Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদের প্রস্তুতি এবং এবং তার ব্যাপারে ধারাবাহিক আলোচনা (পর্ব ১)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • #31
    শাইখকে আল্লাহ হিফাজত করুন। অবশ্যই এই আলোচনায় শায়েখের সাধারণ দিক-নির্দেশনা মেনে চলা আবশ্যিক। তবে এক্ষেত্রে আমরা শায়েখের কথাকে কিছুটা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ –

    “...................তাদের সাথে যেকোন মোকাবেলা এড়িয়ে যাওয়া, শুধুমাত্র সেই দেশসমূহ ব্যতীত যেখানে তাদের সাথে সম্মুখ সমরে উপনীত হওয়া অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়................”



    এখন এই অনিবার্যতা আমরা কিভাবে বিশ্লেষণ করবো এটাই হচ্ছে প্রশ্ন। এটা সত্য এবং সঠিক বিষয় যে, মুজাহিদরা এখনো সরকারী বাহিনীকে এড়িয়ে চলছে। কিন্তু, সরকারী বাহিনী কি মুজাহিদদের বিরুদ্ধে ফ্রন্ট লাইনে চলে আসেনি? অথবা মুজাহিদরা এদের এড়িয়ে চললেও এরা তো মুজাহিদদেরকে ছাড় দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে এটাও ভাবার বিষয় যে, পরিস্থিতি ঠিক কোন পর্যায়ে গেলে আমরা সরকারী বাহিনীকে নিয়ে ভাববো? আর সেক্ষেত্রে আমরা কি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে থাকবো নাকি আমরাও মাঝে মধ্যে কিছু সময়ের জন্য পরিস্থিতির উপর চাপ প্রয়োগ করবো?


    এ পর্যায়ে আমরা সামরিক শক্তি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আলোচনায় আসতে পারি, যার প্রধান একটি বিষয় হচ্ছে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তোলা এবং অস্ত্রের মজুদ বাড়ানো। তাহলে আমরা নিশ্চয় এটা করতে পারি যে প্রশিক্ষণ এমনভাবে চলতে থাকবে যেন সম্মুখ সমরে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই আমরা গেরিলা যুদ্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারি।
    আসলেও তাই । তাগুতদের সাথে আমাদের সংঘর্ষ অনেকটা অনিবার্য হয়ে দারিয়েছে । সিলেটে , মৌলভীবাজারে , কুমিল্লায় তাগুত বাহিনীর উপর কেউ আক্রমণ করেনি । তারাই জঙ্গি আস্তানা শনাক্ত করে হামলা করেছে । এই হামলাগুলোর ঘটনায় আইএস রা যে বিস্ফোরণগুলো ঘটিয়েছে তাতে জনসমর্থনে ক্ষতি হলেও , পরিস্থিতি অনুযায়ী এছারা তাদের কোন উপায় ছিল না ।

    Comment


    • #32
      তাহলে পুরা আলোচনা থেকে আমরা যা পেলাম তা হচ্ছে বাংলাদেশের জিহাদের জন্য আমাদের মুলত দুই রকম প্রস্তুতি দরকার, একটি সামরিক এবং আরেকটি দাওয়াতি প্রস্তুতি। এবং এটিও আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারছি যে দাওয়াতি প্রস্তুতিই আসলে অনেক বেশি দরকার। ইনশাআল্লাহ আমরা আজ আলোচনা করব দাওয়াতি কাজের প্রস্তুতির উপরে -

      এদেশে জিহাদের কাজ সফল করার জন্য জনগনের সম্পৃক্ততা অনেক জরুরী। জনগন ব্যাতিত এই জিহাদ সফলতার মুখ দেখবেনা। যদিও এখানে কথাটা একটু কেমন যেন শোনায় যে, আল্লাহর জিহাদ কি জনগনের উপরে এতই নির্ভরশীল হয়ে গেল যাদের অধিকাংশই কিনা আকন্ঠ এই দুনিয়ার মায়াজালে ডুবে আছে! আসলে ব্যাপারটা যদি অন্য ভাবে দেখি – মনে আছে রাবি ইবনে আমর (রাঃ) এর সেই কথাটি, "আমরা মানুষ কে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে আল্লাহর দাসত্বের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছি” আমাদের এখানেও জিহাদের মাকসাদ কি সেটাই না? মানুষ কে তাগুতের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জাতের দাসত্বের দিকে ফিরিয়ে নেয়া। মানুষ কে সবচেয়ে বড় পাপ শির্কের অভিশাপ থেকে মুক্ত করে এক আল্লাহর ইবাদতের দিকে ফিরিয়ে নেয়া। নিঃসন্দেহে তাই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যার জন্য এই জিহাদ, যাদের মুক্ত করতে এই জিহাদ, যাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এই জিহাদ, যাদের সম্মানিত করতে এই জিহাদ, যাদের জান এবং মালের নিরাপত্তা দিতে এই জিহাদ, যাদের মা-বোনদের ইজ্জতের হেফাজত করতে এই জিহাদ তারাই যদি এই জিহাদের স্বরূপ না বুঝে তাহলে এই জিহাদ কিভাবে সফল হতে পারে! এটা এমন যে, আমি কাউকে একটা উপহার দিচ্ছি কিন্তু সে জানেনা যে এটা কত মুল্যবান উপহার তাই এটা ফিরিয়ে দিচ্ছে কিংবা হাতে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। মুজাহিদিন রা যে জিহাদ করেন তারা কি নিজেদের শান-শওকত, আলিশান জিন্দেগী, ক্ষমতা এই সবের লোভে জিহাদ করেন? তারা তো জিহাদ করেন, আল্লাহ জমিনের অসহায় নারী শিশুদের জন্য, ন্যায় এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য, বাতিল কে দূর করার জন্য এবং হাক্ক প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।

      কিন্তু আপনি তাকিয়ে দেখেন আমাদের আশে পাশের কয়জন এই বুঝে কে উপলব্ধি করতে পেরেছেন?

      আপনি যদি পুরা জমিনের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন মানুষ আজ তাগুতের কাছে নিজদের ঈমান এবং আমল কে বিক্রি করে দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘরে বসে আছে!এর চেয়ে ভয়ঙ্কর হালত আর কি হতে পারে! এদেশের মানুষের উপরে সবচেয়ে বেশি জুলুম করে পুলিশ এবং র্যাহব বাহিনী এবং আওয়ামী কুত্তা বাহিনী, অথচ দেখেন মানুষ এদের জুলুমের কথা ভুলে যায়, কিন্তু আল্লাহর দ্বীনের মুজাহিদিনদের বিরুদ্ধে এই তাগুত বাহিনীর হাত শক্ত করে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তর টি ছোট হবেনা বরং কিছুটা বড় হবে – কারন এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে গেলে কিছুটা গভীরে যেতে হবে।


      * চলবে ইনশাআল্লাহ -
      Last edited by s_forayeji; 04-14-2017, 12:44 AM.
      মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

      Comment


      • #33
        যুদ্ধের নীরব ঘাতক প্রোপ্যাগান্ডা; দাওয়াতি কাজের প্রথম বাধা (১)


        ... "দাওয়াতি কাজের প্রস্তুতির ব্যাপারে আমরা সবাই যদি একমত হই তাহলে এরপর আমাদের আগে দেখা দরকার এই কাজের পথে সবচেয়ে বড় বাধা কি? এছাড়া বর্তমানে যুদ্ধের অন্যতম একটি নীরব ঘাতক আছে, বর্তমানে একটি বিশেষ পদ্ধতির যুদ্ধ চালু হয়েছে যা কাজ করে চোখের আড়ালে, কিন্তু ফলাফল ভয়ঙ্কর!" ...

