বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন,
আসসালাতু আসসালামু ওলা রাসুলিল্লাহ ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন, আম্মাবাদ।
আমরা দেখতে পারছি গত কয়েক দিনের বিশ্ব পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে ঝড়ের গতিতে। সবচেয়ে বেশি যে বিষয় সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে তা হল তুরস্কের পরিস্থিতি। যে তুরস্ক কয়েক দিন আগেও ছিল আমেরিকার বন্ধু রাষ্ট্র তার সাথেই তুরস্কের সম্পর্ক এখন তলানিতে। আর যে রুশিদের সাথে ছিল যুদ্ধংদেহী সম্পর্ক তাদের সাথেই এখন গঠন হয়েছে নতুন এক জোট।
এই নতুন জোট গঠনের ফলে আরও এক ধাপ কঠিন সমীকরণের মার প্যাঁচে পড়ে গেল শামের জিহাদ।
কারণ শাম নিয়ে কাতার, তুর্কি আর সৌদের আছে এক বিশাল স্বার্থ। তারা চায় এমন এক সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যা হবে ইসলামি লেবাসে তাদের স্বার্থউদ্ধারকারী এক সরকার। রুশ চায় তাদের পুরাতন শক্তিমত্তা নিয়ে বিশ্ব মঞ্চে আগমন করতে আর পৃথিবীকে এটি দেখাতে যে আন্তর্জাতিক মিত্র হিসেবে সে আম্রিকার চেয়ে বেশি বিশ্বাসযোগ্য, কারণ আম্রিকা তারই মিত্র ইরাকে আক্রমণ করে ইরাককে শেষ করেছে কিন্তু রুশিরা তাদের মিত্র বাশারকে রক্ষায় সম্ভাব্য সকল কিছুই করছে আর নির্লজ্জ আম্রিকা চাচ্ছে তার আগের সাম্রাজ্যবাদি জৌলুস ধরে রাখতে। আর সুপ্তভাবে হলেও বিশ্ব মঞ্চে আরও দুই নাটকবাজের উদ্ভব হছে এক চীন আরেক ইরান।
বর্তমানে শামের এই অবস্থা সারা দুনিয়ার কাছে প্রকাশ করে দিয়েছে আম্রিকা ও তার ইউরোপীয় জোট তাদের আগের জৌলুস হারিয়ে ফেলেছে, এবং আম্রিকা ব্লকের আরব রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করছে নতুন করে বন্ধুত্বের আঞ্চলিক জোট গড়তে। এই বিষয়টি শামের ময়দানের আগে এত বেশি ক্লিয়ার ছিল না। কারণ লিবিয়ায় আম্রিকা নো ফ্লাই জোন তৈরি করে গাদ্দাফির পতন ঘটাতে সাহায্য করে। আর সেই সাথে মিশরের মুরসি সরকারকেও উৎখাত করে। যার ফলে অনেকের মনে একটু হলেও এই ধারনা ছিল যে না আম্রিকা শেষ হয়ে যায় নি। কিন্তু শামের ময়দান আম্রিকাকে হতভম্ব করে দিয়েছে। তারা আসলেই বুঝতে পারছে না যে কি করা উচিত আর কি না? কারণ এখন যে সরকারই আসুক তা ইসলামকে বুকে নিয়েই আসবে ইংশা আল্লাহ।আম্রিকার বর্তমান অবস্থা হচ্ছে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি। তারা না শামে পুরোপুরি ঢুকতে পারছে না শাম থেকে নিজেদের সরিয়ে আনতে পারছে। শামে আম্রিকা সাপোর্টেড গ্রুপগুলোও পড়েছে আদর্শিক এক দ্বন্দ্বে। কারণ তারা তাদের স্বজন হারাচ্ছে বাশারের দ্বারা, বাশারের বাহিনীর সাথে তুমুল জিহাদে লিপ্ত মুজাহিদিন দলগুলো, আর আম্রিকা এই মুজাহিদিনদেরকেই মারতে বলছে। আর এই আদর্শিক দন্দের কারণে তারা শামের মুজাহিদিন গ্রুপগুলোর সাথে যুদ্ধে পেরে উঠছে না। আর তাদেরকে সাহায্যের