দীর্ঘ ৪ মাসের বিরতির পড় অতি আদরের কন্যার সাথে পিতার সাক্কাত। পিতার অন্তর আবেগে পরিপূর্ণ। কিন্তু কন্যার দৃষ্টিতে সন্দেহ আর ভয়। অপরিচিত মানুষ দেখলে যে ভয় কাজ করে তেমন। অবশ্য এটাই স্বাভাবিক। দুই বছরের সন্তান ৪ মাস পরে নিজের বাবাকে মনে রাখতে পারবে এটা অস্বাভাবিক। যাই হোক এই বয়সে সব বাচ্চারাই তাঁদের আশেপাশের সবাইকে আংকেল ডাকে। অগত্যা বাবার পরিবর্তে আংকেল ডাকেই সন্তুষ্ট থাকতে হল। যতই তাকে বলা হয় মা আমি তোমার বাবা। সে শুধু বলে বাবা নাই। ঠিক বুঝতে পারলাম না। এই কথা কেন বলতেছে। স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে একটা বোধগম্য উত্তর পেলাম। আমার অনুপস্থিতিতে সে শুধু বাবা কই বাবা কই করত। আর আশেপাশের সবাই শুধু বলত বাবা নাই। তাই বাবা শব্দ শুনলেই এখন সে শুধু এটা বলে যে বাবা নাই। যাই হোক কোনমতে দিনটা আংকেল হিসেবেই পার করলাম। পরের দিন সকালের ভিতর আলহামদুলিল্লাহ্* বাবার জায়গায় ফিরে আসা গেল। পুরনো কিছু বিষয় যা শুধু বাবার সাথেই হত সেগুলো ঘটতে দেখে হয়ত আল্লাহ্* কন্যার স্মৃতিতে বাবাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাবা হিসেবে ঘন্টাখানেক অতিবাহিত হল। সময় করে একটু মেসেজ চেক করতে বসলাম। মেসেজ পরে রঙ্গীন পৃথিবী প্রথমে ধূসর অতঃপর নিকষ কালো হয়ে গেল। মেসেজটা কাঙ্ক্ষিত। যে কোন সময়ই আসতে পারত। তারপরেও আমরা মানুষ। তাই অনেক কিছু আগাম জেনেও পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে উদভ্রান্ত হয়ে পরি। আশেপাশে কেউ নাই যার কাছে এই নিউজটা শেয়ার করতে পারব। যাই হোক পরিস্থিতি অনেক সময় আবেগ উপশম করতে বাধ্য করে। আমিও চুপচাপ হজম করে গেলাম। এবার ফেরার পালা। আদেশ আসেনি। কিন্তু আসবে যে কোন সময় এটুকু বুঝতে পারলাম। কন্যাকে নিয়ে বের হলাম ছেলের অসুস্থতার কিছু রিপোর্ট আনার জন্য। চারপাশে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু অন্তর খুলে নিজেকে মেলে ধরার মত একটা মানুষও নাই। বাসে থেকে নেমে কন্যা আর আমি পাশাপাশি হাটছি। হাসপাতালে পৌঁছলাম। রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। পাশে টেলিভিশন চালু করা। চোখ পরল নীচের নিউজের স্ক্রলে। নিউজের স্ক্রলে লেখা ''অভিজিতের (নাপাক) হত্যাকারীদের মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজন বাম হাতী শরীফ ডিবির ক্রসফায়ারে নিহত''। আশেপাশের সবকিছু আবার কিছুক্ষনের জন্য নিশ্চল হয়ে যায়। রিপোর্ট হাতে পেলাম। ডাক্তার যে ভয় দেখিয়েছিল তা সত্যি না দেখে মনটা কিছুটা প্রশান্ত হল। মেয়েকে নিয়ে ফিরতি পথে। এবার ভিন্ন পথে একটা রিক্সা নিলাম। অনেক্ষন চেপে রাখা আবেগ এক অবুঝ শিশুকে জড়িরে ধরে প্রকাশ করার