        আমরা সবাই জানি যে তাগুত বাহিনি কিছুদিন আগেও জনবিচ্ছিন্ন ছিলো। দেরিতে হলেও তারা বুঝতে পেরেছে যে জন বিচ্ছিন্ন থাকলে তাদের ধংস আরো দ্রুত হবে, এবং দ্বিতীয়ত জন বিচ্ছিন্ন থাকলে আমাদের বিরুদ্ধে তারা কখনই পেরে উঠবে না, এক কথায় অসম্ভব! এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে তারা জনগন কে নিজেদের দলে ভেড়ানোর চেস্টা করছে।

        এই কাজটি তারা করছে একটি প্রোপাগান্ডা ক্যামপেইনের সাহায্যে। আপনারা যদি লক্ষ্য করেন, এই ক্যাম্পেইনের প্রধান ভাবে দুই ধরনের কাজ আছে। একটি হচ্ছে র্যাআপিড রেস্পন্স আরেকটি হচ্ছে লং টার্ম রেসপন্স। উদাহরন হিসেবে বলা যায়, বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা সরাসরি পাবলিক কে অ্যাড্রেস করে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা মেসেজ প্রচার করে, পরিস্থিতির উপরে নিয়ন্ত্রন থাকার জন্য তারা পরিস্থিতিকে কাজে লাগায় এবং তাদের মেসেজ এর তাৎক্ষনিক প্রভাব পাবলিকের উপরে পড়ে। আরেকটি হচ্ছে লংটার্ম রেস্পন্স আর এই কাজটি করে, বলতে গেলে আসলে সমাজের পুরা সিস্টেমটাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্কুল কলেজ, বুদ্ধিজীবী, ভ্রান্ত আলিম সমাজ, পরিবার, মিডিয়া, সমস্ত কিছুই এই প্রোপাগান্ডা ক্যামপেইনের হয়ে কাজ করছে। এই প্রোপাগান্ডার রেস্পন্স তাৎক্ষনিক ভাবে দেখা যায়না, তবে এটা ধীরে ধীরে মুল্যবোধকে পরিবর্তন করে ফেলে। এবং বিশেষ কোন এক ট্রিগারিং পয়েন্টে তা বের হয়ে আসে। এর উদাহরন হিসেবে বলা যায়, আমাদের আশে পাশের আম ভাবে ইসলামের আহকাম সমুহকে ভালোবাসে এমন বয়স্ক মানুষদের কথা বলা যেতে পারে, যারা হয়ত কিছু দিন আগেও অন্ধ ভাবেই আল্লাহর দ্বীন কে ভালোবাসতেন কিন্তু এখন তারা ডিমোটিভেটেড হয়ে গেছেন, ডিমোটিভেটেড এজন্য বললাম কারন এখনও তারা মনে করেন তারা আল্লহর দ্বীনকে ভালোবাসছেন, কিন্তু আসলে তারা তাগুতের প্রোপাগান্ডা ক্যামপেইনের শিকার হয়ে বায়বীয় ধারনার জগতে চলে গেছেন।

        এখানে মুল যে বিষয়ে দেখা দরকার তা হচ্ছে প্রোপাগান্ডার লক্ষ্য কি? আপাত দৃষ্টিতে মোটা দাগে দেখলে মনে হবে তারা আসলে জঙ্গীদের বিরুদ্ধে বা র্যাআডিকাল ইসলামিস্টদের (যদিও ইসলামে র্যা ডিকাল বলে কিছু নাই) বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাচ্ছে, (যেটা তারা সবার সামনে উপস্থাপন করতে চায়) যা এক কথায় ব্যাক্তি বা দলের বিরুদ্ধে কিন্তু বাস্তবে আসলে তা ভুল। তাদের এই আগ্রাসন আসলে দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে, যা বাস্তবে আমাদের মুল ভিত্তি ঈমান এবং আকিদাহ’র বিরুদ্ধে। কিন্তু সাধারন মানুষ যদি জেনে যায় বা দিব্য চোখে দেখে ফেলে যে, তারা আসলে ইসলামের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে, এবং আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ’র বিরুদ্ধেই যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে তাহলে তারা সামনে আগাতে পারবেনা। আর এই জন্যই দরকার হয় প্রোপ্যাগান্ডা। প্রোপ্যাগান্ডা এর মুল মাকসাদ হচ্ছে মানুষকে তাই ভাবতে শেখানো যা আপনি চান সে ভাবুক, প্রোপ্যাগান্ডা’র মাকসাদ হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস এবং আদর্শ কে নিয়ন্ত্রন করা। তাগুতের লক্ষ্য আমাদের কাছে ঘোলাটেই থাকবে যদি আমরা প্রোপ্যাগান্ডার মাকসাদের দিকে না তাকাই, প্রোপ্যাগান্ডা কেন কাজ করে এবং কিভাবে কাজ করে সেটা না বুঝি। কিছু ফিজিক্যাল জঙ্গীকে রিমুভ করা হয়ত কঠিন কিছুনা তবে জঙ্গীদের আদর্শ কে রিমুভ করা কঠিন, তারা আসলে কিছু জঙ্গীকে রিমুভ করে আরো লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষের কাছে প্রোপ্যাগান্ডার মুল মেসেজ পৌছিয়ে দিচ্ছে! তারা সরাসরি ইসলামের বিরুদ্ধে, আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ এর বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারবেনা বা বললেও তা আম মুসলিম মানবে কেন? এজন্য তারা ইসলাম কে জঙ্গী ট্যাগ দিয়ে আক্রমন করছে। সারা দুনিয়াতে কাফিররা আসলে ইসলাম নামের একটি আদর্শের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত, তাদের দুশ্চিন্তাও এই আদর্শকে নিয়েই, অর্থাৎ ইসলাম কে নিয়েই।

        ব্যাটল অফ হার্টস অ্যান্ড মাইন্ডে এই আলোচনা বিস্তারিত এসেছে। কিভাবে তারা আদর্শগত ভাবে ইসলামের সাথে যুদ্ধ করছে। এছাড়া আমার এই কথাকে আরো শক্ত ভাবে বিশ্বাস করার জন্য আমি কুরআনের একটি আয়াতের দিকে তাকিয়েছি, আল্লাহ তায়ালা সুরা আল ইসরার ৮১ নাম্বার আয়াতে বলছেন, “আর বল, সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, মিথ্যা তো বিলুপ্ত হবারই” অর্থাৎ বাতিল সবসময়ে সত্যের ভয়ে তটস্থ থাকে, সত্য প্রকাশিত হলেই বাতিল কে দূর হতে হবে, যেমনটা শাইখ আওলাকি (রহ) তাঁর লেকচারে উল্লেখ করেছেন। তাই বাতিল সত্যের নিশানাও দেখতে চায়না, সত্য কে চাপিয়ে রাখতে চায়, সত্য কে আক্রমন করতে চায়। আর যেহেতু হাক্ক হচ্ছে হাক্কই তাই হাক্ক এর আসল রুপে যদি তাতে আঘাত হানা হয় তবে তা সবার সামনেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য কাফিররা আগে হাক্ক এর গায়ে অন্য লেবেল চাপিয়ে দেয়ার চেস্টা করে, এরপর সেই আবরনের আড়ালে আক্রমন করে, আর এই কাজটিই হচ্ছে প্রোপ্যাগান্ডা। প্রপাগ্যান্ডা হচ্ছে সাইকোলজিক্যাল ওয়ারফেয়ারের প্রধান অস্ত্র, সুতরাং এদিক থেকেও স্পস্ট হয়ে যায় যে কাফির রা আসলে আমদের বিশ্বাস এবং আকিদাহ এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত।