জন্য ভারী অস্ত্র চাইলেও আম্রিকা সরবরাহ করতে পারছে না। কারণ তা ঘুরে ফিরে পরে গনিমাহ হিসেবে মুজাহিদিনদের হাতেই চলে যাবে। আর তাই দেখা যাচ্ছে মিত্র আম্রিকার এমন হীন মান্যতার কারণে এই আম্রিকানপন্থি দলগুলো এক প্রকার বাধ্য হয়েই মুজাহিদিনদের সাথে মিলে বাশারের বিরুদ্ধে ফাইট করছে। আর মুজাহিদিনদের সাথে থাকার ফলে যে মুখে দাড়ি ছিল না, যে মুখে আল্লাহু আকবার আসতো না, যে অন্তর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বুঝত না সেই অন্তর আর মুখগুলো এখন জিকিরের আলোতে আলোকিত হয়ে উঠছে। তাই দেখা যাচ্ছে শামে এখন আম্রিকার স্বার্থ উদ্ধার করতে পারবে একমাত্র কুর্দিরাই। শিয়ারা ইরাকে আম্রিকার সাহায্য নিলেও শামে তা নিতে পারবে না, কারণ রুশি প্রশাসন শামে যে প্রভাব নিয়ে তারা আছে তা কখনোই হারাতে চাবে না।তো এই হিজড়া কুর্দিরা গ্রাউন্ডে কি করবে তা বুঝাই যাচ্ছে। অলরেডি কুর্দিরা মুজাহিদিনদের হাতে মার খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। যে কারণে আম্রিকা তাদের ব্লকের সুন্নি বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিতে পারছিল না সেই একই কারণে তারা অস্ত্র দিতে পারবে না কুর্দিদের। আর আশা করা যায় এইভাবেই ধীরে ধীরে শামের ময়দান থেকে বিদায় নিবে কুর্দি ও আম্রিকান ফিতনাও ইংশা আল্লাহ। যেমন করে শাম থেকে ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে খারেজি ফিতনা।যা সংকোচিত ও ক্ষয়িষ্ণু।
আর আশা করা যায় ইংশা আল্লাহ ধীরে ধীরে শামে মাত্র দুইটি পক্ষই থাকবে এক পক্ষে মুজাহিদিন অপর দিকে বাশার ও তাদের মিত্র রাষ্ট্রের জোট।
এই যখন বিশ্ব পরিস্থিতি তখন আমাদের মুজাহিদিন উমারাগনেরও উচিত নতুন পলিসি নিয়ে আগানো। আন্তর্জাতিক পলিসি মেকিংয়ে একটি প্রবাদ আছে “শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু”। আর এর সবচেয়ে উত্তম প্রয়োগ করছেন শামের ভাইয়েরা। তারা তুর্কি ও সিরিয়ার বিরোধকে খুব সুন্দর কাজে লাগিয়েছেন। যার বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমানে খারেজি,পিকেকে, ও এসডিএফ থেকে ভূমি হস্তগত করতে তুর্কির সাহায্য গ্রহণকে । এর ফলে তুর্কি যেমন তার নিজের বর্ডার নিরাপদ করছে খারেজি আর কুর্দিদের থেকে ঠিক তেমনি মুজাহিদিনরা নিরাপদ হচ্ছে খারেজি ও কুর্দি ফিতনা থেকে। শামের মুজাহিদিনগনের উচিত এই তুর্কি সম্পর্ককে সঠিক পথে পরিচালনা করা এবং এই পারস্পরিক সম্পর্ক থেকে যত বেশি পারা যায় ফায়দা হাসিল করা। যার মাঝে পরে বিদেশি মুজাহিদিনদের জন্য যাতায়াত ইজি করা, তুর্কির সাথে তেল ব্যবসা করে নিজেদের আর্থিক শক্তি বৃদ্ধি করা, হালকা ও ভারী অস্ত্র বাণিজ্যের নতুন রাস্তা তৈরি করা। শামের ভাইদের উচিত যতদ্রুত সম্ভব তুর্কিদের কাছ হতে সাহায্য নিয়ে শামে তুর্কি প্রভাব হ্রাস করা। কারণ এই তুর্কি হচ্ছে এমন এক তুর্কি যা গিরগিটির