সংশয়ঃ প্রকৃত মুজাহিদ ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর আনুগত্য করার জন্য নিজের নফসের সাথে জিহাদ করে। এই হাদীসে নফসের সাথে জিহাদ করাকে বড় জিহাদ বলে ব্যক্ত করেছে। সুতরাং এরদ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মুজাহিদ সে ব্যক্তিই যে নিজের নফসের সাথে জিহাদ করে। যেহেতু নিজের নফসের সাথে জিহাদ করাই সবচেয়ে বড় জিহাদ। এই জন্য শুধু কিতালকে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ বলা ঠিক নয়।
সমাধানঃ ১
হাদীস শরীফের মর্ম হলো, আসল ও প্রকৃত মুজাহিদ ঐ ব্যক্তি যে তার নফসকে আল্লাহ তা'আলার আনুগত্য ও অনুগামীতে রেখে দিয়েছে। অর্থাৎ জিহাদ তখনি জিহাদ হবে যখন শুধু আল্লাহ তা'য়ালার সন্তুষ্টির জন্যই করা হবে। যদি অন্য কোন উদ্দেশ্যে জিহাদ করা হয় যেমন জাতিয়তাবোধ, স্বদল প্রীতি দেশাত্মবোধ, লোক দেখানো এবং সুনাম-সুখ্যাতির জন্য যদি জিহাদ করে তাহলে তার জিহাদ কখনোই ইবাদত বলে গণ্য হবে না।
যেরূপ এই হাদীসের মধ্যে [আল্লাহর আনুগত্য] শব্দমালা এনে এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। বিষয়টি ঠিক এমনই যেমন দুই এক বর্ণনায় এসেছে। হযরত আবু মুসা রা. বলেন: এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক গণীমতের জন্য যুদ্ধ করে। আর আরেক জন প্রসিদ্ধতা ও লোক দেখানোর জন্য যুদ্ধ করে। তাদের মধ্য হতে প্রকৃত অর্থে কে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে?
যে আল্লাহর রাস্তায় দ্বীনকে সমুন্নত করার জন্য যুদ্ধ করে সেই আল্লাহর রাস্তায় রয়েছে।
সমাধানঃ ২
যদি হাদীসের মর্ম এটা নেওয়া হয় যা সাধারণত নেওয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ কামেল মুজাহিদ সে যে নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করে। তাহলে তুমি নিজেই চিন্তা করে যেভাবে একজন মুজাহিদের পক্ষে নিজের নফসের বিরুদ্ধে গিয়ে সন্তানাদী, প্রিয়জন, আত্মীয়-স্বজন থেকে দূরে থাকা, এমনকি নিজের সন্তানদেরকে যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যু মুখে পতিত করা উপপ্ত গরম, প্রচন্ড ঠান্ডায় যুদ্ধকালীন ভীতিকর পরিস্থিতির মাঝে নামাযের গুরুত্ব দেওয়া, ঘরহীন হয়ে নিজেকে বসবত করে শরীয়তের বিধি-বিধানের প্রতি লক্ষ্য রাখা। নিজের কাছে সবচেয়ে প্রিয় জানকে শংকায় ফেলে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসন্ধান করা, কোনো কিছু কি এ মুজাহাদার তুলনা হতে পারে? কিছুতেই না! তাহলে একজন মুজাহিদই সর্বাগ্রে নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করে।
রক্তের ধারা গতিহারা হলে
ফাসাদ বৈ ছাড়াবে কি?
আত্মার জিহাদের লক্ষ্য শুধু
স্বশস্ত্র জিহাদের লাগি!
