাবে তারা তোমাদের উপর সীমালঙ্ঘন করেছে। [সুরা- বাকারাহঃ১৯৪]
    এবার আপনি ইরাক-সিরিয়া, কাশ্মীর-আসামে ক্রুসেডার ও মুশরিকদের হামলার সাথে তুলনা করে বলুনতো, এটা কি তাদের উপর বেশি হয়ে গেছে?
    একটি কথা বলা হচ্ছে যে, এরা নিরীহ। আচ্ছা ইসলামে নিরীহের সংজ্ঞাটা কি একটু বললেন? একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত খুলে দেখুন, তাহলে দেখবেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনী কুরাইজার সব যুবক-পুরুষ ইয়াহুদীদের হত্যা করেছেন। সেখানে আপনি কাকে নিরীহ বলবেন?
    সর্বোপরি এরা নিজেদের আইএসের যোদ্ধা বলে দাবি করেছে, আর তাদের আমীর বাগদাদি অনেক পূর্বেই মুশরিক-ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সব জায়গায় হামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আপনি যদি কুফরি সংবিধান দ্বারা পরিচালিত একটি সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা নিজের জন্যে ফরজ মনে করেন, তাহলে তাদের অপরাধ কি যে তারা একটি (তাদের দাবি অনুযায়ী) খিলাফাহকে রক্ষার জন্যে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে?
    তারা সেখানে তাদেরকে হত্যা করেছে যারা তাদের কাছে কাফির হিসেবে প্রমাণিত হয়েছেন। এজন্য তারা হিজাবি পারভীনকে কি পরিমাণ শ্রদ্ধা করেছে তাতো পত্রিকায় আপনি দেখেছেন? আর যারা বাংলাদেশি নিহত হয়েছে তারা হয়তো তাদের কাছে মুসলমানই প্রমাণিত হয় নি। আজকাল নাম দেখেই মুসলমান বলা কঠিন।
    ,

    ২-
    পলিসিগত দিক দিয়ে আমি এ হামলাকে সমর্থন করি না। কেননা যেভাবে আমি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাতে বনু কুরাইজার ঘটনা পাই, এমনিভাবে আমি মদীনার অন্যান্য ইয়াহুদী গোত্র বনী নযীর ও বনু কায়নুকায়ের সাথে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আচরণও পাই। সেখানে কিন্তু নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এদেরকে ঢালাওভাবে হত্যা করেন নি।
    তাহলে বোঝা গেলো যে, পরিবেশ-পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কখনো হামলার ধরনও পরিবর্তন করা যায়। এক্ষেত্রে শায়খ মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ আইএসকে উদ্দেশ্য করে সর্বশেষ বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের সময়ে যে কোনো রাষ্ট্রের টিকে থাকা সম্ভন নয়, স্থায়ী হবে না, যদি না তার নেতৃত্ব আল-মুকাফারাত (যেসব কাজ কুফর) এবং শরিয়া রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য করতে না পারে, এবং একসঙ্গে সব বিষয়কে তাকফিরের ছাঁচে মিশানো থেকে বিরত থাকতে হবে, সাথে অন্যান্য মুজাহিদীনের সাথে সহযোগিতা বা তাদের সাথে পারস্পারিক আচরণে অসহযোগিতা করা থেকেও।‘

    তাঁর এই বার্তা মাথায় রাখলে বোঝা যায় যে, বর্তমানে প্রতিটি হামলার সময় অবশ্যই পরিবেশ-পরিস্থিতি শরয়ী রাজনীতি লক্ষ্য রাখতে হবে। যেহেতু সুন্নাহ দ্বারা দুনোটাই প্রমাণিত, তাই এই হামলাকে যেমন আমি হারাম বলতে পারি না
    এমনিভাবে আমি এই হামলাকে ঢালাওভাবে সমর্থন দেই না। তবে যদি শুধু পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা পরিচালিত হত তাহলে আমি অবশ্যই সমর্থন করতাম।
    ,