        একটি বাস্তব উদাহরন দেই, আপনারা জানেন বাংলা অভিধানে জঙ্গি শব্দ নতুন নয়, এমন না যে কেউ আগে কখনো এই শব্দ শুনেনি। এই শব্দ আগেও ছিলো, এমনকি সামরিক বাহিনীর সিলেবাসে জঙ্গী শব্দটি অহরহ ব্যাবহার হয়, আম ভাবে জঙ্গী তাদের বলা হয় যারা হচ্ছে মারদাঙ্গা টাইপের সৈন্য, এমন সৈন্যদল কে জঙ্গীদল বলা হয়। কিন্তু এই জঙ্গী নিয়ে কারো কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে কেন মানুষের জঙ্গী শব্দ নিয়ে মানুষের এত পেরেশানী! কারন এভাবেই আম মানুষকে ভাবতে শেখানো হচ্ছে, চিন্তা করতে শেখানো হচ্ছে। এটাই তাদের প্রোপ্যাগান্ডা এর মাকসাদ। এখন এদেশের তাগুতরা “জঙ্গী” ধারনাটাকে তাদের চাওয়া অনুযায়ী মানুষের মনে বদ্ধমুল করে দিতে পেরেছে, এখন এই জঙ্গী ট্যাগটির আড়ালে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে। একটি বাস্তব উদাহরন দেই, পেপারে দেখলাম, রাজিব হায়দার হত্যার রায় ঘোষণার সাথে নতুন বক্তব্য যুক্ত করেছে, “মসজিদেরর ইমাম গন নামাজ পড়াবেন, মুসল্লিদের ধর্মীয় শিক্ষা দিবেন, রাষ্ট্রের আইনের পরিপন্থী কোন কথা বলতে পারবেন না” রায় ঘোষণা টি হচ্ছিল জঙ্গী ট্যাগ এর আড়ালে কিন্তু আক্রমন টা হয়েছে কোথায় তা কি বুঝতে পারছেন? সরাসরি বলে দেয়া হল, রাষ্ট্রের আইনের সামনে ইসলাম কিছুই না! এটা কিসের উপরে আঘাত? এটা কি ইসলামের উপরে আঘাত নয়? কিন্তু এই কথাটি যদি সরাসরি বলা হত তাহলে আম মুসলিম হয়ত প্রতিবাদ করত, কিন্তু সেই একই মেসেজ একটি প্রোপ্যাগান্ডা হিসেবে যখন চালিয়ে দেয়া হল তখন কিন্তু কোন প্রতিক্রিয়াই হলোনা, আর এর অর্থ হচ্ছে আম মুসলিম সেটাকে সয়ে নিলো। আর এভাবেই প্রোপ্যাগান্ডা ধীরে ধীরে মানুষের আদর্শ এবং চিন্তা ভাবনা কে কলুষিত করে ফেলে। যেমন এই প্রোপ্যাগান্ডা সফল হলে মানুষ ভাববে মাসজিদের ইমাম গন দেশের আইন পরিপন্থী কিছু বলতে পারবেন না! এখানে মুল যে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার তা হচ্ছে প্রোপ্যাগান্ডা কাজ করে একটি সমাজ বা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস বা আদর্শ নিয়ে। প্রোপ্যাগান্ডা শব্দটিই এসেছে “Propagating Faith” থেকে। তাহলে এটি আরো পরিষ্কার হয়ে গেলো যে তাদের এই যুদ্ধ বাস্তবিকে ইসলামের সাথেই যুদ্ধ।


        * চলবে ইনশাআল্লাহ
        Last edited by s_forayeji; 04-14-2017, 12:49 AM.
        মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

        Comment


        • #34
          আলহামদুলিল্লাহ্*
          অনেক উপকার হচ্ছে। লিখতে চেয়েছিলাম । যখন দেখলাম আমার লেখার বিষয় গুলো চলে এসেছে তাই আর লিখলাম না ।
          সকল ভাইদের যাঝাকাল্লাআহ
          সত্যের পথে মৃত্যুর এক অদম্য বাসনা আমাদের থামতে দেই না।

          Comment


          • #35
            মাশা আল্লাহ ভাই আপনার লেখাতে অনেক কিছু বুঝার আছে ।
            সত্যের পথে মৃত্যুর এক অদম্য বাসনা আমাদের থামতে দেই না।

            Comment


            • #36
              যুদ্ধের নীরব ঘাতক প্রোপ্যাগান্ডা; দাওয়াতি কাজের প্রথম বাধা


              দাওয়াতি কাজের প্রস্তুতির ব্যাপারে আমরা সবাই যদি একমত হই তাহলে এরপর আমাদের আগে দেখা দরকার এই কাজের পথে সবচেয়ে বড় বাধা কি? এছাড়া বর্তমানে যুদ্ধের অন্যতম একটি নীরব ঘাতক আছে, বর্তমানে একটি বিশেষ পদ্ধতির যুদ্ধ চালু হয়েছে যা কাজ করে চোখের আড়ালে, কিন্তু ফলাফল ভয়ঙ্কর!

              আমরা সবাই জানি যে তাগুত বাহিনি কিছুদিন আগেও জনবিচ্ছিন্ন ছিলো। দেরিতে হলেও তারা বুঝতে পেরেছে যে জন বিচ্ছিন্ন থাকলে তাদের ধংস আরো দ্রুত হবে, এবং দ্বিতীয়ত জন বিচ্ছিন্ন থাকলে আমাদের বিরুদ্ধে তারা কখনই পেরে উঠবে না, এক কথায় অসম্ভব! এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে তারা জনগন কে নিজেদের দলে ভেড়ানোর চেস্টা করছে।

              এই কাজটি তারা করছে একটি প্রোপাগান্ডা ক্যামপেইনের সাহায্যে। আপনারা যদি লক্ষ্য করেন, এই ক্যাম্পেইনের প্রধান ভাবে দুই ধরনের কাজ আছে। একটি হচ্ছে র্যাআপিড রেস্পন্স আরেকটি হচ্ছে লং টার্ম রেসপন্স। উদাহরন হিসেবে বলা যায়, বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা সরাসরি পাবলিক কে অ্যাড্রেস করে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা মেসেজ প্রচার করে, পরিস্থিতির উপরে নিয়ন্ত্রন থাকার জন্য তারা পরিস্থিতিকে কাজে লাগায় এবং তাদের মেসেজ এর তাৎক্ষনিক প্রভাব পাবলিকের উপরে পড়ে। আরেকটি হচ্ছে লংটার্ম রেস্পন্স আর এই কাজটি করে, বলতে গেলে আসলে সমাজের পুরা সিস্টেমটাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্কুল কলেজ, বুদ্ধিজীবী, ভ্রান্ত আলিম সমাজ, পরিবার, মিডিয়া, সমস্ত কিছুই এই প্রোপাগান্ডা ক্যামপেইনের হয়ে কাজ করছে। এই প্রোপাগান্ডার রেস্পন্স তাৎক্ষনিক ভাবে দেখা যায়না, তবে এটা ধীরে ধীরে মুল্যবোধকে পরিবর্তন করে ফেলে। এবং বিশেষ কোন এক ট্রিগারিং পয়েন্টে তা বের হয়ে আসে। এর উদাহরন হিসেবে বলা যায়, আমাদের আশে পাশের আম ভাবে ইসলামের আহকাম সমুহকে ভালোবাসে এমন বয়স্ক মানুষদের কথা বলা যেতে পারে, যারা হয়ত কিছু দিন আগেও অন্ধ ভাবেই আল্লাহর দ্বীন কে ভালোবাসতেন কিন্তু এখন তারা ডিমোটিভেটেড হয়ে গেছেন, ডিমোটিভেটেড এজন্য বললাম কারন এখনও তারা মনে করেন তারা আল্লহর দ্বীনকে ভালোবাসছেন, কিন্তু আসলে তারা তাগুতের প্রোপাগান্ডা ক্যামপেইনের শিকার হয়ে বায়বীয় ধারনার জগতে চলে গেছেন।

              এখানে মুল যে বিষয়ে দেখা দরকার তা হচ্ছে প্রোপাগান্ডার লক্ষ্য কি? আপাত দৃষ্টিতে মোটা দাগে দেখলে মনে হবে তারা আসলে জঙ্গীদের বিরুদ্ধে বা র্যাআডিকাল ইসলামিস্টদের (যদিও ইসলামে র্যা ডিকাল বলে কিছু নাই) বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাচ্ছে, (যেটা তারা সবার সামনে উপস্থাপন করতে চায়) যা এক কথায় ব্যাক্তি বা দলের বিরুদ্ধে কিন্তু বাস্তবে আসলে তা ভুল। তাদের এই আগ্রাসন আসলে দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে, যা বাস্তবে আমাদের মুল ভিত্তি ঈমান এবং আকিদাহ’র বিরুদ্ধে। কিন্তু সাধারন মানুষ যদি জেনে যায় বা দিব্য চোখে দেখে ফেলে যে, তারা আসলে ইসলামের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে, এবং আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ’র বিরুদ্ধেই যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে তাহলে তারা সামনে আগাতে পারবেনা। আর এই জন্যই দরকার হয় প্রোপ্যাগান্ডা। প্রোপ্যাগান্ডা এর মুল মাকসাদ হচ্ছে মানুষকে তাই ভাবতে শেখানো যা আপনি চান সে ভাবুক, প্রোপ্যাগান্ডা’র মাকসাদ হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস এবং আদর্শ কে নিয়ন্ত্রন করা। তাগুতের লক্ষ্য আমাদের কাছে ঘোলাটেই থাকবে যদি আমরা প্রোপ্যাগান্ডার মাকসাদের দিকে না তাকাই, প্রোপ্যাগান্ডা কেন কাজ করে এবং কিভাবে কাজ করে সেটা না বুঝি। কিছু ফিজিক্যাল জঙ্গীকে রিমুভ করা হয়ত কঠিন কিছুনা তবে জঙ্গীদের আদর্শ কে রিমুভ করা কঠিন, তারা আসলে কিছু জঙ্গীকে রিমুভ করে আরো লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষের কাছে প্রোপ্যাগান্ডার মুল মেসেজ পৌছিয়ে দিচ্ছে! তারা সরাসরি ইসলামের বিরুদ্ধে, আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ এর বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারবেনা বা বললেও তা আম মুসলিম মানবে কেন? এজন্য তারা ইসলাম কে জঙ্গী ট্যাগ দিয়ে আক্রমন করছে। সারা দুনিয়াতে কাফিররা আসলে ইসলাম নামের একটি আদর্শের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত, তাদের দুশ্চিন্তাও এই আদর্শকে নিয়েই, অর্থাৎ ইসলাম কে নিয়েই।