সমাধানঃ ৩
যদি হাদীসের অর্থ এভাবে করা হয়, কামেল মুজাহিদ ঐ ব্যক্তি যে নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করে অর্থাৎ যুদ্ধের মাঠ উত্তাপ আর মুসলমানদের ইজ্জতে আঘাত আসছে, মা-বোনদের সম্মান, স্বতীত্ব ভুলুন্ঠিত হচ্ছে। এ মুহুর্তে মুসলমানদের সহায়তা প্রয়োজন। তাই শরীয়ত তাকে ময়দানে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু এ অবস্থায়ও সে নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে বসে আছে। আর মনে মনে বলছে, আমরা নফসের ইসলাহ করছি। আমরা প্রকৃত জিহাদে রয়েছি। প্রিয় পাঠক! আপনার একটু চিন্তা করে ইনসাফের সাথে বলুন, এটা কি নফসে আম্মারার পূজা এবং গোলামীর নয়? এটা কি ইবলিসের ধোকা নয়। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফযত করুন। আমীন!
নফসের সাথে জিহাদ করার অর্থ হলো এই যে, নিজের নফস ও জীবন নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে আদা নুন খেয়ে নেমে আসা। এমনিভাবে মালের সাথে জিহাদ করার অর্থ হলো, নিজের মালকে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা। আল্লাহ তা'আলা কুরআনুল কারীমে এমটাই বলেছেন-
''নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে।" [সূরায়ে আনফাল: ৭২]
আর হাদীস শরীফে এসেছে-
''নিহত ব্যক্তি তিন শ্রেনির হয়ে থাকে যে, ঐ মুমিন ব্যক্তি যে নিজের মাল-জান দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে।"
কুরআন ও হাদীসের যেখানেই [জিহাদ বিন্ নফস] ও [জিহাদ বিল মাল] এসেছে সেখানে এই অর্থই উদ্দেশ্য। কিন্তু সাম্প্রতিককালে [জিহাদ বিন্ নফস] এর অর্থ ব্যাপকভাবে যেটা করা হয়, 'নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করো। নফসের চাহিদার বিরুদ্ধে জিহাদ করো।' কিন্তু এই ব্যাখ্যাটা [জিহাদ বিল মাল] এর ক্ষেত্রে কেন করা হয় না? হায়! বর্তমান যুগের কোন বিচক্ষণ ব্যক্তি যদি এই দর্শনের উপর দৃষ্টি পাত করতো।
সূত্রঃ পূণ্যের সন্ধানে
মুতাকাল্লিমে ইসলাম আল্লামা ইলিয়াস ঘুম্মান
সমাধানঃ ১
হাদীস শরীফের মর্ম হলো, আসল ও প্রকৃত মুজাহিদ ঐ ব্যক্তি যে তার নফসকে আল্লাহ তা'আলার আনুগত্য ও অনুগামীতে রেখে দিয়েছে। অর্থাৎ জিহাদ তখনি জিহাদ হবে যখন শুধু আল্লাহ তা'য়ালার সন্তুষ্টির জন্যই করা হবে। যদি অন্য কোন উদ্দেশ্যে জিহাদ করা হয় যেমন জাতিয়তাবোধ, স্বদল প্রীতি দেশাত্মবোধ, লোক দেখানো এবং সুনাম-সুখ্যাতির জন্য যদি জিহাদ করে তাহলে তার জিহাদ কখনোই ইবাদত বলে গণ্য হবে না।
যেরূপ এই হাদীসের মধ্যে [আল্লাহর আনুগত্য] শব্দমালা এনে এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। বিষয়টি ঠিক এমনই যেমন দুই এক বর্ণনায় এসেছে। হযরত আবু মুসা রা. বলেন: এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক গণীমতের জন্য যুদ্ধ করে। আর আরেক জন প্রসিদ্ধতা ও লোক দেখানোর জন্য যুদ্ধ করে। তাদের মধ্য হতে প্রকৃত অর্থে কে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে?