মত কখন কি রঙ ধারন করবে তা আল্লাহই ভালো জানেন। শামের ভাইদের উচিত তুর্কিদের অন্ধভাবে বিশ্বাস না করা। কারণ তুর্কি আপনার সোমালি ভাইদের বিরুদ্ধে আর্থিক সাহায্য করছে আবার আপনাদের ট্যাংক দিয়ে সাহায্য করছে তাহলে বুঝাই যায় এই ব্যক্তিকে বিশ্বাস করা উচিত না। কারণ যে আপনার ভাইয়ের গলায় ছুরি আর আপনার হাতে ফুল দিতে পারে, সে যে কোন মুহূর্তে আপনার গলাতেও ছুরি ধরতে পারে।
তুর্কির বর্তমান এই পদক্ষেপ আরবদেরকে পুনারায় তাদের শত্রু ও মিত্র নির্বাচনের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। কারণ তারা সম্প্রতি দেখেছে ইরানকে দেওয়া আম্রিকার ছাড়, আর দেখেছে দীর্ঘদিনের মিত্র তুর্কির সাথে আম্রিকার গাদ্দারি,এরফলে আম্রিকাকে বিশ্বাস করা এই আরব দুলালদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। সাথে সাথে তারা এও দেখছে শামে রুশিদের আগ্রাসি নীতি আর আম্রিকার কিংকর্তব্যবিমুঢ় নীতি। তাই বন্ধুত্বের এই নতুন ফরমেশনে মুজাহিদিনগনের উচিত শরিয়াহর মাঝে থেকে ফায়েদা হাসিল করা এবং কোন রাষ্ট্রকেই অগাধ বিশ্বাস না করা যদিও তারা কুরআন হাতে মুজাহিদিনদের সাহায্য করার ওয়াদা করে।
এই যখন শামের অবস্থা তখন হিন্দের ভুমিতেও কিন্তু পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে, আরবের ব্যর্থতা আম্রিকা এই হিন্দের ভুমিতে ঘুচাতে চাচ্ছে। ইতিমধ্যে ভারত ও আম্রিকার মাঝে স্বাক্ষরিত হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এক চুক্তি। যার ফলে ভারত ও আম্রিকা তাদের একে অপরের সেনা, নৌ এবং বিমান ঘাঁটিকে ব্যবহার করতে পারবে লজিস্টিক সাপোর্ট হিসেবে। আর এই চুক্তি যে পাক সরকার ও চীন ভালোভাবে নিবে না তা বুঝাই যাচ্ছে। কেরির ভারত সফরের সাথে সাথে চীন থেকেও ঘোষণা আসল স্বল্প সুদে পাক সরকারকে ৮ টি এটাক সাব মেরিন দেওয়ার। বাংলাদেশ ও পাকি ফৌজ মুরতাদ হলেও তাদের মাঝে এখনো কঠিন ভারত বিদ্বেষ কাজ করে। আর এটি বেশি কাজ করে পাকিদের ক্ষেত্রে। তাই আমাদের আফগানের তালেবান ভাইদের উচিত সম্পর্কের এই নতুন মোড়কে শরিয়াহর মাঝে থেকে নিজেদের স্বার্থে কিভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করে পদক্ষেপ নেওয়া। আর আমরা আমাদের বিচক্ষন তালেবান ভাইদের কাছ হতে এমন কিছুই আশা করি এবং অতিতেও এর অনেক নজীর পেয়েছি।
আর ভারত ও আম্রিকার এই নতুন চুক্তিকে সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করতে পারবেন আমাদের পাকিস্তানের মুজাহিদিন দায়ী ভাইরা। পাকিস্তানের মুজাহিদিন ভাইদের উচিত ভারত ও আম্রিকার এই চুক্তিকে লক্ষ্য করে ব্যাপক মিডিয়া কাজ চালিয়ে যাওয়া, এখনো সেই দেশের আর্মিদের মাঝে সুপ্ত ঈমানের অধিকারি যারা আছেন তাদেরকে দাওয়াহ দেয়া, যেভাবে হোক সেনাবাহিনীর মাঝের সুপ্ত ইসলামি শক্তিকে জিহাদের পথে ইস্টিমেট করা। আর আমরা আশা করি আমাদের বিজ্ঞ আমীর মাওলানা আসেম উমর (হাফিঃ) এমন একটি সুন্দর অবস্থা জিহাদের কাজে লাগাতে কোন ভুল করবেন না ইংশা আল্লাহ।