সুযোগ পেলাম এবার। মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বললাম আজকে তোমার এক আংকেল শহীদ হয়েছেন। তুমি দোয়া কর তোমার বাবাও যেন তোমার এই আংকেলের মত শহীদ হতে পারে। অবুঝ শিশু কি বুঝল জানি না। কিন্তু পিতার চোখের জল মুছে দিল। লক্ষ্য ফিরলাম। পুনরায় মেসেজ চেক করলাম। কাঙ্ক্ষিত মেসেজটি এসেছে। এবার ফেরার পালা। স্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম।
ফেরার পথে অনেক স্মৃতি এসে ভিড় করে দাঁড়াচ্ছে। সবই বিক্ষিপ্ত। ধীরে ধীরে একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থলে ফিরে আসলাম। আমার প্রভু, আমার রব, আমার মালিকের কাছে। যার কাছে কোন কিছু চাইতে সংকিত হতে হয় না। পাব কি পাব না এই সন্দেহে দুলতে হয় না। আল্লাহ্*র কাছে দুয়া করলাম হে আল্লাহ্* আপনি আমার ভাইকে শহীদ হিসেবে কবুল করে নেন। আর আমরা যারা এই জমীন আঁকড়ে এখনো পরে আছি তাঁদেরকে আমার এই ভাইয়ের দেখানো পথে হাটার সুযোগ করে দেন। হে আল্লাহ্* আপনি দেখছেন আমার ঔরসজাত সন্তান আজ আমাকে বাবার বদলে আংকেল বলে ডাকছে। হে আল্লাহ্* এতে আমার বিন্দুমাত্র আফসোস নাই। পরে আবার যদি কখনো দেখা হয় তখন হয়ত আংকেলও ডাকবে না। কারণ তখন এটা বুঝে ফেলবে সবাই আংকেল হয় না। হে আল্লাহ্* আমার সন্তান আমাকে না চিনুক কিন্তু আল্লাহ্* আপনি ত উত্তম প্রতিপালনকারী। আপনি আমার সন্তানকে এমনভাবে গড়ে ওঠার সুযোগ করে দেন সে যেন জিহাদ কি তা বুঝতে শেখে, সে যেন শহীদ কি তা বুঝতে শেখে, সে যেন শহীদ হওয়ার তামান্না অন্তরে লালন করে।।
---সংগৃহীত
ফেরার পথে অনেক স্মৃতি এসে ভিড় করে দাঁড়াচ্ছে। সবই বিক্ষিপ্ত। ধীরে ধীরে একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থলে ফিরে আসলাম। আমার প্রভু, আমার রব, আমার মালিকের কাছে। যার কাছে কোন কিছু চাইতে সংকিত হতে হয় না। পাব কি পাব না এই সন্দেহে দুলতে হয় না। আল্লাহ্*র কাছে দুয়া করলাম হে আল্লাহ্* আপনি আমার ভাইকে শহীদ হিসেবে কবুল করে নেন। আর আমরা যারা এই জমীন আঁকড়ে এখনো পরে আছি তাঁদেরকে আমার এই ভাইয়ের দেখানো পথে হাটার সুযোগ করে দেন। হে আল্লাহ্* আপনি দেখছেন আমার ঔরসজাত সন্তান আজ আমাকে বাবার বদলে আংকেল বলে ডাকছে। হে আল্লাহ্* এতে আমার বিন্দুমাত্র আফসোস নাই। পরে আবার যদি কখনো দেখা হয় তখন হয়ত আংকেলও ডাকবে না। কারণ তখন এটা বুঝে ফেলবে সবাই আংকেল হয় না। হে আল্লাহ্* আমার সন্তান আমাকে না চিনুক কিন্তু আল্লাহ্* আপনি ত উত্তম প্রতিপালনকারী। আপনি আমার সন্তানকে এমনভাবে গড়ে ওঠার সুযোগ করে দেন সে যেন জিহাদ কি তা বুঝতে শেখে, সে যেন শহীদ কি তা বুঝতে শেখে, সে যেন শহীদ হওয়ার তামান্না অন্তরে লালন করে।।
---সংগৃহীত
Comment