    ৩-
    অনেকে বলবেন, যে, আলকায়েদা তো বিভিন্নদেশে এরকম হামলা চালিয়েছে। আমি বলবো, এই হামলা ওইসব দেশের জন্যে ঠিক। যেমনিভাবে বনী নযীর ও বনু কুরাইজার ভিন্ন ভিন্ন শাস্তি। এমনিভাবে আমাদের দেশে হামলা নিয়ে আমার এই অবস্থান। কেননা আমার দেশ এখনো সিরিয়া, সোমালিয়া, মালির মতো আক্রান্ত হয় নি। তাই বাংলাদেশের জনগণের কাছে এই হামলার যৌক্তিকতা বুঝে আসে নি। তারা এটা মেনে নেয় নি। আর গেরিলা যুদ্ধের জন্যে পাবলিক সাপোর্ট অবশ্যই একটি গুরুত্ব পূর্ণ পয়েন্ট।
    ,

    ৪-
    এখানে হামলাকারীদের উপর উত্থাপিত কিছু অভিযোগের জবাব দেওয়া চেষ্টা করবো।

    প্রথম অভিযোগঃ অনেকের গুরুতর অভিযোগ হলো, যে, এদের মুখে দাড়ি নাই, দাড়িবিহীন মুজাহিদ হয় কীভাবে?
    অপনোদনঃ দাড়ি ছাড়া নামায হতে পারে, দাড়ি ছাড়া হজ্ব হতে পারে, রোযা হতে পারে, জামায়াতি হতে পারে, হেফাজতি হতে পারে, তাবলীগি হতে পারে, পীরের মুরীদ হতে পারে! কিন্তু মুজাহিদ কেনো হতে পারে না? জিহাদের জন্যে দাড়ি শর্ত কোথায় পাইলেন? বর্তমানে জিহাদের কান্ডারী তালেবান ও আলকায়েদাও বিভিন্ন হামলার সময় ক্লীন শেভড ছিলো। একবার তাদের খবর গভীরভাবে খুঁজে দেখুন, তাহলে নিজে নিজেই উত্তর পেয়ে যাবেন? দাড়ি কি নামায-রোযার চেয়ে বড় ফরজ?
    স্মরন রাখুন, যুদ্ধ হচ্ছে ধোকা! জিহাদের অধ্যায় ভালো ভাবে পড়ুন, তাহলে এরকম ছাগলামি প্রশ্ন মাথায় আসবে না। এরা দাড়ি কেটে বরং আপনাদের লাভ করেছে, অন্যথায় সন্দেহের তালিকায় প্রথমে আপনারা দাড়িওয়ালাই পড়তেন। তারা আপনাদের বাঁচানোর জন্যে কেটেছে, আর আপনারা তাদেরকে এজন্যে দোষারূপ করছেন?
    ‘যার জন্যে করলাম চুরি, আজ সেও বলে চোর’!

    দ্বিতীয় অভিযোগঃ তারাবীহ ছেড়ে কেনো হত্যা করতে গেলো?
    অপনোদনঃ একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত হাতে নিন, তাহলে দেখবেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খন্দকের যুদ্ধে ধারাবাহিক ছয় ওয়াক্ত নামায কাজ্বা করেছেন। আচ্ছা তারাবীহ কি ফরজ নামাযের চেয়ে বড় ফরজ? মনে রাখুন, একমাত্র জিহাদের জন্যই সালাতুল খাওফ অন্যকিছুর জন্যে নয়। জিহাদের জন্যেই ফরজ নামায পেছানো যায়, অন্যকিছুর জন্যে নয়। অন্তত জিহাদের কিছু ইলম নিয়ে এসব বিষয়ে কথা বলুন।
    এরা প্রত্যেকেই জিহাদে নেমেছে তাদের আমীরের নির্দেশে, এ হামলাকে তারা জিহাদই মনে করে। সুতরাং তাদের জন্যে এই মাসআলার উপর আমল করা জায়েয।
    ,