              ব্যাটল অফ হার্টস অ্যান্ড মাইন্ডে এই আলোচনা বিস্তারিত এসেছে। কিভাবে তারা আদর্শগত ভাবে ইসলামের সাথে যুদ্ধ করছে। এছাড়া আমার এই কথাকে আরো শক্ত ভাবে বিশ্বাস করার জন্য আমি কুরআনের একটি আয়াতের দিকে তাকিয়েছি, আল্লাহ তায়ালা সুরা আল ইসরার ৮১ নাম্বার আয়াতে বলছেন, “আর বল, সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, মিথ্যা তো বিলুপ্ত হবারই” অর্থাৎ বাতিল সবসময়ে সত্যের ভয়ে তটস্থ থাকে, সত্য প্রকাশিত হলেই বাতিল কে দূর হতে হবে, যেমনটা শাইখ আওলাকি (রহ) তাঁর লেকচারে উল্লেখ করেছেন। তাই বাতিল সত্যের নিশানাও দেখতে চায়না, সত্য কে চাপিয়ে রাখতে চায়, সত্য কে আক্রমন করতে চায়। আর যেহেতু হাক্ক হচ্ছে হাক্কই তাই হাক্ক এর আসল রুপে যদি তাতে আঘাত হানা হয় তবে তা সবার সামনেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য কাফিররা আগে হাক্ক এর গায়ে অন্য লেবেল চাপিয়ে দেয়ার চেস্টা করে, এরপর সেই আবরনের আড়ালে আক্রমন করে, আর এই কাজটিই হচ্ছে প্রোপ্যাগান্ডা। প্রপাগ্যান্ডা হচ্ছে সাইকোলজিক্যাল ওয়ারফেয়ারের প্রধান অস্ত্র, সুতরাং এদিক থেকেও স্পস্ট হয়ে যায় যে কাফির রা আসলে আমদের বিশ্বাস এবং আকিদাহ এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত।

              একটি বাস্তব উদাহরন দেই, আপনারা জানেন বাংলা অভিধানে জঙ্গি শব্দ নতুন নয়, এমন না যে কেউ আগে কখনো এই শব্দ শুনেনি। এই শব্দ আগেও ছিলো, এমনকি সামরিক বাহিনীর সিলেবাসে জঙ্গী শব্দটি অহরহ ব্যাবহার হয়, আম ভাবে জঙ্গী তাদের বলা হয় যারা হচ্ছে মারদাঙ্গা টাইপের সৈন্য, এমন সৈন্যদল কে জঙ্গীদল বলা হয়। কিন্তু এই জঙ্গী নিয়ে কারো কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে কেন মানুষের জঙ্গী শব্দ নিয়ে মানুষের এত পেরেশানী! কারন এভাবেই আম মানুষকে ভাবতে শেখানো হচ্ছে, চিন্তা করতে শেখানো হচ্ছে। এটাই তাদের প্রোপ্যাগান্ডা এর মাকসাদ। এখন এদেশের তাগুতরা “জঙ্গী” ধারনাটাকে তাদের চাওয়া অনুযায়ী মানুষের মনে বদ্ধমুল করে দিতে পেরেছে, এখন এই জঙ্গী ট্যাগটির আড়ালে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে। একটি বাস্তব উদাহরন দেই, পেপারে দেখলাম, রাজিব হায়দার হত্যার রায় ঘোষণার সাথে নতুন বক্তব্য যুক্ত করেছে, “মসজিদেরর ইমাম গন নামাজ পড়াবেন, মুসল্লিদের ধর্মীয় শিক্ষা দিবেন, রাষ্ট্রের আইনের পরিপন্থী কোন কথা বলতে পারবেন না” রায় ঘোষণা টি হচ্ছিল জঙ্গী ট্যাগ এর আড়ালে কিন্তু আক্রমন টা হয়েছে কোথায় তা কি বুঝতে পারছেন? সরাসরি বলে দেয়া হল, রাষ্ট্রের আইনের সামনে ইসলাম কিছুই না! এটা কিসের উপরে আঘাত? এটা কি ইসলামের উপরে আঘাত নয়? কিন্তু এই কথাটি যদি সরাসরি বলা হত তাহলে আম মুসলিম হয়ত প্রতিবাদ করত, কিন্তু সেই একই মেসেজ একটি প্রোপ্যাগান্ডা হিসেবে যখন চালিয়ে দেয়া হল তখন কিন্তু কোন প্রতিক্রিয়াই হলোনা, আর এর অর্থ হচ্ছে আম মুসলিম সেটাকে সয়ে নিলো। আর এভাবেই প্রোপ্যাগান্ডা ধীরে ধীরে মানুষের আদর্শ এবং চিন্তা ভাবনা কে কলুষিত করে ফেলে। যেমন এই প্রোপ্যাগান্ডা সফল হলে মানুষ ভাববে মাসজিদের ইমাম গন দেশের আইন পরিপন্থী কিছু বলতে পারবেন না! এখানে মুল যে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার তা হচ্ছে প্রোপ্যাগান্ডা কাজ করে একটি সমাজ বা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস বা আদর্শ নিয়ে। প্রোপ্যাগান্ডা শব্দটিই এসেছে “Propagating Faith” থেকে। তাহলে এটি আরো পরিষ্কার হয়ে গেলো যে তাদের এই যুদ্ধ বাস্তবিকে ইসলামের সাথেই যুদ্ধ।


              * চলবে ইনশাআল্লাহ
              মাশা আল্লাহ ভাই আপনার লেখাতে অনেক কিছু বুঝার আছে ।
              সত্যের পথে মৃত্যুর এক অদম্য বাসনা আমাদের থামতে দেই না।

              Comment


              • #37
                যুদ্ধের নীরব ঘাতক প্রোপ্যাগান্ডা; দাওয়াতি কাজের প্রথম বাধা (২)

                ... "এখানে মুল যে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার তা হচ্ছে প্রোপ্যাগান্ডা কাজ করে একটি সমাজ বা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস বা আদর্শ নিয়ে। প্রোপ্যাগান্ডা শব্দটিই এসেছে “Propagating Faith” থেকে। তাহলে এটি আরো পরিষ্কার হয়ে গেলো যে তাদের এই যুদ্ধ বাস্তবিকে ইসলামের সাথেই যুদ্ধ" ...

                এত কথার মূল উদ্দেশ্য কি ছিল? যেহেতু আমরা যুদ্ধে লিপ্ত এবং আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপ্যাগান্ডা বা যেটার আরও বৃহৎ রুপ হচ্ছে সাইকোলজিক্যাল ওয়ার পরিচালনা করা হচ্ছে, তাই এই যুদ্ধের স্বরূপ সঠিক ভাবে না বুঝতে পারলে আমাদের পদক্ষেপ গুলো ভুল প্রমানিত হতে পারে। যেমন একটা বাস্তব উদাহরন নিয়ে আসতে চাই, আমাদের নিজস্ব কিছু মিডিয়া আছে- যেখান থেকে আলহামদুলিল্লাহ সাধ্যমত মিডিয়া প্রোডাকশন রিলিজ করে আমদের দাওয়াতি কার্যক্রম এবং তাগুতের বিভিন্ন আক্রমনের জবাব দেয়া হয়। এখানে আমাদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে থাকে তাগুতের মিডিয়া, যেমন বলা হয় এটি একটি মিডিয়া যুদ্ধ। বাস্তবে সাইকোলজিক্যাল ওয়ার ফেয়ারের একটি অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে মিডিয়া, কিন্তু তার মানে এই নয় যে মিডিয়াই সব! যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে আম্যেরিকাতে ৭৫ হাজার সিভিল লিডার কে বিভিন্ন চার্চে, থিয়েটারে, এবং সিভিল গ্রুপ গুলোতে পাবলিকলি যুদ্ধের পক্ষে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেয়ার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিলো, ৬০০০০০ স্কুল শিক্ষকের কাছে বিভিন্ন আর্টিকেল পৌছিয়ে দেয়া হয়েছিলো স্কুলগুলোতে প্রচার করার জন্য, বয়েজ স্কাউট ওপেন করা হয়ছিলো। এখন যদি আমরা বর্তমানে তাকাই তাহলে দেখা যাবে বিভিন্ন বুদ্ধিজীবীরা জ্বালাময়ী বক্তব্যের কাজ করছে, মসজিদের ইমাম গন মিম্বার থেকে ইসলামের ভুল ব্যখ্যা প্রচার করছেন, স্কুল কলেজে যাদের ইসলাম সম্পর্কে ন্যুনতম জ্ঞান টুকুও নাই তারাও ইসলামের আহকাম এবং শরইয়ী দিকগুলোর পর্যালোচনা করছে, ছাত্রসমাজ কে ভুল শিক্ষা দিচ্ছে, জঙ্গিবাদ থেকে যুবসমাজ কে দূরে রাখার জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত রাখার কথা বলা হচ্ছে! কত অদ্ভুত রকমের মিল তাইনা!