আর আমাদের বাংলা অঞ্চলের দায়ীভাইরা জন কেরির বাংলায় আগমন, লীগ বি এনপি সবার সাথে কথা, বন্যার সময় ভারতের হাতি নিয়ে ব্যস্ত থাকা, সুন্দরবন এর পরিবর্তে কয়লা দিয়ে মুখ ধোঁয়া এই সমস্ত ইস্যুকে কিভাবে ব্যবহার করবে তা তো তাদেরকেই চিন্তা করে বের করতে হবে। এছাড়া বাংলার এই তাগুতের কিন্তু শত্রু অনেক আছে। এখন এই শত্রুদের কিভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রনে এনে তাদের মাঝেই ফাইট লাগানো যায় তাও চিন্তা করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে একটি উত্তপ্ত বাংলা উপহার দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত গাযওয়া ই হিন্দ।
আর আমাদের ভারতের ঘুমন্ত মুসলিম ভাইদেরকে বলতে চাই, হে ভাই দেখুন আপনাদের উলামারা এতদিন ভারতকে দারুল আমান বলে অনেক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। কিন্তু দুই কাফির দেশের চুক্তির মাধ্যমে আল্লাহ আজ সেই দিন শেষ করে দিয়েছেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোন মুসলিম যদি কোন কাফেরকে সাহায্য করে তাহলে সে যদি মুরতাদ হয়ে যায় তাহলে যে কুফরি নিজাম প্রকাশ্যে আম্রিকার সাথে এত বড় চুক্তি করলো তার পরেও কি ভারতে জিহাদ ফরয হবে না? আমিও আমাদের শায়খের কথা নকল করে বলতে চাই আপনাদের সমুদ্রে ঝড় নেই কেন? আপনারা দেখুন এত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও বাংলার জমিনে মুজাহিদিনরা বুক চিড়ে তাগুতের সামনে দাঁড়িয়ে গেছে বিইযনিল্লাহ, তাহলে কি সেই প্রতিবন্ধকতা যা আপনাদেরকে দাড়াতে দিচ্ছে না। হে আমার ভারতের প্রিয় ভাই আপনারা এমন এক দেশের নাগরিক যাদের শত্রুরা গরুর মুত্র পান করে আর দেশের ৭০ ভাগ মানুষ টয়লেট করে খোলা আকাশে। তাই আপনারা একবার যদি আক্রমন করেন তাহলে এই মুত্র পানকারীরা মুত্র পান করতেও ভুলে যাবে আর যে ৩০ ভাগ নিজেদের টয়লেটে টয়লেট করে তারাও খোলা ময়দানেই টয়লেট করা শুরু করে দিবে। হে আমার ভারতীয় ভাইয়েরা আর ঘুমিয়ে থাকবেন না। এই নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিকে নিজেদের কাজে লাগান, ভারতের যদি বিশাল সামরিক বাহিনী থাকে তবে মনে রাখবেন তার অনেক শত্রুও আছে। ইংশা আল্লাহ আপনারা বিজয়ী হবেন।
সব মিলিয়ে আমাদের উমারাগনের উচিত বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে নিজ নিজ দেশে নিজেদের জিহাদের স্ট্রাটেজি নিয়ে পর্যালোচনা করা।আর এইবারের আলোচনা হতে পারে কিভাবে শত্রুর শত্রুকে বন্ধু বানানো যায়...... আর এইক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ হতে পারেন শামের ভাইরা।
আমরা যেই দেশেরই মানুষ হয়ে থাকি না কেন আমাদের উচিত আমাদের শত্রুর শত্রুকে শরিয়াহর মাঝে থেকে কৌশলগত বন্ধু হিসেবে ব্যবহার করা।
