আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্*, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্* রাব্বুল ‘আলামীনের জন্য। দরূদ ও সালাম অবতীর্ণ হোক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সঙ্গী-সাথীদের উপর। ইবনুল কাইয়্যিমের মতে, কোন কাজ ইস্তিকামাহ্* তথা দৃঢ়চিত্ততা বা মানসিক অবিচলতার সাথে সম্পন্ন করতে চাইলে নিম্নোক্ত পাঁচটি শর্ত পূরণ করা জরুরীঃ [১] কাজটি হতে হবে কেবলমাত্র এবং শুধুমাত্র আল্লাহ্* রাব্বুল ‘আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে। আর এই বিষয়টি নিয়্যতের পরিশুদ্ধতার সাথে সম্পৃক্ত। এটিই হল “ইখ্*লাস” বা নিয়্যতের পরিশুদ্ধতা। [২] অর্জিত জ্ঞান (‘ইল্*ম) হবে কাজটির ভিত্তি। অর্থাৎ, জেনে ও বুঝে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে। কারণ জ্ঞানের ভিত্তিতে সম্পাদিত কর্ম মানুষের মানসিক নিশ্চয়তা বিধান করে। [৩] নির্ধারিত পদ্ধতি মেনেই ইবাদত করতে হবে। শব্দগত অর্থেই “ইবাদত” মানে হল “মেনে চলা”, “আনুগত্য করা” ইত্যাদি। আর তাই ইবাদত বা আনুগত্য করতে হবে ইবাদতের নির্ধারিত পদ্ধতির আনুগত্য করার মাধ্যমেই। [৪] কাজটি করতে হবে যথাসম্ভব সর্বোত্তমভাবে এবং আন্তরিকতার সহিত। ইবাদতে অনাগ্রহ বা অনীহা দুর্বল ঈমানের অন্যতম প্রধান লক্ষন। [৫] কোন কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে কাজটির আইনী বৈধতা আছে কিনা তাও বিবেচ্য বিষয়। আইনী বৈধতা নেই এমন কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সুলুক (আচরন বা শিষ্টাচার) বিষয়ক অন্যান্য বিশেষজ্ঞগণ ইস্তিকামাহ্* (দৃঢ়চিত্ততা বা মানসিক অবিচলতা) অর্জনের ক্ষেত্রে আরো কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করার উপদেশ দিয়েছেনঃ [১] চূড়ান্ত পরিণতি তথা আখিরাতে বিচার দিবসের কথা ভেবে সদায় সতর্ক থাকাঃ পরকাল ভিত্তিক এই মানসিক সচেতনতার সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে যাতে করে তা মানুষকে বেশী বেশী সৎকর্মের ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলে। প্রতি মুহূর্তেই নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে যে একজন মানুষের মৃত্যুর সাথে সাথেই শুরু হয়ে যায় তার আখিরাতের জীবন। একজন সালাফ [রাসূল (সা) এর পরবর্তী যুগে ইসলামের প্রথম দিকের তিনটি প্রজন্ম-সাহাবীগণ,তাবীঈগণ এবং তাবে-তাবেঈগণই হলেন সালাফ] বলেনঃ
“আপনি যদি জানেন যে আপনি সকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন তাহলে বিকালের অপেক্ষা করবেন না আর যদি জানেন যে বিকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন তাহলে পরবর্তী সকালের অপেক্ষা করবেন না।”
[২] অঙ্গীকার বা মুশারাতাহঃ একজন মানুষকে অঙ্গীকার করতে হবে যে তিনি দৃঢ় বা অবিচল হবেন এবং ইসলামের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে যথাসম্ভব সঠিক ও উত্তমভাবে কাজ করবেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আজকের দিনে অনেক মুসলমান এ ধরনের অঙ্গীকার করার ব্যাপারে বড়ই উদাসীন। [৩] উক্ত অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া বা মুজাহাদাহঃ কিছু সংখ্যক মুসলমান আছে যারা অঙ্গীকার করে কিন্তু সেই অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে সচেষ্ট হয় না। [৪] নিয়মিতভাবে নিজের কাজকর্মের পর্যালোচনা তথা মুরাকাবাহঃ অঙ্গীকার বা প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়ে কখনই কোন মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করিয়ে আত্মপ্রসাদে ভোগা চলবে না। এক্ষেত্রে নিজের প্রতি সৎ হতে হবে। [৫] নিজের কাছেই জবাবদিহি করা বা মুহাসাবাহঃ এ ধাপটি দু’বার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথমত,কোন কিছু শুরু করার আগে নিশ্চিত করতে হবে এ কাজে আল্লাহ্* রাব্বুল ‘আলামীন খুশি হবেন কিনা অর্থাৎ কাজটা আল্লাহ্*র ওয়াস্তে করা হচ্ছে কিনা। এক্ষেত্রে এটা উপলব্ধি করা খুবই জরুরী যে কাজটি আল্লাহ্* রাব্বুল ‘আলামীন তথা ইসলামের নির্ধারিত নিয়ম মেনেই করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কাজটি শেষ হওয়ার পর ভুল-ত্রুটি যাচাই করে দেখা,যে উদ্দেশ্য করা হয়েছে সেটা অর্জিত হয়েছে কিনা তা বিচার করা। যেটুকু সাফল্য পাওয়া গেছে তাতে সন্তুষ্ট না থেকে আরো ভাল করা যেত কিনা সেটা খতিয়ে দেখা। [৬] কাজটি সম্পন্ন হলে নিখুঁতভাবে