                এই কাজ গুলো কিন্তু সরাসরি মিডিয়া দ্বারা করা হচ্ছে এমন না, শুধু মাত্র বুদ্ধিজীবীদের টকশো গুল ব্যাতিত। এছাড়া এখানে আরো একটি কাজ হয়, তা হচ্ছে এই প্রোপ্যাগান্ডা আসলে পানির ঢেউ এর মত কাজ করে, স্থির পানিতে একটি ছোট ঢিল ছুড়লেও সেই ঢিলের কারনে সৃষ্ট ঢেউ অনেক দূর ছড়িয়ে যায়। এমনি ভাবে তাদের এই প্রোপ্যাগান্ডা বা সাইকোলজিক্যাল ওয়ার এর যেকোন একটি আক্রমণ পানিতে ঢিল ছুড়ার মত, এরা আমাদের এতদিনের বিশ্বাস এবং ঈমান যা আপনি স্থির পানির সাথে তুলনা করতে পারেন, সেই বিশ্বাসে ছোট ছোট ঢিল বা শুবুহাত ছুড়ে দেয়। এরপর এগুলো আমাদের মনে শুবুহাতের ঢেউ তৈরি করে এবং আমরা নিজেরাই নিজেদের অজান্তে এই ঢেউ আরেকজনের কাছে হস্তান্তর করি। আমরা নিজেরাই নিজেদের অজান্তে তাদের সাইকোলজিক্যাল ওয়ার এর সৈন্য হিসেবে কাজ করি। আর এজন্য আমাদের জানা দরকার আমাদের শত্রু কিভাবে আমাদের আঘাত করছে।

                কোন একটি বিষয় ভালমত বুঝার জন্য এর শিকড়ে ফিরে যাওয়া দরকার যেখান থেকে এর জন্ম। একই ভাবে বর্তমানে কাফিরদের সাথে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ করতে হলে এর মূল কারন পরিষ্কার থাকা দরকার। কাফেরদের মূল লক্ষ্য এদেশের মুসলিমের ঈমান কে নস্ট করে দেয়া, ইসলামী আকিদাহ কে বিনষ্ট করে দেয়া। তাই আমরা যখন তাদের সাথে যুদ্ধে নামবো তখন আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে কোন জায়গা আমাদের অধিক সুরক্ষা দেয়া প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ। লক্ষ্য করলে দেখবেন কাফিরদের আক্রমনের লক্ষ্যবস্তু আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ, তারা চায় আমরা তাদের মত হয়ে যাই, তারা চায় আমরা এমন সমাজ ব্যাবস্থা গড়ে তুলি যেখানে পতিতাবৃত্তি হালাল, সুদ হালাল, জিনা হালাল, মদ হালাল, আর এগুলোকে হারাম আপনি বলতে পারবেন না! যেমন টা আল্লাহ বলেছেন, “তারা আকাঙ্খা করে যে, তারা নিজেরা যেমন কুফরি করেছে তোমরাও তেমন কুফরি কর, যাতে তোমরা তাদের মত হয়ে যাও-“ কিন্তু কোন দিনও কি তারা এই কথা বলেছে বাংলাদেশে “মদ হালাল” “জিনা হালাল”? বলেনি – তারা এটি করেছে আমাদেরকে মনস্তাত্ত্বিক ভাবে বিকৃত করে দেয়ার মাধ্যমে, এখন সবাই এটাকে গ্রহন করে নিয়েছে। তাই এই যুদ্ধে আমাদের নজর দিতে হবে শত্রু আসলে আমাদের কোন অংশ কে টার্গেট করেছে, আমাদের সেই অংশ কে আগে সুরক্ষা দিতে হবে। আমাদের কাজগুলো সেই অংশ অর্থাৎ আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ কে রক্ষা করার উদ্দশ্যে হতে হবে।

                সন্দেহ নাই যে শত্রুর সাথে আমরা অসম যুদ্ধে লিপ্ত আছি। বলতে গেলে একতরফা ভাবে তারাই সমস্ত প্রোপ্যাগান্ডা হাতিয়ার গুলোকে নিয়ন্ত্রন করে। যেমন ধরা যাক মিডিয়া। এই মিডিয়া কত টুকু আমরা নিয়ন্ত্রন করি আর কত টুকু শত্রু নিয়ন্ত্রন করে? এমনকি আমাদের নিজেদের মিডিয়াগুলোও শত্রুরা নিয়ন্ত্রন করতে পারে, আমাদের মিডিয়ার প্রবাহ কে তারা সংকুচিত করে দিতে পারে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে আমাদের মিডিয়াতে পরিশ্রম দেয়ার পরেও এর প্রভাব আশানুরুপ নয়! কখনো কখনো এটা শক্তি ক্ষয়ের যুদ্ধে পরিনত হয়। কারন আমার মিডিয়া আউটলেট ৫ টা, প্রোডাকশন ৫০ টা, তাদের আউটলেট শয়ে শয়ে, প্রোডাকশন হাজার হাজার। তাহলে এটা কিভাবে সমতা আনবে? উপরন্তু আমাদের এই প্রোডাকশন গুলোও সংকুচিত ভাবে আম মানুষের কাছে যায়। কিন্তু তাদের আউটলেট গুলো একসাথে সমন্বয় করে সব গুলো এক সাথে কাজ করে, একটা অপ্স এর পরে তাগুতের নেতারা বিবৃতি দেয়, সমস্ত মিডিয়া সেটা কাভার করে, সমস্ত বুদ্ধিজীবীরা সেটাতে সার ঢালে, সমস্ত পতিতারা সেটাকে উৎসবের আমেজ দেয়, মসজিদ থেকে ফতয়া আসে, দিনের পর দিন পত্রিকায় আর্টিকেল আসতে থাকে, এক সময়ে মানুষ এভাবে চিন্তা করতে বাধ্য হয়, আচ্ছা এত গুলো মানুষ কি তাহলে ভুল! প্রোপ্যাগান্ডাতে যা প্রচার করা হয় তা পুরা মিথ্যা না, পুরাটাই মিথ্যা হলে মানুষ ধরে ফেলতো, তারা প্রোপ্যাগান্ডার সাথে কিছু সত্য রাখে আর অধিকাংশই মিথ্যা। যেমন তারা প্রচার করে “ইসলাম সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করেনা” এটিতো অবশ্যই সত্য, তবে এই সত্য কথাটিকে তারা নিজেদের সেট আপে নিজেদের মত করে মানুষকে বিশ্বাস করতে শেখাচ্ছে, কথা এটি সত্যই আছে, তারা এই কথাকে পরিবর্তন করেনি, তারা পরিবর্তন করেছে সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা কে! এমন সেট আপের বিরুদ্ধে আমাদের যৌক্তিক ভাবে কতটুকু কি করার আছে! এটা আবেগের জায়গা নয়, এটা যুদ্ধের ময়দান, এখানে বাস্তবতা কে যত দ্রুত মেনে নেয়া যায় ততই উত্তম! একথার দ্বারা আমি এমন বলছিনা যে, আমাদের কে মিডিয়ার কাজ বন্ধ করে দিতে হবে বরং আমি বলছি আমাদের কাজকে আরো প্রসারিত করতে হবে সম্ভবত আরো গুরুত্বপূর্ণ কোন জায়গায় যা সামনে আলোচনায় আসবে ইনশাআল্লাহ।