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন,
আসসালাতু আসসালামু ওলা রাসুলিল্লাহ ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন, আম্মাবাদ।
আমরা দেখতে পারছি গত কয়েক দিনের বিশ্ব পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে ঝড়ের গতিতে। সবচেয়ে বেশি যে বিষয় সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে তা হল তুরস্কের পরিস্থিতি। যে তুরস্ক কয়েক দিন আগেও ছিল আমেরিকার বন্ধু রাষ্ট্র তার সাথেই তুরস্কের সম্পর্ক এখন তলানিতে। আর যে রুশিদের সাথে ছিল যুদ্ধংদেহী সম্পর্ক তাদের সাথেই এখন গঠন হয়েছে নতুন এক জোট।
এই নতুন জোট গঠনের ফলে আরও এক ধাপ কঠিন সমীকরণের মার প্যাঁচে পড়ে গেল শামের জিহাদ।
কারণ শাম নিয়ে কাতার, তুর্কি আর সৌদের আছে এক বিশাল স্বার্থ। তারা চায় এমন এক সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যা হবে ইসলামি লেবাসে তাদের স্বার্থউদ্ধারকারী এক সরকার। রুশ চায় তাদের পুরাতন শক্তিমত্তা নিয়ে বিশ্ব মঞ্চে আগমন করতে আর পৃথিবীকে এটি দেখাতে যে আন্তর্জাতিক মিত্র হিসেবে সে আম্রিকার চেয়ে বেশি বিশ্বাসযোগ্য, কারণ আম্রিকা তারই মিত্র ইরাকে আক্রমণ করে ইরাককে শেষ করেছে কিন্তু রুশিরা তাদের মিত্র বাশারকে রক্ষায় সম্ভাব্য সকল কিছুই করছে আর নির্লজ্জ আম্রিকা চাচ্ছে তার আগের সাম্রাজ্যবাদি জৌলুস ধরে রাখতে। আর সুপ্তভাবে হলেও বিশ্ব মঞ্চে আরও দুই নাটকবাজের উদ্ভব হছে এক চীন আরেক ইরান।
বর্তমানে শামের এই অবস্থা সারা দুনিয়ার কাছে প্রকাশ করে দিয়েছে আম্রিকা ও তার ইউরোপীয় জোট তাদের আগের জৌলুস হারিয়ে ফেলেছে, এবং আম্রিকা ব্লকের আরব রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করছে নতুন করে বন্ধুত্বের আঞ্চলিক জোট গড়তে। এই বিষয়টি শামের ময়দানের আগে এত বেশি ক্লিয়ার ছিল না। কারণ লিবিয়ায় আম্রিকা নো ফ্লাই জোন তৈরি করে গাদ্দাফির পতন ঘটাতে সাহায্য করে। আর সেই সাথে মিশরের মুরসি সরকারকেও উৎখাত করে। যার ফলে অনেকের মনে একটু হলেও এই ধারনা ছিল যে না আম্রিকা শেষ হয়ে যায় নি। কিন্তু শামের ময়দান আম্রিকাকে হতভম্ব করে দিয়েছে। তারা আসলেই বুঝতে পারছে না যে কি করা উচিত আর কি না? কারণ এখন যে সরকারই আসুক তা ইসলামকে বুকে নিয়েই আসবে ইংশা আল্লাহ।আম্রিকার বর্তমান অবস্থা হচ্ছে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি। তারা না শামে পুরোপুরি ঢুকতে পারছে না শাম থেকে নিজেদের সরিয়ে আনতে পারছে। শামে আম্রিকা সাপোর্টেড গ্রুপগুলোও পড়েছে আদর্শিক এক দ্বন্দ্বে। কারণ তারা তাদের স্বজন হারাচ্ছে বাশারের দ্বারা, বাশারের বাহিনীর সাথে তুমুল জিহাদে লিপ্ত মুজাহিদিন দলগুলো, আর আম্রিকা এই মুজাহিদিনদেরকেই মারতে বলছে। আর এই আদর্শিক দন্দের কারণে তারা শামের মুজাহিদিন গ্রুপগুলোর সাথে যুদ্ধে পেরে উঠছে না। আর তাদেরকে সাহায্যের