করতে না পারার জন্য নিজেকে দোষারোপ করাঃ ভবিষ্যতে আরো ভালো করার প্রত্যয়ে আত্ম-নিন্দাকে একটি ইতিবাচক গুণ হিসেবে নেয়া যায়। এমনটি করতে পারলে তা আমাদের কর্ম সম্পাদনের দক্ষতা উন্নতির জন্য পরবর্তীতে নিয়মিতভাবে আরও অঙ্গীকার করার সুযোগ করে দেবে। [৭] উন্নতির জন্য ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বা তাহসিনঃ আমরা প্রত্যহ যে কাজগুলো করি যেমনঃ দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড,মহৎ কাজ,ইবাদত ইত্যাদি প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আমাদেরকে উন্নতি সাধনের জন্য চেষ্টা করতে হবে। [৮] আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের প্রতি বিনয়ী হওয়াঃ আল্লাহ্* রাব্বুল আলামীনের ক্ষমা, নির্দেশনা ও সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে; বুঝতে হবে তিনি ব্যতীত উৎকৃষ্ট, নিখুঁত এবং মহান আর কেউ নেই। উপরোক্ত শর্ত/ধাপগুলো দুনিয়াবী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ইবাদত এবং অন্যান্য ধর্মীয় ভাল কাজে প্রয়োগযোগ্য মনে করতে হবে। সূত্রঃ ইমাম নাওয়াবি (রাহিমাহুল্লাহ্*) এর ৪০ টি হাদিসের এর একটি ব্যাখ্যা
“আপনি যদি জানেন যে আপনি সকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন তাহলে বিকালের অপেক্ষা করবেন না আর যদি জানেন যে বিকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন তাহলে পরবর্তী সকালের অপেক্ষা করবেন না।”
[২] অঙ্গীকার বা মুশারাতাহঃ একজন মানুষকে অঙ্গীকার করতে হবে যে তিনি দৃঢ় বা অবিচল হবেন এবং ইসলামের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে যথাসম্ভব সঠিক ও উত্তমভাবে কাজ করবেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আজকের দিনে অনেক মুসলমান এ ধরনের অঙ্গীকার করার ব্যাপারে বড়ই উদাসীন। [৩] উক্ত অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া বা মুজাহাদাহঃ কিছু সংখ্যক মুসলমান আছে যারা অঙ্গীকার করে কিন্তু সেই অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে সচেষ্ট হয় না। [৪] নিয়মিতভাবে নিজের কাজকর্মের পর্যালোচনা তথা মুরাকাবাহঃ অঙ্গীকার বা প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়ে কখনই কোন মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করিয়ে আত্মপ্রসাদে ভোগা চলবে না। এক্ষেত্রে নিজের প্রতি সৎ হতে হবে। [৫] নিজের কাছেই জবাবদিহি করা বা মুহাসাবাহঃ এ ধাপটি দু’বার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথমত,কোন কিছু শুরু করার আগে নিশ্চিত করতে হবে এ কাজে আল্লাহ্* রাব্বুল ‘আলামীন খুশি হবেন কিনা অর্থাৎ কাজটা আল্লাহ্*র ওয়াস্তে করা হচ্ছে কিনা। এক্ষেত্রে এটা উপলব্ধি করা খুবই জরুরী যে কাজটি আল্লাহ্* রাব্বুল ‘আলামীন তথা ইসলামের নির্ধারিত নিয়ম মেনেই করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কাজটি শেষ হওয়ার পর ভুল-ত্রুটি যাচাই করে দেখা,যে উদ্দেশ্য করা হয়েছে সেটা অর্জিত হয়েছে কিনা তা বিচার করা। যেটুকু সাফল্য পাওয়া গেছে তাতে সন্তুষ্ট না থেকে আরো ভাল করা যেত কিনা সেটা খতিয়ে দেখা। [৬] কাজটি সম্পন্ন হলে নিখুঁতভাবে করতে না পারার জন্য নিজেকে দোষারোপ করাঃ ভবিষ্যতে আরো ভালো করার প্রত্যয়ে আত্ম-নিন্দাকে একটি ইতিবাচক গুণ হিসেবে নেয়া যায়। এমনটি করতে পারলে তা আমাদের কর্ম সম্পাদনের দক্ষতা উন্নতির জন্য পরবর্তীতে নিয়মিতভাবে আরও অঙ্গীকার করার সুযোগ করে দেবে। [৭] উন্নতির জন্য ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বা তাহসিনঃ আমরা প্রত্যহ যে কাজগুলো করি যেমনঃ দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড,মহৎ কাজ,ইবাদত ইত্যাদি প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আমাদেরকে উন্নতি সাধনের জন্য চেষ্টা করতে হবে। [৮] আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের প্রতি বিনয়ী হওয়াঃ আল্লাহ্* রাব্বুল আলামীনের ক্ষমা, নির্দেশনা ও সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে; বুঝতে হবে তিনি ব্যতীত উৎকৃষ্ট, নিখুঁত এবং মহান আর কেউ নেই। উপরোক্ত শর্ত/ধাপগুলো দুনিয়াবী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ইবাদত এবং অন্যান্য ধর্মীয় ভাল কাজে প্রয়োগযোগ্য মনে করতে হবে। সূত্রঃ ইমাম নাওয়াবি (রাহিমাহুল্লাহ্*) এর ৪০ টি হাদিসের এর একটি ব্যাখ্যা
Comment