                বর্তমানে মুজাহিদিনদের বিরুদ্ধে প্রচারনা এমন তুঙ্গে চলে গেছে আর মানুষের বিশ্বাস কে তারা এই পরিমান কলুষিত করতে পেরেছে যে এখন মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নিজেদের ঈমান এবং আকিদাহ বিক্রি করে দিয়ে কাফিরদের হাত শক্ত করছে। নিজের সন্তানের লাশ গ্রহন করতে ভয় পাচ্ছে কিংবা লজ্জিত হচ্ছে, নিজের সন্তানের দাফন করাকে মান সম্মানের প্রশ্ন মনে করছে! কিন্তু কেন? বাস্তবে মুজাহদিনগন আসলে এমন কি করেছে - তারা নিহত হবার আগে কিছু কুলাঙ্গার পুলিশ র্যানব কে হত্যা করেছে, কখনো হয়ত আশে পাশের ২-১ জন সাধারন মানুষ আহত নিহত হয়েছে। আমি এই ঘটনার পক্ষ নিচ্ছি এমন না, কথা হচ্ছে তাদের চেয়ে অনেক বড় বড় অপরাধ এদেশের রাজনীতিবিদ, পুলিশ, র্যা ব, আওয়ামী লীগ করে যাচ্ছে। জঙ্গিরা কত জন সাধারন মানুষ কে মেরেছে আর পুলিশ আওয়ামী ক্যাডার বাহিনি কতজন সাধারন মানুষ কে মেরেছে? মুজাহিদিনরা কত জন নারীর সম্ভ্রম নষ্ট করেছে আর পুলিশ আওয়ামী ক্যাডার বাহিনি কতজন নারীর সম্ভ্রম নষ্ট করেছে? মুজাহিদিনরা কত টাকা ছিনতাই লুটপাট করেছে আর পুলিশ আওয়ামী ক্যাডার বাহিনি কত টাকা লুটপাট ছিনতাই করেছে? এমন চলতেই থাকবে, তাদের অপরাধের তুলনায় মুজাহিদিনরা কিছুই করেনি, একদম কিছুই না। বরং সারা দেশের মানুষ পুলিশ, র্যা ব, আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীর অত্যাচারে নাজেহাল, নিষ্পেষিত তবুও কেন মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে তারা সেই পুলিশ বাহিনীকেই মদদ দেয়? কারন প্রোপ্যাগান্ডা তাদের বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে, এটা সমাজের ক্যান্সার, এটা দেশের ধ্বংস, এটা অপমান। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে মানুষ তার নিজের জীবনের সাথে ঘটে যাওয়া জুলুমকে ভুলে যা তাকে শেখানো হচ্ছে সেটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে! আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন মুজাহিদিনরা/জঙ্গিরা কি করে? তার বলবে, বোমা মারে, মানুষ মারে। আপনি এবার জিজ্ঞেস করেন মুজাহিদিনরা গত ৫ বছরে কতজন মানুষ মেরেছে আর পুলিশ, আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী কত মানুষ মেরেছে? নিঃসন্দেহে তারা লা জবাব হয়ে যাবে! কিন্তু তাহলে কেন মানুষ এমন সম্মোহিত হয়ে গেছে? কারন প্রোপ্যাগান্ডার মাধ্যমে মানুষের ভিতরে নতুন এক আকিদাহ, বিশ্বাস ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।


                * চলবে ইনশাআল্লাহ
                Last edited by s_forayeji; 04-14-2017, 01:03 AM.
                মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

                Comment


                • #38
                  আখি...!সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছেন
                  جزاك الله
                  كتب عليكم القتال وهو كره لكم

                  Comment


                  • #39
                    অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে মানুষ তার নিজের জীবনের সাথে ঘটে যাওয়া জুলুমকে ভুলে যা তাকে শেখানো হচ্ছে সেটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে! আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন মুজাহিদিনরা/জঙ্গিরা কি করে? তার বলবে, বোমা মারে, মানুষ মারে। আপনি এবার জিজ্ঞেস করেন মুজাহিদিনরা গত ৫ বছরে কতজন মানুষ মেরেছে আর পুলিশ, আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী কত মানুষ মেরেছে? নিঃসন্দেহে তারা লা জবাব হয়ে যাবে! কিন্তু তাহলে কেন মানুষ এমন সম্মোহিত হয়ে গেছে? কারন প্রোপ্যাগান্ডার মাধ্যমে মানুষের ভিতরে নতুন এক আকিদাহ, বিশ্বাস ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
                    মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
                    রোম- ৪৭

                    Comment


                    • #40
                      .. প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের আগে মানুষের মাঝে ব্যাপক ভাবে ছড়ানো হয়েছিলো অ্যামেরিকানরা ঝুকির মুখে, তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত। আপনারা জানেন ঠিক একই কাজ করা হয়েছিলো ইরাক যুদ্ধের আগে, এটা প্রচার করা হয়েছিলো ইরাকে পরমানু অস্ত্র শুধু মজুদ আছে তাই নয় বরং যে কোন সময়ে তা অ্যামেরিকানদের উপরে ব্যাবহার করা হতে পারে, অ্যামেরিকানদের জীবন ঝুকির সম্মুখীন! ইতিহাসে বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। সুতরাং বুঝা গেলো যে প্রোপ্যাগান্ডা মানুষের বিশ্বাস কে পরিবর্তন করে ফেলে। তারা সবার সামনে এটিকে একটি দলগত/জাতিগত/রাস্ট্রীয় ঝুকি হিসেবে দেখায়। প্রত্যেক মানুষের ভিতরে এধরনের কম বেশি সেন্টিমেন্ট লুকানো থাকে, আর তাগুতরা এই সেন্টিমেন্ট কে কাজে লাগায়, তারা জঙ্গিদেরকে দেশের জন্য ঝুকি হিসেবে চিত্রিত করে এবং প্রোপাগান্ডা চালায়। এই জন্যই মানুষ নিজের জীবন দিয়ে পুলিশ এবং আওয়ামী ক্যাডার এর অত্যাচার এর সাক্ষী হলেও তা বিশ্বাসের উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলতে সমর্থ হয়না, কারন তাদের এই জুলুম গুলোকে কেউ চিত্রিত করেনি, বরং এগুলো সবসময়ে খন্ডচিত্র হিসেবেই ছিলো। আম মানুষের যদি কারো জুলুমে ভীত থাকার দরকার ছিল তবে তা হচ্ছে তাগুতের বাহিনি এবং আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী। কিন্তু তার পরিবর্তে মানুষ জঙ্গীদের ভয় পায় কারন এভাবেই তাদের কে চিন্তা করতে শেখানো হয়েছে, এটাই হচ্ছে প্রোপ্যাগান্ডার ফসল।

                      আমরা তাহলে দেখলাম যে এই যুদ্ধ টা আসলে শুধু মিডিয়া কেন্দ্রিক না, যদিও মিডিয়ার ভুমিকা কম না। কিন্তু আমরা যদি শুধু মিডিয়ার দিকে তাকাই আর মনে করি মিডিয়াই শুধু আমাদের আক্রমণ করছে তাহলে ভুল হবে। এই যুদ্ধে মিডিয়া শুধু একটি হাতিয়ার মাত্র। আমরা আরো দেখলাম যে, এই যুদ্ধের ব্যাপ্তি অনেক বিশাল এবং এটি আসলে এখন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সামনে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, পুকুরে ঢিল ছুড়ে দেয়ার ফলে সৃষ্ট ঢেউ এর মত। আমাদের মত আম মানুষ এই প্রোপ্যাগান্ডা কে ছড়িয়ে দিচ্ছে, আমাদের আপন পরিবার, বাবা মা, ভাই বোন নিজেদের অজান্তে এই প্রোপ্যাগান্ডার সৈনিক হয়ে কাজ করছে! এখন তাহলে আমাদের করনীয় কি?