জন্য ভারী অস্ত্র চাইলেও আম্রিকা সরবরাহ করতে পারছে না। কারণ তা ঘুরে ফিরে পরে গনিমাহ হিসেবে মুজাহিদিনদের হাতেই চলে যাবে। আর তাই দেখা যাচ্ছে মিত্র আম্রিকার এমন হীন মান্যতার কারণে এই আম্রিকানপন্থি দলগুলো এক প্রকার বাধ্য হয়েই মুজাহিদিনদের সাথে মিলে বাশারের বিরুদ্ধে ফাইট করছে। আর মুজাহিদিনদের সাথে থাকার ফলে যে মুখে দাড়ি ছিল না, যে মুখে আল্লাহু আকবার আসতো না, যে অন্তর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বুঝত না সেই অন্তর আর মুখগুলো এখন জিকিরের আলোতে আলোকিত হয়ে উঠছে। তাই দেখা যাচ্ছে শামে এখন আম্রিকার স্বার্থ উদ্ধার করতে পারবে একমাত্র কুর্দিরাই। শিয়ারা ইরাকে আম্রিকার সাহায্য নিলেও শামে তা নিতে পারবে না, কারণ রুশি প্রশাসন শামে যে প্রভাব নিয়ে তারা আছে তা কখনোই হারাতে চাবে না।তো এই হিজড়া কুর্দিরা গ্রাউন্ডে কি করবে তা বুঝাই যাচ্ছে। অলরেডি কুর্দিরা মুজাহিদিনদের হাতে মার খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। যে কারণে আম্রিকা তাদের ব্লকের সুন্নি বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিতে পারছিল না সেই একই কারণে তারা অস্ত্র দিতে পারবে না কুর্দিদের। আর আশা করা যায় এইভাবেই ধীরে ধীরে শামের ময়দান থেকে বিদায় নিবে কুর্দি ও আম্রিকান ফিতনাও ইংশা আল্লাহ। যেমন করে শাম থেকে ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে খারেজি ফিতনা।যা সংকোচিত ও ক্ষয়িষ্ণু।
আর আশা করা যায় ইংশা আল্লাহ ধীরে ধীরে শামে মাত্র দুইটি পক্ষই থাকবে এক পক্ষে মুজাহিদিন অপর দিকে বাশার ও তাদের মিত্র রাষ্ট্রের জোট।
এই যখন বিশ্ব পরিস্থিতি তখন আমাদের মুজাহিদিন উমারাগনেরও উচিত নতুন পলিসি নিয়ে আগানো। আন্তর্জাতিক পলিসি মেকিংয়ে একটি প্রবাদ আছে “শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু”। আর এর সবচেয়ে উত্তম প্রয়োগ করছেন শামের ভাইয়েরা। তারা তুর্কি ও সিরিয়ার বিরোধকে খুব সুন্দর কাজে লাগিয়েছেন। যার বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমানে খারেজি,পিকেকে, ও এসডিএফ থেকে ভূমি হস্তগত করতে তুর্কির সাহায্য গ্রহণকে । এর ফলে তুর্কি যেমন তার নিজের বর্ডার নিরাপদ করছে খারেজি আর কুর্দিদের থেকে ঠিক তেমনি মুজাহিদিনরা নিরাপদ হচ্ছে খারেজি ও কুর্দি ফিতনা থেকে। শামের মুজাহিদিনগনের উচিত এই তুর্কি সম্পর্ককে সঠিক পথে পরিচালনা করা এবং এই পারস্পরিক সম্পর্ক থেকে যত বেশি পারা যায় ফায়দা হাসিল করা। যার মাঝে পরে বিদেশি মুজাহিদিনদের জন্য যাতায়াত ইজি করা, তুর্কির সাথে তেল ব্যবসা করে নিজেদের আর্থিক শক্তি বৃদ্ধি করা, হালকা ও ভারী অস্ত্র বাণিজ্যের নতুন রাস্তা তৈরি করা। শামের ভাইদের উচিত যতদ্রুত সম্ভব তুর্কিদের কাছ হতে সাহায্য নিয়ে শামে তুর্কি প্রভাব হ্রাস করা। কারণ এই তুর্কি হচ্ছে এমন এক তুর্কি যা গিরগিটির মত