যে আল্লাহর রাস্তায় দ্বীনকে সমুন্নত করার জন্য যুদ্ধ করে সেই আল্লাহর রাস্তায় রয়েছে।
সমাধানঃ ২
যদি হাদীসের মর্ম এটা নেওয়া হয় যা সাধারণত নেওয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ কামেল মুজাহিদ সে যে নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করে। তাহলে তুমি নিজেই চিন্তা করে যেভাবে একজন মুজাহিদের পক্ষে নিজের নফসের বিরুদ্ধে গিয়ে সন্তানাদী, প্রিয়জন, আত্মীয়-স্বজন থেকে দূরে থাকা, এমনকি নিজের সন্তানদেরকে যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যু মুখে পতিত করা উপপ্ত গরম, প্রচন্ড ঠান্ডায় যুদ্ধকালীন ভীতিকর পরিস্থিতির মাঝে নামাযের গুরুত্ব দেওয়া, ঘরহীন হয়ে নিজেকে বসবত করে শরীয়তের বিধি-বিধানের প্রতি লক্ষ্য রাখা। নিজের কাছে সবচেয়ে প্রিয় জানকে শংকায় ফেলে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসন্ধান করা, কোনো কিছু কি এ মুজাহাদার তুলনা হতে পারে? কিছুতেই না! তাহলে একজন মুজাহিদই সর্বাগ্রে নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করে।
রক্তের ধারা গতিহারা হলে
ফাসাদ বৈ ছাড়াবে কি?
আত্মার জিহাদের লক্ষ্য শুধু
স্বশস্ত্র জিহাদের লাগি!
সমাধানঃ ৩
যদি হাদীসের অর্থ এভাবে করা হয়, কামেল মুজাহিদ ঐ ব্যক্তি যে নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করে অর্থাৎ যুদ্ধের মাঠ উত্তাপ আর মুসলমানদের ইজ্জতে আঘাত আসছে, মা-বোনদের সম্মান, স্বতীত্ব ভুলুন্ঠিত হচ্ছে। এ মুহুর্তে মুসলমানদের সহায়তা প্রয়োজন। তাই শরীয়ত তাকে ময়দানে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু এ অবস্থায়ও সে নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে বসে আছে। আর মনে মনে বলছে, আমরা নফসের ইসলাহ করছি। আমরা প্রকৃত জিহাদে রয়েছি। প্রিয় পাঠক! আপনার একটু চিন্তা করে ইনসাফের সাথে বলুন, এটা কি নফসে আম্মারার পূজা এবং গোলামীর নয়? এটা কি ইবলিসের ধোকা নয়। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফযত করুন। আমীন!
নফসের সাথে জিহাদ করার অর্থ কি?
নফসের সাথে জিহাদ করার অর্থ হলো এই যে, নিজের নফস ও জীবন নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে আদা নুন খেয়ে নেমে আসা। এমনিভাবে মালের সাথে জিহাদ করার অর্থ হলো, নিজের মালকে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা। আল্লাহ তা'আলা কুরআনুল কারীমে এমটাই বলেছেন-
''নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে।" [সূরায়ে আনফাল: ৭২]
আর হাদীস শরীফে এসেছে-
''নিহত ব্যক্তি তিন শ্রেনির হয়ে থাকে যে, ঐ মুমিন ব্যক্তি যে নিজের মাল-জান দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে।"
কুরআন ও হাদীসের যেখানেই [জিহাদ বিন্ নফস] ও [জিহাদ বিল মাল] এসেছে সেখানে এই অর্থই উদ্দেশ্য। কিন্তু সাম্প্রতিককালে [জিহাদ বিন্ নফস] এর অর্থ ব্যাপকভাবে যেটা করা হয়, 'নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করো। নফসের চাহিদার বিরুদ্ধে জিহাদ করো।' কিন্তু এই ব্যাখ্যাটা [জিহাদ বিল মাল] এর ক্ষেত্রে কেন করা হয় না? হায়! বর্তমান যুগের কোন বিচক্ষণ ব্যক্তি যদি এই দর্শনের উপর দৃষ্টি পাত করতো।
সূত্রঃ পূণ্যের সন্ধানে
মুতাকাল্লিমে ইসলাম আল্লামা ইলিয়াস ঘুম্মান
Comment