                      এটা পরিষ্কার যে এই প্রোপ্যাগান্ডার অন্যতম হাতিয়ার মিডিয়া কে আমরা কন্ট্রোল করতে পারবোনা। এটাও সত্য যে আমরা তাগুতের মত সেটআপ তৈরি করে তাদের প্রোপ্যাগান্ডার জবাব দিতে পারবোনা। তাহলে আমাদের করনীয় কি? আমাদের করনীয় হচ্ছে আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ কে নষ্ট হতে না দেয়া। আর এটি কোথায় থাকে? এটি থাকে মানুষের অন্তরে, অর্থাৎ আমাদের কে আবার আম মানুষের কাছে ফিরে যেতে হবে। একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে, একসময় তাগুত জনবিচ্ছিন্ন ছিলো, আমরাই বরং তাগুতের চেয়ে কিছু বেশি হলেও জনগনের পাশে ছিলাম তা যে ভাবেই হোক না কেন। একসময় তাগুত তাদের ভুল বুঝতে পারলো এবং জনগন কে নিজেদের সাথে নেয়ার চেস্টা করলো এবং একপর্যায়ে তারা সফল ও হলো, এবং তারা জনগনের মাঝে তাদের প্রোপ্যাগান্ডা ছড়াতে লাগলো একই সাথে তারা তাদের বিভিন্ন অপারেশনের মাধ্যমে আমাদের কে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে বেশ ভালো রকম সফল হলো, এই কাজটি তারা প্রোপ্যাগান্ডা এবং বিভিন্ন অপ্স এর মাধ্যমে সম্মিলিত ভাবে করলো। এখন অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে আমরা আম মুসলিমের থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি, এখন তাদের মনে শুবুহাতের বিশাল পাহাড় জমে গেছে। এমন অবস্থায় আমাদের মূল কাজ আবার সেই আম মানুষের কাছে ফিরে যাওয়া।

                      এই ফিরে যাওয়ার আগে আমদের নিজেদের কিছুটা পরিবর্তন করে নিতে হবে, কারন তাগুতরা আমাদের এক রকম ইমেজ আম মানুষের সামনে তৈরি করেছে, সেই ইমেজ নিয়ে আমরা যদি আবার তাদের সামনে যাই তাহলে সম্ভাবনা খুব কম যে মানুষ আমাদের কথা শুনবে।

                      আমাদের কাজের ফর্মুলা কি হবে? শত্রুর কাজের ভিতরেই আমাদের কাজের ফর্মুলা লুকানো আছে। কাফিররা জানে যে আম মসুলিম কে তারা সরাসরি ইসলাম, আল্লাহ, কুরআন, সুন্নাহ এসবের বিরুদ্ধে নিতে পারবেনা। কারন এমন করলে কাফিরদের পরিকল্পনা এক কদম ও সামনে আগাবেনা! তাহলে এটা স্পষ্ট যে কাফিররা ভয় পায় এদেশের আম মুসলিম এখনো কুরআন কে কুরআন হিসেবেই বুঝে, আল্লাহ কে আল্লাহ হিসেবেই বুঝে, সুন্নাহ কে সুন্নাহ হিসেবেই বুঝে। কিন্তু আম মুসলিমের সহিহ জ্ঞানের অভাবে তাগুত শ্রেণী আল্লাহর দ্বীনের আহকাম সমুহ কে বিভিন্ন স্টেজ সাজিয়ে ধাপে ধাপে বিকৃত করে ফেলেছে আর নিঃসন্দেহে তাদের এই কাজ এক শ্রেনির মুনাফিকদের সহযোগিতা ছাড়া অনেক বেশি কঠিন ছিলো। তাই এখন আমাদের মূল কাজ আম মুসলিমের কাছে শুদ্ধ কুরআন এর জ্ঞান শিক্ষা দেয়া, একেবারে বেসিক ঈমান এবং আকিদাহ। মানুষের মরে যাওয়া মন কে কিংবা বিকৃত হয়ে যাওয়া চিন্তা ভাবনা কে শুদ্ধ করা, গোড়া থেকে। কারন মনে রাখতে হবে কাফিরদের আঘাত করার জায়াগা হচ্ছে আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ, তাই সবার আগে আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ’র চারপাশে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা দরকার। আর এই কাজ টি হওয়া চাই বিশুদ্ধ কুরআন এবং সুন্নাহ থেকে। কাফিরদের কাজে যেমন মুনাফিক আলিমদের দরকার ছিলো এই কাজেও তেমনি হক্কপন্থী আলিমদের দরকার, উনাদের ছাড়া এই কাজ আমাদের জন্যও অনেক কঠিন। যেমন কঠিন ছিলো তাগুতের জন্য। সুতরাং কোন সন্দেহ নাই যে একটি বিশাল দাওয়াহ কার্যক্রম আমাদের দরকার হবে। এই দাওয়াহ কাজে আমরা আক্রমণ করবো পরে, নিজেদের ঈমান এবং আকিদাহ এর প্রতিরক্ষা করব আগে। কারন যুদ্ধে জয়ী হবার জন্য আগে যুদ্ধে টিকে থাকতে হবে, আর এখন টিকে থাকার অর্থ হচ্ছে ঈমান এবং আকিদাহ’র শুদ্ধতা নষ্ট না হতে দেয়া। কারন এটিই আমি বলার চেস্টা করেছি যে কাফেরদের লক্ষ্য আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ, যদিও সাধারন ভাবে তা চোখে পড়েনা। এই যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য দরকার বিশুদ্ধ জ্ঞান। আর বিশুদ্ধ জ্ঞান হচ্ছে কুরআন। মক্কার কাফেরদের সমস্ত প্রোপ্যাগান্ডা, কূট কৌশল আর মিথ্যাচারের জবাব দিয়েছিলো এই কুরআন, আবার একই সাথে বিশ্বাসীদের অন্তরকে ঈমানের উপর মজবুত রেখেছিলো তাও এই কুরআন, আল্লাহ কি রাসুল (সাঃ) এর সম্পর্কে বলেননি, যার ভাবার্থ - আমি তোমাকে স্থির না রাখলে তুমি তাদের দিকে প্রায় কিছুটা ঝুকেই পড়তে। আল্লাহ আরো বলেছেন, এই কুরআন মুমিনদের জন্য প্রশান্তি। সুতরাং আমাদের দাওয়াহ এর মূল উপকরন বিশুদ্ধ কুরআন। আর এর সহিহ জ্ঞান এবং ইস্তেমাল আলিমদের ব্যাতিত সম্ভব নয়। তবে এতটুকু আমরা বুঝলাম যে এই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে আমাদের আবার আম মানুষের কাছে ফিরে যেতে হবে বিস্তৃত ভাবে এবং আমদের মূল লক্ষ্য হবে ঈমান এবং আকিদাহ কে রক্ষা করা আর আমাদের উপকরন হবে কুরআন। আমাদের বিশ্বাস থাকতে হবে আল্লাহ বলেছেন, “আমি সত্যকে মিথ্যার উপর নিক্ষেপ করি, অতঃপর তা মিথ্যার মস্তক চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়, তৎক্ষণাৎ মিথ্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তোমরা (আল্লাহ সম্পর্কে অযথা বহু মিথ্যা কথা) যা বলেছো এ কারনে তোমাদের দুর্ভোগ” সুতরাং আল্লাহ আমাদের কে বলেই দিচ্ছেন কুরআন দিয়েই মিথ্যার মাথায় আঘাত করতে, আর তাতেই মিথ্যা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। আর আল্লাহ সম্পর্কে (আল্লাহর আহকাম সম্পর্কে) মিথ্যা বানোয়াট কথা/ধারনা/ব্যখ্যা জন্ম দেয়ার কারনে কাফের জন্য দুর্ভোগ!

                      পরিশেষে, এই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে কাফিরদের কোন দুর্বলতা আছে কি? যা আমাদের প্রেরনা যোগাবে? আল্লাহ বলেছেন শয়তানের চক্রান্ত অতি ভঙ্গুর! তাহলে কাফিরদের এই কাজে দুর্বলতা কেন থাকবে না! তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, তারা জানে যে তাদের ভিত্তি মিথ্যার উপরে। তাদের ঘর তাসের ঘর ছাড়া কিছুই না! তারা জানে তাদের একটি মিথ্যা যা তারা ছড়িয়ে দিয়েছে এটিকে জিইয়ে রাখার জন্য তাকে হাজার মিথ্যা বলেতে হবে এবং পরের দিন সেই মিথ্যা গুলোকে জিইয়ে রাখার জন্য লক্ষ লক্ষ মিথ্যা বলতে হবে। শুধু তাই নয় মিথ্যাকে বিশ্বাস করানোর জন্য হাজার হাজার নাটক সাজাতে হবে। আর হাজার হাজার নাটক দৃশ্যায়ন করার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে, আর এইভাবে সে নিঃশেষ হয়ে যাবে। যেমন আল্লাহ বলেছেন, “যে সব লোক সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে তারা আল্লাহর পথ হতে (লোকদের)বাধা দেয়ার জন্য তাদের ধন সম্পদ ব্যয় করে থাকে, তারা তা ব্যয় করতেই থাকবে, অতঃপর এটাই তাদের দুঃখ ও অনুশোচনার কারন হবে। পরে তারা পরাজিতও হবে। যারা কুফুরী করে তাদেরকে (অবশেষে) জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে।“ মাঝে মাঝে আমি চিন্তা করি সুবহানআল্লাহ, আল্লাহর কালাম কত জীবন্ত, কত বাস্তব! শুধু এই আয়াতের দিকেই যদি তাকাই মনে হবে এই আয়াত আমাদের জন্যই নাজিল হল।