কখন কি রঙ ধারন করবে তা আল্লাহই ভালো জানেন। শামের ভাইদের উচিত তুর্কিদের অন্ধভাবে বিশ্বাস না করা। কারণ তুর্কি আপনার সোমালি ভাইদের বিরুদ্ধে আর্থিক সাহায্য করছে আবার আপনাদের ট্যাংক দিয়ে সাহায্য করছে তাহলে বুঝাই যায় এই ব্যক্তিকে বিশ্বাস করা উচিত না। কারণ যে আপনার ভাইয়ের গলায় ছুরি আর আপনার হাতে ফুল দিতে পারে, সে যে কোন মুহূর্তে আপনার গলাতেও ছুরি ধরতে পারে।
তুর্কির বর্তমান এই পদক্ষেপ আরবদেরকে পুনারায় তাদের শত্রু ও মিত্র নির্বাচনের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। কারণ তারা সম্প্রতি দেখেছে ইরানকে দেওয়া আম্রিকার ছাড়, আর দেখেছে দীর্ঘদিনের মিত্র তুর্কির সাথে আম্রিকার গাদ্দারি,এরফলে আম্রিকাকে বিশ্বাস করা এই আরব দুলালদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। সাথে সাথে তারা এও দেখছে শামে রুশিদের আগ্রাসি নীতি আর আম্রিকার কিংকর্তব্যবিমুঢ় নীতি। তাই বন্ধুত্বের এই নতুন ফরমেশনে মুজাহিদিনগনের উচিত শরিয়াহর মাঝে থেকে ফায়েদা হাসিল করা এবং কোন রাষ্ট্রকেই অগাধ বিশ্বাস না করা যদিও তারা কুরআন হাতে মুজাহিদিনদের সাহায্য করার ওয়াদা করে।
এই যখন শামের অবস্থা তখন হিন্দের ভুমিতেও কিন্তু পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে, আরবের ব্যর্থতা আম্রিকা এই হিন্দের ভুমিতে ঘুচাতে চাচ্ছে। ইতিমধ্যে ভারত ও আম্রিকার মাঝে স্বাক্ষরিত হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এক চুক্তি। যার ফলে ভারত ও আম্রিকা তাদের একে অপরের সেনা, নৌ এবং বিমান ঘাঁটিকে ব্যবহার করতে পারবে লজিস্টিক সাপোর্ট হিসেবে। আর এই চুক্তি যে পাক সরকার ও চীন ভালোভাবে নিবে না তা বুঝাই যাচ্ছে। কেরির ভারত সফরের সাথে সাথে চীন থেকেও ঘোষণা আসল স্বল্প সুদে পাক সরকারকে ৮ টি এটাক সাব মেরিন দেওয়ার। বাংলাদেশ ও পাকি ফৌজ মুরতাদ হলেও তাদের মাঝে এখনো কঠিন ভারত বিদ্বেষ কাজ করে। আর এটি বেশি কাজ করে পাকিদের ক্ষেত্রে। তাই আমাদের আফগানের তালেবান ভাইদের উচিত সম্পর্কের এই নতুন মোড়কে শরিয়াহর মাঝে থেকে নিজেদের স্বার্থে কিভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করে পদক্ষেপ নেওয়া। আর আমরা আমাদের বিচক্ষন তালেবান ভাইদের কাছ হতে এমন কিছুই আশা করি এবং অতিতেও এর অনেক নজীর পেয়েছি।
আর ভারত ও আম্রিকার এই নতুন চুক্তিকে সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করতে পারবেন আমাদের পাকিস্তানের মুজাহিদিন দায়ী ভাইরা। পাকিস্তানের মুজাহিদিন ভাইদের উচিত ভারত ও আম্রিকার এই চুক্তিকে লক্ষ্য করে ব্যাপক মিডিয়া কাজ চালিয়ে যাওয়া, এখনো সেই দেশের আর্মিদের মাঝে সুপ্ত ঈমানের অধিকারি যারা আছেন তাদেরকে দাওয়াহ দেয়া, যেভাবে হোক সেনাবাহিনীর মাঝের সুপ্ত ইসলামি শক্তিকে জিহাদের পথে ইস্টিমেট করা। আর আমরা আশা করি আমাদের বিজ্ঞ আমীর মাওলানা আসেম উমর (হাফিঃ) এমন একটি সুন্দর অবস্থা জিহাদের কাজে লাগাতে কোন ভুল করবেন না ইংশা আল্লাহ।