    ৫-
    অনেকেই বলেন, বাংলাদেশের সরকার খারাপ, কিন্তু সেনাবাহিনী ভালো। পুলিশ, র*্যাব খারাপ, কিন্তু বিজিবি ভালো। আমি তাদেরকে কুরআনের একটি আয়াত স্মরন করিয়ে দিতে চাই।
    আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় ফেরআন-হামান ও তাদের সৈন্যদল পথভ্রষ্ট। [সুরা কাসাস-৮]
    এখানে আল্লাহ ফেরআউন ও তার সৈন্যদলের জন্যে একই হুকুম বলেছেন। সৈন্যদের জন্যে এক হুকুম, আর ফেরআউনের জন্যে অন্য হুকুম বলেন নি। তাহলে আপনি কেনো এই কুফরিদেশের সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে পার্থক্য করেন? আপনার তো জানা আছে যে, ভারতের সেনাবাহিনীতে অনেক নামধারী মুসলমান আছে। কিন্তু যদি ভারতের সৈন্যদের সাথে যখন যুদ্ধ হয় তখন কি আমরা হিন্দু সৈন্য আর মুসলিম সৈন্য হিসেবে পার্থক্য করি? আমেরিকায় তো অনেক নামধারী মুসলিম আছে, যারা আফগানে মুজাহিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আমরা কি তাদের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য করি?
    সেখানে যদি পার্থক্য করি না, তাহলে এখানে কেনো পার্থক্য করি? বেশীর চেয়ে বেশি সেনাবাহিনীকে মন্দের চেয়ে ভালো বলা যেত। কিন্তু এখন সেদিন আর থাকে নি।
    ,

    ৬-
    আমি খুব অবাক হলাম, ওইসব ব্যক্তিদের কথায়, যারা এইমাত্র ক’দিন পূর্বে হাসিনা সরকারকে ফেরআউনের সরকার বলতেন, আর পুরো বাংলাদেশকে খুন-রাহাজানি, ধর্ষণ-লুন্ঠনের রাজ্য বলতেন, বাংলদেশকে একটি কারাগার বলতেন। আজ তারাই দেখি, বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ বলছেন। এরাই তো রক্তের প্রতিশোধ রক্ত নেওয়ার শপথ নিয়েছিলেন, এরাই তো অবরোধের ডাক দিয়ে গোটা বাংলাদেশকে তিন মাস অচল করে দিয়েছিলেন। তাহলে আজ এরা কোন মুখে এই দেশকে শান্তিপূর্ণ দেশ বলেন? যদি দেশ আপনাদের কাছে শান্তিপূর্ণই মনে হয় তাহলে কেনো হরতাল, কেনো ইট-পাটকেলের পিকেটিং আর কেনো পেট্রোলবোমা? সবকিছু ছেড়ে হাসিনার হাতে রাবেয়া বসরী হিসেবে বাইয়াহ নিন। আর মদীনার সনদে পরিচালিত দেশের বাসিন্দা হন।
    বিরোধিতা করবেন, ভালো কথা। কিন্তু বিরোধিতার ক্ষেত্রে ইনসাফ বজায় রাখুন।
    ,

    ৭-
    অনেকে বলেন, এদের কারণে এদেশে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ব্যাঘাত ঘটেছে। এদের ক্ষেত্রে আমার যুক্তি হবে, যে, যদি এদের কারণে আপনাদের আন্দোলনে ব্যাঘাত হয়, তাহলে আপনাদের কুফরি গণতান্ত্রিক ইসলামি রাজনীতির কারণে তাদের পদ্ধতিকে মানুষ ভুল বুঝছে। আপনারা যদি নিজেদের স্বার্থে এদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে তারা যদি তাদের স্বার্থে আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় তাহলে কেনো এটা অযৌক্তিক হবে?
    যুক্তি সবদিকেই আছে বুঝলেরে সোনা!!!
    ----------------------------------------------------

    পরিশেষে বলি, এটি আমার একক মত, ভূল-শুদ্ধ হওয়ার অবকাশ রাখে। আপনার কাছে যদি ভূল হিসেবে প্রমাণিত হয়, তাহলে দলীলসহ বললে আমি অবশ্যই স্বীকার করে শুধরে নিব। এটি আমার বর্তমান অবস্থান। এরচেয়ে ভালো কিছু পেলে অবশ্যই তখন আমি সেটি গ্রহণ করবো। এই মত গ্রহণ বা বর্জন করতে আমি কাউকে অনুরোধ করবো না। কেউ যদি গ্রহণ করেও থাকেন, তাহলে আমাকে দলীল না বানিয়ে কুরআন-সুন্নাহকে যেনো দলীল বানান। আল্লাহ আমাকে সব ধরনের ভুল থেকে হেফাজত করুন।
    আমীন।

  • #2
    আশা করি লেখাটি অনেক প্রশ্নের উত্তর দিবে।

    Comment


    • #3
      Vai apni bolechen ekhane nished kara kauke hota kara hay in.othocho je shakal mohila sharashori othoba gopone islamer berudde judde lipto na tader me baddo na hole hotta korte nished koreche.

      Comment

      Working...
      X