                      এই আয়াতটির বাস্তবতা বুঝার জন্য আয়াত টি ধরে ধরে আমরা একটা বাস্তব উদাহরন দেখবো, আর সে হচ্ছে কুফরের সর্দার অ্যামেরিকা। আয়াতটির প্রথমে বলা হচ্ছে যেসব লোক সত্য কে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে, অ্যামেরিকা আল্লাহর সত্য কে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে, “তারা আল্লাহর পথ হতে (লোকদের)বাধা দেয়ার জন্য তাদের ধন সম্পদ ব্যয় করে থাকে” অ্যামেরিকা আল্লাহর দ্বীনের পথে বাধা সৃষ্টি করার জন্য যে পরিমান অর্থ ব্যয় করে দুনিয়ার আর কোন রাস্ট্র এত অর্থ ব্যায় করেনা। আল্লাহ বলছেন তারা ব্যায় করতেই থাকবে এবং এটাই তাদের দুঃখ ও অনুশোচনার কারন হবে। ইরাক যুদ্ধের আগে অ্যামেরিকা টাকা খরচ করেছে যুদ্ধ লাগানোর জন্য। একটা যুদ্ধ সে লাগাবে এই জন্য টাকা খরচ করেছে, অতঃপর যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে বিলিওন বিলিওন ডলার খরচ করেছে, এরপর এই কাজের জন্য আফসোস করেছে, আজ অবধি আফসোস করছে, এবং আল্লাহর বানী অনুযায়ী তারা পরাজিতও হয়েছে এবং আল্লাহ তাদের জাহান্নামেই একত্রিত করবেন। সুতরাং আল্লাহর কথা আসলে আমাদের জন্য কত বেশি বাস্তব! একই ভাবে আমরা যদি আমাদের এখানে তাগুতের দিকে তাকাই, তাহলে তারাও আল্লাহর পথে লোকদের বাধা দেয়ার জন্য তাদের অর্থ খরচ করছে, এবং তাদের মিথ্যা গুলোকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য তারা নিজেরাই নিজেদের উপরে জরুরত আরোপ করে আবার নিজেরাই সেগুলোর বাস্তবায়ন করার জন্য অর্থ খরচ করে, করতেই থাকে- যেমনটা আল্লাহ বলেছেন। সুতরাং এটা নিশ্চিত অ্যামেরিকার মত তারাও এটার জন্য আফসোস করবে এবং শীঘ্রই পরাজিত হবে ইনশাআল্লাহ।

                      আমি যা বলতে চাচ্ছিলাম তা হচ্ছে তাগুতের দুর্বলতা আছে, তাদের ও সীমাবদ্ধতা আছে, তারাও হাঁপিয়ে উঠে এবং ভবিষ্যতে আরো উঠবে ইনশাআল্লাহ।

                      প্রাসঙ্গিক ভাবে আমাদের শুধু তাই বুঝে নেয়া দরকার তাগুতদের হামলার এই ঢেউ কে আমাদের ঠেকাতে হবে এবং আমাদের ঈমান এবং আকিদাহ কে আকড়ে ধরে রাখতে হবে। এই সম্পদ বিক্রি বা বিকৃত হতে দেয়া যাবেনা। আর এজন্য আমাদের তাগুতের কাজের পদ্ধতি, মাকসাদ এবং তাদের চাল গুলো কোথায় কিভাবে বিস্তৃত তা স্বচ্ছ ভাবে জানা থাকা দরকার। এটি শুধু এই জমিনের তাগুতের চক্রান্ত নয় বরং এটি সারা দুনিয়ায় কাফেরদের বৃহৎ চক্রান্তের অংশ। আল্লাহ বলেছেন, কাফের রা একে অপরের আউলিয়া। তাই এই যুদ্ধে আমাদের কাফেরদের পরিকল্পনা এবং তাদের পদ্ধতি গুলো খুব ভালো ভাবে বুঝে নিতে হবে, কারন আপনি যদি আপনার শত্রুর আক্রমণ পদ্ধতি এবং আক্রমনের লক্ষ্য না ধরতে পারেন তাহলে আপনি ভুল জায়গায় প্রতিরক্ষা নিবেন এবং ভুল পদ্ধতিতে কাজ করবেন, যা ধ্বংসাত্মক।

                      এই লেখাটির উদ্দেশ্য ছিলো যেসব ভাই দাওয়াহ এর কাজ করবেন তারা এই বিষয়টি নিয়ে আরো গভীর ভাবে চিন্তা এবং অনুশীলন করবেন যার ফলে আল্লাহর সাহায্যে তারা আলোচনার ভিত্তিতে উত্তম কর্মপন্থা ঠিক করতে পারেন এবং তাগুতের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা তৈরি করতে পারেন। দাওয়াতি কাজের জন্য যারা আগ্রগামী হবেন আমি আল্লাহর কাছে আশা রাখি এই লেখাটি তাদের আরো গভীর অধ্যয়ন এবং আলোচনায় উদ্বুদ্ধ করবে। আমাদের কাজ যেমন স্থানীয় তেমনি গ্লোবাল। খাস করে মুশরিক মালাউনদের ভুমি থেকে কিভাবে হিন্দুত্ববাদী প্রোপ্যাগান্ডা চলছে, কিভাবে সেই প্রোপ্যাগান্ডা হিন্দের মুসলিমদের কার্যত অকেজো করে ফেলেছে এবং কিভাবে তা এই দেশেও বিস্তার লাভ করেছে তা বিশদ ভাবে জানা প্রয়োজন। হিন্দুত্ববাদী প্রোপ্যাগান্ডা এবং এদেশের তাগুতের প্রোপ্যাগান্ডা যে আসলে একই রসুনের কোয়া তা উপলব্ধি করা প্রয়োজন, শুধু নিজের জন্য নয় বরং এই উপলব্ধিকে আর সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। আল্লাহর সাহায্যে আমার এই লেখার মাকসাদ হচ্ছে ভাইদের জন্য চিন্তার খোরাক তৈরি করা এবং নতুন ভাবে প্রশ্ন করতে সাহস যোগানো।

                      আল্লাহর কাছে দুয়া আল্লাহ যেন এই লেখার খারাবী এবং ভ্রান্তি থেকে আমাকে এবং আমাদের সবাইকে হেফাজত করেন এবং এইকাজ কে আমার এবং উম্মতে মুসলিমাহ’র প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি হিসেবে কবুল করে নেন, কারন যে আল্লাহ আপনি যাকে ইচ্ছা তাকে বেশুমার দান করেন- আপনার দান আমাদের কল্পনার বাইরে – আমিন ইয়া রব্বুল আলামিন।

                      Last edited by s_forayeji; 07-11-2018, 10:38 PM.
                      মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

                      Comment


                      • #41
                        বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্* তায়ালার।

                        এখানে একটা নতুন বিষয়ে আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, তা হল - পৃথিবীতে বাংলা ভাষায় কথা বলে প্রায় ২৩ কোটি মানুষ। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে জিহাদের দাওয়াত পৌছে দেয়া বাংলাদেশে জিহাদের ভিত্তিকে মজবুত করবে, ইনশাআল্লাহ্*। বিশেষ করে আমি কলকাতা, আসাম সহ বাংলাদেশের বর্ডারের আশে পাশে যে বাংলাভাষি মুসলিম কমিউনিটি আছে তাদেরকে টার্গেট করতে বলছি। তাদের কাছেও কিভাবে সহজে দাওয়াত পৌছে দেয়া যায়? কিভাবে তাদেরকে মেহনতের সাথে সংযুক্ত করা যায়? তাদের অনলাইন প্রজন্মকে আমাদের এই ফোরামে সংযুক্ত করা প্রয়োজন।
                        সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযা, প্রতিদিন অন্তত এক পারা কোরআন তেলাওয়াত - এইগুলো হচ্ছে মুজাহিদিনের অন্তরের খোরাক; আমরা আমল করছি তো?

                        Comment


                        • #42
                          শায়খ আব্দুল্লাহ আশরাফ হাফিজাহুল্লাহ্ এর বয়ানের লিঙ্ক দিবেন আখিহ

                          Comment

                          Working...
                          X