আর আমাদের বাংলা অঞ্চলের দায়ীভাইরা জন কেরির বাংলায় আগমন, লীগ বি এনপি সবার সাথে কথা, বন্যার সময় ভারতের হাতি নিয়ে ব্যস্ত থাকা, সুন্দরবন এর পরিবর্তে কয়লা দিয়ে মুখ ধোঁয়া এই সমস্ত ইস্যুকে কিভাবে ব্যবহার করবে তা তো তাদেরকেই চিন্তা করে বের করতে হবে। এছাড়া বাংলার এই তাগুতের কিন্তু শত্রু অনেক আছে। এখন এই শত্রুদের কিভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রনে এনে তাদের মাঝেই ফাইট লাগানো যায় তাও চিন্তা করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে একটি উত্তপ্ত বাংলা উপহার দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত গাযওয়া ই হিন্দ।
আর আমাদের ভারতের ঘুমন্ত মুসলিম ভাইদেরকে বলতে চাই, হে ভাই দেখুন আপনাদের উলামারা এতদিন ভারতকে দারুল আমান বলে অনেক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। কিন্তু দুই কাফির দেশের চুক্তির মাধ্যমে আল্লাহ আজ সেই দিন শেষ করে দিয়েছেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোন মুসলিম যদি কোন কাফেরকে সাহায্য করে তাহলে সে যদি মুরতাদ হয়ে যায় তাহলে যে কুফরি নিজাম প্রকাশ্যে আম্রিকার সাথে এত বড় চুক্তি করলো তার পরেও কি ভারতে জিহাদ ফরয হবে না? আমিও আমাদের শায়খের কথা নকল করে বলতে চাই আপনাদের সমুদ্রে ঝড় নেই কেন? আপনারা দেখুন এত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও বাংলার জমিনে মুজাহিদিনরা বুক চিড়ে তাগুতের সামনে দাঁড়িয়ে গেছে বিইযনিল্লাহ, তাহলে কি সেই প্রতিবন্ধকতা যা আপনাদেরকে দাড়াতে দিচ্ছে না। হে আমার ভারতের প্রিয় ভাই আপনারা এমন এক দেশের নাগরিক যাদের শত্রুরা গরুর মুত্র পান করে আর দেশের ৭০ ভাগ মানুষ টয়লেট করে খোলা আকাশে। তাই আপনারা একবার যদি আক্রমন করেন তাহলে এই মুত্র পানকারীরা মুত্র পান করতেও ভুলে যাবে আর যে ৩০ ভাগ নিজেদের টয়লেটে টয়লেট করে তারাও খোলা ময়দানেই টয়লেট করা শুরু করে দিবে। হে আমার ভারতীয় ভাইয়েরা আর ঘুমিয়ে থাকবেন না। এই নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিকে নিজেদের কাজে লাগান, ভারতের যদি বিশাল সামরিক বাহিনী থাকে তবে মনে রাখবেন তার অনেক শত্রুও আছে। ইংশা আল্লাহ আপনারা বিজয়ী হবেন।
সব মিলিয়ে আমাদের উমারাগনের উচিত বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে নিজ নিজ দেশে নিজেদের জিহাদের স্ট্রাটেজি নিয়ে পর্যালোচনা করা।আর এইবারের আলোচনা হতে পারে কিভাবে শত্রুর শত্রুকে বন্ধু বানানো যায়...... আর এইক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ হতে পারেন শামের ভাইরা।
আমরা যেই দেশেরই মানুষ হয়ে থাকি না কেন আমাদের উচিত আমাদের শত্রুর শত্রুকে শরিয়াহর মাঝে থেকে কৌশলগত বন্ধু হিসেবে ব্যবহার করা।
Comment